Update 53



হাইওয়ে থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে মাহফুজ আর নুসাইবার গাড়ি। এয়ারপোর্ট থেকে বের হবার পর নুসাইবা খালি জিজ্ঞেস করেছিল কোথায় যাচ্ছি আমরা? মাহফুজ বলেছিল গেলেই দেখবেন। মাহফুজের উপর এতটুকু ভরসা করে এতদূর এসেছে তাই বাকিটা ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই। গাড়ির সিটে পিঠ দিয়ে বাইরে রাস্তা দেখতে থাকে নুসাইবা। টের পায় বুকের কাপুনি এখুনি কমে নি। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত। মাহফুজের নিজের অবশ্য জানা নেই পরের প্ল্যান কি। ওর মনে পড়ে সোলায়মান শেখ অনেকবার করে বলেছে দেশ ছাড়া কঠিন হবে বরং দেশের ভিতর কোথাও লুকানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার। তবে দেশের ভিতর কোথায় লুকিয়ে রাখা যায় নুসাইবা কে নিয়ে এইটা ঘাটতে গিয়ে দুইজনের মনে হয়েছে ম্যানেজার আর মুন্সী দুইজনে মিলে লাগলে আসলেই বেশিদিন লুকিয়ে থাকা কষ্টকর। সবচেয়ে ভাল হয় কয়েকদিন পর পর জায়গা চেঞ্জ করলে। আবার বেশি জায়গা চেঞ্জ করলে মানুষের চোখে পড়ার চান্স বেশি। তাই তখন ঠিক হয় রিস্ক যাই হোক প্রথমে দেশের বাইরে বের হবার চেষ্টা করতে হবে। কারণ একবার বের হতে পারলে এরপর রিস্ক কম। আর দেশে থাকলে প্রতিনিয়ত লুকিয়ে থাকতে হবে। তবে মুন্সী তার পরেও দুই তিনবার প্ল্যান বি ঠিক করতে বলেছে মানে দেশের ভিতর কোথাও লুকানো। সেটা আর মাহফুজের করা হয় নি। সোলায়মান শেখ বলেছিল সে কিছু ভেবে দেখবে করা যায় কিনা। মাহফুজ এখন তাই সোলায়মান শেখের উপর আস্থা রেখে গাড়ি চালাচ্ছে। এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে তাই আগের ঠিক করা একটা জায়গায় যেতে থাকে মাহফুজ। এটাই ছিল প্ল্যান বি। এরপর কোথায় যাবে কি করবে মাহফুজ ঠিক করে জানে না। উত্তরার ভিতর দিয়ে পূর্বাচল হয়ে ৩০০ ফিট রাস্তা থেকে একটু দূরে একটা গলি রাস্তা মতন জায়গায় দাড়িয়ে আছে মাহফুজ গাড়ির লাইট বন্ধ করে। পূর্বাচলের এই সাইডে নতুন বাড়ি ঘর হওয়া শুরু হয় নি। পুরান কিছু বাড়িঘর রয়ে গেছে। সরকার সব জায়গা দখল নিয়ে সরকারি হাউজিং করছে। পুরাতন জমির মালিকেরা কেউ কেউ এখনো উচ্ছেদ এড়িয়ে রয়ে গেছে। একটু সামনেই একটা রেস্টুরেন্ট আছে। রাত দশটার দিকে বন্ধ হয়ে যায়। এখান এইখানটা তাই প্রায় শুনশান। একটু পর পর শেয়ালের ডাক আসছে। ঢাকার ভিতর এইভাবে শিয়াল ডাকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। মানুষ সব দখল করে নিতে চাইলেও প্রকৃতি ঠিক কোন না কোন ভাবে তার অস্তিত্ব বজায় রাখে। পৃথিবীর অন্যতম বড় মেগাসিটির কয়েক মাইলের মধ্যেই অন্ধকার আলোহীন রাতে শেয়ালের ডাক এক রকম আধৌভৌতিক অনুভূতি এনে দেয়। নুসাইবা গাড়ির ভিতর বসে বসে দোয়া পড়ছে। মাহফুজ চিন্তিত। নুসাইবা কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলছে সব প্ল্যান অনুযায়ী হচ্ছে কিন্তু প্ল্যানটা কি সেটাই জানে না এখনো। সোলায়মান শেখের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই ওদের এখন।

অবশেষে রাত তিনটার দিকে মাহফুজের কাছে থাকা মোবাইলটায় মেসেজ আসে, আপনারা আছেন। মাহফুজ উত্তর দেয় জায়গা মত। এর তিন চার মিনিট পর মাহফুজ টের পায় একটা গাড়ি আসছে আর এর পিছনে আছে একটা বাইক। মাহফুজ শ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করতে থাকে। গাড়ি আর বাইকটা রেস্টুরেন্টার ঠিক সামনে এসে আলো ব্লিংক করে। মাহফুজ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গাড়িটার পাশে নেয়। বাইক থেকে নেমে আসে সোলায়মান শেখ। সোলায়মান শেখ কে দেখে মাহফুজের যেন জানে পানি আসে। গাড়ি থেকে নামে না নুসাইবা। ওর মনে এখন ভয় আর আতংক দুইটাই কাজ করছে। সারাজীবন বাড়ীর ভাল মেয়ে নুসাইবা। রাত বিরাতে এমন অজায়গায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই। ঢাকার ভিতরেই যেন জংগলে এসে পড়েছে। মাহফুজ নতুন আসা গাড়ির দিকে তাকায়। সোলায়মান বলে ভয় নাই। আমার লোক। আপনাদের যাত্রার পরের অংশ এর হাতে। মাহফুজ কিছু বলে না। সোলায়মান শেখ এতদিন পর্যন্ত আস্থা রেখে এসেছে। তার উপর মাসুদ চাচার ঐখানে সোলায়মান শেখের যে গল্প শুনেছে সেটা শুনে মনে হয়েছে এই লোক আস্থাবান। পিছ থেকে ছুরি মারার লোক না। মাহফুজ তাই জিজ্ঞেস করে পরের প্ল্যান কি। সোলায়মান শেখ বলে আপনাদের কয়েকদিন ঘাপটি মেরে থাকতে হবে। মাহফুজ বলে কয়দিন। সোলায়মান শেখ বলে মিনিমাম দুই সাপ্তাহ। এর মধ্যে নির্বাচনের মনোনয়ন দিয়ে দিবে পার্টিগুলা। এরপর খেলা অন্য দিকে ঘুরে যাবে। তখন ম্যাডামের উপর নজর রাখবে না ম্যানেজার আর মুন্সী। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে আপনি না বললেন এয়ারপোর্ট সেফ আছে, মেসেজ পাঠালেন সেইমত। সোলায়মান শেখ বলে যখন মেসেজ পাঠিয়েছি তখন পর্যন্ত তাই ছিল। এরপর আমার বড় স্যার আমারে ডেকে পাঠাল। নুসাইবা ম্যাডামের নাম দিয়ে আর একটা ছবি দিয়ে বলল আমার যত সোর্স আছে সব কাজে লাগাতে। ঢাকার ভিতর কোথায় ম্যাডাম থাকতে পারে। আর আরেক কলিগ কে এয়ারপোর্ট, রেলস্টেশন, বাস স্টেশন এগুলা দেখার দ্বায়িত্ব দিল। তখন কথায় কথায় বুঝলাম স্যার কে মুন্সী হাত করেছে। তাই তাড়াতাড়ি আপনাকে মেসেজ দিছি। এরপর বাকি সময় আপনাদের কে সেফলি ঢাকা থেকে সরানোর জন্য ব্যবস্থা করছি। সোলায়মান শেখ এইবার গাড়ির দিকে তাকিয়ে ডাক দেয়, আমিন। এই আমিন। গাড়ি থেকে একটা বছর পঞ্চাশেক বয়সের লোক নামে। মাথায় টুপি, লম্বা দাড়ি। সোলায়মান শেখ বলে এই হল আমিন। ভাড়ার মাইক্রো চালায়। আপনাদের ভাগ্য ভাল আজকে ও ঢাকা ছিল। নাইলে বিপদ হয়ে যেত। আপনারা ওর সাথে যাবেন। একসময় ও আমার সোর্স হিসেবে কাজ করত। এখনো করে তবে আগের মত অত রেগুলার না। ফলে আমাদের সার্ভিসের লোকজন এখন আর ওরে কেউ তেমন স্মরণ করে না। ফলে ধরতে পারেন ও প্রায় আউট অফ রাডার। তবে ও আমার উপর কৃতজ্ঞ। ওরে কয়েকবার বড় ঝামেলা থেকে বাচাইছি আমি। আর ওরে দিয়ে এরকম কাজ আর করাই নাই কখনো। অনেক আগে ওর সাথে গল্প করার সময় শুনছিলাম ওর বাড়ির কথা। তখন মনে হইছিল কোন ইমাররেজন্সিতে লুকায় থাকার জন্য ভাল জায়গা। ওর বাড়ি সুনামগঞ্জে হাওড়ের কাছে। ধরতে পারেন ওর বাড়ি ছোট একটা দ্বীপ। নৌকা ছাড়া যাওয়া যায় না। বাড়ির এক কোণায় অল্প একটু জায়গা ছাড়া ফোনের সিগনাল পাবেন না। ফলে লুকিয়ে থাকার জন্য পারফেক্ট জায়গা। ও সাধারণত ঢাকা টু সিলেট বিভিন্ন রুটে মাইক্রো ভাড়া চালায়। বেশি টাকা পাইলে অন্য রুটেও যায়। একবার বের হইলে তিন চারদিন কখনো এর বেশি বাড়ির বাইরে থাকে। তবে ওর বাড়ি লুকানোর জন্য সেফ জায়গা। আমিন বলে স্যার চিন্তা করবেন না। আমার হাতে যখন স্যার দ্বায়িত্ব দিছে আমি জান দিয়ে আপনাদের সেফ রাখব। আমিন একবার কথা দিলে কথা রাখে। মাহফুজ বলে আমাদের কার কাছে তো এক্সট্রা কাপড় নাই। আমিন বলে স্যার আগে চলেন এরপর সব ব্যবস্থা হবে। মাহফুজ বলে আমার কাছে তো আমার রেগুলার ফোনও নাই। কার সাথে যোগাযোগ করতে পারব না। সোলায়মান বলে এইটা ভাল বরং। কারণ মুন্সী বা ম্যানেজার তিন চারদিনের মধ্যে আপনার আর ম্যাডামের কানেকশন বের করে ফেলতে পারে। তখন ওরা আপনার ফোন ট্রেস করবে ২৪ ঘন্টা। তাই ফোন ছাড়া থাকাই ভাল। মাহফুজ বলে আর টাকার ব্যবস্থা? সোলায়মান বলে আপনারা আগে ভালভাবে ফিরে আসেন। এরপর টাকার কথা হবে। আপনি টাকা মেরে খাওয়ার লোক না। আর এই ঝামেলাতে আমারো কিছু ভাগ আছে। তাই আপাতত ধরে নেন আমি উপকার করতেছি। আমিন বলে স্যার টাকার চিন্তা করবেন না। সোলায়মান স্যার আপনাদের দ্বায়িত্ব দিছে। স্যারের কাছে আমার জীবনের ঋণ। আমি সেই শোধ করার একটা সুযোগ পাইছি। আপনারা টাকা পয়সা যখন সব ঠিক হবে তখন দিয়েন। সোলায়মান এইবার আমিন কে বলে তুমি গাড়িতে গিয়ে বস আমি উনাদের সব প্ল্যান ভাল করে বুঝায়ে দিয়ে আসি।

নুসাইবা গাড়ির ভিতর থেকে দেখছিল । মাহফুজ সামনে এগিয়ে যেতেই একটা লোক বাইক থেকে নামল। মাহফুজের সাথে লোকটার কথা বলার ধরণ দেখে বুঝা যাচ্ছে তারা পূর্বপরিচিত। একটু পরে আরেকটা লোক নামে সাথের মাইক্রো থেকে। দাড়ি টুপি পড়া। দুই জন লোকই মিডিয়াম হাইটের। অন্ধকারে এত দূর থেকে কার ফেস বুঝার উপায় নেই। কি কথা বলছে ওরা তিনজন? মাহফুজের হাইটের জন্য তিনজনের মধ্যে দূর থেকে ওকে সহজে আলাদা করা যাচ্ছে। নুসাইবার শরীরে একটা অবসাদ। সারাদিন ধরে বাসা থেকে বের হবার প্ল্যান নিয়ে উত্তেজনা, বের হবার পর মুক্তির উত্তেজনা, মাহফুজের সাথে গাড়ির ভিতর উদ্যোম সেই সময়, এরপর এয়ারপোর্টে ধরা পড়তে পড়তে কোন রকমে বেচে বের হয়ে আসা। সব মিলিয়ে শরীর আর কোন চাপ নিতে চাইছে না। মাহফুজ কে জিজ্ঞেস করেছিল এরপরের প্ল্যান কি। মাহফুজ বলেছে একটু অপেক্ষা করতে তারপর সব বলবে। নুসাইবা দেখে মাহফুজ আর একটা লোক ওদের গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। আর দাড়িওয়ালা লোকটা মাইক্রোতে গিয়ে বসছে। মাহফুজ গাড়ির কাছে এসে দরজায় নক করে। এরপর দরজা খুলে। মাহফুজের সাথে থাকা লোকটা নুসাইবা কে সালাম দেয়, আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম। আমি মাহফুজ ভাইকে আপনাদের সব প্ল্যানে হেল্প করতেছি। মুন্সী যে এয়ারপোর্টে যাচ্ছে এই খবর আমি দিয়েছি ভাই কে। এখন আপনাদের পরের প্ল্যানে আমি হেল্প করতেছি। নুসাইবা সালামের উত্তর দেয়। জিজ্ঞেস করে আমাদের পরের প্ল্যান কি? নুসাইবা মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজ বলে প্ল্যানের এর পরের অংশ সোলায়মান ভাইয়ের করা। সোলায়মান নুসাইবার কথায় বুঝে ওর উপর ঠিক ভরসা পাচ্ছে না নুসাইবা। সমাজের উচু স্তুরের লোকেরা সাধারণত ওর মত সাধারণ একজন ইনসপেক্টর কে কখনো পাত্তা দেয় না। তবে সোলায়মান জানে ডিবি পুলিশে এতদিনের চাকরি, আইনের উভয়পাশে অনেক কানেকশন থাকার কারণে ওর পক্ষে এমন অনেক কাজ করা সম্ভব যা খুব কম লোক করতে পারবে এই দেশে। একবার ওর কাজের ম্যাজিক দেখলে সবাই মুগ্ধ হয়। তাই সোলায়মান নুসাইবার অনাস্থা কে গোনায় না ধরে ওর প্ল্যান বলে যেতে থাকে।

সোলায়মান বলে আপনাদের এখন ঢাকায় থাকা বিপদজনক। নুসাইবা কে উদ্দ্যেশে করে বলে আপনি নিজের বাসা বা ঢাকায় আপনার অন্য কোন আত্মীয়ের বাসায় যেতে পারবেন না। ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে আপনার ট্রেস বের করে ফেলবে। আমি ডিবিতে আছি। আমার খুব করিতকর্মা কলিগদের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আপনাদের খবর বের করার জন্য। আমাকেও দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তবে আমি মাহফুজ ভাইয়ের সাথে আছি শুরু থেকে। ঢাকার বাইরে এমন কোথাও আপনাকে পাঠাতে হবে যেখানে মুন্সী বা ম্যানেজার কেউ কল্পনা করবে না। নরমালি ঢাকায় বা ঢাকার বাইরে লুকিয়ে থাকার কিছু ট্রেডিশনাল রুট আছে। কিছু লোকজন আছে যারা টাকার বিনিময়ে আপনাকে প্রটেকশন দিবে। সেখানে আপনাকে প্রতিদিন অন্তত একবার করে জায়গা বদলাতে হবে, কখনো দুই তিনবার। আপনার জন্য এমন জায়গায় টিকে থাকা কঠিন হবে। আর মুন্সী আর ম্যানেজার যে পুলিশের রিসোর্স ব্যবহার করবে বা করছে তা না। ওরা আন্ডারগ্রাউন্ডের সব রিসোর্স ঢেলে দিবে আপনার খোজে। আমাদের এডভান্টেজ এখন দুইটা। ওরা ঠিক জানে না কে আপনাকে পালাতে সহায়তা করেছে। মুন্সী যেমন ভাবছে ম্যানেজারের হাত আছে। ম্যানেজার কালকে সকালে টের পেলে সেও এমন কিছু ভাববে। এই কনফিউশনে ওদের ভাল রিসোর্স ব্যয় হবে। আর দ্বিতীয়ত আমরা কোন ট্রেডিশনাল রুট ব্যবহার করব না। আমার খুব বিশ্বস্ত একজন লোক আছে। যে দশ বছর আগ পর্যন্ত পুলিশের সোর্স ছিল, আন্ডারগ্রাউন্ডে যোগাযোগ ছিল। এখন আর তেমন কিছু করে না। সংসারী হয়েছে। ধর্মকর্মে মন দিয়েছে। এখন ভাড়ায় গাড়ি চালায়। ওর বাড়ি এমন একটা জায়গায় যেটা দূর্গম। মোবাইলের নেটওয়ার্ক প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে আপনার সেখানে যদি লুকিয়ে থাকেন তাহলে আপনারা অদৃশ্য হয়ে থাকবেন পৃথিবীর চোখে। নুসাইবা কে বলে, আপনার যা ব্যাকগ্রাউন্ড কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না এমন মানুষ্য বিবর্জিত জায়গায় আপনি গিয়ে লুকিয়ে থাকতে পারবেন। সেখানে কারেন্ট নেই। সোলার লাইট আছে ওদের বাসায় তাও রাত দশটার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। আপনাকে ঐখানে গিয়ে লুকিয়ে থাকতে হবে ওদের আত্মীয় সেজে। ফলে লোকাল কেউ যদি আপনাদের দেখে তাতে যেন ওরা সন্দেহ না করে।

নুসাইবা সোলায়মানের কথার মাঝে প্রশ্ন করে, কারেন্ট নেই ঐখানে? ফোন? সোলায়মান মনে মনে হাসে। নুসাইবার এইসব প্রশ্ন বলে দিচ্ছে ওর প্ল্যান ঠিক আছে। কারণ ওর মত অন্যরাও ধরে নিবে এই মনমানসিকতা নিয়ে এমন কোন জায়গায় লুকিয়ে থাকতে পারবে না নুসাইবা। এখন প্রশ্ন হল নুসাইবা কতটুকু ব্লেন্ড করতে পারবে ঐ জায়গায়। এটাও একটা গূরুত্বপূর্ন জিনিস। এর আগেও ডিবির কাজের সূত্রে দেখেছে সোলায়মান। অনেক বড় এবং ধূর্ত অপরাধী ধরা পড়েছে খালি বোরডমের কারনে। বিরক্ত হয়ে পালানোর জায়গা থেকে বের হয়ে এসেছে বা এমন কিছু করেছে যাতে আশেপাশের লোকের চোখে পড়ে যায়। তাই সোলায়মান এইবার আর সিরিয়াস হয়ে বলল। ম্যাডাম আপনি এইসব প্রশ্ন ভুলেও মনে আনবেন না। আপনাকে সবচেয়ে ভাল হত এই মূহুর্তে দেশের বাইরে পাঠাতে পারলে। কিন্তু মুন্সী আর ম্যানেজার আজকে বা কালকে থেকে দেশ থেকে বের হবার সব বৈধ অবৈধ পথে নজরদারিতে রাখবে। ফলে সেটা অনেকবড় রিস্ক। আর একবার ধরা পড়লে আপনার পরিণতি কি হবে আমরা জানি না। আর আমাদের কি পরিণতি হবে সেটাও জানি না। কথাটা শুনে গা শিউরে উঠে নুসাইবার। মুন্সীর ওর শরীরে পড়া হাত, কুৎসিত হাসি আর ম্যানেজারের গুলির ভয় সব গা ঠান্ডা করে দেয়। নুসাইবা এইবার বাধ্য মেয়ের মত বলেন, কি করতে হবে আমাকে। মাহফুজ অবাক হয় নুসাইবার এমন বিনা যুদ্ধে সোলায়মানের কথা মেনে নেওয়ায়। মাহফুজ বুঝে মুন্সী আর ম্যানেজারের ভয় ভাল মত ঢুকেছে নুসাইবার মনে।

সোলায়মান বলে এই উপদেশ আপনাদের দুই জনের জন্য। মাহফুজ আর নুসাইবা দুইজনেই তাকায় সোলায়মানের দিকে। মাহফুজ বলে ট্রেডিশনালি যা হয় সেই অনুযায়ী আপনাদের খুজবে এখন। মেইনলি খুজবে ম্যাডাম কে। মাহফুজের দিকে তাকিয়ে বলে আপনার পরিচয় এখনো পর্যন্ত ওরা বের করতে পারে নি। ধরে নেওয়া যায় ওরা ভাববে মাহফুজ ভাই এমনি কোন গ্রুপের অংশ যারা নুসাইবা ম্যাডাম কে হেল্প করছে। ফলে আমাদের এখনকার কাজ হবে ডাইভারশেন। এর একটা হল আমিনের বাড়িতে গিয়ে লুকানো। সেকেন্ড এবং খুব ইম্পোর্টেন্ট, আমি জানি এইটা শুনে আপনারা না না করে উঠবেন। তবে আপনাদের সিকিউরিটির জন্য এইটা দরকারী। মাহফুজ বলে কি সেটা? সোলায়মান একবার মাহফুজের দিকে তাকায় আবার নুসাইবার দিকে তাকায়। সোলায়মান গলা খাকরি দেয়। একটু ইতস্তত করে বলে, আমরা ডিবির ভাষায় একটা কথা বলি। যারা ভাল ক্যামোফ্লেজ নেয় বা ভাল ভাবে লুকায়ে থাকতে পারে। তারা সবাই একটা ভাল ব্যাক স্টোরি দাড় করায়। এরপর সেই স্টোরিতে একটা ক্যারেক্টার হিসেবে অভিনয় করে। এতে ভুলভাল হবার সম্ভাবনা কম। কারণ গল্প আগে থেকে রেডি থাকে। ফলে কেউ জিজ্ঞেস করলে সেই অনুযায়ী উত্তর দেওয়া যায়। নিজে থেকে খুব বেশি ইম্প্রোভাইজেশন করতে গিয়ে ধরা খাওয়ার ভয় থাকে না। আর বেশির ভাগ সময় মানুষ এই লুকিয়ে থাকার ফেজটাতে বোরড হয়ে যায়। এইভাবে অভিনয় করলে মন ব্যস্ত থাকে, বোরড হবার চান্স কম থাকে। নুসাইবা একটু অস্থির হয়ে বলে সেইগুলা তো বুঝলাম কিন্তু কিসে অভিনয় করতে হবে? সোলায়মান ইতস্তত করে। প্ল্যানের এই অংশটা মাহফুজকেও বলা হয় নি। আসলে ভেবেছিল প্ল্যান এ সফল হবে। এরপর প্ল্যান বি হিসেবে যেইটা ঠিক ছিল আজকে মুন্সীর কাজকারবারের পর সেইটা রিস্কি হয়ে যাবে বুঝে গিয়েছিল সোলায়মান। আসল প্ল্যান বি ছিল একটা ট্রেডিশনাল রুটে নুসাইবা কে লুকিয়ে রাখা। প্রফেশনাল কিছু লোকের হেল্প নিয়ে। কিন্তু মুন্সী ম্যানেজার যেভাবে মরিয়া সেখান থেকে দুই তিনের মধ্যে খবর বের করে ফেলতে পারে। আর নুসাইবা এইভাবে প্রতিদিন ছুটে ছুটে জায়গা বদল করতে গিয়ে মেন্টাল প্রেসারে ভেংগে পড়তে পারে। তাই তাতক্ষনিক ভাবে এই নতুন প্ল্যান বি। সোলায়মান তাই বলে আপনাদের কাপলের অভিনয় করতে হবে। নুসাইবা মাহফুজ দুইজনেই একসাথে বলে উঠে কি বললেন?

সোলায়মান এই রিএকশন প্রত্যাশা করেছিল। তাই হাত তুলে দুই জনকে থামতে বলে। বলে ভেবে দেখেন, ম্যাডাম এমন কার সাথে ম্যারিড কাপলের মত অভিনয় করবে এইটা কার ভাবতে সময় লাগবে। তার উপর আপনার যাবেন একদম একটা অজপাড়াগায়ে। সেখানে অবিবাহিত বা বিবাহের সম্পর্ক নেই এমন নতুন দুইজন পুরুষ মহিলা আসলে লোকে কথা বলবে, সেখানে থেকে গুজব আর গুজব লুকিয়ে থাকার জন্য খারাপ। আর আরেকটা কথা হল আপনাদের যে লোক নিয়ে যাবে আমিন। তাকে তো দেখেছেন দাড়িটুপিওয়ালা। আগে যাই থাকুক এখন ইমানদার। তাকে আমি আজকে কয়েক ঘন্টার নোটিশে রাজি করিয়েছি। এই লোক কে আপনাদের সম্পর্ক বুঝিয়ে বলা কঠিন। আর ঠিক হবে না সেফটির জন্য। সেইজন্য আমি বলে দিয়েছি আপনারা হাজব্যান্ড ওয়াইফ। পলিটিক্যাল একটা ঝামেলায় মাহফুজ ভাইয়ের পিছনে লোক লেগেছে তাই উনার কয়েকদিন লুকিয়ে থাকা প্রয়োজন। আর আপনি উনার ওয়াইফ। নুসাইবা প্রায় তোতলাতে তোতলাতে বলে, কি বলছেন এইসব। সোলায়মান বলে আরে এইগুলা তো সত্য না। অভিনয়। আপনারা জাস্ট অভিনয় করবেন। দুই সাপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে নমিনেশন দিয়ে দিবে। ওদের মনযোগ অন্য দিকে ঘুরে যাবে। তখন পারলে আমি আপনাদের অন্য জায়গায় শিফট করব। আর ভাল জায়গায়। যেখানে থাকার আর ভাল ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু যতদিন সেটা না হচ্ছে এর থেকে ভাল কিছু নেই। আপনারা কেউ হাজব্যান্ড ওয়াইফ না। সেইটা আমি জানি, আপনারা জানেন। কিন্তু আমিন জেন না জানে। কারণ এই লোক বিবাহ সম্পর্কের বাইরে পুরুষ মহিলা একসাথে থাকছে এটা মেনে নিতে পারবে না। আর এটা জানলে ও রাজিও হত না। মাহফুজ কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। ওর নিজের অনুভূতিটা কি সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না। সোলায়মান এমন তাতক্ষনিক ভাবে সব বলছে মাহফুজের প্রসেস করতে সময় লাগছে। সোলায়মানের যুক্তি ঠিক আছে। তবে নুসাইবা এইটা মানবে বলে মনে হয় না। আবার সোলায়মানের কথায় ওর মনে এক ধরনের পুলক অনুভব হচ্ছে। হোক না অভিনয়। তাও তো কিছুদিনের জন্য নুসাইবা ওর বউ হবে। আবার মনে হচ্ছে নিজের অনুভূতি কি এই কয়দিন ঠিক করে কন্ট্রোল করতে পারবে? অভিনয়ের সময় কি করবে নুসাইবা? আরশাদের দিকে যেমন প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত তেমন করে তাকাবে? আরশাদের মত অধিকার কি ও খাটাতে পারবে নুসাইবার উপর?

নুসাইবার মাথায় বাজ পড়েছে। একি বলছে এই নতুন লোক? সব কি মাহফুজের সাজানো বুদ্ধি? ওকে কাছে পাওয়ার জন্য কি মাহফুজ এই লোক কে আগে থেকে শিখিয়ে পড়িয়ে এনেছে? নুসাইবা বলে এইটা সম্ভব না। আমি যেখানে যেতে বলছেন সেখানে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু এই হাজব্যান্ড ওয়াইফ অভিনয় করতে পারব না। ইমপসিবল। আমি বিবাহিত। আমার পক্ষে অন্য কাউকে হাজব্যান্ড মেনে নেওয়া সম্ভব না। সোলায়মান বলে আপনাকে তো বলছি না মাহফুজ ভাইকে হাজব্যান্ড মেনে নিতে হবে। আর ম্যাডাম আমি জানি মাহফুজ ভাই আপনার ভাতিজিকে পছন্দ করে। ফলে উনি আপনার ছেলের মত। উনি আপনাকে যথেষ্ট সম্মান করে। নাহলে এমন বিপদের ঝুকি নিয়ে এত বড় দুইটা পাওয়ার হাউজের নাকের তলা থেকে আপনাকে বের করে আনে? আপনার তো করবেন অভিনয়। আর যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে এই অভিনয় করার জন্য মাহফুজ ভাইয়ের থেকে আর বেশি নিরাপদ কাউকে পাবেন না আপনি। সোলায়মানের এই কথা নুসাইবা মাহফুজ দুইজনের মনে সেইম ছবি তুলে আনে। কয়েক ঘন্টা আগে গাড়ির ভিতর ওদের সেই উদ্যাম অভিযান। নুসাইবার মনে একধরনের কাটা দিয়ে উঠে, মাহফুজের শরীরে একটা সুখের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে। মাহফুজ এইবার নিজে থেকে বলে, ফুফু আমি এইসবের কিছু জানি না। আপনার মত সোলায়মানের মুখ থেকে আমি প্রথম শুনছি। আর আপনার সিকিউরিটির জন্য এটাই একমাত্র ভাল রাস্তা। এরপর নুসাইবা মাহফুজ আর সোলায়মানের ত্রিমুখী তর্ক চলে প্রায় আধা ঘন্টা। একটু পর সোলায়মান বলে ম্যাডাম ভোর হয়ে যাবে একটু পরেই। তাই যাই করার তাড়াতাড়ি করতে হবে। এইভাবে এইখানে তর্ক করে আপনি আপনার রিস্ক বাড়াচ্ছেন ম্যাডাম। আমরা যখন এইখানে তর্ক করছি আপনাদের খোজে অনেক দক্ষ লোক চক্কর মারছে। তাদের চররা খোজ বের করছে সবখান থেকে। নুসাইবা আর মাহফুজ দুইজনেই শান্ত হয় সোলায়মানের কথায়। প্রায় এক মিনিট চুপ চাপ থাকার পর নুসাইবা সিদ্ধান্ত নেয়। আর কোন উপায় নেই। এইটা মাহফুজের চালাকি নাকি আসলেই সোলায়মানের নিজের বুদ্ধি এইটা এই মূহুর্তে বের করার উপায় নেই। তবে এই মূহুর্তে এই দুইজন ছাড়া আর বড় ভরসার কেউ নেই। তাই নুসাইবা বলে ঠিকাছে। নাহয় আপনার কথামত কিছুদিন অভিনয় করব। মাহফুজ নিজের মুখের হাসি চেপে রাখে, বাইরের দিকটা গম্ভীর করে রাখে। হঠাত করে যেন একটা লটারী লাগার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ওর জন্য।

সোলায়মান এইবার প্ল্যানের বাকি খুটিনাটি অংশ বুঝিয়ে দেয় ওদের কে। কিভাবে ওদের সাথে সোলায়মান যোগাযোগ করবে। কিভাবে ঐখানে ওদের থাকতে হবে। মাহফুজ হবে পলিটিক্যাল লিডার যে প্রতিপক্ষের কারণে লুকিয়ে আছে। এইটা অভিনয় মাহফুজের জন্য ইজি। কারণ মাহফুজ বাস্তবেও পলিটিক্যাল লিডার। আর নুসাইবার ভূমিকা হবে মাহফুজের বউয়ের। যে হাজব্যান্ডের সাথে এসে লুকিয়েছে। আর নুসাইবা কে যতটা সম্ভব নিজের শিক্ষা ব্যাকগ্রাউন্ড এইসব ইনফরমেশন লুকিয়ে রাখতে হবে। এমন ভাব ধরতে হবে যেন নুসাইবা হাউজওয়াইফ, বেশি পড়াশুনা করে নি। নুসাইবা জানে না কিভাবে এই অভিনয় করবে। তবে সোলায়মান লোকটার কথার যুক্তি গুলো ফেলতে পারে না। খালি ওর মনে খচ খচ করছে মাহফুজের সাথে এই অভিনয়ের ব্যাপারটায়। মাহফুজ কে এই ব্যাপারে ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না। আবার এটাও ঠিক নিজেকেও বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না। এর আগেও মাহফুজের কাছে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এইবার কি হবে? নুসাইবা নিজের মনে নিজেকে আশ্বাস দেয়। সব ঠিক কন্ট্রোল করে নিবে। এমন কোন পুরুষ নেই যাকে একটু মনযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে ম্যানিপুলেট করা যায় না। আবার ওর মনের ভিতর থেকে প্রশ্ন উঠে এর আগে ওর এইসব ম্যানিপুলেশন ভেদ করে ঠিক বের হয়ে গিয়েছিল মাহফুজ। তবে এইবার নুসাইবা মরিয়া। যেভাবেই হোক ওকে মুন্সী, ম্যানেজার ওদের হাত থেকে বাচতে হবে আর মাহফুজের থেকে সাবধান হতে হবে। নাকি নিজের থেকে নিজেকে সাবধান হতে হবে?

এরপর প্রায় আর আধাঘন্টা ধরে সব কিছু খুটিনাটি আলোচনা করে বুঝিয়ে দিল সোলায়মান শেখ। মাহফুজের কাছ থেকে ওর আনা মাইক্রোর চাবি নিল। এইটা কাছে একটা জায়গা আছে সোলায়মানের পরিচিত। ঐখানে লুকিয়ে রাখবে। অবশ্য এই গাড়ির নাম্বার প্লেট এমনিতেও নকল। আর মাহফুজ নুসাইবা সোলায়মান শেখ কে ধন্যবাদ দিয়ে আমিনের গাড়িতে উঠে এসে বসল। সোলায়মান বলল আমিন এনারা আমার আপন জন, কাছের লোক। ইনাদের হেফাজত তোমার হাতে। আমিন বলল স্যার আপনার মেহমান মানে আমার মেহমান। আমিন জান দিবে তবে মেহমানের কিছু হতে দিবে না। এরপর প্রায় রাত সাড়ে চারটার দিকে আমিন গাড়ি ছাড়ে। মাহফুজ আর নুসাইবা মাইক্রোর মাঝের সিটে বসে আছে। দুইজন দুইপাশে মাঝে এক সিট খালি। আমিন গাড়ি চালাতে চালতে বলে আপনারা ঘুম দেন স্যার ম্যাডাম। আমি পৌছাইলে আপনাদের ডাক দিব। মাহফুজ নুসাইবা দুইজনেই ক্লান্ত। কিন্তু কেউ ঘুমাতে পারছে না। হঠাত করে নুসাইবার গলার স্বরে মাহফুজ ঘুরে তাকায়। নুসাইবা হিস হিস করে বলে এইসব তোমার প্ল্যান তাই না? আমার বিপদের সুযোগ নিয়ে এইসব করছ? মাহফুজ অবাক হয়ে যায় নুসাইবার কথায়। মাহফুজ জানে গাড়িতে উঠামাত্র ওদের হ্যাজব্যান্ড ওয়াইফের অভিনয় করতে হবে। নুসাইবা কি ওয়াইফের অভিনয় শুরু করে দিয়েছে? ওকে ঝাড়ছে হাজব্যান্ড কে যেভাবে ঝাড়ে ওয়াইফরা। মাহফুজ তাই গলার স্বর নামিয়ে নুসাইবা কে জিজ্ঞেস করে কি বলছ? আমিও সব প্রথমবারের মত শুনছি নুসাইবা। নুসাইবা গলার স্বর নামিয়ে হিস হিস করে বলে আমার নাম ধরে ঢাকছ কেন? মাহফুজ একটা হাসি দেয়। নুসাইবার গা জ্বলে যায়। মাহফুজ এইবার নুসাইবার একটু কাছে ঝুকে বলে আফটার অল উই আর হাজব্যান্ড এন্ড ওয়াইফ নুসাইবা। নুসাইবা শব্দটার উপর জোর দেয় মাহফুজ। রাগে জ্বলতে থাকে নুসাইবা। শুধু একটা কথাই বলে- ইউ বাস্টার্ড।​
Next page: Update 54
Previous page: Update 52