Update 22

মাহফুজ আস্তে আস্তে ওর কোমড় থেকে বগল পর্যন্ত হাত তুলছে আর নামাচ্ছে। এই গরমের মাঝে যেন মাহফুজের শরীরের গরম সাবরিনার শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কোমড়ের কাছে জামার উপর দিয়ে সাবরিনার কোমড়ের কাছে চর্বির হালকা স্তরটা জোরে মুঠোর মধ্যে পুরে নেবার চেষ্টা করে। উফ করে উঠে সাবরিনা। চোখের কোণা দিয়ে দেখতে পায় রিক্সার সাইড মিররে ওদের দেখার চেষ্টা করছে রিক্সাওয়ালা। সাবরিনা ওর ওড়নাটা একপাশে টেনে মাহফুজের হাত কে আড়াল করার চেষ্টা করে। মাহফুজ টের পায় সাবরিনা ওড়না দিয়ে ওর হাত আড়াল করছে বাইরের নজর থেকে। ওড়নার আড়াল পেয়ে মাহফুজ আর সাহসী হয়। হাতটা তুলে এনে সাবরিনার বুকের উপর রাখে একদম। ওক করে উঠে সাবরিনা। এর আগেও মাহফুজের হাত পড়েছে এখানে তবে এমন দিনে দুপরে কখনো না। সব সময় অন্ধকারে, যেখানে নিজেকে আড়াল করা যায়। মাহফুজ যেন আজকে সাহসি হয়ে উঠেছে। সাবরিনার ভিতরের স্বত্তাকে জাগিয়ে তুলতে হবে আজ। ওর ভিতরের অনুগত বালিকা কে সামনে আনতে হবে। মুঠোর ভিতর সাবরিনার দুধের এক অংশ পুরে হালকা হালকা চাপতে থাকে। গরমের সাথে নিজের শরীরের উত্তাপে দর দর করে ঘামতে থাকে সাবরিনা। ফর্সা শরীরের ঘামের বিন্দু নাক, কপালে জমা হয়। ঘাড়ের কাছে একটা স্যাতস্যাতে ভাবে ঘাম গুলো জড়িয়ে থাকে। শরীরের জামা ঘামে যেন আর ভালভাবে শরীরের সাথে লেগে যায়। মাহফুজ এই কয়দিনে টের পেয়ে গেছে নাভী সাবরিনার দূর্বল জায়গা। একহাত যখন সাবরিনার একপাশের দুধ নিয়ে খেলছে অন্য হাত তখন আস্তে আস্তে সাবরিনার নাভীর দিকে আগাচ্ছে। সাবরিনা আজকালকার হালফ্যাশনের প্রায় কোমড় পর্যন্ত কাটা কামিজ পড়েছে। সেই কাটা বসে থাকা অবস্থায় সাবরিনার কোমড়ের পাশে একটা ফাকা জায়গা তৈরি করে দিয়েছি হাত ঢুকানোর। মাহফুজ সেখান দিয়ে অন্য হাত ঢুকায়। সবারিনা তার এক হাত দিয়ে বাধা দিতে চেষ্টা করে। মাহফুজ জোরে সাবরিনার দুধ চেপে ধরে, ব্যাথায় সাবরিনা আহহহ করে উঠে। রিক্সাওয়ালা সাইড মিররে দেখে আর মুচকি মুচকি হাসে। সাবরিনার তখন সেদিকে খেয়াল নেই। মাহফুজ একবার ওর দুধ জোরে চাপছে আরেকবার ছাড়ছে। মনে হচ্ছে প্রতি চাপে যেন শরীরে ইলেট্রিক শক চলে যাচ্ছে। ঠিক এই সময় টের পায় নাভীর উপর মাহফুজের হাত। এই কয় দিনের অল্প পরিচয়ে যেন মাহফুজ ওর শরীরের গলি ঘুপচির খবর বের করে ফেলছে। নাভীর ভিতর আংগুল দিয়ে খেলা করতে থাকে সাবরিনা। পুরান সেই শিরশিরে অনুভূতি তলপেটে ফিরে আসে। মাহফুজ সাবরিনার দুধ আর নাভি নিয়ে খেলতে থাকে আর শিরশিরে অনুভূতি তলপেট থেকে নিচে নামতে থাকে। সাবরিনা মাহফুজের উরু খামচে ধরে। সমস্ত শক্তি দিয়ে মুখ আটকে রাখে যাতে কোন শব্দ বের না হয়। রাস্তার চারপাশ দিয়ে চলে যাওয়া গাড়ি, রিক্সা অথবা ফুটপাতে হেটে যাওয়া মানুষ কেউ খেয়াল করে না এই হুড তোলা রিক্সায় কি ঘটে যাচ্ছে। রিক্সাওয়ালা অনেক দিনের অভিজ্ঞতায় টের পায় তবে খালি সাইড মিররে দেখা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না সে। মাহফুজ তার কাজ করে যায় দিনে দুপুরে। সাবরিনার মনে তখন লজ্জা, ভয় আর সংকোচ কিন্তু তার থেকে বেশি পেটের কাছের সেই শিরশিরানি। যেটা ক্রমশ ওর যৌনিদ্বারে পৌছে যাচ্ছে। পা দুইটা শক্ত করে চেপে ধরে নিজেকে সামাল দেবার চেষ্টা করে। মাহফুজের আংগুল বার বার ওর নাভির গভীরে ধাক্কা দেয় আর উপরে অন্য হাত দুধের উপর হামলা করেই চলেছে। সাবরিনা দুই পা জোর করে চেপে ধরে একসাথে শিরশিরানি কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে। শুরুতে শুধু মাহফুজ কে একটু ছাড় দিয়ে দেখতে চেয়েছিল কি হয় কিন্তু এখন মাহফুজ যেভাবে আবার ওর শরীরের কন্ট্রোল নিয়ে নিচ্ছে তাতে সাবরিনা টের পায় একটু পর ওর আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না শরীরের উপর। তাই এক অসম যুদ্ধে নামে সাবরিনা। রিক্সার ভিতর কোন শব্দ না করে লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে মাহফুজের সাথে এই যুদ্ধ চালাতে থাকে সাবরিনা। কিন্তু ডেভিলের সাথে কি আর পারা যায়। মাহফুজ যেন ওর শরীরের সব গোপন চাবির সন্ধান জানে। দুধ থাকা হাতটা সরিয়ে ওর বগলে নিয়ে যায়, বগলের জায়গাটা আঙ্গুল দিয়ে আলতো করে হাত বোলতে থাকে। এটা সাবরিনার আরেকটা দূর্বল জায়গা। ছোটবেলায় এখানে হাত দিলে সাবরিনা হাসিতে আর কথা বলতে পারত না। এখন সেই জায়গায় এমন সময় হাত পড়তেই একটা অদ্ভূত রিএকশন হল সাবরিনার। তলপেটের শিরশিরানি আর সাথে সারা শরীর জুড়ে একটা দমকা হাসির প্রভাব, বগলের হালকা আদর যেন আর সেটা বাড়িয়ে দিচ্ছে। না চাইতেই বগলে সুরসুরি দেওয়ায় হাসি আসতে থাকে সাবরিনার। সেই হাসি সাবরিনা কোন ভাবে আটকে মাহফুজ কে কোন রকমে বলে কি করছ, এটা রিক্সা, সবাই দেখছে।

মাহফুজ যেন খেলায় মজা পেয়ে গেছে। মাহফুজ এবার নাভির উপর থাকা হাত দিয়ে জামার ভিতর দিয়ে পেটের উপর আলতো করে একটা চাটি মারে বলে এই তো প্রথমবার তুমি আমাকে তুমি বলেছ। গুড গার্ল। সাবরিনা কোন উত্তর দেবার আগেই পেটের কাছে চামড়া হালকা করে টেনে মাহফুজ বলে কি নরম তোমার পেট। মনে হয় মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে যাই এখানে। সাবরিনা কিছু বলার জন্য মুখ খুলে কিন্তু মাহফুজের হাত তখনো সুরসুরি দিয়ে চলছে ওর বগলে। মাহফুজ বলে কেউ দেখলেই বা কি, আমি তো তোমায় আদর করছি। এর আগে তো এর চেয়ে বেশি আদর করেছি আজকে শুধু অল্প একটু। সাবরিনা সায় দেয় মনে মনে। লোকটা কথা জানে বটে, সব সময় কোন না কোন উত্তর রেডি। সাবরিনা বলে প্লিজ এখানে না। মাহফুজ সাবরিনার কথায় বলে আরেকটু প্লিজ। এই কয়দিন তোমায় ভেবে ভেবে আমার কি হাল হয়েছে জান? এই বলে সাবরিনার বগল থেকে হাত সাবরিনার দুধে নিয়ে যায়। দুধে জোরে চাপ দিয়ে বলে এই দুইটা আমার রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। যেখানে যাই সেখানেই তোমার দুধের ছবি দেখি যেন। সাবরিনা আতকে উঠে কি বলছে লোকটা। রিক্সাওয়ালা সামনে ফিক ফিক করে হাসে। এইজন্যই এইসব ঘন্টা হিসাবের রিক্সা চালানোর আরাম। কত রকম মানুষ দেখা যায় তাদের কত রকম কেচ্ছা। মাহফুজ এর মধ্যে বলে চলেছে এই কয়দিন কতবার তোমার ফর্সা দুধ গুলো কে ধরে আদর করব ভেবেছি জান। সাবরিনা ফিস ফিস করে বলে আস্তে লোকে শুনবে। মাহফুজ বলে লোকে শুনলে শুনুক। তোমার কথা ভেবে আমার এই কয়দিন যে কষ্ট হয়েছে তার কি হবে, এই বলে ঘাড় বাকিয়ে সাবরিনার গলা আর কাধের সংযোগ স্থলে একটা চুমু খেল। পুরো শরীর কেপে উঠল সাবরিনার। সাবরিনার শরীর তখন রীতিমত কাপছে। মাহফুজের হাত নাভিতে থাকা হাত তখন একটু একটু করে নিচে নামছে। সাবরিনার ঘাড়ের কাছে ঘাম আর সাবরিনার পারফিউমের গন্ধ তখন মাহফুজের নাকে। এই পাগল করা গন্ধ যেন মাহফুজ কে বলছে আর সাহসী হতে। তাই মাহফুজ এবার চুমু খাবার বদলে ঘাড় আর গলার সংযোগস্থলের জায়গাটা জিহবা দিয়ে চেটে দিল। ঠিক একসাথে সাবরিনার দুধের এক অংশ জোরে চেপে ধরল। হঠাত ঘাড়ের কাছে জিহবার গরম স্পর্শ, আর দুধের উপর চাপ সাবরিনার কাপতে থাকা শরীরে ঝড় তুলে দিল। সাবরিনার মনে হল এই আদর বুঝি আর সহ্য হচ্ছে না, রিক্সা থেকে বুঝি ওর নেমে যাওয়া দরকার। মাহফুজ আবার ঘাড়ে ওর জিহবা বুলিয়ে দিল। সাবরিনা রিক্সার সিট থেকে ওর পাছা তুলে কাপতে কাপতে সিট থেকে উঠে যেতে চাইল। এটা যে চলন্ত রিক্সা সাবরিনার তখন সেই জ্ঞান নেই। ওর মনে হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে উত্তেজনায় রিক্সার ভিতর ও জ্ঞান হারাবো। তাই রিক্সা থেকে ও নেমে যেতে চাইছে। সাবরিনা যখন ওর পাছাটা রিক্সার সিট থেকে হালকা উচু করে নেমে যাবার জন্য ঝুকেছে ঠিক তখন মাহফুজ ওর পাজামার উপর দিয়ে দুই উরুর সংযোগস্থল গুদ ধরল আর উপরে দুধের জায়গাটা আরেক হাতে ধরে সাবরিনা কে পড়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করল। ঠিক সেই অবস্থায় সাবরিনা ফিস ফিস করে বলে চলছে উফ, উফ। আমাকে নামতে দাও। মাহফুজ তখন ওর গুদ চেপে ওকে সিটে আবার বসিয়ে দেয় আর দুধর জায়গা চেপে সিটে থেকে আবার যেন উঠতে না পারে সেটা নিশ্চিত করে। সাবরিনার গুদের জায়গা থেকে ভাপের মত বের হচ্ছে। পাজামা, প্যান্টির উপর দিয়েই সেটা টের পাওয়া যাচ্ছে। মাহফুজ বুঝে এখন আর বেশি করা ঠিক হবে না তাই ঠিক করে এখন সাবরিনার শরীরের উপর হাতের কাজ বন্ধ করতে হবে। তবে তার আগে পরের ধাপের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন। মাহফুজ তাই জিজ্ঞেস করে তাহলে অন্য কোথাও যাবে। সাবরিনা তখন নিরুপায়। যে কোন উপায়ে মাহফুজের আদর হতে ওর মুক্তি দরকার। তাই সাবরিনা উত্তর দেয়, হ্যা। মাহফুজ তখন রিক্সাওয়ালা কে আবার সাবরিনার অফিসের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলে। মাহফুজ সাবরিনার গুদের উপর থেকে হাত সরিয়ে নেয়। সাবরিনার দুধ থেকে হাত সরিয়ে কোমড়ের কাছে আলতো করে ধরে রাখে। সাবরিনা যেন একটু দম নিতে পারে এবার। পেটের শিরশিরানি কমে আসে তবে বুকের ভিতর ধুকপুকানি চলতেই থাকে। মাহফুজ সব সময় সাবরিনার অফিসের থেকে দুই গলি দূরে ওর বাইকটা পার্ক করে রাখে এক চায়ের দোকানের পিছনে। চায়ের দোকানি কে প্রতিবার বিশটাকা দেয় বাইকটার দিকে খেয়াল রাখার জন্য। রিক্সা সেই দোকানের সামনে এসে থামে। মাহফুজ আর সাবরিনা দুই জনেই গরম আর শরীরের উত্তাপে ঘেমে একদম ভিজে গেছে। গরম, উত্তেজনা, লজ্জা সব মিলিয়ে সাবরিনার ফর্সা চেহারা একদম লাল হয়ে আছে। দোকান থেকে মাহফুজ একটা বড় পানির বোতল নিল। একটু পানি খেয়ে দুইজনেই মুখ একটু করে ধুয়ে নিল। মাহফুজ জিজ্ঞেস করল সাবরিনা কে কিছু নিবে কিনা দোকান থেকে খাবার জন্য। সাবরিনা বলল না। মাহফুজ এবার বলল ঘোরার জন্য রেডি। সাবরিনা কোথায় ঘুরতে যাবার কথা বলা হচ্ছে বুঝতে পারল না, তাই জিজ্ঞেস করল কোথায় ঘুরতে যাচ্ছি আমরা। মাহফুজ বলল এটা সারপ্রাইজ।



মাহফুজ সিনথিয়া থেকে সাবরিনার খবর শোনার পরেই চিন্তা করেছিল কিছু একটা করা দরকার। সিনথিয়া যখন কথার মাঝে বলেছিল সাবরিনার নৌকা পছন্দ, তখন আশুলিয়া ঘুরতে যাবার প্ল্যানটা মাথায় আসে। আশুলিয়া ঢাকার পাশে একটা জায়গা। এটা ঢাকার নিচু জলা জায়গা। বছরের নয় মাস এই এলাকা পানির নিচে থাকে আর শীতকালে কিছুদিন পানি কমে আসে। একধারে তুরাগ নদী আরেক ধারে শীতালক্ষ্যা আর বুডিগংগার শাখার সাথে সংযোগ। আশুলিয়া ভেড়ি বাধের কাছে একটা ছোটখাট পর্যটন এলাকা গড়ে উঠেছে স্থানীয় ভাবে। ঢাকা থেকে মানুষজন ঘুরতে যায় এই এলাকায় বিশেষ করে কম বয়েসি কাপলেরা। নৌকায় করে ঘুরে বেড়ায়। একটু বেশি টাকা দিলে কিছু ছই আলা নৌকায় একান্তে সময় কাটানো যায়। যাদের রুম ডেটিং এ যাবার উপায় নেই এমন অনেকে এইসব নৌকা ভাড়া নেয় একান্ত সময় কাটনোর জন্য প্রেমিকার সাথে। সিনথিয়ার সাথে ঘুরতে আসার জন্য এক পছন্দের জায়গা ছিল মাহফুজের জন্য এই আশুলিয়া ভেড়িবাধ। খালি সিনথিয়া নয়, সিনথিয়ার আগের প্রেমিকা বা অন্য মেয়েদের নিয়ে অনেকবার আসা হয়েছে এই এলাকায়। তাই পরিচিত অনেক। প্রায় খুটিনাটি অনেক কিছু জানে মাহফুজ এই এলাকার তাই সাবরিনা কে এই আশুলিয়ায় আনার প্ল্যান। অবশ্য সাবরিনা কে বলে নি কই যাচ্ছে।

সাবরিনা যখন রিক্সার মাঝে মাহফুজের কথায় ঘুরতে যাবার সায় দিয়েছে তখন ওর মাথায় অত কিছু ছিল না। মাহফুজ ওর কাছে অনেকটা ড্রাগের মত মনে হয় আজকাল। লালবাগ কেল্লার ঘটনার পর ওর নিজের ভিতরের পরিবর্তন সাবরিনা নিজেই টের পাচ্ছিল। মাহফুজের সাথে দেখা হওয়ার আগে যেসব ঘটনা ওর স্বপ্নেও ভাবে নি সেইসব হচ্ছিল একের পর এক। প্রথম প্রথম মনের ভিতর যে গিল্ট ফিলিংস হচ্ছিল প্রতিবার সেইসব গিল্ট ফিলিংস যেন এক লালবাগের পর ধূম করে কমে গেছে। মনের ভিতর সেই জায়গায় একটা উত্তেজনা। এত দিনের নিয়ম নীতি ফেলে দিয়ে গোপনে করা কাজের জন্য বুকের ভিতর এই উত্তেজনা দেখে সাবরিন নিজেই অবাক। সাবরিনার মনে হয় এত দিনের মনের ভিতর চাপা থাকা অনেক অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণের একটা উপায় হল মাহফুজ তাই হয়ত মাহফুজের ব্যক্তিত্ব ওর কাছে চুম্বকের মত। শত চেষ্টার পরেও যাকে সে এড়াতে পারছে না। রিক্সা থেকে নামার পর মাহফুজ যখন প্রশ্ন করে তখন সাবরিনা টের পায় রিক্সায় উত্তেজনায় সাবরিনা ঘুরতে যেতে রাজি হয়েছে। মাহফুজের ভাষায় এটা একটা জাস্ট ঘুরতে যাওয়া। কিন্তু সাবরিনা মাহফুজ কে এই কয়মাসে যা দেখেছে তাতে এটুকু নিশ্চিত এর ভিতর সিম্পল কিছু নেই। অবশ্যই কোন না কোন চমক থাকবেই। সারাজীবন সতর্ক সাবরিনার মন মানা করে হঠাত করে উদয় হওয়া এই ঘুরতে যাবার প্ল্যানে কিন্তু আজকে সাবরিনার মনের যুক্তিহীন অংশ যেন অনেক বছর পর জেলখানা থেকে ছাড়া পেয়েছে। তাই সেই অংশ উসকানি দেয়, বলে- চল দেখি কি করে মাহফুজ। তোর মনের ভিতর কোন গোপন ইচ্ছার পূরণ ঘটায়। আজকের এই রিক্সা ভ্রমণটা দেখ। কলেজ লাইফে বন্ধুদের এইসব গল্প শুনে সামনে সামনে ছি ছি করলেও মনে মনে যে তোর ইচ্ছা ছিল তুই তো জানতি। মাহফুজ হঠাত করে অমন রিক্সায় উঠে না বসলে তুই কি কখনো সাহস করে এমন রিক্সায় বসতি পারতি? নাকি বন্ধুদের কাছে শোনা রিক্সা ডেটের গল্প গুলা তোর জীবনে সত্য হত। আমার কথা শোন আর চল। গিয়ে দেখি নতুন কি সারপ্রাইজ আছে আমাদের জন্য।

সাবরিনার যুক্তিময় জীবনে আজকে যুক্তিহীন আবেগের জয় হয়। সাবরিনা দেখতে চায় কি করে মাহফুজ। মাহফুজ বলে চল আজকে তোমাকে আমার পংখীরাজে করে ঘুরিয়ে আনি। এই বলে নিজের মোটরসাইকেলের দিকে তাকায় মাহফুজ। মোটরসাইকেলটা দেখে সাবরিনার লালবাগের রাতের কথা মনে পড়ে। লজ্জায় লাল হয়ে যায়। যেন মটরসাইকেলটা সেই রাতের স্বাক্ষী। এই মটর সাইকেলের আরোহী হওয়া মানেই যেন নতুন কোন এডভেঞ্চারে সামিল হওয়া, যার গোপন স্বাক্ষী হবে এই পংখীরাজ। হঠাত করে সাবরিনার মনে হয় পংখীরাজ তো থাকে রাজকুমারদের। তাহলে কি মাহফুজ রাজকুমার? মাহফুজ রাজকুমার হলে তাহলে ও কি রাজকুমারী? সাবরিনা একরাশ কৌতুহল বুকে নিয়ে মটরসাইকেলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। মাহফুজ আজকে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল তাই দুইটা হেলমেট এনেছে। বাইকে আজকে উঠার আগে মাহফুজ মনে করিয়ে দেয় দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসার কথা। এর আগেরবার বাইকে উঠে পড়ে যাবার কথা মনে থাকায় সাবরিনা কোন তর্ক করে না। চুপচাপ উঠে বাধ্য মেয়ের মত মাহফুজের পিছনে দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসে পড়ে। তখন বিকাল সোয়া চারটা। অফিস এখনো ছুটি হয় নি তাই রাস্তায় তূলনামূলক ভাবে ট্রাফিক কম। মাহফুজ এর মাঝে ঝড়ের বেগে বাইক ছুটিয়েছে। যতটুকু দূরুত্ব বজায় রেখে সাবরিনা বসেছিল মাহফুজের বাইকের স্পীডে ভয় পেয়ে সেই দূরত্ব কমিয়ে একদম মাহফুজের পিঠ ঘেষে বসে। মাহফুজ টের পায় পিছন থেক সাবরিনা ওর শরীর ঘেষে বসছে। মাহফুজ মনে মনে হাসে। বাইকের স্পীড আরেকটু বাড়ায়। এইবার সাবরিনা মাহফুজের কোমড় জড়িয়ে ধরে। মাঝে মাঝে ব্রেক ধরলেই সাবরিনা বুক একদম মাহফুজের পিঠের সাথে মিশে যাচ্ছে। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ আস্তে আস্তে ঢাকার বাইরের দিকে চলে যাচ্ছে। রাস্তার সাইনবোর্ড পড়ে বুঝার চেষ্টা করে কই যাচ্ছে মাহফুজ। কিন্তু চোখের সামনে হেলমেটের গ্লাস আর বাইকের স্পীডে অভ্যস্ত না হওয়ায় ঠিক করে সাইনবোর্ড পড়তে পারে না সাবরিনা। মেইন রাস্তা থেকে একটা বাক নেয় মাহফুজ। একটা ছোট রাস্তা দিয়ে আশুলিয়া ভেড়িবাধের দিকে ছুটছে। মেইন রাস্তায় ভীড় এড়ানর জন্য এই রাস্তা নেয়। ঢাকার এত কাছে কিন্তু আশে পাশের পরিবেশ অনেকটাই গ্রামের মত। সবুজ চারপাশ। মাঝে মাঝে বিল। ঢাকার এই জায়গাটা অনেক নিচু। একটু বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় সব। প্রায় চল্লিশ মিনিটের মত বাইক চলার পর একটা জায়গায় এসে থামে। একটা ঘাটের মত। বেশ কিছু নৌকা বাধা এখানে। সামনে তিন চারটা চায়ের দোকান। একটা দোকানের সামনে আবার বড় কড়ায়ে পুরি ভাজা হচ্ছে। আর কিছু বাইক রাখা দোকানের সামনে। দুইটা কার দেখা যাচ্ছে একটু দূরে পার্ক করা। আশেপাশে বেশ কিছু লোক। অনেকের ড্রেস দেখে বুঝা যাচ্ছে ঠিক এখানকার লোক না। ঢাকা থেকে আসা। সাবরিনা আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে ঠিক কই আছে। ঢাকা থেকে খুব বেশি দূরে না তবে চারপাশে কেমন একটা আধো গ্রাম গ্রাম ভাব। লোকজন কেউ কেউ নৌকায় উঠছে। একটা দোকানের সাইনবোর্ড পড়তে পারে। আশুলিয়া ভেড়িবাধ। সাবরিনার আবার মনে হয় মাহফুজ বুঝি ওর মনের কথা পড়তে পারে।

সাবরিনার নৌকা চড়তে খুব ভাল লাগে। আজকে সিনথিয়া যখন বলছিল যা ইচ্ছা তা করবার জন্য এই বিকালবেলা তখন একবার মনে হয়েছিল নৌকা চড়ার কথা। তবে এই শহরে একা একা এক মেয়ের জন্য নৌকা চড়ার সুযোগ কই। মাহফুজ যেন ওর মনের কথা শুনতে পেয়ে ওকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। মাহফুজ যে সারপ্রাইজের কথা বলেছে সেটা দেওয়ার আগেই সারপ্রাইজ পেয়ে গেছে সাবরিনা। সাবরিনা বুঝতে পারছে না মাহফুজ কি ওর মনের গোপন কথা জানে? নাকি মাহফুজ আসলেই ওর স্বপ্নে ভাবা সেই রাজকুমার যে ওর সব মনের গোপন ইচ্ছা পূরণ করতে এসেছে। মাহফুজ আগে থেকেই ফোন করে রেখেছিল। এখানে এক সময় নিয়মিত আসার কারণে এই ঘাটের অনেক মাঝিই তার পরিচিত। রহমত বলে এক মাঝ বয়েসি মাঝির সাথে মাহফুজের ভাল খাতির। বেশির ভাগ মাঝি যখন ভাড়া নিয়ে ঝামেলা করে, নৌকায় বসে থাকা কাপলের দিকে পুরোটা সময় এমন ভাবে তাকিয়ে থাকে যাতে কাপলরা অস্বস্তিবোধ করে সেখানে রহমত একদম খাটি প্রফেশনাল। একটা নির্দিষ্ট রেট আছে তার। মাঝিদের নেতা সে। তার উপর এলাকায় তার প্রভাব আছে। তাই তার নৌকায় ঘুরতে বের হলে অহেতুক উটকো ঝামেলায় পড়ার চান্স নেই। এরপর নৌকায় একবার যাত্রী উঠলে তারা কি করল সেদিকে খুব একটা নজর দেয় না রহমত। রহমতও যাত্রী হিসেবে মাহফুজ কে পছন্দ করে। ভাড়া নিয়ে দরদাম করে না। প্রতিবার যাবার সময় একটা ভাল বকশিস দিয়ে যায়। রহমত মাঝি মাহফুজ কে দেখে একটা সালাম দেয়। সাবরিনা কে দেখে তাকেও একটা সালাম দেয়। রহমত টের পায় গত কয় বছর ধরে মাহফুজ যে মেয়ে কে নিয়ে নিয়মিত আসত এই মেয়ে সেই মেয়ে নয়। তবে রহমত এইসবে মাথা ঘামায় না। এইসব ছেলেমেয়েদের খেলা। একজন কে ধরবে আরেক জন কে ছাড়বে। তার কাজ নৌকা ছাড়া আর নৌকা বাওয়া। তাই এর বাইরে সে নজর দেয় না। মাহফুজ রহমত কে ডেকে কই যাবে কি করবে বলে। রহমত হাতের গোল্ডলিফ সিগারেটে শেষ টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দিতে দিতে বলে কোন সমস্যা নাই ভাইজান। এই রুট আমার হাতের মত তালুর মত চেনা।

সাবরিনা নৌকায় উঠে বসে। একটা ছইওয়ালা নৌকা, মানে নৌকার একপাশে ছাউনি দেওয়া। আশুলিয়ার এইসব ছইওয়ালা নৌকা বিখ্যাত অন্তত ঢাকায় যার কলেজ ভার্সিটি পড়েছে তাদের জন্য। নৌকার এই ছাউনির ভিতর প্রেমিক প্রেমিকারা তাদের ভাব ভালোবাসা আদান প্রদান করে। সাবরিনার মত নিরামিষ মেয়েও এটা জানে। আশুলিয়ায় দুই তিনবার আসা হয়েছে সাবরিনার বন্ধুদের সাথে। অল্প কিছুদিন প্রেম করলেও ভার্সিটি লাইফে কখনো এখানে আসা হয় নি কাপল হিসেবে। বন্ধুদের সাথে যতবার এসেছে তখন বড় নৌকা গুলো ভাড়া নিয়েছিল ওরা। আজকে এই ছইওয়ালা নৌকা দেখে সাবরিনার মনে হয় এটাই কি মাহফুজের সারপ্রাইজ? এটা যদি মাহফুজের সেই সারপ্রাইজ হয় তবে একটু হতাশ হতে হবে, মনে মনে ভাবে সাবরিনা। বড় বেশি প্রেডিক্টেবল। হুড তুলা রিক্সা আর তারপর এই ছইওয়ালা নৌকা। সাবরিনা আগ্রহ ভরে মাহফুজের কাজ কর্ম লক্ষ্য করতে থাকে। নৌকা ছাড়ার পর মাহফুজ ছাউনির দিকে যায় না, বরং খোলা জায়গাটায় এসে বসে। সাবরিনাও এসে মাহফুজের থেকে একটু দূরে বসে। নৌকা যত পাড় থেকে দূরে যেতে থাকে তত পাড়ের কোলাহল কমতে থাকে। মাঝে মাঝে দুই একটা নৌকা পাশ দিয়ে চলে যায়। চলে যাওয়া নৌকার স্রোতে ওদের নৌকা দুলে উঠে। সাবরিনা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসে নৌকার দুলনিতে। মাহফুজের কোন ভাবান্তর নেই, ও হাটু কে বাংলা “দ” এর মত করে থুতনির কাছে নিয়ে বসে আছে। মাঝি রহমত সাবরিনা কে অভয় দেয়, আফা ভয় নায়। রহমত মাঝি থাকতে নৌকা ডুবব না। মাহফুজ সাবরিনার সাথে কথা বলতে থাকে ওর ভয় কমানোর জন্য। মাহফুজ খেয়াল করে দেখে সাবরিনা জড়োসড়ো হয়ে আছে। এটা কি ওর কারণে নাকি নৌকার হঠাত হঠাত দুলিনির জন্য সেটা বুঝা কষ্ট। মাহফুজ তাই সাবরিনা কে একটু অন্যমনস্ক করার জন্য রহমত মাঝি কে বলে, রহমত ভাই একটা গান ধরেন। আগের অভিজ্ঞতা থেকে জানে রহমত মাঝির দাড়ি টুপি দেখে মানুষ যখন ভাবে একরকম মানুষ ঠিক তখন রহমত মাঝির গান শুনলে চমকে যায় সবাই। মাহফুজের কথা শুনে রহমত গান ধরে- আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম। গ্রামের নওজোয়ান, * '. আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম। রহমতের দরাজ গলা, ভরাট কন্ঠ। পানির মাঝে খোলা প্রান্তরে এই গলা যেন গম গম করে। গলায় সুর আশ্চর্যজনক ভাবে ভাল। সাবরিনা গান শুনতে পছন্দ করে। তাই রহমতের গানের গলা ওর মনে একটা প্রশান্তি আনে। আস্তে আস্তে যেন ভয় কমছে একটু একটু করে। চারপাশে থইথই পানি, এর মাঝে এমন উদাত্ত গলার গান শুনতে ভাল লাগে। রহমতের গান শেশ হলে সাবরিনা মাহফুজ দুই জনেই হাত তালি দেয়। রহমত কে আর গান গাইতে অনুরোধ করে। রহমত এমনিতে সব যাত্রীদের সামনে গান গায় না তবে মাহফুজ তার স্পেশাল যাত্রী। এছাড়া আজকে মন ফুরফুরা তাই গানের অনুরোধে না করে না। পুরান বাংলা সিনেমা, পল্লীগীতি থেকে একের পর এক গাইতে থাকে গান। মাহফুজ তন্ময় হয়ে গান শুনতে থাকে। সাবরিনাও গান শুনে। নৌকা আস্তে আস্তে বিল পেরিয়ে নদীর দিকে যায়। এদিকেই তুরাগ নদী। আগের তুরাগ আর নেই তবে এখনো বর্ষার সময় তুরাগ ফুলে উঠে। বড় কার্গো গুলো ফুলা উঠা তুরাগে চলাচল করে। সাবরিনা চারপাশ দেখে। নৌকায় উঠার সময় সাবরিনার ধারণা ছিল শুধু মাত্র একটা কারণে মাহফুজ তাকে এই নৌকায় এনেছে। নৌকার ছাউনি। নৌকার ছাউনির ভিতর কি কি ঘটে সেই সব নিয়ে শোনা গল্প সব মাথায় এসেছিল তখন কিন্তু মাহফুজ যেন সেই প্রসংগে কিছুই বলছে না। এই ছেলে যেন কখনোই নিয়মের মাঝে কিছু করবে না। সাবরিনা তখন মাহফুজ কে দেখে। রহমত গান গাইছে- একদিন ছুটি হবে, অনেক দূরে যাব। মাহফুজ যেন সেই গানের সাথে মাথা দুলাচ্ছে আনমনে আর দৃষ্টি দিয়ে রেখেছে দূরপানে। সাবরিনাও তাই গান উপভোগ করে। খালি গলায় এমন চমৎকার গান গান গাওয়া লোক এই নদীর মাঝে আবিষ্কার হবে সাবরিনা ভাবে নি। সারাদিনের চিন্তার পর এখন নদীর ফুরফুরে হাওয়া, এই গান সব মিলিয়ে যেন একটা স্ট্রেস রিলিফ হচ্ছে। সারাদিন টেনশনে থাকার পর মন হালকা হওয়ায় এখন ভাল লাগছে সাবরিনার।

রহমতের গলার গান মাহফুজ সব সময় উপভোগ করে। পানির মাঝে চারদিকে তাকালে নিজেকে বড় ক্ষুদ্র মনে হয়। রহমতের ভরাট গলার গান তখন মনে একটা শান্ত ভাব তৈরি করে। নৌকা আস্তে আস্তে আশুলিয়ার বিল পেরিয়ে তুরাগ নদীতে ঢুকছে। বিলের ভিতর শান্ত পানির জায়গায় এখন স্রোত। এই সময়টায় তুরাগে প্রচুর কার্গো, বার্জ এইসব বড় বড় নৌযান ঢুকে। ঢাকার এই অংশে মালামাল পরিবহনের জন্য এইসব নৌযান ভাল পরিবহন। অনেক গুলো কার্গো বা বার্জ একটু পর পর নোংগর করে রাখা। রহমত গান থামিয়ে দিয়েছে। সাবরিনা শান্ত ভাবে বসে নদীতে চারপাশের পরিবেশ দেখছে। একটু দূরে একদল ছেলে মেয়ে নদীর পাড়ে খেলছে। আরেকটু দূরে ইট ভাটার চিমনি থেকে ধোয়া ঢেকে দিচ্ছে আকাশ। নৌকা একটু সামনে এগিয়ে একটা শাখা নদীতে ঢুকল। নদী এখানে বেশ ছোট হয়ে আছে। মাহফুজ সাবরিনা কে খেয়াল করছে। নৌকা কোথায় যাচ্ছে, কি হবে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন করছে না। এই ব্যাপারটা বেশ অবাক করা। সাবরিনা সব সময় পরিকল্পনা করে চলে। আজকে এভাবে গন্তব্য না জেনে ওর সাথে আসা, এরপর নৌকায় এই গন্তব্য না জেনে ঘুরা সব কিছু সাবরিনার ব্যক্তিত্বের বাইরে।

সাবরিনা চারপাশটা উপভোগ করতে করতে মাহফুজের সারপ্রাইজটা বের করার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন করলেই হয়ত জানা যাবে তবে এইভাবে অনুমান করে বের করতেই বেশি মজা লাগছে। অবশ্য বের করতে না পারলেও ক্ষতি নেই। অনেক সময় না জানাটা সারপ্রাইজের মূল্য বাড়ায়। বন্ধুদের সাথে যতবার এই আশুলিয়ায় নৌকা ভ্রমণ করেছে ততবার খুব বেশি দূর যায় নি ওরা। দশ মিনিটের মত বিলের ভিতরে ঢুকে নৌকা র‍্যান্ডম ঘুরেছে হয়ত কিছুক্ষণ। আজকের মত এতদূর কখনো আসে নি। সাবরিনার অনভিজ্ঞ চোখে বুঝতে পারে ওরা এখন বিলে নেই, সম্ভবত কোন নদীতে এসে পড়েছে। নদীটার নাম জানা নেই সাবরিনার, এইসব ব্যাপারে ওর নলেজ কম। নৌকাটা এখন ছোট একটা শাখায় ঢুকে পড়েছে। একটু আগে দেখা নদীর মাঝে ব্যস্ত পরিবেশ চলে গিয়ে এখন আবার একটা শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। অল্প একটু সামনে একটা বড় কার্গো শিপ নোংগর করা। নৌকা আস্তে আস্তে গিয়ে কার্গোটার পাশে গিয়ে দাড়াল। কার্গো শিপের গায়ে বড় বড় করে লেখা এমভি রুস্তম। সাবরিনা বুঝার চেষ্টা করল। রহমত ওদের দিকে তাকিয়ে বলল, আইসা গেছি ভাই।

সিনথিয়া যখন ঠাট্টার ছলে আশুলিয়ার কথা বলছিল তখন মেইনলি এই প্ল্যানটা মাথায় আসে মাহফুজের। নদীর বুকে থেকে সূর্যাস্ত দেখা। এমভি রুস্তমের মালিক, সারেং এবং মাস্টার সবাই মাহফুজের পরিচিত লোক। এর মালিক সাদেক পুরান ঢাকার লোক। ওর সমবয়সি। কমন বন্ধু বান্ধব আছে। রাজনীতিতে আগ্রহ আছে তাই মাহফুজের সাথে ভাল যোগাযোগ। মাহফুজ লবিং করে সাদেক কে ওদের যুবদলের একটা ওয়ার্ডের সভাপতি বানিয়ে দিয়েছে। তাই সাদেক মাহফুজ কোন অনুরোধ করলে ফেলতে পারে না। সাদেকের বাবার নৌপথে মালামাল পরিবহনের বিজনেস আছে। এমভি রুস্তম হচ্ছে ওদের কার্গো শিপ। সাদেকের সাথে বন্ধুত্বের সূত্রে তুরাগের এই লোকেশনে নদীর বুক থেকে সূর্যাস্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছে ওর। বিভিন্ন সময় আসার কারণে এমভি রুস্তমের মাস্টার এবং সারেং দুইজনের সাথেই খাতির হয়ে গেছে। সিনথিয়া কে নিয়েও এসেছে আগে দুই একবার এই বোটে। বোট নোংগর করা থাকলে সারেং এবং মাস্টার সাধারণত বোটে থাকেন না, দুই জনের ফ্যামিলি ঢাকায় থাকে তাই তখন তারা পরিবারের কাছে থাকেন। আজকে সাদেক কে যখন জিজ্ঞেস করল ওর এক বন্ধু কে নিয়ে সূর্যাস্ত দেখা যাবে কিনা তখন সাদেক বলল হ্যা যাবে না কেন। বন্ধু না বান্ধবী জিজ্ঞেস করতেই মাহফুজ উত্তর দিয়েছিল এত প্রশ্ন করিস কেন। সাদেক বলল, তোর শালা কপাল। যা সূর্যাস্ত দেখিয়ে মেয়ে পটা আর আমি বাপের ব্যবসার হিসাব কষি। মাহফুজ উত্তর দেয় কেউ তোর মত টাকার পিছনে ছুটবে আর কেউ আমার মত উপভোগ করবে।

এমভি রুস্তম বড় কার্গো শিপ। নদীতে চলে। চট্টগ্রাম বা মংলা পোর্টে সামুদ্রিক জাহাজ মাল খালাস করলে সেগুলো নদীতে ছোট ছোট কার্গো শিপে আনা হয়। এমভি রুস্তম এমন একটা কার্গো শিপ। জাহাজের পিছন দিকে ইঞ্জিন আর আর ইঞ্জিনের উপর দুই তলা উচু শিপ স্ট্রাকচার। শিপ স্ট্রাকচারের নিচতলায় কার্গোর সারেং আর অনান্য ক্রদের রুম, কিচেন। উপর তলায় জাহাজের মাস্টারের কেবিন এবং তার পাশে জাহাজ পরিচালনার মেইন রুম। এমভি রুস্তম এখন নদীতে নোংগর করে আছে। মাহফুজ আসার আগেই মালিক কে ফোন করে এসেছে তাই জাহাজের লোকজন জানে মাহফুজ আসছে। আজকে অবশ্য মাস্টার এবং সারেং কেউ নেই। রুস্তমের মালিক সাদেক মাঝে মাঝেই বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা বসায় কার্গো শিপে, বিশেষ করে পূর্ণিমা রাতে। মাহফুজের প্রথম আসা সেই ভাবে। এরপরেও মাহফুজ বেশ কয়েকবার এসেছে তাই কার্গোর লোকেরাও মাহফুজ কে চিনে। এমভি রুস্তমে এমনিতে সব মিলিয়ে লোক আছে ১২ জন। আজকে কাজ নেই এবং নোংগর করে থাকায় খালি ৪ জন আছে শিপে। রহমতের নৌকা শিপের গায়ে লাগানো এখন। রহমত নিচ থেকে হাক দেয়, হই ইইইইই। উপর থেকে একজন নিচে ঝুকে দেখে কে এসেছে। মাহফুজ কে নৌকায় দেখে সালাম দেয়, স্লামালাইকুম ভাইজান। দাড়ান উঠার ব্যবস্থা করতেছি। সাবরিনার কাছে সব কিছু নতুন। তাই অবাক হয়ে সব কিছু দেখছে। মাহফুজ কে জিজ্ঞেস করে আমরা এখানে কেন? মাহফুজ উত্তর দেয় আরেকটু অপেক্ষা কর তাহলে নিজ চোখেই দেখতে পারবে। উপরে থেকে সালাম দেওয়া লোকটা আসে। সে উপর থেকে একটা সিড়ি নামায়। প্রায় বার ফুট উচুতে উঠতে হবে। শক্ত দড়িতে বানানো সিড়ি। সাবরিনা জিজ্ঞেস করে এই সিড়ি বেয়ে উঠতে হবে? মাহফুজ জিজ্ঞেস করে ভয় করছে। সাবরিনা উত্তর দেয় এমন দড়ি দিয়ে বানানো সিড়ি দিয়ে আমি কখনো উপরে উঠি নি, আর সিড়ি যেভাবে দুলছে আমার ভয় লাগছে। মাহফুজ আজকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করলেও এই সিড়ি দিয়ে উপরে উঠার ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করে নি। সিনথিয়া কে নিয়ে যে কয়বার এসেছে এখানে তখন অসুবিধা হয় নি। সিনথিয়ার মধ্যে একটু গেছো ব্যাপার আছে আর সিনথিয়া এইসব ব্যাপারে অনেক সাহসী তাই মাহফুজ কে এইসব নিয়ে ভাবতে হয় নি। মাহফুজ হয়ত অবেচেতন মনে ভেবে নিয়েছিল দুই বোন তাই সাবরিনা বুঝি এখানে নিঃসংকোচে উপরে উঠে যাবে। এত কাছে এসে এমন এক বাধার মুখে পড়বে ভাবে নি মাহফুজ। মাহফুজ আর রহমত সাবরিনা কে অভয় দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সাবরিনার মুখ দেখে বুঝা যায় খুব একটা কাজ হচ্ছে না। উপর থেকে যে ছেলেটা দড়ি নামিয়েছে সে বলে, আফা উইঠা আসেন। একদম সোজা এইটা। উপরে আসলে দেখবেন কেমন সুন্দর লাগে চারিদিক এহান থেকে। এভাবে প্রায় দশ মিনিট ধরে সাবরিনা কে নানা ভাবে উপদেশ দেওয়ার চেষ্টা করেও খুব একটা লাভ হয় না। সাবরিনা সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে সাহস করে না। এই সময় সমাধান দেয় উপরের ছেলেটা। বলে, ভাইজান আগে আফা উঠতে থাকুক, আপনি আফার একদম পিছন পিছন উঠবেন। আফা যদি একটু হাত ফসকায় তাইলে আপনি ধরতে পারবেন। আপনি একদম এমন ভাবে পিছনে থাকবেন যাতে আপনার মাথা আপার কোমড় বরাবর থাকে তাইলে দেখবেন কোন ভয় পাওয়ার কিছু নাই। সাদিক স্যার উনার বউরে নিয়া যেবার আসছিল সেবার উনি ম্যাডামরে এইভাবে উপরে তুলছিল। বেশ অনেক কথা চালাচালির পর সাবরিনা এইভাবে উপরে উঠতে রাজি হয়।

সাবরিনা যখন দড়ির সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে মাহফুজ ঠিক তার পিছে পিছে উপরে উঠছে। মাহফুজের মুখ তখন সাবরিনার কোমড় বরাবর থাকার কথা থাকলেও মাহফুজ একদম সাবরিনার পাছা বরাবর নিজের মুখ আবিষ্কার করে। সাবরিনার পিছন দিকটা মাহফুজের সব সময় এমনিতেই লোভনীয় মনে হয়। তার উপর এই অবস্থায় সিনথিয়ার নিজের বোনের পাছা নিয়ে করা সকল জোক্স মনে পড়ে যায়। অনিচ্ছা স্বত্তেও মাহফুজের মুখ সামনে এগিয়ে যায়। নাকটা পাছা বরাবর নিয়ে হালকা করে শ্বাস নেয়। লালবাগের কেল্লা আর কনসার্টের রাতে ধরা সাবরিনার পাছা যেন মনের পর্দায় ভেসে উঠে। চোখের সামনে সাবরিনা উপরে উঠছে ধীরে ধীরে। প্রায় সাত ফিটের মত উপরে উঠার পর দড়ির সিড়িটা একটু কেপে উঠে। সাবরিনা আতংকে চিতকার করে উঠে, দুলছে, দুলছে। পরে যাব। উপরের ছেলেটা বলে আফা পড়বেন না। জোয়ার আসতেছে তাই শিপ কাপতেছে। নিচ থেকে রহমত বলে আপা সমস্যা নাই, ভাইজান আছে নিচে উনি আপনারে ধরবে। ভয়ের একটা চরিত্র হল একবার ভয় পেলে ক্রমাগত সেই ভয় বাড়তে থাকে। সাবরিনার ভয় তখন ক্রমাগত পড়ছে। জোয়ার আসছে নদীতে তাই স্রোতে শিপ কেপে উঠছে সাথে দুলছে দড়ির সিড়ি। সাবরিনা উপরে উঠতে পারছে না নিচেও নামতে পারছে ন। আতংকে শক্ত করে ধরে আছে সিড়ি। মাহফুজ তাই এবার ভূমিকা নেয় ভয় কাটানোর। সাবরিনা কে নিচ থেকে বলে উঠে পড়, ভয়ের কিছু নেই। আমি নিচে আছি। এই বলে এক হাতে সিড়ি ধরে অন্য হাতে সাবরিনার কোমড়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দেয় উপরের দিকে। ভয়ের মাঝেও সাবরিনার মধ্যে সেন্স কাজ করে মাহফুজ ওর কোমড়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দিচ্ছে। আর নিচে দাঁড়ানো রহমত সেটা দেখতে পারছে। সাবরিনা ঘাড় ঘুরিয়ে হিস হিস করে মাহফুজ কে বলে কি করছ, সবাই দেখছে। মাহফুজ বলে কি করলাম আমি? আমি তো খালি তোমাকে উঠতে সাহায্য করছি। সাবরিনা বলে আর হাত দিবে না। মাহফুজ হাসি দিয়ে বলে আচ্ছা। সাবরিনা কষ্ট করে আরেক স্টেপ উপরে উঠে। দড়ি আবার দুলে উঠে। সাবরিনা আবার ফ্রিজ হয়ে যায় ভয়ে। উপরের ছেলেটা আর নিচে রহমত উতসাহ দিতে থাকে সাবরিনা কে কিন্তু কিছুই যেন সাবরিনা কে নড়াতে পারে না। মাহফুজ হঠাত ভাবে সাবরিনার লজ্জা যে প্রবল তাতে একমাত্র একটাই সমাধান আছে। মাহফুজ তাই সেই রাস্তাটাই এইবার ধরে। একহাত বাড়িয়ে সাবরিনার ডান পাছাটা ধরে এবং শক্ত করে চেপে ধরে। সাবরিনা আউ করে উঠে। উপরের ছেলেটা আর নিচের রহমত দুইজনেই যথেষ্ট দূরে। এরপর চারপাশের শব্দ তাই দুইজনের কেউ সাবরিনার শব্দ শুনতে পায় না। সাবরিনা ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকায় আগুন চোখে, পারলে যেন এখনি ভস্ম করে দিবে। মাহফুজ বলে এভাবে রাগি চোখে না তাকিয়ে উপরে উঠে। সাবরিনা আবার রাগী চোখে তাকায়। মাহফুজ এবার পাছায় থাকা হাতটা দিয়ে আর জোরে চেপে ধরে সাবরিনার পাছার দাবনা। আহহহহ। সাবরিনা কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না। নিজের হাত দিয়ে যে মাহফুজের হাত সরিয়ে দিবে সেটার উপায় নেই কারণ ভয়ের কারণে কোন হাত মইয়ের দড়ি থেকে সরাতে পারে না। অন্যদিকে এটা নিয়ে কিছু বললে উপরের ছেলেটা বা নিচের রহমত মাঝি শুনে ফেলতে পারে। তাই এক অসম্ভব সমস্যায় পড়ে যায় সাবরিনা। মাহফুজ বলে যতক্ষণ না তুমি উপরে উঠছ ততক্ষণ আমি কিন্তু তোমার পাছা নিয়ে খেলতে থাকবে। হিস করে উঠে সাবরিনা, আস্তে বল। মাহফুজ এবার অন্য পাছার দাবনায় হাত বুলায়, বলে উপরে উঠ না হলে আমি কিন্তু খেলতেই থাকব। সাবরিনা উপরের দিকে তাকায় আর একবার নিচের দিকে তাকায়। ভয়ের কারণে পা নড়ছে না কিন্তু ওর পাছায় মাহফুজের হাতের স্পর্শ টের পায়। সাবরিনা মনের সব শক্তি এক করে আরকে পা দেয়। নিচে থেকে রহমত চিতকার করে সাবাস আপা। মাহফুজ সাবরিনার এবার পাছার দুই দাবনার মাঝে এক আংগুল ঢুকিয়ে দেয় আর গুতা দিয়ে বলে সাবাস সাবরিনা আরেকটু চেষ্টা করলেই উপরে উঠে যেতে পারবে। পাছার দুই দাবনার চেরা বরাবর সাবরিনার আংগুল টের পেয়ে সাবরিনা যেন লজ্জায় শেষ হয়ে যায়। মনের সব শক্তি আবার এক করে আরেক পা দেয় উপরের দিকে। সাবরিনা এক পা এক পা করে উপরে উঠে আর মাহফুজ সাবরিনার পাছায় হাতের কারিকুরি বজায় রেখে উৎসাহ দেয়। অবশেষে সাবরিনা শেষ ধাপ অতিক্রম করে উপরে উঠে পড়ে। সাবরিনা প্রস্তুতি নেয় মাহফুজ কে ঝাড়ি দেবার। তবে কিছু বলার আগেই মাহফুজ উপরে উঠে আসে আর সাবরিনা কে বলে আমাকে কিছু বলার আগে সামনে দেখ।

কার্গো শিপ যথেষ্ট উচু তাই উপর থেকে সামনে দেখা যায় অনেক দূর। সামনে ধানের ক্ষেত, নদী। ঢাকার এত কাছে এমন সুন্দর দৃশ্য দেখবে সাবরিনা ভাবে নি। সাবরিনা কিছু বলার আগে মাহফুজ বলে আর দেখার আছে আমার সাথে আস। ওরা আসলে শিপ স্ট্রাকচারের প্রথম তালায় ছিল এবার লোহার ঘোরানো এক সিড়ি বেয়ে দোতালায় উঠে। মাহফুজ বলে এইবার আবার তাকাও। আর দূরে এবার দেখা যায়। বেশ দূরে আমিনবাজার ব্রিজ। অন্যসাইডে ধান ক্ষেত আর নদী আর দূর দিগন্তে অস্তগামী সূর্য। অস্তগামী সূর্যের লাল আভায় দূর প্রান্ত পুরোটা লাল হয়ে আছে। সাবরিনা মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজের মুখে সূর্যের লাল আভা পড়ে আর হ্যান্ডসাম লাগছে ওকে। সাবরিনা ভাবে এই দৃশ্য উপাহার দেবার জন্য ওকে মাফ করে দেওয়া যায়। এমন চমৎকার একটা সারপ্রাইজ।

সাবরিনার অবশ্য আর সারপ্রাইজ পাওয়া বাকি ছিল। মাহফুজ আগে থেকে ফোন দিয়েই ব্যবস্থা করে রেখেছিল। এই শিপের কুকের রান্নার হাত খুব ভাল। নদী থেকে কেনা ফ্রেশ মাছের কাটলেট করে রেখেছে সাথে কড়া করে বানানো দুধ চা। মাস্টারের কেবিনের সামনে বারান্দায় একটা প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিল পাতা। এর উপর ফিস কাটলেট আর চা সার্ভ করা হল। মাহফুজ বলল সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে ফিস কাটলেটের কোন তুলনা হয় না। দুপুরের খাবার খেয়েছে অনেকক্ষণ তাই সাবরিনার পেটে কাটলেট দেখেই ক্ষুধা জানান দেয়। গুরগুর করে শব্দ করে সাবরিনার পেট। মাহফুজ বলে ক্ষুধার ঘন্টা বেজে যাচ্ছে কিন্তু তোমার পেটে। সাবরিনা লজ্জা পায়। চুপচাপ বসে পড়ে খাবার টেবিলে। দারুণ গন্ধ আসছে কাটলেট থেকে। একটু কেটে মুখে পুরতেই সাবরিনার মনে হয় এমন চমৎকার ফিস কাটলেট আর কোথাও খায় নি ও। বেশ গপগপ করে খেতে থাকে। দেখতে না দেখতেই দুইটা কাটলেট হাওয়া হয়ে যায়। ক্ষুধাও লেগেছিল অনেক। মাহফুজ ডেকে কুক কে আরেকটা কাটলেট দিতে বলে। সাবরিনা না না করে কিন্তু সার্ভ করার পর সেটাও পেটে চালান করে দেয়। সাবরিনা বলে দারুণ খাবার ছিল। মাহফুজ বলে জানি। আর জানি বলেই তো এখানে নিয়ে আসলাম সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে ফিস কাটলেট খাওয়ানোর জন্য। কারণ গুড ওয়ে টু লেডিস হার্ট ইজ ফুড। সাবরিনা হেসে দেয়। বলে ইংরেজিতে তো বাক্যটা উলটা, গুড ওয়ে টু জেন্টলম্যানস হার্ট ইজ ফুড। মাহফুজ বলে এই সমতার যুগে আমি নাহয় একটু ভিন্ন ভাবে বললাম। খাওয়ার পর দুইজনে সামান্য ক্লান্ত। ঝিরঝির বাতাসে চা খেতে খেতে দুইজনেই সূর্যাস্ত উপভোগ করছে। কোন কথা বলে না দুই জনের কেউ। হাতে চায়ের কাপ। মাঝে মাঝে চুমুক দিচ্ছে কাপে আর দৃষ্টি দূরপানে। এমভি রুস্তম মূল নদীর থেকে বের হওয়া একটা শাখায় নোংগর করে রাখায় জাহাজ বা নৌকার ইঞ্জিন এর শব্দ কম আশে পাশে। চারপাশে গ্রাম তাই শহরের কোলাহল নেই। নোংগর করে থাকায় এবং আজকে কোন মালামাল লোড করার ডিউটি না থাকায় পুরো শিপে আছে মাত্র চারজন। সবাই ক্র তাই তারা সবাই নিচে। মাহফুজ আর সাবরিনা উপরে মাস্টারের কেবিনের সামনে বসে আছে। মাস্টারের কেবিনও খুলে দেওয়া হয়েছে ওদের জন্য। যদি কোন কারণে লাগে কারণ শিপের সবচেয়ে ভাল টয়লেট এই রুমের ভিতর। উপরের তালায় তাই এখন দুইজন ছাড়া কেউ নেই।

ঘনায়মান সন্ধ্যায় সূর্য তখন প্রায় অস্তমিত। লাল আলো ক্রমশ সরে অন্ধকার জায়গা করে নিচ্ছে দিগন্ত জুড়ে। নদীর পাড়ে ঝি ঝি পোকা ডাকছে। এরমাঝে মাহফুজ বলে উঠে-

ক্ষান্ত হও, ধীরে কথা কও ওরে মন
নত কর শির, দিবা হল সমাপন,
সন্ধ্যা আসে শান্তিময়ী, তিমিরের তীরে
অসংখ্য প্রদীপজ্বালা এ বিশ্ব মন্দিরে এল
আরতির বেলা।

মাহফুজের মুখ থেকে আবৃত্তি শুনে অবাক হয়ে যায় সাবরিনা। প্রায় অন্ধকারে মাহফুজের মুখে এমন কবিতা শুনে সাবরিনা বুঝতে পারে না এটা ঘোর নাকি বাস্তব। মাহফুজের গাড় গম্ভীর গলায় অন্ধকারে যেন গম গম করে শব্দ গুলো। মাহফুজ আবৃত্তি করে চলে-

ক্রমে ঘনতর হয়ে নামে অন্ধকার,
গাঢ়তর নীরবতা- বিশ্বপরিবার
সুপ্ত নিশ্চেতন, নিসংগনী ধরণীর
বিশাল অন্তর হতে উঠে সুগম্ভীর
একটি ব্যাথিত প্রশ্ন, ক্লান্ত ক্লিষ্ট সুর,
শূণ্যপানে- “আরো কোথা? আর কতদূর?”

কবিতা শেষ হওয়ার পর আবার চারপাশে আগের মত নীরবতা। সাবরিনা কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না। প্রায় ফিস ফিস করে সাবরিনা কথা বলে যেন জোরে বললেই ঘোরটুকু ভেংগে যাবে। জিজ্ঞেস করে, তুমি কবিতা আবৃত্তি করতে পার? মাহফুজ হেসে বলে কেন আমার কি কবিতা জানা নিষেধ নাকি? পুরান ঢাকার ঢাকাইয়া কুট্টিদের কি কবিতা পড়া নিষেধ? সাবরিনা একটু লজ্জা পায় বলে নাহ, তা না। তবে তোমাকে দেখে মনে হয় না কবিতা পড় তুমি। তাই আবৃত্তি করতে দেখে অবাক হলাম। মাহফুজ বলে তোমার কথা অর্ধেক ঠিক। সাবরিনা বলে কেমন করে? মাহফুজ বলে আমি কবিতা পড়ি না তবে কলেজের ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে কলেজের আবৃত্তি ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। আমার কথায় ঢাকার আঞ্চলিক টান ছিল সেটা দূর করার জন্য এই আবৃত্তি গ্রুপে যোগ দিয়েছিলাম। আমাদের ক্লাবে নানা কবিতা মুখস্ত করতে হত। তেমন ভাল ছাত্র না হলেও আমার স্মৃতি শক্তি খারাপ না। তাই এতদিন আগের মুখস্ত করা কিছু কবিতা এখনো মনে রয়ে গেছে। আজকে এই সন্ধ্যায় সূর্য ডুবতে দেখে শান্ত পরিবেশে মনে হল আর কতদূর ছুটতে হবে আমাদের। এমন একটা শান্ত সন্ধ্যাই তো কাটাতে চাই আমরা একসাথে কিন্তু চারপাশে কত বাধা। আমি তো আর কোন জন্য বাধা হতে চাই না। তোমার নিস্তরংগ জীবনে ঝড় তুলতে চাই না। খালি চাই তোমার একটু সংগ। মাহফুজের কথা সাবরিনার মনের গহন দরজায় কড়া নাড়ে। আর অন্ধকার হয়ে আসে চারিদিকে। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় মাহফুজ। সাবরিনার দিকে তাকিয়ে বলে তোমার আর আমার মাঝে যেন সেতু এই অন্ধকার। ভেবে দেখেছ আমরা যতবার আমাদের মনের দরজা খুলে দিয়েছি ততবার এই অন্ধকারের চাদর আমাদের সাহায্য করেছে। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এই সম্পর্কে অন্ধকার আমাদের বন্ধু। সাবরিনার হাত ধরে মাহফুজ ওকে দাড় করায়। নদীর দিকে ইংগিত করে বলে আমি যে কবিতা আবৃত্তি করতে পারি আমি নিজেই ভুলে গিয়েছিলাম। আজকে এই পরিবেশে যেন এই নদী, অন্ধকার আর তুমি আমার ভিতরের হারিয়ে যাওয়া একটা দিক কে তুলে আনলে। আমিও ঠিক সেভাবে তোমার মনের ভিতর চাপা পড়া সাবরিনা কে বের করে আনতে চাই। তোমাকে দেখিয়ে দিতে চাই তোমার ভিতর আরেকটা তুমি আছে যার চাওয়া ভিন্ন আর সেই ভিন্ন চাওয়া পূরণ করতে পারি খালি আমি। মাহফুজের হাত ধরে কখন সাবরিনা দাঁড়িয়ে গেছে সাবরিনার সে কথা মনে নেই। প্রায় অন্ধকার হয়ে আসা নদীর বুকে এমভি রুস্তমের আপার ডেকে তখন খালি সাবরিনা আর মাহফুজ। প্রায় অন্ধকারে সাবরিনা দেখতে পায় মাহফুজের মাথা নিচু হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে সেই নিচু হয়ে মাহফুজের ঠোট যেন খুজে নেয় তার সংগীকে। সাবরিনা ওর ঠোটে মাহফুজের ঠোটের স্পর্শ পায়, আপনা আপনি বন্ধ হয়ে আসে ওর চোখ। ওর নরম ঠোটে মাহফুজের ঠোট যেন ডুব সাতার খেলে। চোখ বন্ধ করে এই মূহুর্তটা সাবরিনা ওর মস্তিষ্কে চিরদিনের জন্য খোদাই করে রাখতে চায়। মাহফুজ তখন চুষেই চলছে সাবরিনার ঠোট। একবার উপরের ঠোট আরেকবার নিচের ঠোট। সাবরিনা প্রতিটা চুমুতে যেন গলে গলে পড়ছে। সাবরিনা দুই পায়ের আংগুলের উপর ভর দিয়ে উচু হয়ে দাঁড়ায় যেন মাহফুজের আরেকটু কাছে এসে দাড়াতে পারে। কোন বিরতি ছাড়াই দুই জোড়া ঠোট উষ্ণতা বিনিময় করছে। একটু পরে সাবরিনা হাপিয়ে উঠে। মাহফুজ বুঝতে পেরে একটু বিরতি দেয়। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে সাবরিনা। হাপড়ের মত উঠছে বুক। সাবরিনার মনে তখন সেই চিরচেনা দ্বন্দ্ব। সপে দিবে কি নিজেকে নাকি রুখে দাঁড়াবে? মাহফুজ যেন অন্তর্যামী, জিজ্ঞেস করে ডাউট হচ্ছে তোমার মনে? সাবরিনা কিছু বলে না। মাহফুজ বলে আমাদের মাঝে আর কিছু হওয়া বাকি নেই কিন্তু তোমার পাওয়ার বাকি অনেক কিছু, অনেক অভিজ্ঞতা। একমাত্র আমি তোমাকে দিতে পারি সেই অভিজ্ঞতা। সাবরিনার মনের বিদ্রোহী অংশ যেন আজ মুক্ত বিহংগ। সেই অংশ সাবরিনা কে ওর সব অজানা অপূর্ণ স্বপ্নের কথা মনে করিয়ে দেয়। মাহফুজ সাবরিনার নীরবতা কে সম্মতি ধরে নেয়। এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে। মানব শরীরের এক আলাদা উষ্ণতা আছে, আলাদা একটা ঘ্রাণ আছে। সাবরিনা মাহফুজ পরষ্পর সেই উষ্ণতা আর ঘ্রাণে তখন ডুবে আছে। সাবরিনার মাথা মাহফুজের বুকে আর মাহফুজের মাথা সাবরিনার চুলে ডুবে আছে। সাবরিনার মনে হয় কি পুরষালী শক্তিশালী একটা গন্ধ। আর মাহফুজের মনে হয় কি মিষ্টি একটা গন্ধ।

মাহফুজের এক হাত সাবরিনার পিঠে উঠানামা করতে থাকে আরেক হাত ক্রমশ নিচে নামতে থাকে। একটু একটু করে নিচে নামতে থাকা হাত সাবরিনার পাছায় পৌছে যায়। পাছার এক দাবনা হাতের মুঠোয়ে পুরে শক্ত করে চেপে ধরে মাহফুজ। সাবরিনা কেপে উঠে, আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মাহফুজ কে। আজকে রিক্সা এবং সিড়ি বেয়ে উঠার সময় মাহফুজের আদর আর শাসনে এমনিতেই ভেতরে ভেতরে তেতে আছে সাবরিনা। এরপর সন্ধ্যায় এই অন্ধকারে রোমান্টিক পরিবেশ। সাবরিনার ভিতরের সংশয় যেন আস্তে আস্তে বাষ্প হয়ে যাচ্ছে ওর নিজের ভিতর জ্বলে উঠা উত্তাপে। মাহফুজ পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে অন্য হাতে আদর করে দিচ্ছে সাবরিনার পাছায়। একবার বাম আরেকবার ডান পাছায়। শক্ত হাতে ডলে দিচ্ছে পোদের দুই দাবনা। এভাবে আদর খেয়ে যেন আর গরম হয়ে উঠছে সাবরিনা কিন্তু সাহস করে মুখ ফুটে বলবার ক্ষমতা নেই ওর। প্রতিবার মাহফুজের হাত যখন শক্ত করে চেপে ধরছে সাবরিনার পাছা ততবার মাহফুজ কে আর জোরে জাপটে ধরছে সাবরিনা। মাহফুজ বুঝে এইবার আসল সময় এগিয়ে এসেছে। সাবরিনার পাছা থেকে হাত সরায় মাহফুজ। পাজকোলা করে মাটি থেকে উপরে তুলে নেয় সাবরিনা কে। সবারিনা মাহফুজের গলা ধরে ভারসাম্য রক্ষা করছে। লজ্জায় ওর চোখ বন্ধ। সাবরিনা জানে এরপর কি হতে যাচ্ছে কিন্তু সম্মতি বা প্রতিবাদ কোনটা করবার সাহস বা শক্তি ওর আর নেই। সাবরিনা খালি প্রতীক্ষা করছে পরে কি ঘটে এটা দেখবার।

মাস্টারের কেবিন আধ খোলা ছিল। মাহফুজদের জন্য খোলা রাখাছিল। মাহফুজ মাস্টার এবং সাদেক দুইজনের সাথে আলাদা করে কথা বলে রুমের তালা খুলে রেখেছে। সাবরিনা কে পাজকোলা অবস্থায় পা দিয়ে দরজায় একটা লাথি দিয়ে দরজা টা পুরোপুরি খুলে ফেলে মাহফুজ। ভিতরে একটা হলুদ আলো জ্বলছে। ছোট একটা রুম। সিংগেল খাট, একটা টেবিল আর চেয়ার। খাটের উলটো দিকে টয়লেটের দরজা। কোন বাহুল্য নেই পুরো রুমে। নেই কোন অতিরিক্ত আসবাব। বিছানার চাদর টা পুরান বুঝা যায় তবে পরিষ্কার। আজকেই মাহফুজের জন্য পাতা হয়েছে। মাহফুজ সাবরিনা কে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেয়। সাবরিনা চোখ খুলে। হলুদ আলোয় মাহফুজের বিশাল শরীর আর বিশাল মনে হয়। মাহফুজ একদম সাবরিনার সামনে এসে দাঁড়ায়। বসে থাকা সাবরিনার মুখ তখন মাহফুজের ঠিক দুই পায়ের সংযোগস্থল বরাবর। মাহফুজ যেন আস্তে আস্তে শিকারে নামা বাঘের ভূমিকা নেয়। খেলিয়ে খেলিয়ে হরিণ কে ক্লান্ত করে তবেই শিকার করবে। সাবরিনার মাথাটা ওর প্যান্টের উপর দিয়ে বাড়া বরাবর চেপে ধরে। প্যান্টের ভিতর ওর বাড়ার তখন বাড়ন্ত দশা। ফুলে একদম শক্ত হয়ে আছে। সাবরিনা এর আগে একবার দেখলেও বিশ্বাস হতে চায় না প্যান্ট কিভাবে এত ফুলে থাকে একটা মানুষের। ভিতরে কি লুকানো আছে। আসলেই কি এত বড়? শেষদিন দেখেও মনে হয়েছিল বিশাল কিন্তু সেদিনের সব কিছু যেন স্বপ্নের মত ছিল। আজকেও কি দেখতে পাবে? মাহফুজ তখন সাবরিনার মাথা চেপে রেখেছে ওর বাড়ার উপর প্যান্টের পর দিয়ে আর হালকা হালকা করে কোমড় দুলিয়ে সাবরিনা কে ভিতরের ভীমাকৃতি বাড়ার স্পর্শ দিচ্ছে। তবে মাহফুজ আজকে সাবরিনা কে ধীরে ধীরে খেলিয়ে দেখতে চায় কতদূর যেতে পারে সাবরিনার ভিতরের অনুগত মেয়ে।
Next page: Update 23
Previous page: Update 21