Update 14

আপডেট ১৩



সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর থেকে আজকাল সাবরিনা একটু অস্থিরতায় ভুগছে, কোন কিছুতেই ঠিকমত মনযোগ দিতে পারে না। রাস্তায় লোকের ভীড় দেখলে আতংক লাগে, মনে হয় এই বুঝি খারাপ কিছু ঘটছে। একধরনের ট্রমা তৈরি হয়েছে সাবরিনার মনে। মানুষ যখন বড় কোন দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে যায় তখন তার একটা রিলিজ ম্যাকানিজমের দরকার হয় যেখানে সে এই ঘটনার কারণে তৈরি হওয়া নেতিবাচক অনুভূতি গুলো থেকে মুক্তি পেতে পারে। সাধরণত মানুষ তার কাছের মানুষদের সাথে অনুভূতি শেয়ার করে হালকা হয় অনেক সময় সাইকোলজিস্টদের কাছে যায় যদি মেডিকেল ট্রিটমেন্টের দরকার হয়। সাবরিনা এই দুইটার কোনটাই করতে পারছিল না। সোয়ারিঘাটের ঘটনা টা সাবরিনা সাদমান বা তার পরিবারের আর কার সাথে শেয়ার করতে পারছিল না কেননা কীভাবে সেই কন্সট্রাকশন সাইটের আলো আধারিতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সে পরিবারের সাথে শেয়ার করবে এটাই বুঝতে পারছিল না। বাকি সব হায়ার মিডলক্লাস কনজারভেটিভ ফ্যামিলির মত ওর পরিবারেও যৌনতার আলোচনা ট্যাবু। তাই এই ঘটনা শেয়ার করার জন্য মনের ভিতর এতদিনে সংস্কারের কারণে যে মেন্টাল ব্লক তৈরি হয়েছে সেটা অতিক্রম করার সাহস অর্জন করে উঠতে পারছিল না সাবরিনা। আবার সাদমান ওর হাজব্যান্ড, ভাল মানুষ কিন্তু সাদমানের সাথেও শেয়ার করে উঠতে পারছিল না। নিজেকে অনেকটা অসূচি মনে হচ্ছিল ঐ জানোয়ার গুলোর স্পর্শের কারণে। সাবরিনার ভাবছিল সাদমান কে ঘটনা টা শেয়ার করলে সাদমান ঠিক কীভাবে নিতে পারে। ওদের এতদিনের নিস্তরংগ প্ল্যানড লাইফে যে একটা ঝড় উঠতে পারে এই শংকা টা সাবরিনা কে বাধা দিচ্ছিল ঘটনা শেয়ার করতে। বাংগালী পুরুষ যত শিক্ষিত বা উদারমনা হোক না কেন তার বউয়ের শরীরে পরপুরুষ হাত দিলে সেটা যতই জোর করে হোক না কেন সেটা মেনে নিতে পারে না। তাই সাবরিনা সাদমানের সাথেও ঘটনা শেয়ার করতে পারছিল না।

অন্যদিকে অফিসে ছিল অন্য অবস্থা। সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর অফিসে সাবরিনা ছোটখাট হিরো হয়ে গিয়েছিল। গোডাউনের কর্মচারীদের মাধ্যমে নানা কান হয়ে ঘটনা যখন সাবরিনাদের অফিসে পৌছে তখন তার বর্ণনা দাঁড়ায় অনেকটা এরকম যে, সাবরিনা নিজে পলিটিক্যাল ছেলেদের সামলেছে আর নিজের পরিচিত বড় নেতাদের ফোন করে ঘটনার মিটমাট করেছে। ফলে সাবরিনা কে বেকায়দায় ফেলতে কাজটা করা হলেও সাবরিনা ম্যানেজমেন্টের চোখে একটা প্লাস পয়েন্ট অর্জন করে ফেলেল। অফিসের এত প্রশংসার ভীড়ে কেউ অবশ্য জানল না সেই রাতের গোপন একটা অংশ। সাবরিনা, টিপু আর নাদিমের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা টা তাই সবার অগোচরে রয়ে গেল। অফিসে সামিরা ছাড়া বাকি কার সাথে সাবরিনার খুব একটা খাতির নেই কিন্তু সামিরাকেও ঘটনাটা পুরোটা বলত পারল না সাবরিনা। সামিরার নানা প্রশ্নের জবাবে খালি এইটুকু বলতে পারল সেই রাতে অনেক ভয় পেয়েছিল সাবরিনা এবং এখন লোকেদের ভীড় দেখলেই ওর আতংকবোধ হয় এই বুঝি আবার একটা সংঘর্ষ শুরু হবে। সামিরা সহানুভূতিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাল, বলল তুই দেখে এইটা সামলাতে পেরেছিস আমি হলে তো ভয়েই ওখানে থেকে পালিয়ে আসতাম। সাবরিনার মনের ভিতর চাপা কষ্ট আর বাড়তে থাকে। প্রতিবার যখন লোকে ওকে হিরো ভেবে প্রশংসা করতে থাকে ওর মনে হতে থাকে টিপু নাদিম কীভাবে ওর শরীর নিয়ে খেলছিল আর প্রতিরোধহীন ভাবে কীভাবে সাবরিনা একটু একটু করে পরাজয় বরণ করে নিচ্ছিল। ভাগ্যিস সেদিন মাহফুজ এসেছিল। যতবার মাহফুজের কথা মনে পড়ছে সেইদিনের পর থেকে ততবার কৃতজ্ঞতায় মনটা ভরে যাচ্ছে। ঐদিনের আগের দুই সাপ্তাহ যে শীতল ব্যবহার করেছিল সে জন্য নিজেই লজ্জিত হয়ে পড়ছে নিজের কাছে। নিজের মনের ভিতর এখন যেন দুইটা স্বর কথা বলছে। একটা মাহফুজের প্রতি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়ছে আবার আরেকটা স্বর ভয় দেখাচ্ছে। এর আগের বার কোন কিছু ছাড়াই সাবরিনার স্বপ্নে আস্তানা গেড়েছিল মাহফুজ এইবার যদি একটু ছাড় পায় তাহলে কি হবে? ভয় দেখায় দ্বিতীয় স্বর। মাহফুজ কে অগ্রাহ্য করতে পারবে? বেশি কাছে আসতে দিলে নিজের ভিতরের সব বাধ ভেংগে যাবে না? কিন্তু প্রথম স্বরটা যেন দ্বিতীয় স্বর কে ছাপিয়ে জোরালো হয়ে উঠে। সাবরিনার মনে হয়ে ঠিক ঐ মূহুর্তে মাহফুজের উপস্থিতি যেন ঐশ্বরিক আদেশ, ঐশ্বরিক আদেশ কে উপেক্ষা করার শক্তি যে সাবরিনার নেই।

তাই মাহফুজের প্রতি সাবরিনার আচরণ বদলে যাচ্ছিল। মাঝখানের শীতল সময় টা বাদ দিয়ে মাহফুজের প্রতি সাবরিনার আচরণ আবার আগের মত নরমাল হয়ে দাড়াল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবরিনা যেন মাহফুজের প্রতি এক ধরনের মুগ্ধতা নিজের ভিতর আবিষ্কার করতে শুরু করল। এই মুগ্ধতা আগেও ছিল তবে সুক্ষ ভাবে তবে এখন যেন দিন কে দিন এটা বাড়ছে। এই মুগ্ধতা দেখে সাবরিনার ভিতরের একটা অংশ ওকে সতর্ক করতে থাকল, আগের বার যেমন মাহফুজের জন্য মনের সকল দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সেরকম করতে বলল। তবে মনের অন্য অংশটা এবার অনেক বেশি শক্তিশালী। এত বড় বিপদ থেকে বাচানোর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মনের নেতিবাচক অংশটাকে কোন জায়গা দখল করতে দিল না মাহফুজের সাপোর্টার অংশটা। সাবরিনার এই পরিবর্তন খালি যে সাবরিনা টের পাচ্ছিল তা না সামিরাও টের পেল একদিন। মাহফুজ আজকাল খালি অফিসে সাবরিনার কাজের জন্য আসে না, আর বেশ কয়েকজনের কিছু কাজের হেলপ করে ও। বিশেষ করে ডিস্ট্রিবিউশনের লোকদের সারাদেশের পলিটিক্যাল লিংক আপের কাজে সাহায্যের জন্য আসে। তাই সাপ্তাহে আজকাল দুই তিন সাবরিনারদের অফিসে মাহফুজের আসা হয় এবং আসলে অন্তত একবার সাবরিনার ফ্লোরে ঢু মেরে যায়। এরকম একদিন সাবরিনার ফ্লোরে আসার পর ঠিক হল নিচে সাবরিনারদের অফিস বিল্ডিং এর ঠিক অপজিটে একটা আইসক্রিম পার্লার আছে সেখানে এই গরমেে আইসক্রিম খাওয়া হবে। সামিরা সাথে ছিল তাই সেও সংগী হল দুই জনের। আইসক্রিম খাওয়ার সময় নানা বিষয়ে কথাবার্তা হল, হাসাহাসি হল। সাবরিনা খেয়াল করল মাহফুজের সেন্স অফ হিউমার ভাল। সামিরা যথেষ্ট কথায় দক্ষ, ওর সাথে কথায় টক্কর দিচ্ছে অনায়েসে। সাধারণ একটা ব্যাপার থেকে মজার পর্যবেক্ষণ বের করছে। সাবরিনা এই কথায় যতটা না অংশ নিল তার থেকে বেশি দেখল, সামিরা আর মাহফুজের কথার টক্কর। আইসক্রিম খাওয়া শেষে মাহফুজ ফিরে গেলে, সামিরা আর সাবরিনা অফিসের লিফটে যখন একা তখন সামিরা প্রশ্ন করল সাবরিনা, মাহফুজের সাথে তোর ব্যাপারটা কী? সাবরিনা বলল কিসের ব্যাপার? তুই জানিস ও আমাকে একটা প্রজেক্টে হেল্প করছে এই যা। সামিরা উত্তর দিল তুই যেভাবে আজকে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলি এটা একদম কলেজ গার্লরা তাদের স্যারের উপর ক্রাশ খেলে যেভাবে তাকিয়ে থাকে সেরকম। সাবরিনা অস্বীকার করল। সামিরা বলল যত তুই অস্বীকার করিস না কেন কিছু একটা আছে, সেটা যদি তুই টের না পাস তাহলে ভাল করে দেখ। এই রাস্তা কিন্তু ডেঞ্জারাস। তুই এতদিন যেভাবে চলেছিস, যা মেনেছিস সব কিছুর উলটা। আমি হলে এই ডেঞ্জারাস লাইফ হয়ত পছন্দ করতাম বিকজ আই লাইক টু লিভ ডেঞ্জারাসলি। কিন্তু তুই প্রথাগত জীবন ভালবাসিস। তাই যা করিস বুঝে করিস। সাবরিনা উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইল। সাবরিনা টের পাচ্ছে ওর ভিতর লিভিং ডেঞ্জারসলি অংশটা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। একদিকে কৃতজ্ঞতা আর অন্যদিকে মনের ভিতর অনেক দিনের লুকিয়ে রাখা গোপন বাসনা গুলো সব একসাথে হয়ে মাহফুজের প্রতি সাবরিনার দূর্বলতা যেন আর বাড়িয়ে দিচ্ছিল। সাবরিনার ভাল মেয়ের মত জীবন যাপন করলেও অনেকের মত এডভেঞ্জারের প্রতি, কনফিডেন্ট, চার্মিং লাইফ পার্টনারের জন্য একটা আকর্যণ সব সময় ছিল। বিয়ের আগে সব সময় নিজেকে সান্তনা দিয়েছে যে বিয়ের পর লাইফ পার্টনারের সাথে সব করবে। ওর লাইফ পার্টনার হবে ডমেনেটিং আবার একসাথে চার্মিং। অনেক টা ফিফটি শেডস অফ গ্রে এর ক্রিস্টিয়ানের মত। বাসার বাধায় জীবনে যা যা করা হয় নি সব করবে ওর হবু বরের সাথে।

তবে বিয়ের পর সাবরিনার সেই স্বপ্নে একটা ধাক্কা খায়। সাদমান যেন ওর আগের লাইফের একটা এক্সটেনশন। ভাল ছেলে, প্রমিজিং ক্যারিয়ার কিন্তু বড় বেশি প্রেডিক্টেবল। নিয়মের বাইরে কিছু করবার সাহস নেই। তাই মনের ভিতর থাকা সব গোপন বাসানা সাবরিনা যেন আবদ্ধ করে রেখেছিল মনের গহীনে। সেখানে মাহফুজ যেন একটা দমকা বাতাস। যেই বাতাসে সাবরিনা উড়ে যাবে সেটা যেন সাবরিনা নিজেই টের পেয়েছিল, তাই মনের দরজা বন্ধ করে রেখেছিল যাতে দমকা বাতাস ওকে উড়িয়ে নিতে না পারে। সেখানে সোয়ারিঘাটের ঘটনায় সেই দরজা যেন আপনা আপনি খুলে গেছে, কৃতজ্ঞতায় যে দরজা খুলে দিয়েছিল সেই খোলা দরজা দিয়ে আসা বাতাস যেন আজকাল মনের ভিতর আবদ্ধ বাসনাদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সাবরিনা নিজেও জানে না এর পরিণতি কি। সাবরিনা জানে শি ইজ ওয়ান্স ইন হার লাইফ, ওয়ান্টস টু লিভ ডেঞ্জারাসলি। কোন কিছুর পরিণতি না ভেবে একবার খোলা হাওয়ায় ভাসতে চায় সাবরিনা আর মাহফুজ যেন সেই খোলা হাওয়ার প্রতিনিধি।



মাহফুজ টের পেলে ওর প্রতি সাবরিনার আচরণ অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। আগের সেই শীতল ভাবটা নেই বরং যে কোন সময়ের তুলনায় সাবরিনা ওর সাথে আর বেশি বন্ধুসুলভ আচরণ করছে। আগে যেখানে ফোন দিয়ে দরকারের কথা বলেই সাবরিনা ফোন রেখে দিত এখন সেখানে অদরকারী দুই একটা কথা বলে। দেখা হলে কাজের বাইরেও এটা সেটা নানা বিষয়ে কথা বলে। মাহফুজ প্রচুর মুভি দেখে এবং সিনথিয়া মারফত মাহফুজ জানে সাবরিনা মুভি আর বইয়ের ভক্ত। তাই আজকাল এমন কি দেখা হলে কাজের বাইরে সিনেমা নিয়ে কথা হয়। একটা সহজাত বন্ধুত্ব যেন গড়ে উঠছে দুই জনের মাঝে। মাহফুজ বুঝতে পারে এটা সেই রাতে ওর ভূমিকার ফসল। এটা মনে আসতেই মাহফুজের মনে একটা গিল্ট ফিলিংস কাজ করে। সাবরিনা একে তো সিনথিয়ার বড় বোন, হবু বউয়ের বড় বোন। তার উপর সেই দিন সাবরিনা খুব অসহায় একটা অবস্থায় ছিল কিন্তু এইসব অগ্রাহ্য করে আজকাল প্রতিরাতে সাবরিনা কে ভেবে ও মাস্টারবেশন করছে। আর যেটা ওর পাপবোধ বাড়িয়ে তুলছে সেটা হল প্রতি রাতেই ও সাবরিনার প্যান্টির গন্ধ শুকে, মোবাইলে সাবরিনার সেই উলংগ ছবি দেখে এই মাস্টারবেশন করছে। প্রতিবার মাস্টারবেশনের পর মনে হয় আর না, এটাই শেষবার। কালকেই প্যান্টিটা ফেলে দিব, মোবাইল গুলোর মেমরি ইরেজ করে দিব। কিন্তু সকাল হলে সাবরিনা কে বাহুডোরে ধরে পিষে ফেলার ইচ্ছা আবার প্রবল হয়। আর ওর সমস্যা আর বেড়ে যায় যখন মাঝে মাঝে সিনথিয়া ওর সাথে কথা বলার সময় সাবরিনা কে নিয়ে মজা করে, উত্তেজক কথাবার্তা বলে। একদিন ওদের ফোন সেক্সের সময় সাবরিনার রোলপ্লে করল সিনথিয়া নিজে থেকে, তবে ওর জানার কথা না যখন সিনথিয়া সাবরিনা সেজে রোলপ্লে করছে মাহফুজ তখন আসল সাবরিনার প্যান্টি থেকে ঘ্রাণ নিচ্ছে। পরের দিন বিকালবেলা যখন সাবরিনার সাথে ওর দেখা হল তখন একসাথে পাপবোধ আর যৌন আকর্ষণের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ ওকে আক্রমণ করল। একদিনে গিল্ট ফিলিংস আর অন্যদিকে সাবরিনা। সাবরিনা একটা সালোয়ার কামিজ পড়া ছিল, নীল রঙের। মাহফুজের মনে হচ্ছিল এখনি বুঝি ও সাবরিনার কামিজ উঠিয়ে ওর বুকে ঝাপিয়ে পড়বে। ওর চোখে বুঝি সেই কামের চিহ্ন ভেসে উঠবে এই ভয়ে ছিল মাহফুজ। মেয়েদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় অনেক তীব্র তাই মাহফুজে নিজের ভিতরে সেই কামাগ্নি দাবিয়ে রাখতে চায়। ভাগ্যিস সেই সময় সামিরা আসল। সামিরা হাসিঠাট্টা করে বিভিন্ন কথা বলতে থাকল। পরে সবাই মিলে নিচের এক দোকানে আইসক্রীম খাবার পর সাবরিনা যখন হেটে ফিরে যাচ্ছিল। পিছন থেকে মাহফুজের চোখ যেন ওর সব কাপড় খুলে নিচ্ছিল আর মনের ভিতর সেই কাপড়হীন উলংগ সাবরিনা কে নিয়ে অসভ্য খেলা খেলছিল মাহফুজ।

দুনিয়াজোড়া পুরুষদের একটা সমালোচনা আছে, এরা অনেক সময় মাথা দিয়ে না ভেবে গোপনাংগ দিয়ে ভাবে। আর সেই সিদ্ধান্তের সাথে নারী জড়িয়ে থাকলে গোপনাংগ দিয়ে ভাবনার পরিমাণ যেন বেড়ে যায়। এই সময় ছেলেরা অনেক বেশি সাহসী, বেপরোয়া হয়ে উঠে। অন্য সময় যে কাজ করতে দশবার ভাববে সেই কাজ ঐ সময় ভাবতে এক মূহুর্ত সময় নিবে না। সেই দিন মাহফুজ যা করল সেটা কে ইংরেজিতে বলে Dick thinking, বাংলায় বললে গোপানাংগ দিয়ে ভাবা। সাবরিনাদের অফিসে একটা কাজে এসে আবার সাবরিনা কে মেসজ দিয়েছিল অফিসে আছে কিনা। সাবরিনা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে উত্তর পাঠাল একটা ব্রেক নিয়েছে আধা ঘন্টার আর নিচের ক্যাফেতে আছে। ক্যাফেতে ঢুকে মাহফুজ দেখে এক কোণার একটা টেবিলে একটা কফি নিয়ে বসে আছে সাবরিনা আর মোবাইলে স্ক্রল করছে সোশ্যাল মিডিয়া। মাহফুজ কে দেখেই সাবরিনার চোখ দুইটা যে হেসে উঠল এটা মাহফুজের চোখা এড়াল না। দুই জনের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে কথা হতে থাকল। মাহফুজ খেয়াল করল সাবরিনা এখন অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দে কথা বলছে ওর সাথে, আগের সেই জড়তা নেই, মাঝখানের শীতলটা নেই। এইসব যেন মাহফুজ কে অদৃশ্য ইংগিত দিতে থাকল। এরপর সেদিন সাবরিনা পড়েছিল জিন্সের সাথে ফতুয়া। চুল খোলা কাধ পর্যন্ত। একসাইড দিয়ে চুল কানের সাইড দিয়ে মুখে এসে পড়ছে আর সাবরিনা একটু পর পর আংগুল দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। স্বভাবসুল্ভ একটা মৃদু কিন্তু মনহরণকারী পারফিউমের গন্ধে সাবরিনার পাশটা মৌ মৌ করছে। নিজেকে এই গন্ধে ফুলের ভ্রমর মনে হল মাহফুজের, যেন সাবরিনার সব মধু শুষে নেবার জন্য আশে পাশে উড়ে বেড়াচ্ছে সে। এই সময় সাবরিনার একটা ফোন আসল। কথা বলতে বলতে সাবরিনা কপালের চুল আংগুল দিয়ে প্যাচাচ্ছে। মাহফুজের জন্য তখন সময় যেন স্থির, ওর শরীরের নিচে আরেকটা অস্বিত্ব যেন জেগে উঠতে থাকল। আন্ডারওয়ারের ভিতর বাড়তে থাকা চাপ মাহফুজের যেন হার্টবিট বাড়িয়ে দিল। ফোনে সাবরিনা কে কেউ একটা কিছুতে যাওয়ার জন্য বলছে আর সাবরিনা গাইগুই করছে, এরপর আসতে পারি কিনা দেখি বলে সাবরিনা ফোন টা রেখে দিল। মাহফুজ যেন আশাহত হল, আরকেটু সময় ফোনে কথা বললে আর কিছুটা সময় সাবরিনার মুখটা মস্তিষ্কে ধরে রাখা যেত কোন বাধা ছাড়াই। মাহফুজ জিজ্ঞেস করল কিসের ফোন। সাবরিনা উত্তর দিল ওর এক কলেজ জীবনের বন্ধু, যে এখন ফটোগ্রাফার, তার দৃক গ্যালারিতে একটা প্রদর্শনী হচ্ছে। অন্য অনেকের সাথে ওর ছবিও থাকবে প্রদর্শনীতে তাই সাবরিনা কে যাওয়ার জন্য দাওয়াত দিয়েছে, শুক্রবার ছুটির দিন প্রদর্শনী। মাহফুজ জানে সাবরিনা ফটোগ্রাফি পছন্দ করে তাই জিজ্ঞেস করল যাবে না কেন? কোন আগের থেকে শিডিউল আছে নাকি। সাবরিনা বলল আসলে একা একা এইসব জায়গায় যেতে ইচ্ছা করে না। বন্ধুর যেহেতু প্রদর্শনী তাই বন্ধু ঠিক সময় দিতে পারবে না। একা একা ছবি দেখে পরে বাসায় ফিরে যেতে তেমন একটা ভাল লাগে না। মাহফুজ সাদমানের কথা জিজ্ঞেস করল। সাবরিনা বলল সাদমান এইসব শিল্প সাহিত্য বিষয়ে খুব একটা আগ্রহী না, আর শুক্রবার বিকালের দিকে সাধারণত সাদমান বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বের হয়। সাপ্তাহের এই একটা সময় সাদমান নিজের মত করে কাটায় তাই সাদমান কে জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা নেই সাবরিনার। ঠিক এইসময় কিছু না ভেবেই মাহফুজ একটা Dick tinking দিয়ে সিদ্ধান্ত নিল। বলল আপনি ফটোগ্রাফী এত পছন্দ করেন তাহলে একা যাবেন কেন, আমিও নাহয় যাব। আপনাকে সংগ দিলাম, এরপর নাহয় ধানমন্ডিতে আমরা একটু ঘোরাঘুরি করব। আপনার তাহলে আর একা লাগবে না। মাহফুজের প্রস্তাবের আকস্মিকতায় সাবরিনা অবাক হয়ে গেল। মাহফুজ হঠাত করে এমন কিছু বলবে এটা সাবরিনা ভেবে উঠতে পারে নি। এটা ঠিক আগের তুলনায় সাবরিনা মাহফুজ এখন অনেক বেশি ফ্রেন্ডলি কিন্তু এই সংগ দেবার প্রস্তাব টা যাকে বলে একদম বিনা মেঘে বজ্রপাত, আউট অফ blue। সাবরিনার কাছে ব্যাপারটা বেশ কিউট লাগল। বন্ধুর ফটোগ্রাফী শো যাতে মিস না করে এবং একাকী বোধ না করে সেই জন্য এরকম সংগ অফার করার ব্যাপারটা সাবরিনা কে বেশ মজা দিল। এমনিতেই মেয়েরা মনযোগ পছন্দ করে, সেটা যে কোন বয়সের,যে কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের মেয়ে হতে পারে। সাবরিনা এর ব্যতিক্রম না। বিয়ের আগে বিভিন্ন আর্ট গ্যালারির শো, সাহিত্য আলোচনার অনুষ্ঠান এগুলা ছিল শুক্রবার ছুটির দিনের বিকালবেলার সাবরিনার নিয়মিত গন্তব্যস্থল। ওদের তিন চার জনের একটা দল ছিল সমমনাদের। এদের মধ্যে দুই জন এখন দেশের বাইরে, এক জন চাকরি সূত্রে ঢাকার বাইরে আর সাবরিনা আর আরেকজন বিয়ের কারণে আর সময় করে উঠতে পারে না। সাবরিনার এই বন্ধু মহলের শূণ্যতা আর ওর এই শুক্রবার বিকালবেলা আর্ট কালচার করে বেড়ানো আড্ডা গুলো মিস করে। সাদমান ভাল ছেলে হলেও এইসব আর্টের ব্যাপারে কোন আগ্রহ নেই। শুক্রবার তাই আজকাল ওদের দাওয়াত খাওয়া বা নেটওয়ার্কিং এর জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া বা সাদমানের বন্ধুদের আড্ডায় যাওয়ার জন্য বরাদ্দ। সাবরিনা ভাল মেয়ের মত সব মেনে নিয়ে, মানিয়ে নিচ্ছিল। তাই আজকে যখন ফোন আসল তখন মনের ভিতর ইচ্ছা থাকলেও একা একা এইসব জায়গায় একটু পর বোরড লাগে তাই এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছিল সেখানে মাহফুজের প্রস্তাব যেন ওর পুরান দিনের শুক্রবারের ছুটির দিনের বিকালবেলার স্মৃতি ফিরিয়ে আনল। আর তার উপর মাহফুজ আজকে পাঞ্জাবী পড়ে এসেছে, সাথে চাপদাড়ি। একদম রঙ দে বাসন্তীর আসলাম যেন। সাবরিনা তাই না করতে পারে না। ঠিক হয় সাবরিনা শুক্রবার দুপুরের দিকে টেক্সট দিয়ে কয়টার সময় ওরা দৃক গ্যালারিতে যাবে সেটা জানিয়ে দিবে।

শুক্রবার যত এগিয়ে আসতে থাকল সাবরিনা আর মাহফুজ দুই জনে যেন ঠিক দুইটা ভিন্ন অনুভূতির ভিতর দিয়ে যেতে থাকল। সাবরিনার জন্য এটা একটা সংশয় মিশ্রিত চাপা উত্তেজনাকর অপেক্ষা। বিয়ের পর এই প্রথম সাদমান ছাড়া আর কোন ছেলের সাথে সময় কাটাবে যেখানে কোন অফিসিয়াল বিজনেসের ব্যাপার নেই। ওর ভার্সিটির ছেলে বন্ধুদের সাথে সাদমান ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়েছে কিন্তু সেসব ক্ষেত্রে ওরা গিয়েছে গ্রুপে। আর অনেকে ছিল তাই সেটা কখনো ওয়ান টু ওয়ান ছিল না, আর হলেও তারা সবাই বহু আগেই ফ্রেন্ড জোনড। তাদের কার প্রতি মনের গহীন কোণায় কোন অনুভূতি লুকানো ছিল না। সাবরিনা সাদমান কে বলল এই শুক্রবার দৃকে একটা ফটোগ্রাফীর প্রদর্শনী আছে ও যাবে কীনা। সাদমান বলল তুমি তো জান সাপ্তাহের এই একটা বেলা আমি একটু বন্ধুদের সাথে কাটাই। সাবরিনার মনে হল সাদমান কখনো ভাবেই না সাপ্তাহের এই একটা বেলা সাবরিনা দিনের পর দিন কীভাবে ওর নিজের ইচ্ছা গুলো বিসর্জন দিয়ে সাদমানের আড্ডার সংগী হয়। সাবরিনার মুখ কাল হতে দেখে সাদমান বলল তুমিই যাও না। ঘুরে আস, তোমার বন্ধুদের সাথে দেখা হবে। একটা আড্ডাও দিয়ে আস তাহলে ফ্রেশ লাগবে। সাবরিনা বলল ঠিকাছে কিন্তু এটা আর বলল না সাবরিনার সাথে সেদিন ওর কোন বন্ধু নয় বরং মাহফুজ যাবে। মাহফুজ কে ঠিক কোন ক্যাটেগরিতে ফেলবে সাবরিনা জানে না। ওরা ফ্রেণ্ডলি কিন্তু বন্ধু নয় নিশ্চিত। সেই রাতের ঘটনার পর একটা অদৃশ্য বন্ধন গড়ে উঠেছে যেন দুই জনের মধ্যে। সাবরিনার জীবনের একটা গোপন অংশ এই পৃথিবীতে জানে শুধু মাহফুজ এবং এরপর মাহফুজের আচরণ যেন সাবরিনার কাছে মাহফুজ কে আর বিশ্বস্ত করে তুলেছে। আবার সাদমান কে না জানিয়ে এই যাওয়াটা এক ধরনের সংশয় তৈরি করছে ওর মনে। সাবরিনা নিজের মন কে প্রবোধ দিল আরে আমি তো আর কোন গোপন অভিসারে যাচ্ছি না। জাস্ট একটা ফটোগ্রাফি শো দেখতে যাচ্ছি পরিচিত এক জনের সাথে। মনের ভিতর আবার প্রশ্ন উঠল মাহফুজ কি খালি পরিচিত একজন নাকি আর বেশি কিছু। এইসব প্রশ্ন উত্তরে সাবরিনার মনে হল যেন ও একটা গোপন অভিযানে যাচ্ছে। নিজের ভিতর কলেজ গার্ল সুলভ টিনএইজের একটা এডভেঞ্জারের উত্তেজনা তৈরি হল। অন্যদিকে মাহফুজের ভিতর যেন একটা উচ্ছাস তৈরি হল। পুরো সাপ্তাহ ও একটা ফুরফুরে মেজাজে শুক্রবারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকল। মাহফুজ জানে সাবরিনা সিনথিয়ার বোন। কিন্তু ওর মনের মাঝে নিজেই নিজেকে বলছে এইটা একটা ইনসেন্ট ঘোরাঘুরি মাত্র। তবে মনের ভিতর আর দুষ্ট অংশটা যেন হাসতে হাসতেই বলল দিস ইজ এ ডেট মাহফুজ, দিজ ইজ এ ফার্স্ট ডেট। তবে মাহফুজ এইসব ভাবনা কে উড়িয়ে দিল। ওর মনে হতে থাকল সাবরিনার সাথে অফিসিয়াল সেটিং এর বাইরে এই প্রথম ওর সাক্ষাত হবে। কি নিয়ে কথা বলবে ওরা? কথা বলার প্রসংগ থাকবে তো নাকি দেখা যাবে অনেক ফার্স্ট ডেটের মত একটা অকয়ার্ড সাইলেন্স ভর করবে ওদের মাঝে। সাবরিনা সম্পর্কে সিনথিয়া থেকে জানা সব তথ্য মাথার ভিতর ঝালাই করতে থাকল মাহফুজ। মাহফুজের মনে হল ওর সারা জীবনে মেয়েদের পটানোর জন্য কখনো খুব বেশি ইফোর্ট দিতে হয় নি। একমাত্র সিনথিয়ার ক্ষেত্রে ও একটু নার্ভাস ছিল আর তার পর এই সাবরিনা। সিনথিয়ার ক্ষেত্রে ওর প্রায় কিছুই জানা ছিল না কিন্তু সিনথিয়া কে ও পটাতে পেরেছিল আর সাবরিনার অনেক কিছুই ওর জানা। তাই নিজেই নিজেকে শান্তনা দিল, উই উইল হ্যাভ এ গুড টাইম।

শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই সাবরিনার মনে হল দিন টা বুঝি অন্য রকম। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খাবার পর যত বেলা গড়াতে থাকল তত মনের ভিতর উত্তেজনা বাড়তে থাকল। সাবরিনা জীবনে একবার প্রেম করেছে তাও ছয় মাস। প্রথমবার ডেটে যাবার সময় যে উত্তেজনা ফিল করেছিল আজকে যেন এত বছর পর সেই পুরান উত্তেজনা ওর ভিতর। যেন বাসায় লুকিয়ে কাউকে না জানিয়ে ডেটে যাচ্ছে, সেই একরকম বুকের ভিতর হৃদস্পন্দনের বেড়ে যাওয়া, পেটের কাছে একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি। ভয়, উত্তেজনা, নিষিদ্ধ কিছুর আকর্ষণ। সাবরিনা নিজেকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করে, এইসব কিছুই না আসলে, এটা তো একটা জাস্ট মিটিং বিটিইউন টু ফ্রেন্ডলি পার্সন। আজকে দুপুরে সাদমানের এক কলিগের বিয়ের দাওয়াত আছে এরপর সেখান থেকে দৃক গ্যালারিতে যাবে সাবরিনা। তাই এমন কিছু পড়তে হবে যেটা বিয়ে বাড়ির সাথে মানানসই আবার আর্ট এক্সিবিশনে গেলেও কেউ ভ্রু কুচকে তাকাবে না। সাদা কাপড়ের উপর নীল কাজ করা একটা সুতির শাড়ি বের করে সাবরিনা ওর বিশাল শাড়ির কালেকশন থেকে। ডিজাইনার শাড়ি। ঈহার শাড়ি নামে একটা ডিজাইনার হাউজের নিজস্ব শাড়ি। সুতির শাড়ির একটা অন্যরকম আভিজাত্য এনেছে আজকাল ঢাকার কিছু ডিজাইনার হাউজ। ঈহার শাড়ি এর অন্যতম। সুতির শাড়ির উপর হাতের কাজ আর পাড়ে এমব্রেয়ডরি। প্রায় ছয় হাজার দাম। সাথে নীল ব্লাউজ। দশ বছর আগেও সুতির শাড়ি সস্তা শাড়ি হিসেবে বিবেচিত হত আর এখন এই ডিজাইনার হাউজ গুলো এই ধারণা পালেটে দারুণ সব সুতির শাড়ি আনছে। এক সাথে এই শাড়িটা বিয়ে বাড়ির জন্য উপযুক্ত আর আর্ট এক্সিবিশনের ক্রাউডের সাথেও দারুণ মানানসই। শাড়িটা সাদমান কে দেখাল কেমন হবে জানার জন্য, ফোন থেকে মুখে তুলে শাড়িটা দেখল সাদমান, বলল পারফেক্ট হবে এটা। তোমাকে খুব সুন্দর লাগে এই শাড়িটা। সাদমান অবশ্য জানে না ওর স্ত্রী কে যে শাড়ি বাছাই করতে সাহায্য করছে শাড়িটা ওর জন্য নয়, বিয়ে বাড়ির লোকদের জন্য নয়, আর্ট এক্সিবিশনের লোকদের জন্য নয় বরং অন্য একজন কে মুগ্ধ করতে পড়ছে সাবরিনা। সাদমানের কাছে শাড়ির প্রশংসা শুনে মনে হল এটাই বুঝি পারফেক্ট। মাহফুজও এটা পছন্দ করবে। সাবরিনা জানে হঠাত কেন ওর মনে এই কথা টা আসল। এই কথা মাথায় আসতেই আবার বুকের ভিতর ধুকপুক আর পেটের কাছে একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি। এই অনুভূতি নিয়ে গয়না বাছাই করতে বসল। অনেক বেছে একটা গয়নার সেট বের করল। সিক্স ইয়ারস স্টোরি বলে একটা গয়নার দোকান আছে ওদের রুপার কাজ করা একটা গয়ানা কিনেছিল দুই বছর আগে। খুব একটা পড়া হয় নি। আজকের জন্য পারফেক্ট। একদম এই শাড়ির সাথে মানিয়ে যাবে। খুব বেশি কাজ না গয়নাতে তবে একটা স্নিগ্ধ ভাব আনবে ওর গেটাপে। সাজতে সাজতে আয়নার দিকে যখন তাকিয়ে ছিল তখন পিছন থেকে সাদমান বলল কিলার গেটাপ। সাবরিনা হাসি দিল। খুব অল্প সময় সাদমান ওর গুরুগম্ভীর চেহারার আড়াল থেকে অফিসের হিসাব নিকাশের বাইরে কথা বলে। তাই আজকে এই প্রশংসা হেসে গ্রহণ করল সাবরিনা। আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখতে মনের ভিতর একটু কনফিউশন হল সাথে যেন। এই যে ওকে কম্পিমেন্ট দিচ্ছে সাদমান কিন্তু বেচারার জানা নাই এই সাজ টা ওর জন্য না, এই কিলার লুকের লক্ষ্য অন্য কেউ। আয়নায় সাবরিনা নিজে কে দেখে সাদমানের হঠাত এই প্রশংসার কারণ বুঝতে পারে। রক্ষণশীল বাংগালী . পরিবারে জন্ম নেওয়ায় ছোটবেলা থেকে কতগুলো স্পেসিফিক সংস্কার মাথার ভিতর গেথে দেওয়া হয়েছিল। এর একটা ছিল শরীর দেখিও না। বাড়ির বড় মেয়ে এবং নিয়ম মানা মেয়ে হিসেবে সব সময় এটা মেনে এসেছে। কাউকে শরীর দেখিয়ে মুগ্ধ করবে এই চিন্তায় কখনো কাপড় পড়ে নি সাবরিনা। সেটা ওয়েস্টার্ন বা দেশি যেই ড্রেস হোক না কেন। এত রেখেঢেকে কাপড় পড়ার পরেও ওর শরীরের প্রেমে যে লোকে পড়ে সেটা সাবরিনা জানে, সেটা নিয়ে মনে গোপন অহংকার থাকলেও নিজ থেকে কখনো শরীরের প্রদর্শনীতে সাবরিনা কখনো যোগ দেয় নি। আজকে আয়নায় সাবরিনা শাড়িতে নিজেকে দেখে অবাক হয়ে যায়। সাদা কাপড়ে নীল নকশা করা শাড়িটা যেন ওর কথা মাথায় রেখে তৈরি করা। এক বছর আগের ব্লাউজটা যেন এখন শুরুর থেকে আর বেশি টাইট। এক সাইডে দিয়ে রাখা আচল। সাইড ভিউ থেকে আয়নায় দেখে। বুবস গুলো উদ্ধত হয়ে আছে। সবসময় নাভীর বরাবর শাড়ি পড়লেও আজকে সেটা নাভী থেকে দুই আংগুল নিচে। সাইড ভিউ থেকে আবার নিজের পিছন দিকটা দেখে। মাড় দিয়ে আয়রন করা শাড়িটা একদম ভালভাবে শরীরে জড়িয়ে আছে। সাবরিনা জানে ওর পাছা বেশ ভাল দেখতে। এই শাড়ি যেন সেটার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এছাড়া সাধারণত মেকাপ ইউজ করে না তবে আজকে হালকা মেকাপ দিয়েছে। একটা গোলাপী জেল্লা বের হচ্ছে যেন চেহারা থেকে। ঘাড়ের কাছে এক গোছা চুল খোপার অবাধ্য হয়ে যেন গলার অলংকার হয়ে রয়েছে। অন্য সময় হলে এই শাড়িটাই সাবরিনা অন্য রকম করে পড়ত। ওর সৌন্দর্য কে আড়াল করে রাখত। আজকে এই সাজ দেখে সাবরিনার অবচেতন মনের ইচ্ছা কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহে পড়ে যায় সাবরিনা নিজেই।

সাদমান সাবরিনার বিয়ের দাওয়াত ছিল ধানমন্ডিতে, হোয়াইট হল নামে একটা কমিউনিটি সেন্টারে। বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকেই সাবরিনার সাজের প্রশংসা করল। খাওয়া দাওয়া শেষে পরিচিত লোকদের সাথে কথা বলতে বলতে মাহফুজ কে মেসেজ পাঠাল সাবরিনা সোয়া চারটার দিকে দৃকে থাকবে। দৃকও ধানমন্ডিতে। বেশিক্ষণ লাগবে না বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পৌছাতে। চারটার দিকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বের হল সাবরিনা। সাদমান সাবরিনা কে দৃকের সামনে নামিয়ে দিয়ে গেল, পরে আসার সময় লিফট লাগবে কীনা জিজ্ঞেস করল। সাবরিনা বলল দরকার নেই, ও নিজেই চলে যাবে। সাদমান খুশি হল মনে হয় কেননা তাহলে আর বেশিক্ষণ আড্ডা দিতে পারবে। দৃকের সামনে এসে মেসেজ দিল সাবরিনা, আমি এসেছি আপনি কই। মাহফুজ দুই মিনিট পর সামনে হাজির হল, বলল ভিতরে ছিল। সাবরিনা বলল তাহলে বাইরে আসার দরকার ছিল না, মেসেজ দিলেই হত। মাহফুজ বলল আরে আপনাকে রিসিভ করতে এসেছি। সাবরিনা মনে মনে বলল জেন্টেলম্যান। মাহফুজ একটা জিন্সের প্যান্ট, পোলো শার্ট আর কেডস পরে এসেছে। মানিয়েছে ভাল। আজকে দাড়ি ছেটে ক্লিন শেভেড হয়ে এসেছে। অনেক ছেলে কে ক্লিন শেভ করলে বাচ্চা বাচ্চা লাগে। মাহফুজের জন্য ব্যাপারটা সেরকম না বরং একটা ধারালো সৌন্দর্য আছে ওর চেহারায়। গালটা অত মসৃণ না, বড় চোখ সব, কপালের এক সাইডে ছোট করে অনেক আগের একটা কাটা দাগ। সব মিলিয়ে একটা মিস্টেরিয়াস ভাব ফুটে উঠে চেহারায়। পাশ দিয়ে গেলে যে কোন মেয়ে আরেকবার তাকাবে। সাদমানের অবস্থাও তখন ঠিক অনেকটা বাকহারার মত। সাবরিনা কে এতদিন অফিস সেটিং এ দেখে এসেছে। সাবরিনা সব সময় সুন্দর কিন্তু আজকে যখন বিশেষ করে সেজে এসেছে তখন মাহফুজের মুখ দিয়ে কথা সরছিল না কয়েক সেকেন্ড। এত সুন্দর। নীল শাড়ি, নীল ব্লাউজ আর গলায় একটা রূপার মালায় যেন মনে হচ্ছিল স্বাক্ষাত দেবী। তবে এই দেবী কে দেখলে কাম দেবতা জাগ্রত হয়। মাহফুজ টের পায় ওর বুকে একটা ধুকপুকানি হচ্ছে আর নিচে প্যান্টের ভিতর কাম দেবতা জাগ্রত হয়ে উঠছে। এক সাথে প্রেম আর কামের এই সম্মিলন এতদিন শুধু সিনথিয়া করতে পেরেছিল ওর জীবনে। সাবরিনা যেন এইখানে বোনের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে।

দৃকের ভিতর সাবরিনা মাহফুজ বেশ কিছুক্ষণ থাকল। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ছবি দেখছিল ওরা। সাবরিনা ছবি গুলা নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও মাহফুজ চুপ করে ছিল। সাবরিনা যখন ভাবছিল মাহফুজের বুঝি এই ছবি নিয়ে আগ্রহ নেই খালি ওকে সংগ দেবার জন্য এসেছে তখন মাহফুজ আসলে কথা বলার বদলে সাবরিনার সৌন্দর্য দুই চোখ দিয়ে গিলছিল। ওর মনের মাঝের দুষ্ট অংশটা যেন বলছিল যত পারিস এই অমৃতসুধা পান করে নে, পরে আর কোন দিন পাস কীনা কে জানে। ভাল করে পান করে নে তাহলে রাতে ভাল করে এই অমৃত সুধা দিয়ে কাজ সারতে পারবি। নিজের ভিতর এমন চিন্তায় মাহফুজ একটু লজ্জা পেলেও সাবরিনার সৌন্দর্য দুই চোখ দিয়ে গিলতে একটুও ইতস্তত করছিল না। এর মধ্যে সাবরিনার বন্ধুর সাথে দেখা হল যার প্রদর্শনী। সাবরিনা মাহফুজ কে কলিগ বলে পরিচয় করিয়ে দিল, বলল এখানে এসে দেখা হয়েছে। মাহফুজ আড় চোখে তাকাল সাবরিনার দিকে, সবারিনা অবলীলায় মিথ্যা বলে বন্ধুর সাথে কথা বলছে যেন কিছুই হয় নি। মাহফুজ মনে মনে ভাবল মিস গুডি টু সুজ ইজ নট দ্যাট সিম্পল। কী অবলীলায় একটা মিথ্যা বলে দিল। দেখা শেষ হতেই দুইজন বের হল। মাহফুজ ভাবছিল এই বুঝি ওদের এই বিকালবেলার দেখা হওয়াটা এখনি শেষ হয়ে যাবে। মাহফুজ তখন যেন সাবরিনা কে আটকে রাখবার ছুতা খোজায় ব্যস্ত।

মাহফুজ তাই তখন তার আজকের দিনের ট্রাম্প কার্ড বের করল। মাহফুজ জীবনে বহু কিছু ট্রাই করেছে। একসময় ফটোগ্রাফি নিয়ে শখ ছিল। এমনকি দেশের প্রথম ফটোগ্রাফী কলেজ পাঠশালায় দুই মাসের একটা কোর্স করেছিল বছর দশেক আগে। ফটোগ্রাফীর বেসিক জ্ঞান তাই ওর আছে। সিনথিয়ার কাছে শুনেছিল সাবরিনার ফটোগ্রাফী নিয়ে আগ্রহ আছে তাই আজকে আসার আগে ওর বছর দশেক আগের জ্ঞান ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিনের বদৌলতে ঝালিয়ে নিয়েছিল। তাই এতক্ষণ দেখা ছবি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করল। একটা ছবি আছে গুলিস্থানের ফুটফাতে সন্ধ্যার সময় এক বাদাম বিক্রেতা আর তার ক্রেতার। সাদা কালো ছবি। ডেপথ অফ ফিল্ড এর কারণে মূল সাবজেক্ট বাদাম বিক্রেতা আর তার ক্রেতার বাইরে বাকি সবাই ঝাপসা হয়ে গেছে। এই ডেপথ অফ ফিল্ড এখানে বুদ্ধিমানের মত ব্যবহার করা হয়েছে, ঝাপসা হয়ে যাওয়া পিছনের জন সমুদ্র আর তার সামনে অফিস ফেরত ক্লান্ত ক্রেতা আর জীবন লড়ায়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাওয়া বাদামওয়ালার শক্ত মুখ। যেন ঢাকার একটা প্রতিচ্ছবি, এক কথায় ঢাকা শহর কে এমন সুন্দর করে তুলে ধরা যেত না। মাহফুজ কথা গুলো বলা শেষ করে খেয়াল করে সাবরিনা অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আসলে সাবরিনার জন্য মাহফুজের এই ছবির বিশ্লেষণ একটা চমকের মত ছিল। সাবরিনার ধারণা ছিল মাহফুজ হয়ত ওর প্রতি মায়া করে এই সংগ দিতে চেয়েছে, ফটোগ্রাফীর প্রতি তেমন কোন উৎসাহ নেই ওর। তবে এই মাত্র মাহফুজের কথা শুনে বুঝল ফটোগ্রাফী সম্পর্কে ভাল ধারণা আছে এই ছেলের, অন্তত যেভাবে ওর বন্ধুর তোলা সাদাকালো ছবি টা বিশ্লেষণ করল সেভাবে ওর সাথে এইসব প্রদর্শনীতে নিয়মিত আসা ওর ফ্রেন্ড সার্কেলের অন্যরা পারবে কীনা সেটা নিয়ে সাবরিনা সন্দিহান। এইসব ফটোগ্রাফী প্রদর্শনী বা গানের সার্কেলে আসা লোকজন যতটা না শিল্পের টানে আসে তার থেকে বেশি আসে সোসাইটি মেইনটেইন করতে, নিজের ক্লাস উচু করতে। সেখানে মাহফুজ কে আগে থেকেই সাবরিনা ধরে রেখেছিল এই ব্যাপারে অজ্ঞ হবে কিন্তু মাহফুজ ঠিক উলটা প্রমাণ উপস্থান করে ওকে বাকহারা করে দিয়েছে। সাবরিনা কে চুপ করে থাকতে দেখে মাহফুজ একটু ভড়কে গেল, ভাবল এতদিনের পুরান জ্ঞানে বুঝি ভুলভাল কিছু বলল। তাই ভুল কিছু বলে থাকতে তার দায় এড়াতে বলল, আসলে এইটা আমার মত, ভুল হতে পারে, আপনি এইসবের আর বেশি সমজদার। সাবরিনা বলল, আরে না, না। আপনি চমতকার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আপনি যে ফটোগ্রাফীও জানেন এইটা আসলে আমাকে অবাক করেছে। আপনার এক অংগে অনেক রূপ। তাই অবাক হচ্ছি।

কথার জালে ফেলবার ক্ষেত্রে মাহফুজ ওস্তাদ। তাই সাবরিনার কথা প্রসংগে বলল, কেন ম্যাডাম, কি ভেবেছিলেন, আমার মত পলিটিক্স করা আনকালচার্ড লোকজন ছবির কী বুঝবে? মাহফুজের এই কথায় সাবরিনা একদম অপ্রস্তুত হয়ে গেল। এইভাবে ওর কথা ব্যাকফায়ার করবে সেটা বুঝতে পারে নি, আর পলিটিক্যাল লোকজনদের সম্পর্কে ওর মনের গোপন ভাব এইভাবে মাহফুজ ধরে ফেলবে সেটাও আন্দাজ করতে পারে নি। তাই বিব্রত হয়ে গেলে অনেক সময় মানুষ যেমন অনেক কথা বলে নিজেকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করে, সাবরিনা তাই করছিল। সাবরিনা হড়বড় করে নিজের কথা ডিফেন্ড করে মাহফুজের ছবি বিশ্লেষণের প্রসংসা যখন করছিল তখন খেয়াল করে দেখে মাহফুজ মিটিমিটি হাসছে। সাবরিনা মাহফুজ কে হাসতে দেখে আর বিব্রত হয়ে গেল, ভাবল আবার ভুলভাল কিছু বলে দিল কীনা। কনফিডেন্ট স্মার্ট সাবরিনার বর্মে সহজে লোকজন ফাক খুজে পায় না কিন্তু মাহফুজ যেন এখানে সুড়ংগ খুড়ে ফেলেছে। সাবরিনা তখন বলেই চলেছে, মাহফুজ সাহেব আমি আসলেই তেমন কিছু মিন করি নি, আমি আসলে অবাক হয়েছিলাম আপনি ছবি সম্পর্কে এতকিছু জানেন বলে। আমি ভেবেছিলাম আপনি খালি আমি একা আসব বলে আমাকে সংগ দিতে আসতে চেয়েছেন কিন্তু আপনিও যে ছবি ভালবাসেন সেটা জানতাম না। আপনি ভুল বুঝে থাকলে স্যরি। মাহফুজ এবার জোরে একটা হাসি দিল। সাবরিনা যেন আর নার্ভাস হয়ে গেল, মনে হচ্ছে কলেজ লাইফের ম্যাথ ক্লাসে সবার সামনে বোর্ডে অংক ভুল করলে সাবিহা ম্যাডাম যেমন একটা হাসি দিতেন তেমন হাসি দিচ্ছে বুঝি মাহফুজ। বেশি বিব্রত হলে মানুষের হার্ট রেট বাড়ে হয়ত তাই অল্প কয়েক মিনিটের মাঝেই সাবরিনার কপালে ঘামের রেখা। মাহফুজ এইবার বলল রিলাক্স ম্যাডাম, রিলাক্স। আমি জাস্ট লেগ পুলিং করছিলাম, আর কিছু না। একটু দুষ্টমি আর কি। তবে আপনি একটা কথা ভুল বলেছেন। আমি আপনি লোনলি ফিল করবেন দেখে এসেছি এটা পুরো সত্য না, আপনার সাথে কিছুটা সময় কাটানো যাবে এটাই আমার মূল উদ্দ্যেশ। সারাদিন অফিস সেটিং এ আমাদের দেখা হয় তাই এর বাইরে আপনাকে দেখার কৌতুহল ছিল। সাবরিনা মাহফুজের উত্তর শুনে হাফ ছেড়ে বাচল। বলল, আপনি তো ভারী দুষ্ট আছেন দেখি। অফিসে আপনাকে দেখলে অনেক সিরিয়াস লোক মনে হয়। মাহফুজ উত্তর দিল ভাল করে মিশার সুযোগ কই দিলেন ম্যাডাম, নাহলে আমাকে কাঠখোট্টা বলতে পারতেন না। সাবরিনা আবার ওর উত্তর ডিফেন্ড করে কথা বলতে গিয়েই টের পেল মাহফুজ হাসছে। এইবার লেগ পুলিং টের পেয়ে সাবরিনা হাসতে বলল আপনি পারেন বটে। আপনার ভিতরে ভিতরে যে এত শয়তানি কে জানত। মাহফুজ বলল যাই বলেন আপনি হাসলে আপনাকে সুন্দর লাগে তবে আপনি যখন বিব্রত হয়ে একটু আগে ঘামছিলেন তখন আর বেশি সুন্দর লাগছিল। জীবনে অনেকবার অনেকরকম প্রসংশা শুনেছে সাবরিনা কিন্তু বিব্রত হলে ওকে সুন্দর লাগে এটা প্রথম। আর আরেকটা জিনিস খেয়াল করল অন্য কেউ এইভাবে সরাসরি ওর রূপের প্রসংশা করলে অড লাগত কিন্তু মাহফুজ কত ইজি এন্ড কনফিডেন্টলি এটা বলল যেন এটা বলাই স্বাভাবিক। মাহফুজ এইবার কনফিডেন্ট যে সাবরিনা বেশ ইজি হয়ে উঠছে ওর সাথে। তাই বেশ সাহসের সাথেই বলল চলুন হাটতে হাটতে গল্প করি, নাকি চলে যাবার ইচ্ছা আছে। সাবরিনা বলল না, না চলুন। অনেকদিন এভাবে হেটে হেটে গল্প করা হয় না।

মাহফুজ আর সাবরিনা দৃক গ্যালারির সামনে থেকে ধানমন্ডির অলিগলির ভিতর উদ্দ্যেশহীন ভাবে হাটতে থাকল। গল্প করতে করতে সাবরিনা টের পেল গল্প করার সাথী হিসেবে মাহফুজ চমতকার। সাবরিনাদের অফিস গসিপ, মাহফুজের পলিটিক্স, আজকের ছবির প্রদর্শনী এইসব নিয়ে কথা বলতে বলতে কখন যে দেড় ঘন্টা চলে গেল টের পেল না সাবরিনা। হাটতে হাটতে নিজেদের একসময় আবহানী মাঠের সামনে আবিষ্কার করল ওরা নিজেদের। বেশ অনেক সময় গেছে, হাটা হাটি করায় এই ভ্যাপসা গরমে একটু ক্লান্ত লাগছে। মাহফুজ প্রস্তাব দিল চলেন কফি খাই চাংগা লাগবে। ঠিক হল ধানমন্ডি সাতাশের ওখানে কফি ওয়ার্ল্ডে যাওয়া হবে। একটা রিক্সা নিল এবার, ছুটির দিন বিকাল বেলা ধানমন্ডি সাতাশের দিকে একটু ভীড় হয় তাই অল্প স্বল্প জ্যাম ঠেলে রিক্সা আস্তে আস্তে এগুচ্ছে। এই প্রথমবার মাহফুজ সাবরিনার পাশে রিক্সাতে বসল। সাবরিনার এত কাছে আর কখনো বসা হয় নি। সাবরিনার পারফিউমের গন্ধ যেন একবারে নাকে এসে লাগছে। ঢাকার রিক্সা এমনিতেও একটু ছোট, তাই দুইজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ পাশাপাশি বসলে শরীর না লাগিয়ে বসার উপায় নেই। মাহফুজ টের পেল দুইজনের কোমড় থেকে পাছার অংশটা একদম সেটে আছে পরষ্পরের সাথে। সরেও বসার উপায় নেই কারণ রাস্তায় খোড়াখুড়ির কাজ চলায় রিক্সা চলছে একদম দুলে দুলে। তাই তাল সামলানোর জন্য ভিতরের দিকে সরে বসতে হচ্ছে। প্রতিবার রাস্তার কোন ভাংগা অংশে পড়ে রিক্সা যখন দুলে উঠছে সাবরিনা আর মাহফুজের পাছা রিক্সায় স্পর্শ হচ্ছে। সাবরিনা প্রথম দিকে খেয়াল না করলেও একটু পর খেয়াল করে লজ্জায় লাল হতে থাকল। আড়চোখে তাকিয়ে দেখে মাহফুজ সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। আসলে মাহফুজ সাবরিনার শরীরের স্পর্শ উপভোগ করছিল কিন্তু কোন বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সামনে তাকানোর ভান করছিল। এরমধ্যে রিক্সা একটা বড় গর্তে একটা চাকা পড়ল, তাই ভাল ভাবে দুলে উঠতেই তাল সামলানোর জন্য সাবরিনা রিক্সার হুডে একহাত আর অন্যহাত মাহফুজের উরুতে দিতে হল। উরুতে হাত পড়তেই মাহফুজের মনে হল যেন গরম একটা ভাপ বের হওয়া শুরু হয়েছে ওর কান দিয়ে। সাবরিনার হাত উরুর যথেষ্ট উপরে, আর কয়েক ইঞ্চি সামনে এগুলেই বিপদজনক জায়গা। সাবরিয়ান কি ইচ্ছে করে হাত দিল? ভাল করে খেয়াল করতে দেখল সম্ভবত না, সাবরিনা তখনো রাস্তার খানাখন্দে দুলে উঠা রিক্সায় তাল সামলাতে ব্যস্ত তাই ওর হাত কোথায় ল্যান্ড করেছে সেদিকে খেয়াল নেই। সাবরিনা মাহফুজ কে তাকিয়ে থাকতে দেখে দৃষ্টি অনুসরণ করে বুঝল হাত ভুল জায়গায় রেখেছে, দ্রুত হাত সরিয়ে নিতে নিতে বলল স্যরি। মাহফুজ বলল আরে না, এত স্যরি হবার কিছু নেই, রাস্তার যা অবস্থা। সাবরিনা খালি বলল, তাও স্যরি। মাহফুজ বলল আমার কিন্তু ভাল লাগছিল, চাইলে আবার হাত রেখে তাল সামলাতে পারেন। সাবরিনা এইবার লজ্জায় লাল হয়ে গেল। মাহফুজ ঘাড় ঘুড়িয়ে সাবরিনার দিকে তাকিয়ে বলল লজ্জায় লাল হলে আপনাকে খুব সুন্দর লাগে। সাবরিনা যেন আর লাল হয়ে গেল। ওর এত বছরের জীবনে আর কাউকে এত কনফিডেন্টলি ফ্লার্ট করতে দেখে নি। আর এমনভাবে উরুতে হাত রাখার কথা বলল যেন এটাই স্বাভাবিক। একদিকে লজ্জা পেল আবার অন্যদিকে মাহফুজের এই কনফিডেন্টলি ফ্লার্টিং যেন সাবরিনার মনের গোপন খাতায় মাহফুজের পয়েন্ট আরেকটু বাড়িয়ে দিল। সাবরিনা খালি বলল শয়তান। মাহফুজ উত্তর দিল শয়তানি তো কিছুই করলাম না ম্যাডাম, তাও এই অপবাদ।

কফি হাউজে পৌছে দুইজনে দুইটা কফি আর সাথে দুইটা পেস্ট্রি নিল। পশ দোকান, ভিতরে এসি আর সবাই খুব নিচু স্বরে কথা বলছে, মাঝে মাঝে টুংটাং শব্দ চামচের। ব্যাকগ্রাউন্ডে কোন একটা স্প্যানিশ গান বাজছে। ভিতরের এসির মৃদুমন্দ বাতাসে কোমল আলোর নিচে ওদের আড্ডা আর জমে উঠল। সাবরিনা যে এত কথা বলে মাহফুজ বুঝে উঠতে পারে নি। সিনথিয়া সব সময় বলে এসেছে ওর আপু মুডি, কম কথা বলে। আর অফিসের ইন্টারেকশ্যনেও মনে হয়েছিল কথা বলতে পছন্দ করে সাবরিনা। তাই অবাক হয় মাহফুজ। সাবরিনাও টের পায় স্বাভাবিকের থেকে বেশি কথা বলছে আজ ও। আসলে কর্পোরেট চাকরি, দৈনন্দিন সংসার সব মিলিয়ে হাফিয়ে উঠছিল সাবরিনা। কোথাও মন খুলে কথা বলার উপায় নেই। অফিসে শত্রু বেশি, বন্ধু বলতে ঐ এক সামিরা। ভার্সিটির বন্ধুরা কেউ দেশের বাইরে, কেউ সংসারী আর বাকিরা ব্যস্ত। সাদমান যে ওকে কিছুটা ভয় পায় এটা সাবরিনা টের পায়। আর সাদমান আর ওর পছন্দের জিনিসের আকাশপাতাল ফারাক। এরপর সাদমান যেন সব কিছুই মেনে নেয় সাবরিনার, কোন মতামতে দ্বিমত করে না। সাবরিনার মাঝে মাঝে মনে হয় সাদমানের কাছে ও বুঝি একটা অফিস প্রজেক্ট, যেখানে কোনভাবেই কাস্টমার কে ক্ষেপানো যাবে না। সদা সতর্ক, আবেগ প্রকাশে সাবধানী। সেইখানে মাহফুজের কনফিডেন্ট, দিলখোলা ব্যক্তিত্ব সাবরিনার জন্য খোলা হাওয়া। এতদিনের মনের ভিতর জমানো কথা যেন সব তাই হুড়হুড় করে বের হয়ে আসছে। মাহফুজ সব সময় ভাল স্রোতা। তারপর কথার মাঝে মাঝে নিজের মতামত দিয়ে বুঝিয়ে দেয় মনযোগ দিয়ে শুনছে সে, আবার যেই জায়গায় সাবরিনার সাথে একমত হতে পারে না সেই জায়গায় নিজের ভিন্ন মতামত উপস্থাপন করছে। সাবরিনার ভয়ে একটুও ভীত না। সাবরিনার এখনকার জীবনে কেউ ওর ভয়ে ভীত, কেউ ওকে তুষ্ট করতে ব্যস্ত তাই মাহফুজের এই অনেস্ট অপিনিয়ন গুলো ভাল লাগে, যেখানে মাহফুজ একটু সাবরিনা কে ছোট করছে না বরং কেন মাহফুজ সাবরিনা থেকে ভিন্ন ভাবে ভাবছে সেটা দেখিয়ে দিচ্ছে। মাহফুজের এই রেসপেক্টফুল কিন্তু ডিফারেন্স ইন অপিনিয়ন সাবরিনার মনে মাহফুজের সম্মান আরেকটু বাড়িয়ে দেয়। আসলেই এই লোকটা একটা সারপ্রাইজ প্যাকেট। যে কোন সময় চমকে দিতে পারে।

সাবরিনার সাথে কথা বলতে বলতে মাহফুজের নজর অন্য একটি টেবিলের দিকে যায়। ঠিক দেখছে কিনা বুঝবার জন্য আর ভাল করে তাকিয়ে বুঝে ঠিক দেখছে ও, দেখে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। সাবরিনা মাহফুজের মুচকি হাসি দেখে ভাবে ওর বেশি কথার জন্য বুঝি হাসছে। তাই বলে আমি বেশি কথা বলে ফেলছি তাই না। মাহফুজ বলে আরে না। সাবরিনা বলে তাহলে হাসছেন কেন? মাহফুজ বলে, বলতে পারি তবে রাগ করতে পারবে না কিন্তু। সাবরিনা বলে আচ্ছা করব না, বলেন হাসছেন কেন। মাহফুজ ঘাড় ঘুরিয়ে ইশারা করে দেখায়। সাবরিনা প্রথমবার বুঝতে পারে না, চোখ উচিয়ে জিজ্ঞেস করে কি। মাহফুজ আস্তে করে বলে কোণার টেবিলটা খেয়াল করেন। সাবরিনা তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে বসে আছে, দেখে মনে হয় কলেজ বা ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার হবে। মেয়েটা একটা টপস আর স্কার্ট পড়া, ছেলেটা নরমাল জিন্স গেঞ্জি। সাবরিনা তাও বুঝে উঠতে পারে না তাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় মাহফুজের দিকে। মাহফুজ এইবার একটু হতাশ ভংগিতে বলে আপনি বেশি গুড গার্ল। সাবরিনা উত্তর দেয়, না বললে বুঝব কীভাবে। মাহফুজ এইবার সাবরিনার কানের কাছে এসে বলে ছেলেটার হাত খেয়াল করেন আর মেয়েটার মুখ। সাবরিনা খেয়াল করে দেখে ছেলেটার হাত মেয়েটার স্কার্টের ভিতর, আর স্কার্টের নড়াচড়া দেখে বুঝা যায় ভিতরে হাত নড়ছে, মেয়েটার চোখ আধবোঝা আর একটু পর পর মাছের মত মুখটা একটু খুলছে আর বন্ধ হচ্ছে। সাবরিনা হঠাত বুঝতে পারল কি হচ্ছে। কোণার টেবিলটা একটা থামের আড়ালে পড়ে আছে ফলে অন্য কোন টেবিল বা কাউন্টার থেকে দেখা যায় না। খালি ওদের টেবিল থেকে আংশিক দেখা যাচ্ছে। আবার আলো আধারির মধ্যে একটা মাদকতাময় স্প্যানিশ সঙ্গীত যেন অপূর্ব সংমিশ্রণ। দেখে যেন মনে হচ্ছে কোন একটা সিনেমার দৃশ্য দেখছে, সামনেই ঘটছে কিন্তু বাস্তব না। সাবরিনা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। মাহফুজ বলল আপনি গুড গার্ল নাহলে বলতাম দেখুন এবং মজা নিন, এই বলে নিজের রসিকতায় নিজেই হাসতে থাকে। সাবরিনার চোখ না চাইতেই আবার চলে যায় মেয়েটার চোখ সুখের আবেশে বন্ধ হয়ে আসছে আর ঠোট গুলো একবার খুলছে আরেকবার বন্ধ হচ্ছে। দেখে সাবরিনার সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ খেলে যায়। পেটের কাছে শিরশিরানি, বুকে ধুকপুক। মাহফুজ ওর রিএকশন খেয়াল করছে টের পেয়ে যেন বেড়ে যায় ওর শরীরের প্রতিক্রিয়া। একদিকে গুড গার্লের ইমেজ বাচানোর ইচ্ছা, অন্যদিকে নিষিদ্ধ জিনিস দেখার আকর্ষণ আবার মাহফুজের ওকে ভাল করে লক্ষ্য করা সব মিলিয়ে একটা বিব্রতকর অবস্থা। কিন্তু সাবরিনার তার পরেও ভাল লাগে, সাদমান হয়ত এইসব দেখলে বলত ছি, আজকাল এইসব জায়গা নষ্ট হয়ে গেছে, এরপর আসা যাবে না। সেখানে মাহফুজ এটাকে স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছে, আবার নিষিদ্ধ জিনিস দেখার যে আগ্রহ সাবরিনার সেটাও লক্ষ্য করে বুঝার চেষ্টা করছে। এসির ভিতরেও যেন সাবরিনা ঘামতে থাকে। একটু পর ওয়েটার ঐ টেবিলের দিকে এগোলে ছেলেটা হাত বের করে নেয়, মেয়েটা স্কার্ট ঠিক করে। মাহফুজ সাবরিনার দিকে তাকিয়ে বলে আজকের শো শেষ। সাবরিনা একটু বিব্রত হয় তবে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়ায় আশাহত হয়। সাবরিনার চেহারায় আশা ভংগের চিহ্ন দেখে মাহফুজ হাসতে থাকে। আর লাল হয় সাবরিনা।

কফি শেষে দুইজনে বের হয়ে আসে। বাইরে সন্ধ্যা নামছে, আকাশে শেষ বিকালের লাল আলো। রাস্তার ধারে কারেন্টের লাইনে কাকের সারি। ঘরে ফেরত যাবার আগে যেন বিশ্রাম নিচ্ছে কারেন্টের লাইনে বসে। সাবরিনার মনে হয়ে মাঝখানে এতদিনের কাজের চাপ, ঐ রাতের ঘটনা গোপন রাখার প্রেসার, দৈনন্দিন সংসারের ক্লান্তি সব মিলিয়ে মনের ভিতর যে ভাড় টা ছিল তা যেন এক বিকালের আলাপে হালকা হয়ে গেছে। বাসায় ফিরে যেতে ইচ্ছা করে না সাবরিনার। সাদমান কে ফোন দেয়। সাদমান বন্ধুদের সাথে, পিছনে হাসাহাসির শব্দ আসে। সাদমান ওকে বলে দুই সাপ্তাহ বাবা-মা কে দেখতে যাও না, আজকে ঐখানে চলে যাও। তোমার ভাল লাগবে। সাবরিনা বুঝে ও বাবা-মায়ের ওখানে গেলে রাতে থেকে যাবে তাই সাদমানের আড্ডার আর সুবিধা হবে, রাত বারটা একটার সময় ফিরলেও ঘরে কেউ কিছু বলবে না। অন্যদিন হলে সাদমান কে একটা ঝাড়ি মেরে বলত তুমিও চল শ্বশুড় বাড়ি, কিন্তু আজকে কিছু বলল না। বলল ঠিকাছে। ফোন রাখার পর মাহফুজের দিকে তাকিয়ে এত তাড়াতাড়ি এই সন্ধ্যা শেষ করতে ইচ্ছা করে না সাবরিনার। বলে চলেন আরেকটু হাটি। মাহফুজ বলে ঠিকাছে তবে মনে মনে অবাক হয়। মাহফুজ ভেবেছিল সন্ধ্যা হলে হয়ত আজকের এই অভিযান শেষ হয়ে যাবে। তাই আজকের এই সময়টা আরেকটু লম্বা হওয়ার চান্স পেয়ে খুশি হয়। কফি ওয়ার্ল্ড থেকে বের হয়ে সাতাশের পাশ দিয়ে লালমাটিয়ার গলি গুলোতে ঢুকে পড়ে দুইজন। সাবরিনা আর মাহফুজ কথা বলে চলছে। সন্ধ্যার আলো আর কমে আসতে থাকে। রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের আর পাশের ফ্ল্যাট বাড়ি গুলো থেকে আসা আলোয় রাস্তা আংশিক আলোকিত। এই আলো আধারির রাস্তায় সাবরিনার মনের কথা বলতে সুবিধা হয়। মাহফুজের মত মনযোগী শ্রোতা আর এই আলো আধারির রাস্তা এবং সাথে এতদিনের মনের ভিতর চাপিয়ে রাখা কথার মেলা সব মিলে সাবরিনার মনে হয় মনের সব কথা বলবার বুঝি এইতো সময়। মাহফুজ অবাক হয়ে যায় এই স্ট্রং, ইন্ডিপেন্ডেন্ট মেয়ের ভিতরে এত চাপা ক্ষোভ লুকিয়ে ছিল। যাকে সবাই আড়ালে ডমিনেটিং বিচ ডাকে তার ভিতরের সফট সাইড টা মাহফুজ কে অবাক করে দেয়। সিনথিয়ার সাথে এক জায়গায় যেন এখানে মিল পায় সাবরিনার। এই সমাজে মেয়েদের যতই ইন্ডেপেন্ডিং আর স্মার্ট করে গড়ে তুলা হোক না কেন তাদের মনের গোপন কথা, ভার্নারেবিলিটি প্রকাশ করার জায়গা খুব কম। একটু ভংগুড় মানসিক অবস্থা প্রকাশ করলেই মেয়ে মানুষ চাপ সহ্য করতে পারে না বলে তাদের দমিয়ে দিবে। তাই সাবরিনা,সিনথিয়াদের মত মেয়েরা তাদের ভিতরের চাপা কষ্ট গুলো চেপে রাখে। তাই যখন সহানুভূতিশীল একজন মানুষ পায় তাদের ভার্নারেবিলিটি গুলো আর চাপা রাখতে পারে না।
Next page: Update 15
Previous page: Update 13