Update 17



সাবরিনা মাহফুজ কে কিভাবে ফেস করবে এটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না। আসলে মাহফুজের প্রতি ওর ফিলিংসটা কী সেটা নিয়ে নিজেই একটা দ্বন্দ্বে আছে সাবরিনা। ওদের অফিসের একটা কাজে খালি মাঝখানে মাহফুজ একটা ফোন দিয়েছিল। তখন সাবরিনা এমন ভাবে কথা শুরু করল যেন মাঝখানে কিছুই হয় নি। সেই শুক্রবার দিনটাই যেন হাওয়া হয়ে গেছে পৃথিবীর ইতিহাস থেকে। মাহফুজ নিজেও কিছু বুঝতে দিল না ওর গলার স্বরে। তবে সাবরিনার এত শান্ত আচরণে একটু অবাক হল। মাহফুজ ভেবেছিল দুইটা প্রতিক্রিয়া হতে পারে সাবরিনার। এক, হয়ত ফোন ধরবে না অথবা দুই, ফোন ধরে আগের দিনের বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইবে। এই দুইটার কিছু সাবরিনা করল না দেখে মাহফুজ অবাক হল। এমন না যে মাহফুজের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে বরং একদম নরমাল স্বাভাবিক ব্যবহার। মাঝখানে কিছুদিন যেমন শীতল ব্যবহার করেছিল সেরকম কিছুও করল না। সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর যেমন একটা নরমাল ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেটাই যেন বজায় আছে। কোন প্রতিরোধ নেই আবার কোন রকম প্রাপ্তি স্বীকার নেই, স্রেফ অস্বীকার। মাহফুজ তাই কিছুটা ধাধায় পরে গেল। ওর পরের পদক্ষেপ কী হবে? মানুষ নিজের উদ্দ্যেশ সফল করার জন্য অনেক যুক্তি দাড় করায়। তাই মাহফুজ নিজের সাথে নিজের অনেক যুক্তি তর্কের পর ঠিক করেছে যে সাবরিনার প্রতি ওর ভালবাসা বা কাম যাই হোক না কেন সেটা সিনথিয়ার প্রতি ওর ভালবাসায় ঘাটতি ঘটাবে না। বরং হয়ত সাবরিনা কে এই ভাবে ওর সাথে সম্পর্কে জড়াতে দেখলে সিনথিয়া মজা পাবে এই ভেবে যে সারাজীবন নিয়ম মেনে আজকে বিয়ের মাঝে অন্য একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে সাবরিনা আর এমন ছেলের সাথে যার সাথে কিনা প্রেম করা নিয়ে সে সিনথিয়া কে কথা শুনিয়েছে।

ফোনে কথা বলার সময় স্বাভাবিক থাকলেও সামনা সামনি দেখার সময় অত সহজ হল না ব্যাপারটা সাবরিনা জন্য। চাইলেও মাহফুজ কে এড়ানো তখন সম্ভব না। মাহফুজদের যুব সংগঠন সারা দেশ ব্যাপী ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল করতে চাচ্ছে পুরো মার্চ মাস জুড়ে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে। এই উপলক্ষ্যে সারাদেশে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম হবে জেলা ওয়ারি। ঢাকায় দুইটা কনসার্ট হবে। শেষের কনসার্টটার একটা স্পন্সর সাবরিনাদের কোম্পানি। সরকারি দলের যুব সংগঠন ইয়ুথ প্রোগ্রাম করছে এবং সেটা খানিকটা রাজনীতির মোড়কের আদলের বাইরে গিয়ে, এমন জায়গায় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান গুলো টাকা ঢালত কার্পণ্য করে না। কেননা এখানে টাকা দিলে সরকারি দলের সুনজরে থাকা যায় আর যেহেতু সরাসরি রাজনৈতিক মোড়কে হয় না তাই বিরোধী দলের রোষানলেও পড়তে হয় না। মাহফুজ ওর যুব সংঠনের হয়ে ফান্ড রেইজিং গ্রুপে ছিল। তাই যখন মাহফুজ কে এই প্রোগ্রামের সাথে জড়িত দেখল তখন সাবরিনার প্রতিষ্ঠান যে লিয়াজো গ্রুপ করে দিয়েছিল সারা দেশে স্পন্সর হিসেবে কোর্ডিনেট করার জন্য সেখানে ঢাকার প্রোগ্রামে কোর্ডিনেট করার দ্বায়িত্ব পড়েছিল সাবরিনার উপর। অফিসের সবাই এখন জানে সাবরিনার সাথে মাহফুজের যথেষ্ট খাতির। এছাড়া ঢাকার বাইরে কোন প্রোগ্রামের দ্বায়িত্ব সাবরিনা নিতে চায় না বলে ঢাকার দ্বায়িত্ব আসার পর সেটা তাড়াতাড়ি নিজেই চেয়ে নিয়েছিল। অবশ্য যখন এইসব ঘটে তখনো লালমাটিয়ার সেই শুক্রবারের সন্ধ্যা ঘটে নি।

এদিকে প্রোগ্রামের সময় এগিয়ে আসছে। অল্প কয়েকদিন বাকি খালি তাই দ্রুত কয়েকটা মিটিং করা জরুরী। আজকাল ডোনার হিসেবে কর্পোরেটরা খালি টাকা দিয়ে খালাস হয় না তারা চায় তাদের সর্বোচ্চ মার্কেটিং যেন হয়। তাই এই প্রোগ্রাম থেকে কিভাবে সবচেয়ে এডভার্টাইজমেন্ট ভ্যালু আদায় করা যায় সে জন্য যারা যারা বিভিন্ন জেলা শহরের প্রোগ্রামের লিয়াজো হয়েছে তাদের সবাই কে নির্দেশ দেওয়া আছে। সাবরিনাও এর বাইরে না। আর মাহফুজের কাজ হচ্ছে নানা ভাবে প্রোগ্রাম রিলেটেড আপডেট দেওয়া আর এই সম্পর্কিত বিল গুলো অফিস থেকে সময় মত ছাড় করানো। তাই এইসব মিটিং আসলে মাহফুজ সাবরিনা দুই জনের জন্যই গূরুত্বপূর্ণ ছিল। দুই জনের কেউ চাইলেই তাই এগুলো এড়ানো সম্ভব ছিল না। মাহফুজ কে তাই প্রায় প্রতিদিন সাবরিনাদের অফিসে আসতে হচ্ছিল। সাবরিনা কেও একদিন কনসার্টের সাইট দেখার জন্য উত্তরা যেতে হল। উত্তরা ফুটবল স্টেডিয়ামে হবে কনসার্ট। বিশাল মাঠ। প্রোগ্রামে কোন কোন গায়ক আসবে, অনান্য কোন কোন শিল্পীরা আসবে গান গাইতে তাদের এরেঞ্জমেন্ট আর শিডিউল ঠিক করা হল। এই কয়দিন তাই মাহফুজ আর সাবরিনার বেশ অনেকটা সময় একসাথ কাটানো হল কিন্তু কোন ভাবেই সাবরিনার আচরণে মাহফুজ কিছু বুঝে উঠতে পারল না। যেন শুক্রবার সন্ধ্যা টা ঘটেই নি। আর সাবরিনার ব্যাপারটা ছিল যে কোন ভাবে বুঝি এ ব্যাপারে কোন কথা না বললে ব্যাপারটা হাওয়া হয়ে যাবে। অনেক সময় মানুষ প্রবল সংশয়ের সময় সমস্যা কে এড়িয়ে চলে সমাধানের বদলে এই আশায় যে এক সময় নিজে থেকেই বুঝি সমস্যাটা সমাধান হবে বা সমস্যাটা আর থাকবে না। যারা এটা ভাবে তারা একটা সময় গিয়ে বুঝতে পারে তাদের এপ্রোচে ভুল ছিল, সাবরিনাও বুঝল একদিন।

প্রোগ্রামের তখন আর তিন দিন বাকি। এই সময় এক শিল্পীর বাসা থেকে তার শিডিউল এবং অনুষ্ঠানে কখন মঞ্চে উঠবেন সেইসব কথা ফাইনাল করে মাহফুজ আর সাবরিনা বের হয়ে এল। মাহফুজের একটা কাজ ছিল সাবরিনাদের অফিসের একাউন্টসে। তাই সাবরিনার অফিসের গাড়িতে লিফট নিল মাহফুজ। সারা রাস্তা সাবরিনার সাথে নানা বিষয়ে কথা হল, যে শিল্পীর বাসা থেক আসল তার ক্ষেপাটে আচরণ নিয়ে হাসাহাসি হল। এইসব নিয়ে গাড়ির মাঝে কথা বলতে বলতে মাহফুজের কেন জানি রাগ আসতে থাকল। ওর মনে হল সাবরিনা বুঝি ওকে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। ওর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড, পলিটিক্স করা এইসব কারণে। সাবরিনার এই নাইস আচরণ ওর কাছে মনে হল একটা মুখোশ মাত্র। ওকে দরকার দেখে এখন এই মুখোশ পড়ে আছে, দরকার শেষ হলে মুখোস খুলে আগের শীতল সাবরিনা বের হয়ে আসবে। এটা যত ওর মাথার ভিতর ঘুরতে থাকল মাহফুজের মেজাজ তত খারাপ হতে থাকল। এর মধ্যে অফিসে যখন এসে পৌছাল তখন প্রায় দেড়টা বাজে। লাঞ্চ টাইম। অফিসের নিচে লিফটের সামনে তাই বেশ ভীড়। মাহফুজ হঠাত করেই কী ভেবে বলল চলুন সিড়ি দিয়ে উপরে হেটে চলে যায়, গল্প করতে করতে যাওয়া যাবে লিফটের এত লাইন আর ভীড় সহ্য করা লাগবে না। সাবরিনা রাজি হয়ে গেল। সাবরিনা জিমে যায় না, শরীর ঠিক রাখার জন্য হাটাহাটি করে। তাই ভাবল সিড়ি বেয়ে উপরে উঠলে কিছু ক্যালরি বার্ন হবে।

সাবরিনাদের অফিসে দুইটা সিড়ি আছে। দুইটা সিড়িই বিল্ডিং এর দুই প্রান্তে। বিশতলা ভবন, লিফট আছে প্রায় ছয় খানা। তাই সবাই লিফট দিয়ে উঠানামা করে। সিড়ি দুইটাই একপ্রান্তে। প্রত্যেক ফ্লোরে সিড়ির সাথে একটা করে দরজা আছে ঐ ফ্লোরে সিড়ি দিয়ে ঢোকা বা বের হবার জন্য। সাবরিনার ফ্লোর ছয় তালায়। দরজা ঠেলে সিড়িতে আসতেই মাহফুজ দেখে ও আর সাবরিনা ছাড়া সিড়িতে আর কেউ নেই। সিড়ির এই বন্ধ ঘরে কেউ নেই বুঝে মাহফুজ মনের ভিতর এই কয়দিন ধরে জমে থাকা প্রশ্নটা ছুড়ে দেয়। কেমন আছেন আপনি? মাহফুজের প্রশ্নে একটু অবাক হয় সাবরিনা, সকাল থেকে একসাথে আছে এখন দিনের মাঝে হঠাত এ কেমন হেয়ালি প্রশ্ন। সাবরিনা বলল ভাল। মাহফুজ জিজ্ঞেস করল শুক্রবারের পর সব ঠিক আছে তো। শুক্রবার শব্দটা শুনতেই যেন সাবরিনা একদম চুপসে গেল। কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করে কিছুই হয় নি এমন ভাবে সিড়ি ভেংগে উপরে উঠতে থাকল কোন উত্তর না দিয়ে। এইসময় যদি সাবরিনা কোন উত্তর দিত, যে কোন উত্তর তাহলে মাহফুজ খুশি মনে মেনে নিত। সাবরিনা চাইলে রাগতে পারে, বকতে পারে মাহফুজ কে শুক্রবারের জন্য কিন্তু কিছুই না করে উপরে চলে যেতে দেখে মাহফুজের মনে হল ওকে বুঝি উত্তর দেবার যোগ্যই ভাবছে না সাবরিনা। সাবরিনা সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছে আর মাহফুজ নিচ থেকে ওকে দেখছে। দেখতে দেখতে আবার প্রশ্ন করল মাহফুজ, সাবরিনা তুমি কী সব ভুলে গেছ? প্রশ্নটা শুনে কয়েক সেকেন্ড থমকে দাড়াল সাবরিনা। মাহফুজের দিকে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল কিন্তু সাবরিনার মুখে কোন আবেগের চিহ্ন নেই। আসলে সাবরিনা তখন সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে গেছে যেটা সে এই কয়দিন ধরে এড়ানোর চেষ্টা করছিল। এই প্রশ্নের উত্তর কী হবে? এর সত্য উত্তর কি দেওয়া সম্ভব। এইসব ভাবতে ভাবতে সাবরিনা উপরে উঠতে থাকল। উত্তরহীন সাবরিনা কে উপরে উঠে যেতে দেখে মাহফুজের আবার সেই মুখোশের কথা মাথায় আসল। আর ঠিক তখন যেন মাহফুজ মেজাজ হারাল। দুই তালার মাঝখানে সিড়ির যে ল্যান্ডিং টা থাকে সাবরিনা তখন দুই আর তিন তলার মাঝের সেই ল্যান্ডিং টা ছিল। মাহফুজ দৌড়ে উঠে সেই ল্যান্ডিং এ সাবরিনার হাত ধরল। পিছন থেকে মাহফুজ হাত ধরায় সাবরিনা যেন চমকে গেল। হাত টান দিয়ে ছুটিয়ে নিতে চাইলেও মাহফুজের শক্তির কাছে পারল না। মাহফুজ বলল উত্তর দাও সাবরিনা। মাহফুজ বলল, না আগে উত্তর দাও। সাবরিনা যেন এবার অন্য পথ ধরল, বলল প্লিজ আমাকে তুমি বলবেন না আর আমার হাত টা ছাড়ুন। সাবরিনা শীতল স্বরে তুমি বলতে মানা করাটা যেন মাহফুজের গালে বিশাল এক অপমানের চপেটাঘাত হয়ে লাগল। হাত টান দিয়ে সরিয়ে নিতে গেলে সাবরিনা কে একটা হ্যাচকা টান দিল মাহফুজ। তাল হারিয়ে সেই টানে মাহফুজের বুকে এসে পড়ল সাবরিনা। মাহফুজের বুকে এসে পড়তেই হতভম্ব হয়ে মাহফুজের চোখের দিকে তাকাল। প্রবল আবেগে যেন মাহফুজের চোখ জ্বলে উঠেছে। ক্রোধ, অপমান, ভালবাসা, কাম সব মিলিয়ে মাহফুজের চোখে তখন আবেগের নানা রঙ জ্বলে উঠছে। মাহফুজের চোখের দিকে তাকিয়ে সাবরিনার সব অস্বীকার, এত প্রতিরোধ যেন মিইয়ে আসল। এতদিন যে আবেগের খোজে ছিল সাবরিনা। সাদমানের ব্যক্তিত্বে যে আবেগের অভাব ওর মনে সব সময় কাটা হয়ে বিধে থাকে আজকে মাহফুজের চোখে যেন ঠিক সেই হারানো আবেগ। কোন কিছু প্রবলভাবে চাইলে মানুষের আবেগ যে চোখে ফুটে উঠে মাহফুজের চোখে নিজের জন্য সেই আবেগ টা দেখতে পেল সাবরিনা। সাবরিনার এই কয়দিনে শুক্রবার কে এড়িয়ে যাবার শত প্রচেষ্টা, মাহফুজ যদি কোন দিন এই বিষয়ে কথা বলতে চায় তাহলে কীভাবে ট্যাকেল দিবে সেইসব সহস্র যুক্তি যেন এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিল মাহফুজ এক দৃষ্টি দিয়ে।

সাবরিনা মাহফুজের বুকে পড়ার পর যখন মাথা তুলে মাহফুজের দিকে তাকাল তখন মাহফুজ সাবরিনার চোখের দিকে তাকিয়ে একদম স্থবির হয়ে গেল। কি মায়াবি, টানা টানা বড় চোখ। মাহফুজের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কয়েক সেকেন্ডে যেন সেই চোখে অনেক আবেগ খেলা করে গেল। প্রথমে রাগ, এরপর বিস্ময় আর সবশেষে যেন একটা নীরব স্বীকারোক্তি- শুক্রবার আসলেই ঘটেছিল, এটা কোন স্বপ্ন না। সেই শুক্রবারের পর সাবরিনা আবার মাহফুজের এত কাছে। সাবরিনার শরীরের গন্ধ যেন মাহফুজের মাথায় আবার সব স্মৃতি জাগিয়ে তুলল। এরকম সময়ে হাজার বছর ধরে পুরুষেরা যা করে এসেছে মাহফুজ যেন তাই অনুসরণ করল। আস্ত করে মাথাটা নামিয়ে আনল।

সাবরিনা মাহফুজের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে যখন স্থবির হয়ে গেছে তখন দেখে মাহফুজের মাথাটা আস্তে আস্তে নিচে নেমে আসছে। নারীদের হাজার বছরের অভিজ্ঞতা সাবরিনার শরীরে একটা শিহরণ বইয়ে দেয়। ও জানে কি ঘটতে চলছে, সেটা থামানোর সাধ্য সাবরিনার নেই। এমন গভীর চোখে আবেগের বন্যা নিয়ে যে চেয়ে থাকে তাকে থামানোর সাধ্য সাবরিনার অন্তত নেই। প্রতীক্ষায় সাবরিনার চোখ বন্ধ হয়ে যায় আপনা আপনি। মাহফুজ দেখে সাবরিনার চোখ বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু সাবরিনা আর সরে যাবার চেষ্টা করছে না। বন্ধ হবার আগে সাবরিনার চোখে যেন প্রেমে নতজানু হবার ছবি দেখেছে মাহফুজ। ঠোট নামিয়ে সাবরিনার ঠোটে ঠোট ঢুবিয়ে দেয় মাহফুজ। একদম আলতো করে, যেন ছোয়া লাগলেই ভেংগে যাবে এই ঠোট। মাহফুজের ছোয়া লাগতেই প্রতীক্ষায় থাকা সাবরিনার ঠোট তির তির করে কেপে উঠে। মাহফুজ আলতো করে ঠোটের সাথে যেন ছোয়াছুয়ি খেলে। সাবরিনার মাথার চুলের গন্ধ মাহফুজের নাক ভরে উঠে। উতলা হয়ে উঠে মাহফুজ। এবার সাবরিনার নিচের ঠোট কে বন্দী করে নেয় নিজের ঠোটের মাঝে। ধীরে ধীরে যেন সারাটা দিন পড়ে রয়েছে এমন অলস ভাবে চুষতে থাকে মাহফুজ সাবরিনার নিচের ঠোট। সাবরিনা যেন গলে পড়তে থাকে প্রতিটা চোষণে। উমম্মম্মম। হাটু দূর্বল হয়ে আসে। মাহফুজ যেন টের পায়। চুমু ছাড়ে না তবে দুই হাত নিচে নিয়ে গিয়ে সাবরিনার পাছাকে আকড়ে ধরে। পাছাটা আকড়ে যেন শরীরের ভর সামাল দেয় মাহফুজ। চুমুর নেশায় দূর্বল পায়ে যেন পড়ে না যায় সাবরিনা তাই ওর পাছার দাবনা দুটো ধরে উপর দিকে ঠেলা দেয়। সাবরিনার মনে হয় যেন ওর পাছায় আগুন ধরে গেছে। সেই আগুনে চুমু তুষ দিচ্ছে আর সেই তুষে আগুন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। মাহফুজ আস্তে করে সাবরিনা কে দেয়ালের গায়ে হেলান দিয়ে দাড় করায়।

সাবরিনা আজকে গেঞ্জি, জিন্স আর কেডস পড়া। দেয়ালের গায়ে হেলান দিয়ে দাড় করিয়ে মাহফুজ মুখ তুলে তাকায় সাবরিনার দিকে। আবেশে সাবরিনার চোখ বন্ধ। মাহফুজ আংগুল দিয়ে সাবরিনার মুখ, গলা, ঘাড়ে হাত বোলাতে থাকে। সাবরিনার সারা শরীরে যেন তখন তীব্র শিরশিরে অনুভূতি। মাহফুজ দেখে ওর আংগুল বোলানোর সাথে সাথে কেপে কেপে উঠছে সাবরিনা। মাহফুজ তখন সাবরিনার গেঞ্জি আস্তে আস্তে উপরে তুলতে থাকে। সাবরিনা মাহফুজের হাত আটকে ধরে। মাহফুজ আবার ঠোট ডুবিয়ে দেয় সাবরিনার ঠোটে। সাবরিনার প্রতিরোধ আবার দূর্বল হয়ে যায়। এক হাতে সাবরিনার গেঞ্জি আস্তে আস্তে ওর বুকের উপর উঠিয়ে দেয়। চুমু ছেড়ে আবার তাকায় মাহফুজ। সাদা ব্রায়ে আবদ্ধ সাবরিনার দুধ। ব্রায়ের এক সাইডের কাপ নামিয়ে দেয়। বাদামী বোটা আর এরিওলা সামনে আসে। মন্ত্রমুগ্ধের মত মাহফুজ এবার আবার মাথা নামায় তবে এবার ওর ঠোট সাবরিনার বোটা খুজে নেয়। বোটায় জিহবার প্রথম স্পর্শ পাওয়ার সংগে সংগে সাবরিনার মনে হয় কি অসহ্য সুখ। উফফফফফ। মাহফুজ বদল করে করে সাবরিনার দুই বোটায় আদর করে প্রায় মিনিট তিন ধরে। সাবরিনার বোটারা তখন একদম শক্ত, ইস্পাতের মত দৃঢ়। চোখ বন্ধ করে সাবরিনা গলা দিয়ে আদুরে বিড়ালের মত খালি শব্দ করছে। উম্মম, আহহহ, উফফফফ। সাবরিনার বোটা থেকে মুখ সরিয়ে মাহফুজ সাবরিনা কে ভাল ভাবে দেখে। মাহফুজের ভিতর থাকা এই কয়দিনের কোণাঠাসা বাঘ যেন আবার সাহস ফিরে পায়। বন্ধ চোখে সাবরিনার নতজানু অভিব্যক্তি আর ইস্পাত দৃঢ় বোটা মাহফুজের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয়। শুক্রবার কে সাবরিনা ভুলে নি। মাহফুজ সাবরিনার গালে হাত বুলায়। সাবরিনা আধখোলা চোখে মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজ ওর প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পর এখন অনেক ঠান্ডা, ও জানে এই সিড়িঘরে আজ এই মূহুর্তে কিছু করা বড় বেশি বিপদজনক। কেউ দেখে ফেললে এর পরিণতি অনেক বড় হতে পারে। তাই সিদ্ধান্ত নেয় ও এখানেই আজকের মত ইতি টানার। তবে তার আগে সাবরিনার কানের কাছে গিয়ে বলে, সাবরিনা আমার কার কাছ থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেবার ইচ্ছা নেই। তোমার ঘর সংসার তোমার থাকবে। আমি খালি তোমাকে চাই আমার মত করে। এই চাওয়ার সাথে আর কিছুর দ্বন্দ্ব নেই। আর যদি তোমার সংশয় জাগে এ নিয়ে তবে নিজের দিকে তাকাও, দেখ তোমার শরীর কি বলছে। মনে রেখ শরীর কখনো মিথ্যা বলে না।



সিড়ি ঘরের সেই দুপুরে মাহফুজ সাবরিনা কে খানিকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় রেখে চলে গেল। সাবরিনার মনে হল শুক্রবার সেই সন্ধার পর ওর ভিতর যত দ্বন্দ্ব মাহফুজ যেন খোলা বইয়ের মত পড়ে ফেলল সব। শুধু পড়েই ক্ষান্ত হয় নি যেন ওকে একদম দক্ষ গীটার বাদকের মত ওর শরীরে ঝড় তুলেছে। ওর ভিতরে সব সংশয়ের উত্তর যেন আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে বলেছে, বডি ডোন্ট লাই। নিজের উপর নিজের প্রচন্ড রাগ হয় সাবরিনার, এভাবে খোলা বইয়ের মত নিজের সবটা মাহফুজ কে দেখিয়ে দেবার জন্য। যেভাবে মাহফুজের আদরে গলে গিয়ে এক ধরণের নীরব আত্মসমপর্ন করেছে তাতে ওর এত বছরের দূর্ভেদ্য বর্ম যে কত ঠুনকো তা যেন বের হয়ে পড়েছে। পর পর দুইবার মাহফুজ ওকে একদম চেনা গিটারের মত বাজিয়েছে। একদিকে মাহফুজ যেমন ওর সংশয় দূর করে চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে শরীর মিথ্যা বলে না আবার অন্য দিকে আরেকটা সংশয় আর দৃঢ় করেছে। ওদের এই সম্পর্কের কি নাম? প্রণয়? পরকীয়া? কাম? আকর্ষণ? সাবরিনার মনে হয় এই সব গুলো শব্দ বুঝি এই সম্পর্কের জন্য প্রযোজ্য। সারাজীবন ওর বোন সিনথিয়া ব্যাড বয় ক্যারেকটার গুলোর প্রতি আকর্ষিত হয়েছে আর সাবরিনা সেটা নিয়ে উপদেশের বন্যা বইয়ে দিয়েছে। তবে আজকে যেন নিজের কাছে নিজেই স্বীকার করে নিতে হচ্ছে সাবরিনা নিজেও এই আকর্ষনের বাইরে না।

সারাদিন ধরে এইসব নিয়ে ভেবে চিন্তায়, সংশয়ে সাবরিনার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। রাতে বাসায় সাদমান অহেতুক কিছু ঝাড়ি খেল এই কারণে। সাবরিনার মনে হচ্ছে সাদমান যদি আরেকটু লাইভলি, আরেকটু আউট অফ দ্যা বক্স হত তাহলে বুঝি মাহফুজ এইভাবে ওকে কবজা করতে পারত না। রাতে সাদমান যখন ঘুমে তখন তাই শুয়ে শুয়ে নির্ঘুম রাতে সাবরিনা সিদ্ধান্ত নিল মাহফুজের সাথে ওর ইন্টারেকসন কমিয়ে দিতে হবে এবং যতটুকু হবে তাও যেন একদম প্রফেশনাল থাকে। দরকার হলে নতুন একটা প্রজেক্ট এসেছে যেটা কেউ নিতে চাচ্ছে না, ডাটা নিয়ে বসে বসে নেক্সট ইয়ারেরে প্রজেকশন রিপোর্ট তৈরি করার সেটার দ্বায়িত্ব নিবে। এই কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না, মাহফুজের সাহায্য লাগবে না। সাবরিনার মনে হল ওর এই সিদ্ধান্ত সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে ওর জানা ছিল না নদীর পানি কে বাধ দিয়ে রাখলে এক না এক জায়গা দিয়ে বাধ ভেংগে পানি ঠিক বের হয়ে আসে। এদিকে ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালের কনসার্টের এরপর বাকি ছিল দুই দিন। মাহফুজ আয়োজক কমিটির মেম্বার হওয়ায় প্রচুর ব্যস্ততা। সরাসরি তাই আর সাবরিনার সাথে দেখা হল না। কাজে যে কয়েকবার ফোন দিতে হলে তাতে মাহফুজ টের পেল সাবরিনা আবার আগের শীতল ব্যবহারে ফিরে গেছে। মাহফুজের রাগ হল খুব কিন্তু এটা নিয়ে আপাতত কিছু না করার সিদ্ধান্ত নিল। এই কনসার্টটা সফল আয়োজন করতে পারলে মাহফুজের দক্ষতার উপর বাকিদের আস্থা অনেক বেড়ে যাবে, এটা ওর পলিটিক্যাল ক্যারিয়ারের জন্য গূরুত্বপূর্ন। তাই ও ঠিক করল আপাতত এখানে মনযোগ দিবে আর সাবরিনার ব্যাপারটা পরে ডিল করবে। তবে ওর জানা ছিল না ব্যাপারটা ডিল করার একটা সুযোগ ও আগেই পেয়ে যাবে।

কনসার্ট এর দিনটা ছিল মাহফুজ আর সাবরিনা দুই জনের জন্য ব্যস্ততার দিন। অফিসের অনান্য কাজ করে বিকাল তিনটার মধ্যে কনসার্টের ভেন্যুতে পৌছে গেল সাবরিনা অফিসের আর কিছু কলিগের সাথে। বিকাল চারটা থেকে যদিও প্রোগ্রাম শুরু তবে পরে আসলে আর ভীড়ের কারণে ঢুকা কঠিন হবে আর অফিসের কিছু কাজও আছে এখানে। প্রোগ্রামের স্পন্সর আর আর কিছু আমন্ত্রিত অতিথি প্লাস ভিআইপিদের জন্য একটা আলাদা সেকশন বাশের বেড়া দিয়ে আলাদা করা। এখানে বসার জন্য চেয়ার আছে, একদম সামনে ভিআইপিদের জন্য সোফা সেট। বাকি পুরো অংশে দর্শকরা দাঁড়িয়ে দেখবে। কনসার্টটে যেভাবে সবাই নাচানাচি করে তাই সাধারণ দর্শক অংশে কোন চেয়ার নেই। মাহফুজ সেদিন দারুণ ব্যস্ত। মূল কনসার্টে পুরো লজিস্টিক ওর দেখার দ্বায়িত্ব। শিল্পিরা সবাই আসছে কিনা, আসলে তাদের গ্রীন রুমে বসানো, তাদের আর কোন আবদার আছে কিনা, পুলিশের সাথে ভলান্টিয়ারদের কোর্ডিনেট করে শৃংখলা ঠিক রাখা এইসব। মাহফুজ একটা টিম বানিয়ে নিয়েছে জুনিয়র কিছু পলিটিক্যাল ছেলেদের নিয়ে। করিতকর্মা সব। মাহফুজ একেক জন কে একেক দ্বায়িত্ব দিয়ে সবার সাথে কোর্ডিনেট করছে। এই গ্রুপের সবার কাছে একটা করে ওয়াকিটকি দেওয়া আছে যাতে প্রোগ্রামের মাঝে নিজেদের মাঝে কথা বলতে পারে। অনেক সময় প্রচুর ভীড় হলে কনসার্টের সময় আশেপাশের সেল টাওয়ার গুলো ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে পারে না ঠিক মত তখন ফোনে সহজে পাওয়া যায় না এইজন্য এই ওয়াকিটকি। প্রোগ্রাম বেশ ভালভাবে শুরু হল এবং চলতে থাকল। মাঝে মাঝে দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বেশ ভালভাবে প্রোগ্রাম চলছে। তখন রাত সাড়ে আটটা বাজে। আর এক ঘন্টার মত প্রোগ্রাম হবে শিডিউল অনুযায়ী। সোলস ব্যান্ড মঞ্চ থেকে গান গেয়ে নেমেছে। মাহফুজ মঞ্চ থেকে নামার পর নাসিম ভাই, পার্থ দা সহ ব্যান্ডের বাকি সবাই কে নিয়ে গ্রিন রুমের দিকে গেল। উনারা যাতে কোন রকম হেসেল ছাড়াই প্রোগ্রাম থেকে বের হয়ে গাড়ি ধরতে পারেন সে দ্বায়িত্ব ঠিক করে দিল দুইটা ছেলে কে। এর ফাকে সোলসের সাথে কিছু ছবিও তুলে নিল। সোলস নামার পর পরের মঞ্চে উঠবে জেমস। জেমস শেষ গায়ক। জেমসের পর প্রোগ্রাম শেষ হবে। তবে জেমস মঞ্চে উঠার আগে একটু গ্যাপ আছে। এই গ্যাপটুকুতে মঞ্চে উঠবে ওদের কেন্দ্রীয় যুব সংগঠনের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি এবং দুইজন মন্ত্রী এসেছেন তারা। উঠে তাদের সংগঠন এবং মূল দলের আদর্শ সাথে মার্চ মাস বলে স্বাধীনাতার আদর্শ নিয়ে কিছু কথা বলবেন। মাহফুজ তাই এইসময় প্রচন্ড ব্যস্ত। কারণ এইসময় সব ঠিক রাখা চাই নাহলে ওর ইমেজে একটা দাগ পড়বে। এই সময় ওর ওয়াকিটকিতে মেসেজ আসতে শুরু করল। সুমন বলে একটা ছেলে ওয়াকিটকিতে মাহফুজ কে খুজছে। মাহফুজ উত্তর দিতেই সুমন বলল, ভাই ভি আইপি গেটের দিকে একটা প্রব্লেম হইছে আপনি আসেন। মাহফুজ প্রমদ গুণল, এই সময় ঝামেলা হলে একদম ফেসে যাবে। তাই দ্রুত দৌড় লাগাল ভি আইপি গেটের দিকে।

ভি আইপি গেটের কাছে গিয়ে দেখে একটা ছোট জটলা। একদম পুলিশ আর দুই জন ভলান্টিয়ারের সাথে তর্ক করছে একটা মেয়ে। কাছে যেতেই মাহফুজ দেখে এটা সাবরিনা। সাবরিনা দেখে মাহফুজ একটু চমকে যায়। আজকে সারাদিন ব্যস্ততায় সাবরিনা কে নিয়ে ভাবার সময় পায় নি। সাবরিনা একটা নীল কামিজ আর সাদা সালোয়ার পড়া। গলায় গেস্ট সেকশনের লোকদের দেওয়া পাস ঝুলানো। কনসার্টের ভীড় আর গরমে ঘেমে আছে দেখে বুঝা যায়। তব এই ঘাম, গরম কিছু সাবরিনার সৌন্দর্য কমাতে পারে নি বরং আর বাড়িয়ে দিয়েছে যেন। সাবরিনা ওর পাস দেখিয়ে কিছু একটা বলে তর্ক করছে। মাহফুজ কি হয়েছে জানতে চাইতেই উত্তেজিত দুই পক্ষ নিজেদের মত করে কথা বলতে থাকে। মাহফুজ ধমকে সবাই কে চুপ করায়। জানতে চায় কি হয়েছে আসলে। সাবরিনা কিছু বলে না। পুলিশের যে সাব ইন্সপেক্টর এই গেটের দ্বায়িত্বে সে বলে, ভাই এই আপু ভি আইপি যে টয়লেট আছে সেটা ইউজ করতে চান কিন্তু এটা আপাতত মন্ত্রী মহোদয় বা তাদের ফ্যামিলি ছাড়া কার জন্য যেন না খোলা হয় সে নির্দেশ আছে। মাহফুজ জানতে চাইল কে নির্দেশ দিয়েছে। ঐখানে যে ভলান্টিয়ার দুইজন আছে তারা জানাল সরাসরি ওদের সংগঠনের মূল প্রেসিডেন্ট যিনি তিনি দিয়েছেন। একটু আগে উনি ওয়াশরুমে ইউজ করতে এসে দেখেন অনেকেই এটা ইউজ করছে তাই কড়া নির্দেশ দিয়ে গেছেন অন্য কেউ যাতে না ঢুকতে পারে। সাবরিনা তখন প্রথম কথা বলল। ওর পাস টা দেখিয়ে বলল আমি তো ভি আইপি সেকশনের গেস্ট আমাকে যেতে দিতে সমস্যা কোথায়। পুলিশ বলল ম্যাডাম সিকিউরিটি ইস্যু আছে, মন্ত্রী বা বড় নেতা ছাড়া আমরা যেতে দিতে পারব না, পাস থাকলেও আমাদের কিছু করার নাই। মাহফুজ বলল উনি আমাদের প্রোগ্রামের অন্যতম বড় স্পন্সরের প্রতিনিধি। পুলিশ তাদের যুক্তিতে অচল। মাহফুজ জানে এইসব জায়গায় পুলিশের সাথে তর্ক করা বৃথা। তাই সাবরিনা কে বলে আমার সাথে আসেন, দেখি অন্যদিকে কি ব্যবস্থা আছে।

সেই বিকাল তিনটা থেকে সাবরিনা কনসার্টের মাঠে। স্পন্সর অন্য প্রতিষ্ঠান গুলোর মাঝে ওর আইবিএর কিছু ফ্রেন্ড এসেছে। তাই ওরা মিলে গেস্ট কর্নারের এক অংশে নিজেরা কিছুক্ষণ নাচানাচিও করেছে গানের তালে। প্রোগ্রামটা বেশ ভাল লেগেছে সাবরিনার। সুন্দর ছিমছাম, গোছানো। বাহুল্য নেই। একের পর এক শিল্পী এসে পারফর্ম করে নেমে যাচ্ছে। এই নাচানাচি আর গরমের কারণে প্রচুর পানি খেয়েছে সাবরিনা। মাঝখানে ওর আরেক ফ্রেন্ডের সাথে এসে এই ভিয়াইপি টয়লেট ইউজ করে গেছে। যথেষ্ট পরিষ্কার। এমন খোলা মাঠে সুন্দর মোবাইল টয়লেট দেখে সাবরিনা একটু অবাক হয়েছে আসলে। সাধারণত টয়লেট অপরিষ্কার হলে সাবরিনা সেখানে যেতে পারে না, ওর ঘেন্না লাগে। নরমালি বাইরে বের হলে টয়লেটের অপশন জানা না থাকলে সাবরিনা পানি কম খায় তব এখানে ব্যবস্থা দেখে সাবরিনা আর এটা নিয়ে ভাবে নি। গেস্ট সেকশনে ওদের জন্য পানি এবং কফি ফ্রি। গান শুনতে শুনতে কখনো কখনো নাচতে নাচতে বেশ পানি আর কফি খাওয়া হয়ে গেছে। এখন ওর ওয়াশরুমে যাওয়ার বেগ এসেছে।

সাবরিনা আর তর্ক করতে চেয়েছিল পুলিশের সাথে কিন্তু মাহফুজ ওকে একপ্রকার হাত ধরে জোর করে সরিয়ে আনল। মাহফুজ বলল এইসব জায়গায় পুলিশের সাথে তর্ক করতে যাবেন না কোন কাজ হবে না। আসেন আমার সাথে এদিকে কিছু ওয়াশরুমের ব্যবস্থা আছে আমাদের। সাবরিনার পেটে চাপ বাড়ছে। পুলিশের অহেতুক আইন দেখানোয় এমনিতে মেজাজ গরম হয়ে আছে ওর তার উপর মাহফুজ কে এড়াতে চাইছিল এখন ওর ওয়াশরুম যাওয়া দরকার এই গোপন ব্যাপারটাও যেন মাহফুজ কে না জানিয়ে করতে পারছে না। তাই মাহফুজ কে একটু ঝাড়ি দিয়েই বলল, কি আয়োজন করেন আপনারা, গেস্টদের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। মাহফুজের রাগ হল ঝাড়ি শুনে। তবে কিছু বলল না, এই মূহুর্তে সাবরিনা রেগে আছে এখন ওর সাথে কথা বাড়াতে গেলে সিন ক্রিয়েট হবে। তাই বলল আপনি ওয়াশরুমে যাবেন কিনা বলেন? সাবরিনা মাথা নাড়ল। সাবরিনা কে ভীড়ের মাঝে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল মাহফুজ। মাঠের দুই প্রান্তে দর্শকদের জন্য ওয়াশরুমের ব্যবস্থা আছে। মাঠের দক্ষিণ সাইড ওদের কাছে হওয়ায় সেখানে নিয়ে গেল। এর মাঝে জেমস মঞ্চে উঠে গেছে। মাঠে দর্শক পাগল প্রায়। চারি দিকে গুরু গুরু চিৎকার। ভিড় ঠেলে যেতে কষ্ট হচ্ছে। জেমস মঞ্চে উঠে গিটারে টুংটাং করে হালকা জ্যামিং করে নিচ্ছে। গিটারের শব্দে দর্শক যেন আর উন্মাতাল হয়ে যাচ্ছে। গান এখনো শুরু হয় নি তবে দর্শক যেন ওয়ার্ম আপ করে নিচ্ছে গিটারের তালে তালে। মাহফুজের পিছে পিছে সাবরিনা আসছে। ওর ওয়াশরুমে যাওয়ার বেগ আর বেড়ে গেছে। নিজেকে খুব স্টুপিড মনে হচ্ছে ওর। বাংলাদেশে মেয়েরা সাধারণত বাইরে বের হলে পানি খাওয়ার ব্যাপারে একটু সাবধান থাকে। পাবলিক টয়লেটের সুবন্দোবস্ত সব জায়গায় না থাকায় পানি খেলে যে ওয়াশরুম ইউজ করতে হবে এই তাড়না থেকে। আজকেও যথেষ্ট সাবধান ছিল ও। মাঝখানে আইবিএর ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা হয়ে গেল। এর মাঝে জেরিন ওকে বলল এখানে ওয়াশরুমের ভাল ব্যবস্থা আছে। জেরিন এর সাথে গিয়ে একবার ওয়াশরুম ইউজ পর্যন্ত করে আসল। এরপর তাই বন্ধুদের সাথে নাচের সময় গরমের কারণে পানি খেতে কার্পন্য করে নি। এখন যেন নিজের বোকামির খেসারত নিজে কে দিতে হচ্ছে। যে ছেলে কে এড়ানোর জন্য এত কিছু ভাবল দুইদিন আগে এখন তাকেই ওয়াশরুম দেখিয়ে দিতে অনুরোধ করতে হচ্ছে। কি এক বিব্রতকর অবস্থা। জেমস গান ধরেছে “তুমি যদি নদী হও, আমি হব জেগে থাকা চর”। দর্শক যেন পাগল হয়ে গেছে। জেমেসের সাথে সাথে সবাই পরের লাইন জোরে জোরে গাইছে “তোমার অনন্ত চোখে আমি হব জেগে থাকা রাত”।

জেমসের গানে নাচতে থাকা দর্শকদের ভীড় ঠেলে ঠেলে কোন রকমে মাহফুজ সাবরিনা পোর্টেবল টয়লেট গুলোর সামনে এসে পৌছাল। প্রত্যেক টয়লেটের সামনে বেশ লম্বা লাইন। মেয়েদের জন্য দুইটা টয়লেট আলাদা করা, প্রত্যেক টয়লেটের সামনে প্রায় সাত আটজন করে মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই লাইন দেখে সাবরিনা দমে গেল। সামনেই টয়লেট আছে এই ভেবে একটু হাফ ছেড়েছিল। আপনি দেখবেন যখন এরকম প্রচন্ড টয়লেট চাপে তখন টয়লেট সামনে দেখলে যেন আর প্রবল বেগে চেপে আসে। এই লাইন পেরিয়ে আগামি বিশ মিনিটে ভিতরে ঢুকা যাবে বলে মনে হয় না। লাইনে দাঁড়িয়ে গরমে ঘামতে থাকা সাবরিনা যেন এখন আর বেশি ঘামতে থাকে। কপালের পাশ দিয়ে দর দর করে ঘাম নামছে। মুখ নরম হয়ে গেছে। পেটের চাপে খালি পা নাড়াচ্ছে, স্থির হয়ে থাকতে পারছে না। জেমস নতুন গান ধরেছে “দুখিনি দুঃখ করো না, ভুল যদি হয়ে থাকে কর ক্ষমা”। স্লো বিটের গান। দর্শক হাত নাড়িয়ে গান গাইছে। একটা উৎসব মুখর পরিবেশ চারিদিকে। সাবরিনা কিছুই উপভোগ করতে পারছে না, ঘামছে দরদর করে। পেটের ভিতর চাপ বাড়ছে, এত পানি খাওয়ার জন্য নিজেকে নিজেই গাল পাড়ছে মনে মনে। বার বার পায়ের উপর ভর বদল করছে, একবার ডান পা আরেকবার বাম পা। হিসু ধরলে এমন করলে একটু বেগ কমে। কিছুই যেন বেগ কমাতে পারছে না। ঐদিকে জেমস গাইছে “ভুল যদি হয় তবে কর ক্ষমা”। উফ, অসহ্য।

সাবরিনার চোখে পানি চলে আসছে। কি অসহ্য চাপ পেটে। মনে হচ্ছে একটু নিয়ন্ত্রণ ছাড়লেই বুঝি বন্যা বয়ে যাবে। এত কিছুর মাঝেও ওর গত শুক্রবারের আয়নার সামনের দৃশ্যের কথা মনে পড়ে। জীবনে প্রথমবারের মত সেদিন নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল নিজের উপর, পা বেয়ে গরম পানির ঝর্ণাধারা যেন ওর মনে পড়ে গেল। এইসব সময়ে আপনি যা যা মনে না করতে চাইবেন আপনার মন যেন তাই তাই আপনাকে বেশি মনে করিয়ে দিবে। সাবরিনার মনে হয় ছি, কেমন ঘরের মেঝের উপর সেদিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিতরের পানিটা উগড়ে দিয়েছিল। সেটা মনে পরতেই পেটের উপর যেন চাপ আর বাড়ে। পেটের ভিতর জমে থাকা পানি যেন বের হবার রাস্তা খুজছে। এই সময় মাহফুজ কে সাবরিনার চোখে পড়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে ওয়াকিটকিতে কথা বলছে। এই লোকটা যত নষ্টের গোড়া। মাহফুজ না থাকলে সাবরিনা কে এই কনসার্টে লিয়াজো বানানো হত না। তাহলে আজকে এই দূর্দশা হত না ওর। জেমস গান বদল করেছে। এখন গাইছে, “কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিও না”। জেমস, নিজের অফিস, এই কনসার্ট সবার উপর সাবরিনার রাগ ধরে যায়। বিশেষ করে মাহফুজ। লাইন থেকে বেরিয়ে মাহফুজের কাছে গিয়ে সাবরিনা ঝাড়ি দেয় কিছু একটা করেন, আমি আপনাদের গেস্ট। সাবরিনার ঝাড়িতে মাহফুজ একটু বিব্রত হয়, রাগও হয়। লাইনে দাঁড়ানো মেয়ে গুলো মুচকি মুচকি হাসে। মাহফুজ রাগ হলেও প্রকাশ করে না। জিজ্ঞেস করে, খুব ইমার্জেন্সি? প্রশ্ন শুনে সাবরিনার রাগ আর বেড়ে যায়। কি বোকার মত প্রশ্ন, ইমার্জেন্সি না হলে হিসুর মত একটা ব্যক্তিগত ব্যাপারে মাহফুজের সাথে ও কথা বলতে আসে, কেমন মেয়ে ভাবে মাহফুজ ওকে। চোখ পাকিয়ে তাকায় সাবরিনা। মাহফুজ বুঝে এবার ওর কিছু একটা করতে হবে। তাই সে তার অর্গানাইজার কার্ড খেলে।

মাহফুজ সাবরিনা কে নিয়ে একদম লাইনের সামনে যায়। একজন টয়লেট থেকে বের হতেই মাহফুজ টয়লেটের দরজা ধরে সাবরিনা কে ঠেলে দেয়। সবাই হই হই করে উঠে, এটা কি হল। আমরা লাইনে আছি। মেয়েদের সাথে তাদের বয়ফ্রেন্ড বা বন্ধুরা এসেছে, তারা হয়ত লাইনের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। তারাও আর জোরে চিতকার করে উঠে এটা কি হচ্ছে। হিরো গিরির এমন সুযোগ কে ছাড়ে বলুন। মাহফুজ এবার কড়া কন্ঠে ছেলে গুলো কে ধমকে দেয়। হাতের ওয়াকিটকি আর গলার অর্গানাইজার কার্ড দেখিয়ে বলে বেশি কথা বললে মেরে একদম শুইয়ে দিব। মাহফুজের আগ্রাসী মনোভাব আর ওয়াকিটকি দেখে ছেলে গুলো ভাবে ও বুঝি পুলিশের লোক তাই চুপ মেরে যায়, কে চায় বাবা পুলিশের সাথে অহেতুক ঝামেলা। মেয়ে গুলো চুপ করে না। লাইনে দাঁড়িয়ে চেচিয়ে উঠে। সাবরিনার তখন কাতর অবস্থা, এভাবে লাইন ভেংগে নিজে কখনো কোথাও আগে যায় না, আর যারা যায় ওদের একদম দেখতে পারে না। তবে আজকে ওর অবস্থা সংগীন। নিয়ম ভাংগতেই হবে। মাহফুজ এবার কৌশলী হয়। মেয়েদের দিকে তাকিয়ে গলা নামিয়ে বলে, আপু প্লিজ যেতে দেন, বেশি ইমার্জেন্সি। মাহফুজের কথা শুনে সাবরিনার কান লাল হয়ে যায়। মেয়ে গুলো সব ওর দিকে তাকিয়ে আছে। কয়েকজন মুচকি হাসছে। ওর পেটের খবর যেন জেনে গেছে সবাই। মেয়ে গুলো তাকিয় আছে, মাহফুজ আবার বলে আপুরা প্লিজ, খুব ইমার্জেন্সি। এবার মেয়েরা একটু নরম হয়, একজন বলে তাড়াতাড়ি যান। সাবরিনা হাফ ছেড়ে ভিতরে ঢুকতেই একটা অসহ্য নোংরা বোটকা গন্ধ নাকে লাগে। পাবলিক টয়লেটে দিনশেষে যেমন গন্ধ হয় তেমন। সাবরিনার পেট উলটে বমি আসতে থাকে। তার উপর টয়লেট সিটটা দারুণ নোংরা। ছি। হালকা হলুদ পানি লেগে আছে, জিনিস টা কি বুঝতে অসুবিধা হয় না সাবরিনার। নাক চেপে তাই প্রায় সংগে সংগে বের হয়ে আসে। মাহফুজ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, কি হলো? সাবরিনা কোন রকমে উত্তর দেয় এই টয়লেট আমার পক্ষে ইউজ করা সম্ভব না। লাইনে সামনে থাকা একজন ফোড়ন কাটে, আসছে আমার রাজরাণী। জেমস গাইছে এদিকে, “আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেব”। লাইনে পেছনে থাকা আরেকজন জিজ্ঞেস করে কি হল আপু, আপনার না বলে ইমার্জেন্সি। লাইনে সামনে থাকা আরেকজন সাবরিনার হয়ে যেন উত্তর দিল, উনি নাকি এইসব টয়লেট ইউজ করবে না, নোংরা। লাইনের মাঝে একজন জোরেই বলল, আপু কি হোটেলে শেরাটনের সুইট ভাবছিলেন নাকি। একটা হাসির রোল উঠে লাইনে। মাহফুজ বুঝে এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়ানো ঠিক হবে না। মাহফুজ তাই শেষবারের মত জিজ্ঞেস করে, ট্রাই করে দেখেন। সাবরিনা একবার তাকায় টয়লেটের দিকে, সংগে সংগে সেই নাড়ি উলটানো গন্ধের কথা মনে আসে। কাদো কাদো চোখে সাবরিনা না সূচক মাথা নাড়ায়। মাহফুজ ভাবতে থাকে কি করা যায়। একটা বুদ্ধি আসে মাথায়। সাবরিনার হাত ধরে টান দেয়, বলে চলেন। লাইনে দাঁড়ানো, একজন ওদের চলে যেতে দেখে বলে, বয়ফ্রেন্ড সাথে থাকলে মেয়েরা যে নিজেদের কি ভাবে, দেখি দুইজন কই যায়। আশেপাশে তো শেরাটন হোটেল দেখি না। আবার লাইনে হাসির রোল উঠে।

সাবরিনা যখন বলল ওর পক্ষে এই টয়লেট ইউজ করা সম্ভব না তখন ওর কাতর চোখ দেখেই মাহফুজ বুঝল ব্যাপারটা এখন আসলেই ইমার্জেন্সি। ওর মাথা ফুল মোডে কাজ করা শুরু করল। মাঠের অন্যপ্রান্তের টয়লেটে এত ভীড় ঠেলে যেতে সময় লাগবে, আর গেলেও ঠিক এক রকম কন্ডিশন পাবার কথা। সারা দিন ইউজ হওয়ার পর এইসব পাবলিক পোর্টেবল টয়লেটে এর থেকে ভাল কিছু আশা করা অবশ্য যায় না। তাহলে আর কী উপায় আছে? হঠাত করেই একটা বুদ্ধি আসল মাথায়। আজকের সমস্ত লজিস্টিক এর দ্বায়িত্ব মাহফুজের। মাঠের সব সরঞ্জাম আর অনান্য জিনিস রাখার জন্য মাঠের যে সাইডে ওরা আছে সেখানের শেষ প্রান্তে চারটা তাবু টাংগানো আছে। ঐটাই হতে পারে ওদের ভরসাস্থল। মাহফুজ তাই হাত ধরে সাবরিনা কে টান দেয়, বলে চলুন আমার সাথে। অন্য ব্যবস্থা আছে কিনা দেখি। সাবরিনার তখন তর্ক করার উপায় নেই। ঠোট কামড়ে ও খালি নিজেকে সামাল দেবার চেষ্টা করছে। পেট প্রচন্ড ভারী হয়ে আছে। যে কোন সময় যেন বাধ ভেংগে পড়বে।

জেমস এখন গাইছে, “পাগলা হাওয়ার তোড়ে, মাটির প্রদীপ নিভু নিভু করে”। দর্শক এখন উন্মাতাল। দারুণ বিটের গান। মাহফুজ আর সাবরিনা প্রায় ছুটছে। সাবরিনার কোন হুশ নেই যেন। মাহফুজ ওর হাত ধরে টানছে আর ও পিছু পিছু অন্ধের মত যাচ্ছে। ওর সমস্ত নিয়তি যেন এখন মাহফুজের হাতে। গানের মাঝে জেমস টান দিয়েছে “ হে পাগলা, হে পাগলা”। উফ, আর সহ্য করা যাচ্ছে না। প্রায় ছুটতে ছুটতে মাহফুজ ওকে নিয়ে তাবু গুলোর সামনে এসে হাজির হল। এই জায়গাটা প্রায় ফাকা। মূল কন্সার্ট মাঠের অন্য পাশে, এখানে খালি তাবু আর তাদের কে বাশের ঘেড়া দেওয়া জায়গাটা। একটা বাশের দরজা মত আছে, সেটা একটা শিকল দিয়ে বাধা। এই মূহুর্তে যার কাছে এই শিকলের চাবি আছে তাকে ডেকে খুলতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। মাহফুজ তাই সাবরিনা কে বলে বাশের ঘেড়া টা টপকান। এত অস্থিরতার মাঝেও সাবরিনা অবাক হয়, কি বলছে মাহফুজ। প্রায় ছয় ফুট উচু করে বাশের খুটি আড়াআড়ি করে রেখে ঘেড় দেওয়া। সাবরিনার অনেক গুণ থাকলেও কেউ কখনো ওকে এটলেটিক এই কথাটা বলে নি। এইসব বাশের ঘেড় টপকানোর কথা কোনদিন ওর মাথায় আসে নি। সাবরিনা এখন কাতর। বলে আমি কখনো এগুলো করি নি। মাহফুজ বুঝে এখন কথা বাড়ানোর সময় নেই। সাবরিনা বলে প্লিজ কিছু একটা করুন, আর পারছি না। তাই সাবরিনার হাত ধরে ঠেলে দেয় বলে মই বাওয়ার মত করে উঠে পড়ুন, উপরে উঠে পা টা দিয়ে অন্য পাশে শরীর নিয়ে গিয়ে আবার নিচে নেমে পড়ুন। সাবরিনা কনফিউজড হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মাহফুজ ওকে ঠেলে যেন উপরে উঠতে থাকে মইয়ের মতন করে। এক পা দিয়ে উপরে উঠে সাবরিনা কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। অনেকটা যেন ইন্সটিংকট বশে পরের কাজটা করে মাহফুজ। সাবরিনার পাছায় জোরে দুইটা চাপড় দিয়ে বলে, উঠে পড়ুন, কুইক, কুইক। সাবরিনার নরম পাছায় মাহফুজের শক্ত হাত পড়তেই ঠাস, ঠাস শব্দ হয়। সাবরিনা অবাক হয়ে ওর দিকে তাকায়, মাহফুজ হঠাত বুঝে একটা ভ্ল হয়ে গেল। আবার মনের ভিতর যেন কেউ বলে উঠে, কি নরম।

অনেক সময় ভুল হলে মানুষ যে কাজটা করে সেটা হল এমন ভাব করা যেন কিছুই হয় নি এবং দ্বিতীয়বার একই কাজ করা যাতে মনে হয় এটাই স্বাভাবিক, এটাই বুঝি নিয়ম। তাই মরিয়া মাহফুজ আবার একই কাজ করে, সাবরিনার নরম পাছায় আবার দুটো চাপড় মারে, এবার আরেকটু জোরে। ঠাস, ঠাস। উঠুন, উঠুন। আহ করে উঠে সাবরিনা। পাছায় চাপড় যেন পেটে আর বেশি চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। ওর পাছায় মাহফুজের হাত নিয়ে বুঝি এখন ভাবার সময় নেই। এদিকে সাবরিনার পাছার নরম স্পর্শ যেন মাহফুজের মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা বাঘের ঘুম ভাংগিয়ে দিয়েছে। সাবরিনা তাই উপরে উঠতে থাকে আর ওদিকে জেমস দরাজ গলায় টান দেয়- পাগলা হাওয়ার তোড়ে, মাটির প্রদীপ নিভু নিভু করে। মাহফুজের মনের বাঘ ভিতরে গর্জন করে উঠে। তাই সাবরিনার পাছায় এবার বেশ জোরেই চড় মারে, ঠাস। তাড়াতাড়ি সাবরিনা। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ আপনি থেকে তুমি তে নেমে এসেছে। আর একবার এমন হয়েছিল, সেই শুক্রবার রাতে। মাহফুজের চাপড়ে পাছায় হালকা জ্বলুনি হয় কিন্তু সেসব নিয়ে ভাবার সময় এখন নেই সাবরিনার। তাড়াতাড়ি এই বেড়া টপকাতে না পারলে এর থেকে বড় কেলেংকারি হয়ে যাবে। সাবরিনা তাই উপরে উঠে কিন্তু কীভাবে পা টা বেড়ার ঐসাইডে নিবে বুঝে উঠতে পারে না। মাহফুজ নিচ থেক ইন্সট্রাকশন দেয়। কিন্তু সারাজীবন শারীরিক কসরতে অপুটু সাবরিনা বুঝে উঠতে পারে না, তারউপর পেটের উপর পড়তে থাকা চাপ মাথার কর্মক্ষমতা আর কমিয়ে দিয়েছে। মাহফুজ তাই নিজেই উঠে আসে উপরে। সবচেয়ে সহজ পন্থাটা দেখায়। এক পা প্রথমে ক্রস করে দুই পা দুই দিকে দিয়ে বাশের উপর বসে পড়া, এরপর অন্য পা ক্রস করানো। মাহফুজ অবলীলায় দেখায় ব্যাপারটা কিন্তু সাবরিনা একটু প্যাচ লাগিয়ে ফেলায়। এক পা ক্রস করার পর নিচের দিকে তাকাতে সাবরিনার মনে হয় ও বুঝি পরে যাবে। ভয়ে হাত পা শক্ত হয়ে যায় নড়তে পারে না ও। বাশের ঘেড়ার উপর দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসে আছে। বাশ টা ঠিক ওর গুদ বরাবর। মাহফুজ তাড়া দেবার জন্য সাইড থেকে আবার ওর পাছায় চাপড় দেয়, তাড়াতাড়ি কর সাবরিনা। এভাবে বসে থাকতে দেখলে কেউ কি ভাববে। সাবরিনা বুঝে পায় না ও কি করবে। মাঠ ভর্তি দর্শক জেমসের গান শুনছে, উন্মাতাল সব। মাঠের একদম শেষ প্রান্তে কার খেয়াল নেই। তবু যদি কেউ দেখে ফেলে। আবার নিচে নামার জন্য চেষ্টা করতে গেলেই চোখ মাটির দিকে যাচ্ছে আর পড়ে যাবার ভয়ে হাত পা শক্ত হয়ে যাচ্ছে। মাহফুজ বুঝে ওকে আরেকটু তাড়া দিতে হবে। মাহফুজ তাই অনেক জোরেই একটা চাপড় লাগায় সাবরিনার পাছায়, আর বলে তাড়াতাড়ি কর। ঠাস করে চাপড় খেয়েই আউ করে উঠে সাবরিনা আর ইন্সটিংক্ট বসত একটু সামনে এগিয়ে পরবর্তী চাপড় থেকে বাচতে চায়। সাবরিনা পুরো শরীরের ভর তখন বাশের উপর ছেড়ে দেওয়া। তাই গুদের মাঝ বরাবর থাকা বাশের উপর ঘষটে যখন সামনে এগিয়ে যেতে চায় তখন এই প্রথমবারের মত সাবরিনার মনে হয়ে শরীরে বুঝি নতুন এক আগুন লাগছে। মেয়েদের পেটে যখন জলবিয়োগের চাপ বাড়ে তখন তাদের যোনিমুখের দরজা একটু ফুলে উঠে, বেশ সেনসেটিভ হয়ে থাকে জায়গা টা। তাই হঠাত এমন ঘর্ষণ ওর যোনিমুখে যেন আগুন লাগায়। অনেকটা রিএকশন বশত মাহফুজের কোন চাপড় ছাড়াই ও কোমড় আগুপিছু করে সালোয়ারের ভিতর লুকানো যোনিমুখে নতুন এক অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়।

মাহফুজের চেষ্টায় অবশেষে সাবরিনা দুই পা এক দিকে আনতে পারে। এরপর নামার সময় আবার আরেক হাংগামা। মাহফুজ আগেই নিচে নেমে ইন্সট্রাকশন দিচ্ছিল- হ্যা, এই তো, ডান পা টা একটু নিচে নামাও, এইযে, হ্যা এখানেই একটা বাশ আছে, ওকে এবার হাত নামাও পরের বাশে। এভাবে নামার সময় পেটের চাপ, অস্বস্তি, লজ্জা, বিব্রত হওয়া সব মিলিয়ে যেন খেই হারিয়ে ফেলে সাবরিনা। হাত ফসকে নিচে পরে যেতে থাকে। মাহফুজ টের পায় আগেই সাবরিনার নামার ভংগী দেখে কিছু একটা হতে পারে। তাই নিজ থেকে সামনে গিয়ে সাবরিনার কোমড় বরাবর হাত রেখে ওকে স্টেডি করার চেষ্টা করে। পড়তে পড়তে মাহফুজের সাহায্যে কোন রকমে তাল সামালানো সাবরিনা কয়েক সেকেন্ড বিশ্রাম নেয়। মাহফুজ টের পায় সাবরিনার পাছা একদম ওর নাক বরাবর। এতদিন এত কল্পনা করা পাছা টা ওর সামনে দেখে নিজের উপর যেন একটু একটু করে কন্ট্রোল হারাচ্ছে মাহফুজ। মুখটা সামনে এগিয়ে ঠিক পাছার খাজের বরাবর নাকটা ঢুকিয়ে দেয়। আর জোরে একটা শ্বাস টানে। মাঠের প্রচন্ড শব্দে সাবরিনার মাহফুজের শ্বাস টানা টের পাওয়ার কথা না কিন্তু ওর পাছার খাজে যে মাহফুজের মুখ ঢুকেছে এটা স্পর্শে টের পায়। কি অসভ্য লোকটা। মাহফুজ পাছার খাজ বরাবর নাক ঘষে, এরপর খাজ বরাবর ঠোট চেপে ধরে চুমু খায়। সাবরিনা টের পায় কি হচ্ছে। কি অসভ্য, ছি, বাজে, ছোটলোক। মাহফুজ চুমু খায় আবার। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ খালি মুখ ঢুকায় নি চুমুও খাচ্ছে। ছি, এমন জায়গায় কেউ চুমু খায়। লজ্জায় লাল হয়ে যায় সাবরিনা। পেটের চাপ টের পায়। লোকটার কি একটু ঘৃণা নেই। কোন জায়গায় চুমু খাচ্ছে। আবার মনের ভিতর কেউ যেন বলে, এমন প্যাশন তো এতদিন চেয়েছিলে তাহলে এখন কেন এত লজ্জা। সাবরিনা পাছা টা পিছন দিকে ঠেলা দিয়ে যেন মাহফুজ কে সরিয়ে দিতে চায়। মাহফুজ ঠেলা পেয়ে সরে যাবার বদলে আর জোরে মুখ চেপে ধরে পাছায়, আর কোমড়ের কাছে থাকা হাতে আর শক্ত করে চাপ দেয়। এই চাপে যেন পেটের উপর বাড়তে থাকা চাপটা অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যায়। পাছায় মাহফুজের নাকের খোচা, আর পেটের উপর মাহফুজের হাতের চাপের কারণে বাড়তে থাকা প্রেসারে আর পারে না সাবরিনা। অল্প একটু হিসু বের হয়ে আসে প্যান্টির উপর, কোন রকমে পেট চেপে যেন আটকায় নিজেকে। আরেকবার এমন হলে আর পারবে না। ঝরঝর করে সব বের হয়ে আসবে। এইসময় জেমস গিটারে ঝংকার তুলে, আর মাইকে চিতকার দেয়। নতুন গান হবে, সবাই রেডি তো। মাঠ থেকে চিৎকার আসে, রেডি গুরু। সাবরিনা গলায় কাঠিন্য এনে বলে কি করছেন ছোটলোকের মত। ঠিক পরের মূহুর্তে কাপা কাপা গলায় বলে প্লিজ আমাকে নামান, আমার বের হয়ে যাচ্ছে। একদিকে মাহফুজের ওর পাছায় চুমু খাওয়া আর অন্যদিকে এভাবে ঝুলে নিজের ব্লাডার কন্ট্রোল করার চেষ্টা। লজ্জা, ভয়, রাগ, সংশয় আর অচেনা একটা ভাল লাগা সব অনুভূতি একসাথে মনের ভিতর খেলা করে সাবরিনার মাথা যেন এলোমেলো করে দিচ্ছে। সাবরিনার কথা শুনে মাহফুজ বুঝে সাবরিনার এখন অন্তিম মূহুর্ত। তাই আর দেরি না করে ওর মুখটা সরায় কিন্তু কোমড় টা ছাড়ে না। সাবরিনার পাছার নিচে দিয়ে মাথা গলিয়ে দেয়। সাবরিনা কাতর কন্ঠে বলে কি করছেন, প্লিজ। সাবরিনা কে আদেশের সুরে বলে, সাবরিনা হাত ছেড়ে দাও। সাবরিনা কাতর কন্ঠে বলে কি বলছেন, পড়ে যাব তো। মাহফুজ বলে, ট্রাস্ট মি, হাত ছেড়ে দাও। নিরুপায় সাবরিনা হাত ছাড়ে বাশ থেকে। মাহফুজ এবার এক ঝটকায় সাবরিনার কোমড় ধরে ওকে নিজের কাধের উপর বসিয়ে দেয়। মাহফুজের মাথার দুই সাইডে দুই পা দিয়ে সাবরিনা বসে পড়ে। পাচ ফুট এগার ইঞ্চির সুঠামদেহী মাহফুজের জন্য পাচ ফুট চার ইঞ্চির সাবরিনা যথেষ্ট হালকা। তাই মাহফুজের তেমন কোন কষ্ট হয় না।​
Next page: Update 18
Previous page: Update 16