Update 68

আপডেট ৩৪



সাবরিনা চোখের উপর আলো পড়ায় ঘুমের মাঝে নড়ে উঠল। সাদমান প্লিজ পর্দা টা টেনে দাও না। আমি আর ঘুমাবো। “সাবরিনা উঠ, দুপুর বারটা বাজে”। গলাটা শুনে চমকে উঠে চোখ খুলে সাবরিনা। ওর বেডরুমে মাহফুজের গলা কেন? চোখ মেলতে রুমটা অপরিচিত লাগে। কোথায় ও। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। জানালার পাশে পর্দা সরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাহফুজ। সব সময়ের মত ড্যাশিং লাগছে। কিন্তু মাহফুজ এখানে কেন? ও কোথায়? ধড়ফড় করে উঠে বসে বিছানায়। উঠে বসতে গায়ের উপর থাকা বিছানার চাদরটা সরে কোমড়ের কাছে চলে যায়। সাবরিনা নিজের দিকে তাকায় একবার। ওর আচল গায়ে নেই, ফলে উঠে বসবার ফলে বিছানার চাদর সরে যাবার কারণে শরীরের উপরের অংশে এখন খালি ব্লাউজ। দ্রুত হাত দিয়ে বুক ঢাকে। টের পায় পুরোটা ঢাকতে পারছে না তাই আবার বিছানার চাদর কাধ পর্যন্ত তুলে ফেলে। মাহফুজ জানালার পাশে দাঁড়ানো। ওর গায়ে বাসায় পড়ার নরমাল একটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর গায়ে একটা গোল গলা টিশার্ট। সাবরিনার মনে হয় ঘরের এই সামান্য ড্রেসেই ড্যাশিং লাগছে মাহফুজ কে। তবে সাবরিনার মনে শংকা জেগে উঠে। এখানে কেন ও? চাদর হালকা সরিয়ে নিজের দিকে তাকায়। নাহ শাড়ি অক্ষত। অচেনা জায়গায় মাহফুজ কে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মনের ভিতর যে শংকা জেগে উঠেছিল সেটা খানিকটা কেটে যায় নিজের কাপড় ঠিক আছে দেখে। তবে মাথাটা ওর ভার ভার। এখানে কেন সেই প্রশ্নটা তাই জিজ্ঞস করে- আমি এখানে কিভাবে আসলাম? মাহফুজ সাবরিনার কথা শুনে অবাক হয় না। গতকাল নাবিল কে পরে ধমক দেওয়ার পরে বলেছে যে ড্রাগ ও সাবিত কে দিয়েছে এটাতে শারীরিক ভাবে লং টার্মে কোন ক্ষতি হবে না। এটা খাবার পর যৌন আকাঙ্ক্ষা বাড়বে অনেক প্রথম ছয় থেকে সাত ঘন্টা। এরপর ধীরে ধীরে কমে আসবে। চব্বিশ ঘন্টা পরে আর থাকবে না। আর অনেক সময় স্মৃতি একটু ঝাপসা হয়ে যায়। দুই তিন দিন পর অবশ্য স্মৃতি ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তাই সাবরিনা ঘুম থেকে উঠে সংগে সংগে সব কিছু মনে করতে পারবে না এইটা স্বাভাবিক। সাবিতের ফোনটা সেই সময় বুদ্ধিকরে ওর থেকে রেখে দিয়েছিল। সাথে সাথে সাবিতের আই ফোন থেকে ওর আই ক্লাউডে সব কিছু ফ্যাক্টরি রিসেট দিয়ে ডিলিট করে দিয়েছিল মাহফুজ। কোন ঝুকি নেয় নি। পলিটিক্সে সাবিতের মত লোক কম নেই। মাহফুজ জানে এইসব লোক এরকম একটা ভিডিও সুযোগ পেলে কয়েকশ জায়গায় ব্যাকাপ রেখে দিবে পরে ব্লাকমেইল করার জন্য। তবে ভাগ্য ভাল সাবিত কে হাতে নাতে ধরেছিল। ফলে আর কোন ব্যাকাপ রাখার জায়গা ছিল না। সাবিতের আইফোনের মেমরি আর আইক্লাউডে শুধু ব্যাকাপ থাকবে এই ভিডিও এর। তাই ফোনটা নিয়ে নিয়েছে ওর থেকে। সাথে ওকে দিয়ে ডিলিট করিয়ে নিয়েছে আই ক্লাউডের স্টোরেজের সব ছবি মেমরি। আর রুমে ঢোকা থেকে শুরু করে সাবিত কে ধরা, সাবরিনা কে উদ্ধার করার পুরো সময়টা ভিডিও করে রেখেছিল ও। যাতে পরে নিজের নিরাপত্তার কাজে লাগে। সাবিত যদি পরে ওকে মোবাইল চুরির অভিযোগ করে বা সাবরিনা ঘুম ভেংগে যদি ওকে ভুল বুঝে তখন কাজে লাগবে ওর করা ভিডিওটা। যেটাতে স্পষ্ট দেখা যাবে কিভাবে ও রুমে ঢুকল, সেই সময় সাবিত আর সাবরিনা কি পজিশনে ছিল। এরপর দুই চারটা চড় থাপ্পড়ের পর সাবিত কি কি স্বীকার করেছে সব কিছু ভিডিও করে রেখেছে। তাই মাহফুজ অনেকটা নিশ্চিত মনে বলে রাইজ এন্ড সাইন প্রিন্সেস, রাইজ এন্ড সাইন। তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দিব। আগে ক্ষুধা লেগেছে নিশ্চয়। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও।

সাবরিনা মাহফুজের গলায় একটা আস্থার চিহ্ন দেখে। মাহফুজ এত শান্ত স্বরে ওর সাথে কথা বলছে যেন প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সাবরিনার মাহফুজের সাথে দেখা হয়। সাবরিনার মনে পরে গতকাল ও ওদের কোম্পানির গালা নাইটে ছিল। সাবিত ভাই আর কয়েকজন কলিগ সহ একটা টেবিলে বসে ছিল। এরপর থেকে ঠিক মাথায় আসছে না কি হয়েছে। মাহফুজ ঐ প্রোগ্রামে ছিল কিন্তু ওর সাথে কোন কথা বলে নি বরং ওকে এড়ানোর জন্য সাবিত ভাইয়ের টেবিলে বসে ছিল পুরোটা সময়। মাহফুজ এখানে আসল কিভাবে? রুমটা ভাল করে তাকায়। একটা সুন্দর পরিপাটি বিছানা। এক সাইডে একটা ড্রেসিংটেবিল মিরর সহ। রুমের দরজা খোলা সেটাতে সুন্দর একটা পর্দা ঝুলছে। জানলার দিকে তাকায় আবার। দরজা আর জানালায় সেইম পর্দা। পর্দা দেখে সাবরিনা ভাবে যে কিনেছে তার রুচির প্রশংসা করতে হবে। রুমের ভিতর আরেকটা দরজা তবে বন্ধ। সাবরিনা আন্দাজ করে নেয় এটা এটাচড বাথরুম। রুমের দেয়ালে দুই টা এবস্ট্রাকট ছবি ঝোলানো। আরেক সাইডে একটা রিডিং টেবিল। টেবিলের উপর কিছু ইংরেজি বাংলা বই সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। আর তার সাথে একটা ফটোফ্রেম। টেবিলটা একটু দূরে হলেও সবারিনার ছবিটা মিস হয় না। ফটোফ্রেমের ভিতর থেকে সিনথিয়া ওর স্বভাবসুলভ দুষ্টমিষ্টি একটা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে। পিছনে বিকালের পড়ন্ত আলো ওর মুখে উজ্জ্বল আভা তৈরি করেছে। এত বছর ধরে সিনথিয়া কে দেখলেও এই ছবিটা দেখে সাবরিনার মনে হয় এই ছবিতে যেন সিনথিয়া কে অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে। সাথে সিনথিয়ার স্বভাবসুলভ দুষ্ট মিষ্টি হাসি। যেন হাসতে হাসতে কোন একটা ফান করবে আর হেসে গড়িয়ে পড়বে। সিনথিয়ার ব্যক্তিত্ব কে কোন এক ছবিতে যদি ধরে রাখা যেত তবে এটাই হত সেই ছবি। মাহফুজ সাবরিনা কে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে একটু কৌতুক করে জিজ্ঞেস করে, চিনতে পারলে নাকি ছবির মানুষটাকে। মাহফুজের কথা শুনে মাহফুজের দিকে তাকায় সাবরিনা। বলে সিনথিয়ার ছবি এখানে কেন? মাহফুজ বলে ওয়েককাম টু মাই হাউজ প্রিন্সেস। আমার বাসায় সিনথিয়ার ছবি থাকবে না তো কার ছবি থাকবে বল? আর এটা আমার তোলা ফেভারিট ছবি। আমি জীবনে যত ছবি তুলেছি বিশেষ করে পোট্রেট তার মধ্যে এটা আমার ফেভারিট। তুমি বল সিনথিয়া কে এর থেকে ভাল করে ছবির ফ্রেমে আটকে রাখা যেত? সাবরিনার তখনো ঘুমের ঘোর পুরো কাটেনি তার উপর হঠাত এটা নতুন কোন জায়গা সেটা ওর ব্রেইন প্রসেস করার চেষ্টা করছে। তাই মাহফুজ যখন বলল ওয়েলকাম টু মাই হাউজ সেটা পুরো বুঝে উঠতে কয়েক সেকেন্ড লাগল সাবরিনার। বুঝতেই চমকে উঠল। কি? মাহফুজের বাসায়? কেন? বাইরের আলো দেখে বুঝা যাচ্ছে দুপুর? সারা রাত ও কোথায় ছিল? এখানে? সাদমান কি ভাবছে? উফ গড। নতুন কি সর্বনাশ করলাম আমি আজকে ভাবতে থাকে সাবরিনা। ভাবতে ভাবতে লাফ দিয়ে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে যায় বিছানা থেকে। হঠাত করে দাড়ানোর পর মাথাটা একটু চক্কর দিয়ে উঠে, দুই সেকেন্ড দাঁড়িয়ে আবার বসে পড়ে। জানালার কাছে থাকা মাহফুজ চিন্তিত মুখে দ্রুত কাছে আসে। সাবরিনার হাত ধরে বলে এত ক্ষণ ঘুমানোর পর এইভাবে লাফ দিয়ে দাঁড়ানো ঠিক না, ব্রেইনে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাখাত ঘটে। মাথা ঘুরাবে। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ ওর হাত ধরে আছে। ঝটকা মেরে হাতটা সরিয়ে নেয় সাবরিনা। সাবরিনা বলে মাহফুজ আমার হাত ধরবে না। তুমি জান তুমি আমার কত বড় ক্ষতি করেছ এরপরেও তুমি এইভাবে স্বাভাবিক ভাবে কিভাবে আছ? সিনথিয়ার ছবির দিকে ইংগিত করে বলে সিনথিয়া কে তুমি ভালবাস বলে, তাহলে কিভাবে তুমি আমার সাথে এইসব করতে পারলে? তোমার লজ্জা করল না। একটু অপরাধবোধ কাজ করল না? নাকি তুমি কোন পাভার্ট, বিকৃতরুচির মানুষ। যে একসাথে তিন চারটা মেয়ে কে বিছানায় নিতে না পারলে নিজের পৌরুষত্ব জাহির করতে পার না। এক সাথে দুই বোন কে ফাসিয়ে নিজেকে কি চরম পুরুষ হিসেবে প্রমাণ করতে চাইছ?

সাবরিনার প্রতিটা কথা একদম ছুরির ফলার মত বিধে মাহফুজের বুকে। যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর। তবে মনে মনে নিজেকে সান্তনা দেয় মাহফুজ এই ভেবে যে সাবরিনার এখনো গতকাল রাতের পুরো স্মৃতি নেই। তাই খুব শান্ত ধীর স্বরে বলে মাহফুজ, একজন মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীকেও মানুষ আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দেয়। তুমি গত কিছুদিন ধরে আমার কোন কথাই শুনতে চাচ্ছ না। এক তরফা বলেই যাচ্ছ। অন্তত আজকে আমার কথা শুন। আমার জন্য না হলে তোমার জন্য হলেও শুন। আর তা শুনতে না চাইলে অন্তত সিনথিয়ার কথা ভেবে আমার কথা শুন। আমি জানি তুমি ভাবছ আমি অনেক কথা বানিয়ে বলব তোমাকে। সেটা ভাবার অধিকার তোমার আছে। এইভাবে দুইবোনের সাথে একসাথে আমার যে সম্পর্ক সেটা দেখেলে যে কেউ তাই ভাববে। আমি নিজেই হয়ত তাই ভাবতাম বাইরে থেকে দেখলে। তবে তোমার আমার আর সিনথিয়ার এই সম্পর্কটা স্বাভাবিক নয়। এমন নয় যে আমি সব কিছু নিজে থেকে করেছি। ভাগ্যও এখানে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্লিজ আমাকে একটু সময় নিয়ে কথা বলতে দাও। প্লিজ। মাহফুজের গলায় যে কাতরতা সেটা সাবরিনার চোখে পড়ে। মাহফুজের চোখের কাতর অনুরোধ সাবরিনা অস্বীকার করতে পারে না। সাবরিনা টের পায় ওর গলা শুকিয়ে আছে। তাই মাহফুজ কে বলে ওকে। আমি তোমাকে একটা সুযোগ দিব ব্যাখ্যা দেবার কিন্তু এরপর আর না। তবে তার আগে আমাকে এক গ্লাস পানি দাও, প্রচন্ড পিপাসা পেয়েছে। মাহফুজ দ্রুত রুমে থেকে চলে যায়। সাবরিনা চোখ মেলে তাকায় রুমে। নরমাল ব্যাচেলরদের রুম যতটা অগোছালো থাকে বলে মানুষের ধারণা তার থেকে অনেক বেশি গোছানো। মনে হয় যেন কোন মেয়ের ছাপ আছে এই রুমে। সিনথিয়া তো বিদেশে, আর কোন মেয়ের সাথে কি সম্পর্ক আছে মাহফুজের? যে এখানে নিয়মিত আসে? মাহফুজ রুমের পর্দা সরিয়ে গ্লাস নিয়ে ঢুকে। হাত থেকে গ্লাস নিয়ে ধীরে ধীরে পানিটুকু খায় সাবরিনা। খাওয়া শেষ হতেই সাবরিনার হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে সিনথিয়ার ছবির পাশে রেখে দেয় গ্লাসটা। সিনথিয়ার হ্যাস্যজ্বল ছবির পাশে খালি গ্লাসটা যেন মাহফুজ আর সাবরিনার সম্পর্কের জটিল হিসাব টাকে মনে করিয়ে দেয়। মাহফুজ বলে আমি তোমার সব প্রশ্নের সব জিজ্ঞাসার উত্তর দিব আজকে। তবে ধাপ বাই ধাপ। প্রথমে তুমি কিভাবে আমার বাসায় আসলে সেটাই আগে বলব। সাবরিনা মাহফুজের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। আসলেই কিভাবে ও এইখানে আসল? আর কেন কোন কিছু মনে পড়ছে না ওর?



মাহফুজ কয়েক সেকেন্ড বিরতি নিয়ে শুরু করল। গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ওর বর্ণনা। মাহফুজ বলে তুমি গত কিছুদিন আমাকে বার বার এড়িয়ে যাবার কারণে তোমার সাথে দেখা করবার জন্য আমি মরিয়া ছিলাম। এখন নির্বাচন মৌসুম। চারিদিকে অনেক কাজ তবে আমি সব কাজ ফেলে খালি গতকাল রাতের অনুষ্ঠানের জন্য সময় বের করেছিলাম যাতে তোমার সাথে কিছুটা কথা বলতে পারি। আর আমার জানা ছিল তুমি ক্যারিয়ার কে দাম দাও। ফলে সবার সামনে তুমি এমন কিছু করবে না বা বলবে না যাতে একটা নুইসেন্স সিচুয়েশন তৈরি হয়। তবে অনুষ্ঠানে পৌছার পর থেকে তোমার সাথে কোন ভাবেই কথা বলার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। তুমি এমন করবে সেটা জানা ছিল তবে সবচেয়ে অবাক কি করেছে জান? তুমি গিয়ে তোমার অফিসের সাবিতের সাথে বসেছ আমাকে এড়ানোর জন্য। মাহফুজের কথায় সাবরিনার সন্ধ্যার সময়টা মনে পড়ে। মাহফুজ বলে তুমি কিভাবে আমাকে এড়াতে সাবিতের মত চরিত্রহীন একটা লোকের সাহায্য নিতে পারলে? আজকে এই প্রথম সাবরিনা মাহফুজের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। মাহফুজ বলে তোমার কি সোয়ারিঘাটের কথা মনে নেই? সেই রাতে কি ঘটেছিল? তোমার তো ভাল করে জানা সেই রাতে তোমাকে ঐখানে অরক্ষিত ভাবে কে পাঠিয়েছিল? সেই রাতে তুমি রেপ হতে পারতে? খুন হতে পারতে? তোমার কি মনে সেই রাতে তোমাকে সেই শয়তান গুলো কে থেকে কে বাচিয়েছিল? আর তুমি সেই সব কথা ভুলে গেলে? আমাকে এড়াতে তুমি কি করে সাবিতের মত লোকের কাছে গেলে। সাবরিনা মাহফুজের গলার তেজ টের পায়। এই কয়দিন ও বলেছে মাহফুজ শুনেছে। এখন মাহফুজের কথা শুনতে গিয়ে ও চোখ ফিরিয়ে নেয়। তারপর আস্তে আস্তে বলে তুমি যা করেছ এটার পর যে কোন মেয়ে এইটা করবে। মাহফুজ বুঝে কেন সিনথিয়া মাঝে মাঝে বলে আপুর মত গোয়ার আর নেই। যখন মাহফুজ ওকে ওর ভুল দেখিয়ে দিচ্ছে প্রমাণ সহ তখনো নিজের ভুল স্বীকার করতে চাচ্ছে না হারবে না বলে।

মাহফুজ তাই এইবার ওর গতকালের ঘটনার বর্ণনার পরের ধাপে যায়। কারণ পুরো ঘটনা না বললে সাবরিনা বুঝতে পারবে না সাবিতের কাছে যাওয়া কেন ওর ভুল ছিল আর কতবড় ভুল ছিল। মাহফুজ বলে পুরো অনুষ্ঠানে যখন কোন সুযোগ পাচ্ছিলাম না কথা বলার তখন আমি ভাবলাম আজকে আর কথা বলা হল না। তাই বের হয়ে যাচ্ছিলাম তখন হঠাত করে নাবিলের সাথে দেখা। তুমি আল্লাহর কাছে নামায পরে শুকরিয়া আদায় করতে পার যে আমার সাথে নাবিলের হঠাত দেখা হয়ে গেছে। সাবরিনা বলে নাবিল কে? মাহফুজ বলে নাবিল হল সেই ছেলে গতকাল যে তোমার জন্য আজরাইল হয়ে এসেছিল কিছুক্ষণের জন্য আর আমার সাথে দেখা হবার পর জিব্রাইল হয়েছে। নাবিল হল বড় লোক এলাকায় ড্রাগ সাপলাই দেয় একটা ছেলে। বাপ মা ভাল বড়লোক তবে পড়াশুনা ঠিকভাবে করে নি ছেলেটা। বড়লোকদের বিভিন্ন পার্টিতে নানা রকম ড্রাগ সাপ্লাই দেয়। নরমাল গাজা, ইয়াবা, হিরোইন খালি না। এর সাথে থাকে নানা রকম এক্সোটিক আর দামী ড্রাগ। আমার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কোম্পানি থাকার কারণে নানা অনুষ্ঠানে দেখা হয়। গতকাল ওর সাথে দেখা হবার পর যখন জিজ্ঞস করি কি জন্য এসেছে এখানে। তখন মুখ ফসকে একটা কথা বলে ফেলে ছেলেটা। একজন কে এক্সটাসি জাতীয় ড্রাগ সরবরাহ করতে এসেছে। সাবরিনা বুঝে না এই ড্রাগ সাপ্লাইয়ার ছেলেটার কাহিনী কেন ওকে বলছে। আর এক্সটাসি না কি ড্রাগ এইটা এখানে কি জন্য প্রয়োজনীয়। মাহফুজ জানে এই জাতীয় ড্রাগের নাম সাধারণত মানুষ জানে না। তাই মাহফুজ বলে এক্সটাসি হল সেক্স ড্রাগ। সাধারণত এই ধরণের ড্রাগ নিলে মানুষের সেক্স ড্রাইভ বেড়ে যায় অনেক। বিদেশে এটাকে রেপ ড্রাগও বলে। কারণ মেয়েদের একবার খাওয়াতে পারলে মেয়েদের সেক্স ড্রাইভ এত বেড়ে যায় যে সে আর না করতে পারে না কাউকে। আর এই ড্রাগের আরেকটা ব্যাপার হল যতক্ষণ এর প্রভাব থাকে সেই সময়টার মেমরি পরে ঝাপসা হয়ে যায়। ফলে পুলিশ কেস করা বা কাউকে কমপ্লেইন করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এই জন্য শয়তনা লোকেরা এই ড্রাগ ইউজ করে। আমি বলি যারা এইসব ড্রাগ ইউজ করে তারা মানুষ না। নরপুশু। সাবরিনা আবার প্রশ্ন করতে যায়। মাহফুজ হাত তুলে থামিয়ে দেয়। বলে আমাকে বলতে দাও তাহলে তোমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।

মাহফুজ বলে আমি নাবিল যখন আমাকে এক্সটাসির কথা বলল তখন আমার মনে একটা কু ডাক দিয়ে উঠল। তোমাদের অফিসে আমি একবার একটা গুজব শুনেছিলাম। সাবিতের নাকি রুফি ইউজ করার স্বভাব আছে মেয়েদের উপর। তাই আমি নাবিল কে বললাম কাকে সাপ্লাই দিচ্ছে। নাবিল উত্তর দিল না ক্লায়েন্টের প্রাইভেসিইর কথা বলে। আমি ফেসবুক থেকে সাবিতের একটা ছবি বের করে দেখায়ে জিজ্ঞেস করছিলাম এই লোক নাকি। তখন নাবিলের চোখ মুখ দেখে আমি বুঝে গেছি কি ঘটছে। সাবিত রুফি কিনেছে। তুমি ওর টেবিলে বসে আছ আজকে। অফিস পলিটিক্সে তোমার উপর আগে থেকেই ক্ষ্যাপা সাবিত। তার উপর সোয়ারিঘাটের ঘটনায় তুমি বেচে গিয়ে ওদের গ্রুপটাকে ঝামেলায় ফেলে দিয়েছ। ফলে দুইয়ে দুইয়ে চার করতে আমার কয়েক সেকেন্ডের বেশি লাগে নি। মাহফুজ কি বলছে এইটা যেন খানিকটা সাবরিনার মাথায় ঢুকে। মুখ টা অল্প হা হয়ে যায়। কি বলছে মাহফুজ? ওকে মানানোর জন্য কি সিনেমার গল্প বানাচ্ছে নাকি? মাহফুজ বলে আমি এরপর দ্রুত হলরুমে গেলাম তোমাকে খুজে বের করতে। গিয়ে দেখি তুমি নেই। অল্প কয়েক মিনিট আগেই তোমাকে দেখলাম আর এখন তুমি নেই। দেখি সাবিতও নেই টেবিলে। অন্য একজন বলল তোমাদের দুইজনকে একসাথে হলরুম থেকে বের হতে দেখেছে। সাবরিনার হালকা হালকা কিছু মনে পড়ছে এখন। সাবিত ভাই একটা ড্রিংক নিয়ে আসল। সেটা খাওয়ার পর থেকে কেমন যেন এক ধরণের অস্বস্তি হচ্ছিল। তখন সাবিত ভাই ওকে হেল্প করতে চাইল। মাহফুজ বলে এর পর কি হয়েছে আমি বলতে পারি তবে তুমি হয়ত বিশ্বাস করবে না। তাই তোমাকে আমি দুইটা ভিডিও দেখাবো। মনযোগ দিয়ে দেখ। যতবার ইচ্ছা দেখ। এরপর আমি আবার বলব। তবে আশা করি এই ভিডিও দুইটা ভাল করে দেখলে তুমি এইটুকু বুঝবে কেন তুমি এখানে এসেছ।

মাহফুজ পকেট থেকে ওর মোবাইলটা বের করে। গ্যালারিতে গিয়ে গতকাল রাতে তৈরি করা ভিডিওটা বের করে। এরপর মোবাইলটা এগিয়ে দেয় সাবরিনার দিকে। বলে এখানে দুই টা ভিডিও আছে। একটা একটা করে দেখ আগে। এরপর অন্য মোবাইলে আরেকটা ভিডিও আছে যেটা তোমাকে দেখাব। সাবরিনা মোবাইলটা হাতে নেয়। ভিডিও অন এর বাটনে ক্লিক করতে মোবাইলের পর্দায় দেখা যায় তিন জন লোক একটা বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মোবাইল যার হাতে ধরা তার গলা শোনা যায়, এটাই সেই রুম শিওর তুমি? সাবরিনা গলা চিনতে পারে। গলাটা মাহফুজের। এইবার আরেকটা গলা শোনা যায় যাকে ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে না। ক্যামেরা ঘুরে তার দিকে। হোটলের স্টাফের কাপড় পরা। লোকটা বলে জ্বি স্যার এইটাই সেই রুম। মাহফুজ কে দেখা যায় না ক্যামেরার আড়ালে থাকার কারণে তবে মাহফুজ ইন্সট্রাকশন দেয় সবাই কে। হোটেলের স্টাফ কে বলে তুমি রুম সার্ভিসের কথা বলবা, কমপ্লিমেন্টারি ফুড। আর বাকি দুইজন কে বলে তোমরা বাইরে টা পাহারা দাও। ভিতরে সব ঠিক হলে আমি ডাকব। আমি না ডাকা পর্যন্ত ভিতরে আসবা না। ওরা বলে জ্বি ভাই। সাবরিনার বুক ধক করে উঠে, একটা শংকায়।এরপর কি আসবে স্ক্রিনে? হোটেল স্টাফ রুমের দরজায় নক করে। সাড়া শব্দ আসে না ভিতর থেকে। আবার নক। এইবার চাপা একটা শব্দ শোনা যায় রুমের ভিতর থেকে, কে? হোটেল স্টাফ উত্তর দেয় রুম সার্ভিস, কমপ্লিমেন্টারি। রুমের দরজার ছিটকনি খোলার শব্দ পাওয়া যায়। মাহফুজ চাপা গলায় বলে রেডি। বাকি তিনজন একসাথে মাথা নাড়ে। রুমের দরজা হালকা খুলতেই জোরে একটা ধাক্কা দেয় মাহফুজ। ক্যামেরা কয়েক সেকেন্ড টালমাটাল থাকে ঠিক কি হচ্ছে বুঝা যায় না। সাবিতের গলা শোনা যায় কে কে তোমরা? আমি কিন্তু হোটেলের লোক ডাকব। পুলিশ ডাকব। প্রচন্ড জোরে ঠাস ঠাস দুইটা শব্দ হয়। মাহফুজের গলা শোনা যায় মাদারচোত এইসব করস না, খানকির পোলা তোর নাং কাইটা কাউয়ারে খাওয়ামু। ক্যামেরা এখনো মাটির দিকে তাক করা তাই কিছু স্পষ্ট না। সাবরিনার বুক কাপছে ক্যামেরা সোজা হলে কি দেখবে তাই ভেবে। শুদ্ধ পরিশীলিতি পরিবেশে বড় হওয়া সাবরিনা মাহফুজের গালিগালাজের দিকে মনযোগ দিতে পারে না। ওর মনে একটা শংকা জেগে উঠেছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করছে যেন সেইটা সত্য না হয়। ফোন এইবার সোজা হয়। সাবিতের দিকে তাক করে ক্যামেরা। সাবিত মাটিতে বসে আছে। একটা হোটেলের সাদা গাউন পরা। চুল ভেজা দেখে বুঝা যাচ্ছে গোসল করে এসেছে। সাবরিনার বুক রীতিমত কাপছে। হৃদপিন্ড ফেটে বুঝি বের হয়ে যাবে। আল্লাহ রক্ষা কর। সাবিতের দিকে ক্যামেরা তাক করে মাহফুজ আর কিছু গালি দেয়। রান্ডির বাচ্চা তোরে টুকরা টুকরা করে কুত্তারে খাওয়ামু। সাবিতের চোখেমুখে আতংক। ক্যামেরা এইবার একটু বামে ঘুরে। বিছানার উপর একটা শরীর পরে আছে, চেহারাটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না। পায়ের কাছে শাড়ি লুটানো। কোমড় থেকে নিচটা পেটিকোটে ঢাকা আর উপরে খালি ব্লাউজ। এই ব্লাউজ আর পেটিকোটের কালার টা সাবরিনার খুব চেনা। চেহারাটা স্পষ্ট দেখা না গেলেও সাবরিনা জানে এটা কে। ওর সব কিছু কি শেষ হয়ে গেল? সাবিতের মত একটা শয়তান কি তাহলে জিতে গেল? হাত থেকে মোবাইলটা পরে যায় সাবরিনার। দুই হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেদে উঠে। মাহফুজ কাছে গিয়ে সাবরিনার দুই হাত ধরে বলে কিছু হয় নি সাবরিনা। ভিডিওটা আরেকটু দেখ বুঝবে। আমি ঠিক সময় পৌছে গেছি। সাবরিনার কান্না কমছে না বরং ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে। সাবরিনার মনে হচ্ছে ওর বুক জুড়ে একটা ঝড় হচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে ওর সাথে। সব কিছু কেন একের পর এক রঙ টার্ন নিচ্ছে জীবনে। মাহফুজ বলে প্লিজ ভিডিওটা দেখ। তাহলে মনে শান্তি পাবে।

মাহফুজ এরপর ফোনটা আবার নিয়ে চালু করে দেয়। ঝাপসা চোখে সাবরিনা দেখতে থাকে। ওর দেখতে ইচ্ছা করে না তাও দেখতে থাকে। কারণ কি হয়েছে এরপর এটা ওর জানা জরুরী। ভিডিও আবার চলতে শুরু করে। মাহফুজ কে এখনো দেখা যায় না তবে ওর কথা শোনা যাচ্ছে। বুঝা যাচ্ছে ক্যামেরা ওর হাতে। সাবিত কে কষে তিন চারটা লাথি লাগায়। সাথে অসভ্য সব গালাগালি। সাবিত ব্যাথায় ককিয়ে উঠে। একটু আগে পুলিশের হুমকি দিচ্ছিল। তবে মাহফুজ লাথি দেবার সময় বলে তোর কান্ডকীর্তি সব ভিডিও করছি আমি। এইগুলা যখন পুলিশের হাতে যাবে তখন দেখব পুলিশ কার পিছনে লাঠি দেয়। মাহফুজ ওর সব কাজ ভিডিও করছে এইটা শুনে সাবিত এরপর একদম চুপ হয়ে যায়। প্রতিবার লাথির সাথে বাপ মা কে স্মরণ করলেও পুলিশের হুমকি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মাহফুজ লাথি দিতে দিতে জিজ্ঞেস করে কি দিয়েছিস সাবরিনা ম্যাডাম কে? বল শালার পুত। সাবিত বার বার বলে কিছু দেয় নি, সাবরিনা ওর সাথে স্বেচ্ছায় এসেছে। মাহফুজ বলে শুয়রের বাচ্চা নাবিল কে আমি চিনি। রুফি নিছে কে ওর থেকে। রেপ ড্রাগ? সাবিতের চোখে মুখে বিস্ময়। বুঝা যায় নাবিলের নাম মাহফুজ জানবে এটা ভাবে নি। ওর খেলা যে ধরা পরে গেছে বুঝতে পারে। এইবার বলতে থাকে সব মিথ্যা। সব বানোয়াট। নাবিল একটা ড্রাগ ডিলার। সব মিথ্যা বলছে ও। ক্যামেরার এংগেল এইবার একটু ঝুকে, বুঝা যাচ্ছে মাহফুজ নিচু হয়েছে। সাবিতের গালটা দুই আংগুলে চাপ দিয়ে বলে আমাকে কি বাচ্চা পাইছিস? এই বলে কষিয়ে একটা বিরাশি শিক্কার চড় দেয়। এক চড়ে আধ বসা থেকে হোটেলের কারপেট ওয়ালা ফ্লোরে শুয়ে পড়ে সাবিত। মাহফুজের পেটানো শরীরের এই চড় মাম্মি ড্যাডি টাইপ সাবিতের জন্য না। মাহফুজ বলে তোর ফোন কই এই বলে আবার হাত তুলে তবে এইবার আর চড় দেওয়া লাগে না। সাবিত বিছানার উপর থাকা নতুন আই ফোনটা দেখিয়ে দেয়। ফোনটা এনে সাবিতের মুখের সামনে ধরতেই ফেসিয়াল রিকগনিশন ফোনটা খুলে দেয়। মাহফুজ ওর ক্যামেরা এইবার আই ফোনের স্ক্রিনে তাক করে। মেসেজে নাবিলের সাথ কথোপথন গুলো রেকর্ড করে। সাবরিনার গা রি রি করে উঠে। বুঝতে পারে ওকে কোন একটা ড্রাগ খাইয়েছিল সাবিত যেটা সে এই নাবিল ছেলেটা থেকে কিনেছে। মাহফুজের ক্যামেরার স্ক্রিন এইবার বিছানার দিকে ঘুরে। সাবরিনা স্ক্রিনে ওকেই দেখে। চুলগুলো এলোমেলো। গায়ে শাড়ি নেই। এক হাটুর উপরে পেটিকোট উঠে আছে, অন্য হাটুটা ঢাকা। শরীর হালকা বাকানো। মুখের উপর চুল পড়ে আছে। চেহারা স্পষ্ট না স্ক্রিনে তবে সাবরিনা জানে এটা ও। ব্লাউজের উপরের দুইটা হুক খোলা। ওর বুকের মাঝের গভীর খাজটা স্পষ্ট। সিনেমার নায়িকার আবেদনময়ী দৃশ্য হিসেবে অনায়াসে চালিয়ে দেওয়া যাবে এই দৃশ্যটা। তবে সাবরিনা জানে এটা সিনেমা না আর ও নিজে নায়িকা না। ওর জীবনের সব নোংরা সত্য যেন নগ্ন হয়ে আছে এই দৃশ্যে। মাহফুজ কে এড়াতে গিয়ে সাবিতের মত এক জানোয়ারের খপ্পরে পড়েছিল ও। মাহফুজ ঝাকি দেয়। সাবরিনার চোখ মুখ ঘোর ঘোর। নেশায় আছে। মাহফুজ ঝাকি দেয়। চোখ মেলে তাকায় সাবরিনা। সাদমান তুমি মাহফুজের মত হয়ে গেছ কেন? মাহফুজ বলে সাবরিনা আমি। সাবরিনা অনেক কষ্টে চোখ মেলে তাকায়, বলে মাহফুজ এটাকি সত্যি তুমি?



স্ক্রিনে দেখা ভিডিও সাবরিনা কে সব বলে দেয় যা ওর জানার ছিল। মাহফুজ আরেকটা ভিডিও দেখায় সাবরিনা কে। সাবিতের আইফোনটাতে। মাহফুজ আসার আগে সাবরিনার শাড়ি খুলছিল আর ভিডিও করছিল সাবিত। ঘৃণায় রি রি করে সাবরিনার শরীর। ঐ ভিডিও পুরোটা দেখত পারে নি ও। মাহফুজ বলে এইসবের পর সাবিতের থেকে স্বীকারোক্তি নিয়ে আরেকটা ভিডিও বানিয়েছি আমরা। এরপর ওর ফোন থেকে আই ক্লাউডে সব ডিলিট করিয়ে ফোণটা নিয়ে এসেছি। বলেছি এরপর যদি আর কিছু হয় বা ও নতুন কিছু করে তাহলে পুলিশ কি করবে সেটা না ভেবে আমি ওকে কি কর সেটা যেন ভাবে। না চাইতেও সাবরিনার মনে একটা কৃতজ্ঞতা আসে। সোয়ারিঘাটের পর আবার ওকে এরকম একটা বিপদের থকে বাচালো। মাহফুজ বলে এরপর তোমাকে বাকিদের সাহায্যে আমার বাসায় নিয়ে আসছি। তোমার হুশ ছিল না এই অবস্থায় কোন ভাবেই তোমার বাসায় নিয়ে যাবার উপায় ছিল না। কারণ গেটে দারোয়ান আটকাতো। আমার বাসাতে এনে তোমাকে এই বিছানায় শুইয়ে দিইয়েছি। সারা রাত তুমি ঘুমিয়েছ। একটু জাগলে। আমাকে তুমি পাভার্ট বললেও আমি এই অবস্থায় কোন অন্যায় সুযোগ নেই নি। তোমাকে শাড়ি গায়ে জড়িয়ে দিতে যতটুক টাচ করা লাগে ততটুকু টাচ করেছি। মাহফুজের কথায় খোচার সুর টের পায় সাবরিনা। মৃদু স্বরে বলে স্যরি। মাহফুজ বল তোমার জিজ্ঞাসার প্রথম পার্টটার উত্তর আমি দিলাম। তুমি কিভাবে আমার বাসায় এসেছ। দ্বিতীয় পার্টটার উত্তর আমি দিব। কেন সিনথিয়ার কথা আমি তোমাকে বলে নি যখন তোমার সাথ পরিচিত হলাম অথবা কেন পরেও কিছু বলি নি। তবে তার আগে কিছু খেয়ে নাও। ড্রাগের ধকল পুরোপুরি যায় নি সাবরিনার শরীর থেকে। দূর্বল। কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে ভিতরে ভিতরে। গরম গরম। মাহফুজ তাই খেতে বলায় রাজি হল। এখন মাহফুজের ব্যাখ্যা শোনার আগে শরীরে শক্তি দরকার। মাথাটা ঠান্ডা করা দরকার। আর মাহফুজ কে মোকাবেলা করার আগে নিজের যুক্তি গুলো গুছিয়ে নেওয়া দরকার। সাবরিনা ভাবে।

মাহফুজ সাবরিনার প্রিয় বিরানি আনিয়ে রেখেছিল। সাবরিনা অবশ্য অত বেশি খেতে পারে না আজকে। খাওয়া শেষ করে বলে আমি আজকে আসি। মাহফুজ বলে সাদমান তো আর দুই দিন আসবে না ঠিক না? সাবরিনা বলে তুমি কিভাবে জান? মাহফুজ বলে তুমি সিনথিয়া কে বলেছিলে। সেখানে থেকে শুনেছি। সবারিনা জিজ্ঞেস করে সিনথিয়া কি জানে আমি এখানে? কি হয়েছে আমার সাথে? মাহফুজ বলে না। এটা তোমার গোপন ব্যাপার। সোয়ারিঘাটের ঘটনা যেমন কেউ জানে নি। এটাও জানবে না। তুমি যেতে চাইলে যাবে তবে আগে আমার ব্যাখ্যা টা শুনে নাও। মাহফুজ বলে শুরুটা তোমাদের সিনথিয়ার সাথে আমার রিলেশনে বাধা দেবার থেকে। সিনথিয়া আর আমি মিলে ঠিক করি যে কোন মূল্যে তোমাদের রাজি করাতে হবে। সিনথিয়া থেকে শুনে বুঝি আসলে আমাকে রাজি করাতে হবে তিন লোক কে। তুমি সবারিনা, তোমার ফুফু নুসাইবা করিম আর তোমার মা সাফিনা করিম। সিনথিয়ার সাথে কথা বলতে বলতে আমি বুঝলাম তোমাকে আর তোমার ফুফু কে রাজি করাতে পারলে তোমার আম্মু কে রাজি করানো ইজি হবে। কারণ উনি তোমাদের কথা শুনবেন। আর সাফিনা করিম রাজি হলে তোমাদের পরিবারের কার সাধ্য নেই আমাদের বিয়ে আটকায়। এই জন্য তোমার কাছে আসা। তোমার সাথে দেখা হওয়াতে আমার প্ল্যান ছিল কিন্তু তার পর অনেক কিছুতে আমার হাত ছিল না। ভাগ্য বল, পরিণতি বল তোমার সাথে একবার দেখা হবার যা হয়েছে সেইটা আমার হাতের বাইরে ছিল। আমাদের প্ল্যান ছিল প্রথম তোমার গুড গ্রেসে আসা। এরপর সময় করে এক সময় তোমাকে খুলে বলব আমরা। আমি কে, আমাদের জন্য তোমার সাপোর্ট চাইব। কিন্তু সম্ভব হয় নি। তোমার সাথে প্রথম দেখা থেকে এক ধরণের মুগদ্ধতা কাজ করা শুরু করেছিল। সিনথিয়ার সাথে তোমার রিলেশনটা জটিল। তুমি পড়াশুনায় ভাল, বাবা মায়ের বাধ্য, ভাল ক্যারিয়ার এইসবের জন্য সিনথিয়া তোমার উপর বিরক্ত কারণ সব সময় ও যাই করে তার সাথে তোমার তুলনা হয়। আবার তোমার এইসব এচিভমেন্টের জন্য এক্সট্রিমলি প্রাউড সিনথিয়া। জেলাসি আর প্রাইড তোমার প্রতি এই দুইটাই আছে ওর। নরমাল সিবলিং রাইভালরি। তাই সিনথিয়া যখন তোমার ব্যাপারে আমাকে আগে বলত তখন যেমন নানা সময় তোমার নানা কাজে বিরক্ত হয়ে বলত গুডি টু সুজ আবার হয়ত দশ সেকেন্ড পর তোমার প্রশংসায় ভাসায়ে দিত। ফলে তোমার প্রতি এক ধরণের কৌতুহল তৈরি হয়েছিল। সেই কৌতুহল মুগ্ধতায় পরিণত হয়েছিল তোমার সাথে দেখা হবার পর। প্রথম প্রথম সেই মুগ্ধতা তোমার কাজ, তোমার ম্যানার এইসবের প্রতি ছিল। কিন্তু আস্তে আস্ত সেটা কিভাবে যেন ব্যক্তি তোমার দিকে চলে গেল। তোমাকে মিথ্যা বলব না। সোয়ারিঘাটে সেই রাতে তোমাকে উদ্ধার করার সময় আলো আধারিতে কাপড় ছাড়া তোমার যে রূপ দেখেছিলাম সেটা এক ধরণের উত্তেজনা তৈরি করেছিল আমার মাঝে। সুন্দরী যে কোন মেয়ে কে কাপড় ছাড়া দেখলে যে কোন সুস্থ পুরুষের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হবে সেটা স্বাভাবিক। তবে তুমি যেন আলাদা ছিলে। সেই আলো আধারিতে তোমাকে উদ্ধার করার পর এক ধরনের ঘোর তৈরি হয়েছিল আমার মাঝে। হয়ত শরীরে অনেক এড্রোলিন রাশ হইছিল তখন তোমার শারীরিক সৌন্দর্য আমার মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। একটা কথা জান? সেদিন তোমার প্যান্টি তোমার গুজে দিয়েছিল শয়তান দুইটা। তোমাকে উদ্ধার করার সময় পরে পকেটে ঢুকিয়ে রেখেছিলাম। মনেও ছিল না সেটার কথা। বাসায় গিয়ে জামা কাপড় বদলাতে গিয়ে প্যান্টের ভিতর তোমার সেই সাদা সুতির প্যান্টির অস্তিত্ব টের পাই। পকেট থেকে বের করার পর অজান্তেই সেটা কে নাকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। এতদিন তোমার সাথে কাজের জন্য গাড়িতে চড়লে তোমার পারফিউমের সুরভিত সৌরভ একটা আবেশ বুলিয়ে দিত। সেই রাতে তোমার প্যান্টি থেকে যে ঘ্রাণটা আমার নাক হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল সেটা কোন পারফিউমের না। তোমার শরীরের খাটি গন্ধ। তোমার গোপনতম স্থানের থেকে আসা সেই ঘ্রাণ যেন পাগল করে দিল। বিশ্বাস কর তার আগে তোমাকে শারীরিক ভাবে সেভাবে ভাবি নি। কিন্তু সেই ঘ্রাণ মাথায় এমন ভাবে গেথে গেল যে আর কখনো বের করতে পারি নি। এখনো সেই ঘ্রাণ আমার মাথায় আছে। মাহফুজের কথায় সাবরিনা কেপে উঠে। অস্বস্তি হয় ওর। কেমন যেন পরিচিত একটা উষ্ণতা সারা শরীরে ছড়াচ্ছে যেন।

মাহফুজ বলে চলে। এরপর একদিন সিনথিয়া জোকস করছিল আপুর প্রেমে পরে গেলা নাকি। আমিও জোকস করে বলেছিলাম হ্যা। তবে আমি জানতাম কথাটা সত্য। সিনথিয়ার সাথে প্রেম করা অবস্থায় তোমার সাথে কি প্রেম করা যায়? যদি পৃথিবীর নিয়ম নীতির কথা বল তাইলে অবশ্যই যায় না। কিন্তু ভালবাসা কবে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেছে। যদি জিজ্ঞেস কর একসাথে কি দুইজন কে ভালবাসা যায়? আমি বলব হ্যা যায়। তুমি বলবে একমাত্র লুচ্চা, বদমাশ, লাফাংগা, চরিত্রহীনরা এইসব বলতে পারে। আমি বলব না। কারণ সব ভালবাসা কি এক রকম হয়? একটা মানুষ যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ কে ভালবাসতে পারে তাহলে এক সময়ে কেন ভিন্ন ভিন্ন মানুষ কে ভালবাসতে পারবে না? তোমার প্রতি ভালবাসা আর সিনথিয়ার প্রতি ভালবাসা কি এক? এক না। সিনথিয়ার সাথে আমি ঘর বসাতে চাই। তোমার সাথে সম্ভব নয় জানি। তাও দূর থেকে তোমাকে অন্তত দেখতে চাই। সাবরিনা মাহফুজের কথায় একসাথে রেগে উঠে আবার গলে যায়। বুঝতে পারে না কি বলবে ওকে? মাহফুজের কন্ঠের কাতরা স্পষ্ট। আবার এটা কিভাবে সম্ভব? সাবরিনা বলে মাহফুজ তুমি সব এমন ভাবে বলছ যাতে তুমি গাছের টাও খেতে পার তলারটাও কুড়াতে পার। সিনথিয়া কে চাও আবার আমাকে চাও। আবার বলছ সিনথিয়া কে পেতে আম্মু কে রাজি করাতে হবে আমাকে। এটা কিভাবে সম্ভব? যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেই পৃথিবীর নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না ভালবাসা তাহলে এখন কি তুমি এক প্রেমিকার কাছে চাইতে পারবে আরেক প্রেমিকার ভালবাসা? আর আমি সাদমান কে ভালবাসি। শেষবার দেশ ছাড়ার আগে আমি তোমাকে স্পষ্ট করে বলেছি। আমাদের মধ্যে যা হয়েছে যেভাবে হয়েছে উচিত হয় নি। তাই তো আমি দেশের বাইরে এসাইনমেন্ট নিয়ে গিয়েছি যাতে একটা দূরত্ব হয় আমাদের। আমি সাদমানের কাছে সাদমানের হয়ে ফিরতে পারি।

মাহফুজ বলে সাদমান থেকে তোমাকে কে ছিনিয়ে নিতে চেয়েছে। আমি একটু আগে বলি নি একজন মানুষ একসাথে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ কে ভালবাসে। তুমি অস্বীকার করতে পারবে আমার প্রতি তোমার একটু দূর্বল হয় নি? সব খালি শরীর ছিল সেখানে। মন ছিল না একটু? সাবরিনা চোখে চোখ রাখে না অন্যদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। যেন চোখে চোখ রাখলেও মাহফুজ জেনে ফেলবে হোটেলে যখন সাদমান কে উদ্যাম প্রেমে ভাসিয়ে দিতে চাইছিল তখন না চাইতেও সামনে মাহফুজ হাজির হয়েছিল। মাহফুজ বলে আমি সিনথিয়াকে সরিয়ে তোমাকে একমাত্র আসন দিতে চায় নি কিংবা সাদমান কে সরিয়ে একমাত্র আসনে আমি বসতে চাই নি। আমি চেয়েছি কিছু জিনিস আমাদের থাক। অল্প কিছু শুধু দুই জনের জন্য। যদি তা না হয় আমি তোমার ইচ্ছা কে সম্মান করি। তুমি দেশ ছাড়ার আগে যা বলেছিলাম সেটা আবার বললাম। তোমার জীবনে আমার অল্প একটু জায়গা দরকার। বেশি কিছু না। তোমার জীবনের সব যেমন চলছে তেমন চলবে কিছুতে ব্যাঘ্যাত ঘটবে না। তাতে যদি না হয়, তবে ঠিক আছে। আমি মেনে নিব। আর একজন প্রেমিকাই তো বুঝবে প্রেমিকের হৃদয়ে কি আগুন জ্বলে। সাবরিনা বলে মাহফুজ সিনথিয়া এবং আমি বোন। তুমি কিভাবে ভাবছ আমি তোমাকে এখানে হেল্প করব। আগে যা ঘটছে তা ঘটেছে, নতুন করে কিছু ঘটুক আমি চাই না। আর সিনথিয়া যদি জানে তাহলে কি বলবে বল? মাহফুজ বলে কিছু বলবে না। বরং বলা যায় না খুশিও হতে পারে। মাহফুজের কথায় সাবরিনা রেগে যায়। বলে সবাই কে তোমার মত পাভার্ট ভাববে না। সিনথিয়া একটু উড়নচন্ডী, মাঝে মাঝে রেকলেস তবে আমাদের পরিবারে বড় হয়েছে ও। মোরালিটির একটা ভ্যালু আছে ওর কাছে। মাহফুজ হেসে দেয়, বলে মোরালিটি শব্দটা বড় গোলমেলে সাবরিনা। সমাজ কাল ভেদ বদল যায়। আশি নব্বই বছর আগে দশ বছরের মেয়ে কে বিয়ে করা খুব নরমাল ছিল কিন্তু এখন একদম প্রত্যন্ত গ্রামে যাও। সেখানেও এমন বিয়ে দেখবে না। আর ভালবাসা বড় জটি। সিনথিয়া কে আমি যেভাবে চিনি সেভাবে আর কেউ চিনে না। সিনথিয়া আমার সাথে ওর পুরো স্বরূপটা প্রকাশ করতে পারে তাই তো ও আমাকে এত ভালবাসে। আমাকে চায়। আমি নিশ্চিত আমি যদি বলি তোমার আপুর সাথে আমার কিছু আছে বরং ও উত্তেজিত হবে। সবারিনা ধমকে উঠে বাজে বকো না। মাহফুজ এইবার খানিকটা চ্যালেঞ্জ আর খানিকটা কৌতুকের স্বরে বলে, যদি তুমি সিনথিয়ার মুখ থেকে ভিন্ন কিছু শুন? যদি শুন সিনথিয়া বরং উত্তেজিত হয়, খুশি হয় তোমার আমার কথা বললে? সাবরিনা বলে এটা হতেই পারে না। তুমি পাভার্ট হতে পার কিন্তু সিনথিয়া না। সিনথিয়ার সাথে সাবরিনা কে নিয়ে ওর বিভিন্ন সময় কথোপকথন একবার মনে করে মাহফুজ তারপর মুচকি হাসি দেয়। বলে তাহলে একটা বেট হয়ে যাক। সাবরিনা বলে এইসব বেট ফেট এর দরকার নেই। আমি আমার বোন কে চিনি। মাহফুজ বলে একজন মানুষ কে চিনা কি এত সহজ। তার কত রূপ থাকে। সাবরিনা বোনের বিরুদ্ধে এইসব কথা সহ্য করত পারে না। বলে নিজেকে বাচানোর জন্য এইসব বলে লাভ নেই মাহফুজ। সিনথিয়া হয়ত রাগের মাথায় আমাকে নিয়ে দুই একটা বকাঝকা দিতে পারে তবে এর বেশি কিছু ও বলবে না। মাহফুজ আবার সাবরিনা কে খোচা দেয়। সিনথিয়া তো তোমাকে আর আমাকে নিয়ে অনেক কিছু বলে। খুশি মনে বলে। উত্তেজিত হয়ে বলে। সাবরিনা বলে মাহফুজ তুমি আমাকে দুই বার বাচিয়েছ বলে আমি এখনো এখানে বসে তোমার কথা শুনছি। কিন্তু এইসব বাজে কথা বলতে থাকলে আমাকে এখান থেকে উঠে যেতে হবে। মাহফুজ বলে প্লিজ তুমি আমাকে কথা দিয়েছ আমার পুরো কথা শুনবে। মাহফুজের কথায় সাবরিনা আবার একটু শান্ত হয়। সে কথা দিয়েছে তাই কথা রাখবে। যে তার জীবন এবং সম্মান দুই দুইবার বাচিয়েছে তার সাথে এতটুকু কথা সে রাখতে পারে। আর মাহফুজ যাই বলুক ওর যুক্তি কে দূর্বল করতে পারবে না এই আত্মবিশ্বাস সাবরিনার আছে।

মাহফুজ বলে আমি তোমার প্রতি দূর্বল হয়েছি কিভাবে সেটা তো বলেছি। তুমি সাদমানের জন্য দূরে সরে থাকতে চাও এটাও আমি বুঝি। তুমি চাইলেও এই সমাজ আর নিয়ম নীতি কে অগ্রাহ্য করতে চাও না। তবে বিশ্বাস কর তুমি আমার কাছে আসলে সিনথিয়া মোটেই অখুশি হবে না। বরং বিভিন্ন সময় ও আমাকে উস্কে দেয় তোমাকে নিয়ে। সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর যখন মন একটু তোমার দিকে ঝুকে গেল তখন সিনথিয়ার করা হাসি ঠাট্টা গুলো আমার মন কে আর দুর্বল করেছে তোমার প্রতি। সেই জন্য লালমাটিয়ার অন্ধকার মাঠে আমি এইভাবে তোমার এত কাছে এসেছিলাম। সাবরিনা আবার প্রতিবাদ করে উঠে। মাহফুজ বলে সাবরিনা তুমি আর তোমার ফুফুর দুই জনের একটা জিনিস কি জান? সাবরিনা তাকিয়ে থাকে হঠাত করে নুসাইবা ফুফুর কথা উঠায়। সাবরিনা জানে রিসেন্ট অনেক ঝামেলা হয়েছে নুসাইবা ফুফু আর আরশাদ ফুফার জীবনে এবং যেখানে মাহফুজ ওদের কে হেল্প করেছে। অনেকটা এই কারণে ওর মা এখন দোন মোনায় আছেন আগে যেখানে সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছিলেন সিনথিয়ার সাথে মাহফুজের বিয়ের। সাবরিনা কৌতুহল থেকে জিজ্ঞেস করে কি? মাহফুজ বলে তোমরা দুই জনেই চোখের সামনে থাকা জিনিস দেখতে পার না, কেউ মুখে বললে বিশ্বাস কর না। কিন্তু যখন চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয় তখন অবাক হয়ে যাও। সাবরিনা বলে ফুফুর ক্ষেত্রে কি হয়েছে। মাহফুজ কয়েক সেকেন্ড বিরতি নিয়ে বলে সেইটা তোমার ফুফু বলবে, এইতা প্রকাশ করার অধিকার আমার নাই। তার ব্যক্তিগত তথ্য। তবে তোমাকে আমি আজকে তোমারটা চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিব। তুমি ভাব এক পরিবারে বেড়ে উঠলে সবাই এক রকম ভাববে। তুমি ভাব তোমার বোন সাধু ধোয়া তুলসি পাতা। আর আমি আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে সব রকম পাভার্ট চিন্তার মালিক। সাবরিনা এইবার না না করে উঠে তবে মনের ভিতর যে এই চিন্তা আসে নি সেইটা অস্বীকার করতে পারে না নিজের কাছে। মাহফুজ বলে আমি তোমাকে হাতে কলমে প্রমাণ করে দিচ্ছি। তবে এই প্রমাণ করলে তোমাকে আমাদের বিয়েতে সাহায্য করতে হবে। সাবরিনার মনে হয় বল এখন ওর কোর্টে। তবে এইবার ও জিতবে। কারণ মাহফুজ এমন চাল দিয়েছে সে জানে না যে এই চালে ও হারবে। তাই সাবরিনা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলে তুমি যদি প্রমাণ করতে পার সিনথিয়া তোমাকে আমার ব্যাপার উস্কানি দেয়। আমার কাছে আসার ব্যাপার তোমাকে উতসাহ দেয় তাহলে আমি তোমাদের বিয়েতে হেল্প করব। মাহফুজ বলে আমি তোমাকে এইটা প্রমাণ করে দেখাতে পারব। তবে আমি যখন কথা বলব সিনথিয়ার সাথে ফোনে সেই সময়টা তোমাকে একদম চুপ করে থাকতে হবে। সাবরিনা বলে ওকে। সাবরিনার মধ্যে সেই কম্পেটেটিভ কোল্ড বিচ জেগে উঠে। এতদিন ধরে মাহফুজ আর ওর মাঝে যা ঘটেছে সেই সবের জন্য মাহফুজ কে মনে মনে দোষারোপ করে এসেছে। আজকে মাহফুজ যদি এই জায়গায় হেরে যায় তাহলে ওর কোন দায় থাকবে না মাহফুজ কে হেল্প করার। মাহফুজ ওকে তাহলে যে দুইবার ওকে বাচিয়েছে সেগুলোর দোহায় দিয়ে বিয়েতে হেল্প করতে বলত পারবে না। কারন সাববিনা দুশ্চিন্তায় ছিল মাহফুজ ওকে এই দুই ঘটনার দোহাই দিলে ওর জন্য অস্বীকার করা কঠিন হত। এখন বরং সহজে এড়ানো যাবে এবং মাহফুজে গর্ব দমানো যাবে। দেখানো যাবে যে করিম ফ্যামিলির মেয়েদের এত সহজে হারানো যায় না ।

মাহফুজ বলে ওকে আমি কল করছি সিনথিয়া কে। দুপুর তিনটার মত বাজে এখানে। তার মানে সকাল নয়টা বাজে ইংল্যান্ডে। সিনথিয়া কে মেসেঞ্জারে কল দিতে কয়েকবার রিং হয়। সিনথিয়া কল রিসিভ করে। রিসিভ করে সিনথিয়া বলে হ্যালো জান, কি খবর? গতকাল রাতে তো আর কোন আপডেট দিলা না। আমি কল দিলাম সেই সময় কল কেটে দিলা। আপুর সাথে কথা বলত পারছ? কি বলছে আপু? মাহফুজ এইবার বলে না কথা বলতে পারি নাই। অনেক চেষ্টা করেছি তবে আমার সাথে কথাই বলল না। এরপর গতরাতে প্রোগ্রামের সময় যা যা ঘটেছে তা এক এক করে বলতে থাকল। সাবরিনা কিভাবে মাহফুজ কে এড়ানোর জন্য সাবিতের টেবিলে বসে ছিল সেইটাও বলল। সাবরিনা ভয় পেয়ে গেল মাওফহু আর কি কি বলবে? পরের ঘটনাও কি বলবে? সাবরিনা আকার ইংগিতে আর না বলতে মানা করে। মাহফুজ ঘাড় নাড়িয়ে আশ্বাস দেয়। ওর দিকে তাকিয়ে ইংগিতে বলে ট্রাস্ট মি। এরপর সাবিতের সাথে কিভাবে হেসে হেসে কথা বলছিল সেইটাও বলে। সিনথিয়া বলে আপু একটা ড্যাম ইডিয়েট। সাবরিনা একটু চমকায়। ওদের ফ্যামিলিতে নরমালি বড়দের অনেক সম্মান দেয়। তব অনেক সময় ঝগড়া হলে সিনথিয়া যে দুই একটা উলটা পালটা বলে না তা না। তবে এখানে কোন কিছু ছাড়া মাহফুজের সামনে ওকে ইডিয়েট বলছে অবাক হয় সাবরিনা। মাহফুজ বলে ঠিক বলছ সিনথি। সিনথি বলে এই শয়তান ব্যাটাই না আপুর চাকরি খাওয়ার জন্য সব উলটা পালটা ধান্দা করল। মাহফুজ বলে হ্যা এইটা সে ব্যাট। সিনথি বলে আপুর ইগো আপুরে সব জায়গায় ধরা খাওয়ায়ে দেয়। আপু ইগোর চোটে একবারো আমার কথা ভাবছে না। তুমি না বলছিলা আপু কে অফিসে সবাই কোল্ড বিচ বলে। আসলেই একটা কোল্ড বিচ আপু। চমকে উঠে কিছু বলতে যায় সাবরিনা। মাহফুজ ঠোটে আংগুল দিয়ে চুপ করতে বলে। মাহফুজ বলে এরপর আমাকে একবারো কথা বলতে দেয় নি। একবার কাছে গেলাম না চেনার ভান করে অন্য দিকে তাকিয়ে রইল। সিনথিয়া বলল এই জন্য তো আমি বলি আপুকে আসলে উচিত সাজা দেওয়া উচিত। মাহফুজ নরম স্বরে জিজ্ঞেস করে কেমন সাজা সিনথি। সিনথি এইবার খিল খিল করে হেসে উঠে। বলে বুঝ না কি বলছি। এখন লাইব্রেরির দিকে যাচ্ছি হেটে হেটে। বাসায় থাকলে ভিডিও কলে দেখিয়ে দিতাম কি শাস্তি দিতে হবে আপু কে। আপুর ভিতরের কোল্ড বিচটা কে গরম করতে হবে। এই বলে আরেকটা হাসি দিল। সাবরিনার গা কেমন যেন গুলিয়ে উঠল। সিনথিয়া এই ভাষায় ইংগিত পূর্ণ কথা বলতে পারে এইটা ভাবে নি ও।

মাহফুজ বলে তুমি আর সাবরিনা দুইজনে এত তফাত কেন সিনথিয়া। মাঝে মাঝে আমার তো মনে হয় তোমাকে বুঝি কুড়িয়ে এনেছে। সিনথিয়া হেসে বলে হতেও পারে। তবে আপু হইল গুডি টু সুজ। সব সময় বাবা-মায়ের কথা শুনবে। সর রুল মানবে। বাবা মা প্রথম যে পাত্র আনল তাতেই রাজি হয়ে গেল দেখ। আর আমি নিজের পছন্দের পাত্র এনেছি। তাই এত সমস্যা। ও এত গুডি টু সুজ না হলে কি হত না? সাদমান ভাই ভাল মানুষ আমি মানছি। তবে বড্ড বেশি ভ্যানিলা। আপুর অবশ্য ভ্যানিলা অনেক পছন্দ। অবশ্য আমার পছন্দ চকলেট ক্যারামেল তোমার মত। পরতে পরতে চমক। এই বলে মুখ দিয়ে একটা কিসের সাউন্ড করে। ছোট বোনের প্রেমিকের সাথে ছোট বোনের গল্প শুনে অস্বস্তি হতে থাকে সাবরিনার। তবে বাজি বলে কথা। সিনথিয়া কে উস্কে দিয়ে মাহফুজ বলে ভ্যানিলা আর চকলেটে কি পার্থক্য সিনথিয়া? সিনথিয়া বলে পার্থক্য হলাম আমি। দেখ না চকলেটের স্বাদ একবার পেয়ে বাবা মায়ের দেখানো কোণ ছেলে পছন্দ হয় না। আমার দরকার চকলেট যে কোন মূল্যে। আপু ভ্যানিলা খেয়ে খেয়ে চকলেটের স্বাদ কি বুঝবে। তুমি তো ঠিক চকলেটও না। অনেক গুলো সারপ্রাইজ চকলেট থাকে না। বিভিন্ন পরতে বিভিন্ন স্বাদ। বাইরে থেকে বুঝা যায় না। প্রত্যেক পরদ চেটে চেটে স্বাদটা নিতে হয়। আপু যদি তোমার এই সারপ্রাইজ চকলেট বারের স্বাদ পায় তাহলে আমি শিওর কোল্ড বিচ না থেকে হট হর্নি বিচ হয়ে যাবে। আতকে উঠে সাবরিনা। হেসে উঠে মাহফুজ। সিনথিয়া ফোনের ঐপাশ থেকে বলে সত্যি কিন্তু। সাদমান ভাই যে রকম ভ্যানিলা আর আমার বোন যেরকম ডাবল ভ্যানিলা ফলে ওদের রাতে মনে হয় রুটিন করে সেক্স করে। সোম মংগল বুধ সেক্স বাকি দিন সেক্স নাই। এই বলে নিজেই বলে উঠে নাহ দুই ভ্যানিলা সাপ্তাহে তিন দিন সেক্স করবে না। দুই সাপ্তাহে তিন দিন হতে পারে বড়জোর। এই বলে হাসতে থাকে। ওকে নিয়ে ফোনে মাহফুজ আর সিনথিয়া সেক্সুয়াল ইংগিত পূর্ণ কথা বলছে এতে সাবরিনা যেমন চমকে গেছে তেমন সিনথিয়ার উপর রাগ হচ্ছে কারণ বুঝতে পারছে মাহফুজ আস্তে আস্তে জিতে যাচ্ছে বাজিতে, যে বাজি সাবরিনা ভেবেছিল শতভাগ ওর পক্ষে। তবে সবচেয়ে যেটা বেশি ওকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে সেটা হল সাবরিনার নিজের বডির রেসপন্স। মাহফুজ আর সিনথিয়ার ওকে নিয়ে কথোপকথন ওর শ্বাসের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। হৃদপিন্ডের প্রতিটা শব্দ যেন কানে বাজছে। এরপর হাত পা গরম হয়ে যাচ্ছে। পেটের কাছে শিরশিরানি। পরিচিত অনুভূতি। উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছে কেন ও? সিনথিয়া আর মাহফুজের মত কি পাভার্ট হয়ে যাচ্ছে? যে অন্য কেউ ওকে নিয়ে সেক্সুয়াল কথা বললে উত্তেজিত হয় যাবে। নিজে কে নিজে বুঝ দেয় এইটা আসলে সে জন্য না। গতকাল রাতে সাবিতের ঔষুধের কাজ হয়ত এইটা। এখনো ফুললি যায় নি শরীর থেকে ঔষুধ। হয়ত তাই উত্তেজিত হচ্ছে এইসব কথায় নাহলে ওর এইসব ফালতু কথায় কখনো কোন রেসপন্স হবার কথা না।



মাহফুজ সাবরিনার চোখের দিকে তাকিয়ে সিনথিয়ার সাথে ফোনে কথা বলছে। তাই সিনথিয়ার প্রতিটা কথায় সাবরিনার মুখের অভিব্যক্তির কি পরিবর্তন হয় সেটা স্পষ্ট চোখে পড়ছে। প্রথমে রাগ, এরপর অস্বস্তি এবং এরপর চোখেমুখে লালচে আভা এড়াল না চোখ। মাহফুজের মনে হয় সিনথিয়ার পাগলামির কিছুটা হয়ত সাবরিনার ভিতরে কোথাও লুকিয়ে আছে। বোন তো দুইজন। কিছুটা হলেও তো মিল থাকবে। যা প্রমাণ করতে চাইছিল তা অলরেডি প্রমাণ হয়ে গেছে। চাইলে কথা এখনি থামানো যায়। কারণ বাজিতে অলরেডি সাবরিনা হেরেছে। তবু মাহফুজ থামে না। বরং উস্কে দেয় সিনথিয়া কে কারণ ওর মনে হয় সিনথিয়ার কথা মত একটা উচিত সাজা দেবার সময় হয়েছে সাবরিনা কে। মাহফুজ তাই জিজ্ঞেস করে সিনথিয়া কে মনে আছে তোমার আপুর ছবি ফেসবুকে দেখার পর তুমি কি বলছিলা? সিনথিয়া হাসে বলে, হাউ কুড আই ফরগেট? তুমি আপুর ছবি দেখে যেভাবে তাকিয়ে ছিলে সেইটা দেখে আমি ছবিটা আর ভাল করে দেখছিলাম। আপু একটা টপস পড়া ছিল সাথে জিন্স। একটু বাকা হয়ে দাঁড়ানো, ছবিটা সাদমান ভাইয়ের তোলা সাইড থেকে। আপুর বুবস গুলো একদম তাকিয়ে ছিল বড় বড় হয়ে। তুমি একটা লুইচ্চা আপুর দুধ দেখে ছবি থেকে চোখ সরাতে পারছিলে না। মাহফুজ বলে তা না, সাবরিনা তো সুন্দর। সিনথিয়া বলে আমি সুন্দর না? মাহফুজ বলে তুমি বিশ্বসুন্দরী। সিনথিয়া বলে জানি জানি আর তেল দিতে হবে না। আর আপুর জিনিস যদি তার ভ্যানিলা হাজব্যান্ড না দেখে তাইলে আমার চকলেট প্রেমিক তো দেখবেই। তাই না? সিনথিয়া বলে ঠিক করে বল তো আপুর বুবস চোখে পড়ে নাই ঐ ছবিতে। মাহফুজ অন্য সময় হলে অস্বীকার করত তবে আজকের খেলায় স্বীকার করাটাই লাভজনক। বলে হ্যা। সিনথিয়া আই নিউ ইট। আপুর দুধ গুলো আমার থেকে বড় ঠিক না। দেখলে ছেলেরা তাকাবে এটাই স্বাভাবিক। অবশ্য আপু শুনলে কেপে উঠবে লজ্জায়। মাহফুজ তাকায় সাবরিনার দিকে। সাবরিনা লজ্জায় যেন চোখ মেলাতে পারছে না ওর সাথে। শাড়ির আচল ভাল করে টেনে নিজেকে লুকাতে চাচ্ছে। সিনথিয়া বলে আপুর হিপটা খেয়াল করছিলা তুমি? মাহফুজ বলে না। সিনথিয়া বলে, লায়ার। আপুর কোমরের ভাজটা যেভাবে হিপের উপর ঢেউ খেলিয়েছিল সেইটা না দেখার উপায় নেই। আমি মেয়ে হয়ে দেখেছি তুমি নিশ্চিত দেখেছ সেইটা। আপুর হিপস টা কিউট। মাঝারি হিপস। তোমার ভাষায় পাছা। হাহাহা। মাহফুজ হেসে উঠে। সাবরিনা আর কুকড়ে উঠে। কিন্তু ওর বুকে ঢেউ খেলছে।

মাহফুজ এইবার আবার জিজ্ঞেস করে সাবরিনা কে কিভাবে শাস্তি দিতে চাও? কিভাবে শাস্তি দিলে তোমার আপু বুঝবে তুমি কেন আমার দিওয়ানা? সিনথিয়া কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থাকে। তারপর একটা খিল খিল করে হেসে দেয়। তারপর বলে আই হ্যাভ এন আইডিয়া। আপুর প্রিয় কোন জন্যরার বই, জান? ইংলিশ রোমান্টিক নভেল। যেখানে নায়ক একটু মুডি, ম্যাচো, টল ডার্ক হ্যান্ডসাম। আর নায়িকা একদম ভদ্র নম্র। নভেল গুলো তে নায়ক যখন নায়িকা কে সিডাকশন করে তখন হালকা সেক্স সিন থাকে। নায়ক অনেক ডমিনেটিং হয়। আপুর ফিফটি শেডস অফ গ্রে বইটা কতবার পড়েছে আর মুভিটা কতবার লুকিয়ে দেখেছে হিসাব নাই। আপু ভাবে আমি কিছু খেয়াল করি না। সারাদিন ফোনে ব্যস্ত বা কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছি। কিন্তু চোখে যে সব দেখছি আপু এইটা ভুলে যায়। হাহাহা। সাবরিনা বুঝে সিনথিয়া কে যতটা অগোছালো মনে হয় তার থেকে অনেক বেশি সতর্ক সিনথিয়া। সিনথিয়া বলে আপু কে ফিফটি শেডসের আনাস্টাসিয়ার মত করে শাস্তি দিতে হবে। তুমি হবে ক্রিস্টিয়ান আর আপু হবে আনা। তুমি ক্রিস্টিয়ানের মত টল ডার্ক হ্যান্ডসাম। আর আপু আনার মত গুডি টু সুজ। আমি শিওর এইগুলা নিয়ে আপু ফ্যান্টাসাইজ করে। সাবরিনার মনে হয় সিনথিয়া বুঝি ওর মনের ভিতরটা পুরো পড়ছে। লজ্জায় মিইয়ে যায় সাবরিনা। মাহফুজ উস্কে দিয়ে বলে কেমন শাস্তি দিত ক্রিস্টিয়ান? সিনথিয়া বলে শয়তান। তুমি দেখছ না মুভিটা? মাহফুজ বলে তুমি বল, শুনতে মজা লাগে। সিনথিয়া বলে ভিতরের অজগর সাপটা কি ঘুম থেকে জাগছে নাকি? মাহফুজ বলে হালকা হালকা। এখনো বিছানা থেকে উঠে নায়। সিনথিয়া বলে কতদিন অজগর সাপটাকে আদর করি না আর অজগরটা আমাকে আদর করে না। দেশে আসা মাত্র আমি এইবার প্রথমে তোমার অজগরটাকে আদর করব, বুঝছ? সাবরিনার হৃদপিন্ডের গতি বেড়ে যায়। অজগর বলতে কি বুঝাচ্ছে বুঝতে বাকি থাকে না ওর। মনে মনে ভাবে অনেকদিন ওরও অজগরের আদর পাওয়া হয় নি। ভাবা মাত্র নিজেকে নিজে ধিক্কার দেয়। মাহফুজ সাবরিনার দিকে দেখে। চোখে চোখ না রাখলেও সাবরিনার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। শাড়ির আচল কাধের উপর দিয়ে টেনে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। মাহফুজ বুঝে গেছে সাবরিনার দূর্গে একের পর এক কামান দাগাচ্ছে সিনথিয়া। এভাবে সিনথিয়া কামান চালাতে পারলে একটু পর দূর্গ জয় করতে অসুবিধা হবে না ওর।

সিনিথিয়া কে সেই জন্য উস্কে দেয়। বলে তা ক্রিস্টীয়ান কিভাবে আনা কে আদর করবে সোনা। সিনথিয়া বলে ডমেনেটিং উপায়ে। আপু যে কোল্ড বিচ আর সাদমান ভাই যে পরিমান শান্ত শিষ্ট তাতে মনে হয় আপু সব সময় ডমিনেট করে ওদের বেডরুমে। কিন্তু ওর দরকার উলটো টা। ওকে দেখানো দরকার মাঝে মাঝে ডমেনেটেড হতে কতটা মজা লাগে। অন্যের কাছে নিজেকে সমর্পন করার যে আনন্দ সেটা ওকে বুঝানো দরকার। সাবরিনার গায়ে শির শিরে অনুভূতি হচ্ছে। সিনথিয়া বলে আপু কে দেখানো দরকার আসল পুরুষ কি। কেন আমি তোমার জন্য পাগল। ক্রিস্টিয়ান যেমন আনা কে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করত সেইভাবে করবা তুমি। আপু কে এমন উত্তেজনার তুংগে নিয়ে যাবা যেন আপু সাবমিট করে তোমার কাছে। বলে মাহফুজ আমাকে নাও। আমাকে গ্রহণ কর। সিনথিয়ার গলায় উত্তেজনা ফোনের ভিতর টের পাওয়া যায়। সাবরিনা কুকুরে যাচ্ছে সিনথিয়ার প্রতিটা কথায়। একদিকে সিনথিয়ার প্রতিটা কথা ওর বাজির কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে ঢুকছে আবার ওর মনে হচ্ছে সিনথিয়া বুঝি ওর গোপন স্বপ্ন গুলো ফোনের ভিতর জোরে জোরে বলছে। আনা কে যেভাবে স্প্যাংক করছে ক্রিস্টিয়ান মনে আছে? সেইভাবে আপু কে তুমি স্প্যাংক করবা। আপুর প্রতিটা অপমান উপেক্ষার জবাব দিবা। আপুর সুন্দর পাছাটা চিন্তা কর। একটা লাল প্যান্টিতে। ফর্সা পাছা। মাহফুজ বলে ফর্সা পাছা বুঝলা কিভাবে। সিনথিয়া বলে আমরা দুই বোন আর আপু আমার সামনে অনেকদিন কাপড় বদলেছে ফলে আমার থেকে ভাল কে জানবে বল। আপুর সুন্দর গোল কিউট পাছা দুইটার উপর তোমার হাত যখন ঠাস ঠাস করে পরবে তখন আপুর ফর্সা পাছাটা লাল হয়ে উঠবে। আপু তার স্বভাব সুলভ দেমাগ ভুলে নরম হতে থাকবে। আপুর ভিতরের কোল্ড বিচ তখন হট হর্নি বিচ হয়ে উঠবে ধীরে ধীরে। আপুর ব্রা খুলে যখন বুবস গুলো বের করবে তখন আপুর মুখের অবস্থা কি হবে ভেবে আমার দুই পায়ের মাঝে উত্তেজনায় ভিজে যাচ্ছে মাহফুজ, I am wet thinking the scene. সাবরিনার মনে হয়ে ওর পায়ের মাঝেও বুঝি ভিজে যাচ্ছে। এটা কী গতকালের ঔষুধের প্রতিক্রিয়া না সিনথিয়ার কথার কারণে হচ্ছে?

সিনথিয়া বলে আপুর বোটা গুলো ধরে যখন মুচড়ে দিবে তখন দারুণ হবে। আপু কুকড়ে উঠবে ব্যাথায় আবার উত্তেজনায় শিউরে উঠবে। আপুর বোটা গুলো যখন মুখে পুরবে আর এরিওলা চেটে দিবে আপুর মুখ দিয়ে খালি শীৎকার বের হবে। তখন তুমি আপুর বোটার উপর স্কেল দিয়ে বাড়ি দিবে। যেমন আমাকে মাঝে মাঝে দেও। তারপর আপুর একটা বোটায় বারান্দা থেকে এনে কাপড় আটকানোর ক্লিপ আটকে দিবে। নিপল ক্ল্যাম্প। খাটি দেশি নিপল ক্ল্যাম্প দিয়ে আপুকে তখন উত্তেজনা দিতে হবে। ক্লিপ একবার খুলবে আরেকবার বন্ধ করবে। আপু উত্তেজনায় চেচাবে। ভিজে যাবে দুই পায়ের মাঝে পুসি। তখন দুই পা ফাক করে আপুর পুসির দরজা আংগুল দিয়ে নাড়াচাড়া করলে দেখবে কেমন ফুলের পাপড়ির মত খুলে যাবে পুসির দরজা। দেখতে দারুণ হবে। আপু চাইবে নিজেকে সামলাতে কিন্তু পারবে না। তোমার প্রতিটা কাজ আপু কে আর উত্তেজিত করে দিবে। আপু আর সাদমান ভাইয়ের সেক্স নিশ্চয় একটু চুমাচাটি আর তারপর পেনিট্রেশন। তুমি আপু কে দেখিয়ে দিবে হোয়াট ইজ রিয়েল ম্যান এন্ড হোয়াট ইজ রিয়েল প্লেজার। তোমার আংগুল আপুর পুসির ভিতরে ঢুকবে না খালি উপর দিয়ে পুসির যে রাস্তা টা আছে সেই বরাবরা আংগুল খালি উপর নিচ করবে আপু তাতেই কোমড় নাচাবে। সিনথিয়ার ভয়েজে উত্তেজনা। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে তুমি কই? সিনথিয়া বলে আমি লাইব্রেরির কাছে চলে আসছি। তবে তোমার সাথে কথা বলার জন্য বাইরের একটা বেঞ্চিতে বসে আছি। মাহফুজ বলে তোমার আপু কে আমি কি করব সেইটা ভেবে খুব হট লাগছে সোনা? সিনথিয়া বলে ইয়েস। মাহফুজ বলে তোমার বোন কে আমি আদর করলে তোমার হিংসা লাগবে না? সিনথিয়া বলে না। আপু কে বরং দেখিয়ে দিতে পারব তাইলে আমি যে অন্তত এই একবার আমি জিতে গেছি। আমার চয়েজ করা পুরুষ শ্রেষ্ঠ। এটা বুঝানোর জন্য আপু কে তোমার হাতের আদর খাওয়াতে হবে এর থেকে আর সহজ উপায় কি বল? তারপর সিনথিয়া নিজেই বলে আমি বাসায় একটা ভাইব্রেটর ফেলে আসছিলাম কোথায় এইটা? মাহফুজ বলে আছে বাসাতেই রেখে দিয়েছি। আপুর দুই হাত পা বেধে ভাইব্রেটরটা আপুর পুসিতে সেট করে রেখে দিলে আপু কি করত ভাবতেই না গা গরম হয়ে যাচ্ছে। আপুর সব অহংকার শ্রেষ্ঠত্ব ধুলোয় মিশে যেত আপুর যৌন চিতকারে। মাহফুজ নিজেও চমকে উঠে। ওর মাঝে মাঝে মনে হয় সিনথিয়ার ভিতরের একটা ডার্ক দিক আছে যেটা কখনো ও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারে নি। সাবরিনা এদিকে মাহফুজ আর সিনথিয়ার কথায় হাপাতে থাকে। ওর মনে হয় কিছু না করেই বুঝি মাহফুজ আর সিনথিয়া ওকে উলংগ করে ফেলেছে কথা দিয়ে। ওর শরীরের রক্ত চলাচল, শ্বাস প্রস্বাস সব যেন ওদের কথা অনুযায়ী চলছে। চেষ্টা করেও যেন উত্তেজনা কে কন্ট্রোল করতে পারছে না। এর মধ্যে সিনথিয়া বলে আজকে উঠি সোনা। এইভাবে কথা বলতে থাকলে আমার প্যান্টি ভিজে যাবে একবারে। তখন আর লাইব্রেরিতে না গিয়ে বাসায় ফিরে যেতে হবে। এমনিতেও সেমিস্টারে লাস্ট অংশ। পরীক্ষা এসাইনমেন্ট সব জমা দিতে হবে আগামী কয়েক দিনে। মাহফুজ বলে যাও। একবার দেশে আস সুদে আসলে সব আদর বুঝিয়ে দিব। বাই বলে ফোন কেটে দেয় সিনথিয়া।

সিনথিয়া ফোন কাটতেই সাবরিনা হাফ ছেড়ে বাচে। ওর মনে হয় এই বুঝি বেচে গেল এই টর্চার থেকে। তবে ওর তখনো অনেক কিছু অনুমান করা বাকি। মাহফুজ সাবরিনার দিকে তাকিয়ে থাকে। সাবরিনার লাল হয়ে যাওয়া গাল, নাক। বড় বড় হয়ে যাওয়া চোখ। জোরে জোরে শ্বাস ফেলা। ওর চোখের সাথে চোখ মিলাতে লজ্জা পাওয়া সব কিছু একটাই ইংগিত দেয়। সাবরিনা ইজ অলসো এক্সাইটেড টু হিয়ার দ্যা কনভারশেসন উইথ সিনথিয়া। মাহফুজের মনে হয় এইটা একটা ব্রেক থ্রু পয়েন্ট। সাবরিনা আর ওর সম্পর্ক সামনে কেমন হবে ঠিক হবে আজকে ও কিভাবে পুরো ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করে। সিনথিয়ার সাথে ওর বিয়ের ব্যাপারে সাবরিনার হেল্প চাই তবে সেই সাথে যদি সাবরিনাকেও যৌতুক হিসেবে পাওয়া যায় তাতে মন্দ কি। মাহফুজ ভাবে ওর মনের ভিতরেও ডার্ক অংশ কম না সিনথিয়ার তুলনায়। মাহফুজ বলে তাহলে শুনলে তো সিনথিয়ার কথা। এখন হেল্প করবে আমাকে আর সিনথিয়া কে? সাবরিনা জানে বাজিতে সে হেরে গেছে। এইভাবে হারবে সে বুঝতে পারে নি। কিন্তু আবার হেল্প করবে এইটাও স্বীকার করতে মন চাচ্ছে না। তাই একটা কোন মতে হু করে শব্দ করে। মাহফুজ বুঝে সাবরিনা স্বভাব সুলভ ভাবে হার স্বীকার করতে চাচ্ছে না। মাহফুজ তাই আরেকটু কাছে সরে বসে। সাবরিনা নড়ে উঠে। বলে আমাকে যেতে হবে বাসায়। অনেক কাজ বাকি। মাহফুজ বলে এত তাড়া কিসের বস। আমি তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসব। আর সাদমান তো আজকে কালকে আসবে না। আজকে না হয় থাক এখানে। গল্প করে রাতটা কাটাই সময়। সাবরিনা ঝাঝের সাথে বলে তোমার সাথে গল্প করার ইচ্ছা নেই আমার। মাহফুজ বুঝে এইটাই আসল সময়। সামনের খেলার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে সেটা স্থির করার। তাই উত্তর দেয় গল্প করতে না চাইলে আমরা অনেক কিছু করতে পারি। মনে নাই সিনথিয়া কি কি বলেছে। উই ক্যান প্রাক্টিস দ্যাট। তোমার সাথে তো আসলে আমার এমন কিছু করা হয় নি এতদিন। ইউ আর লাইক এ এঞ্জেল রাইট। কিন্তু দেখ সিনথিয়া তোমাকে কেমন ডার্টি হোরের মত করে ইউজ করতে বলেছে। মাহফুজ ইচ্ছা করেই শব্দ গুলো ইউজ করে। সাবরিনা তোতলাতে তোতলাতে বলে কি বলছ এইসব? মাহফুজ আবার সরে আসে সাবরিনার কাছে। সাবরিনার মনে হয় এত হ্যান্ডসাম কেন ছেলেটা। এইটা কি ঔষুধের প্রতিক্রিয়া নাকি আসলেই ওর মনে হচ্ছে। বুকটা কাপছে কেন ওর। মাহফুজ বলে দেখ নি সিনথিয়া তোমাকে কেমন করে ট্রিট করতে বলেছে। এনার মত। আমি সিনেমাটার সব গুলো পর্ব দেখেছি সাবরিনা। তোমার প্রিয় বই। নিশ্চয় বই আর সিনেমা দুইটাই শেষ করেছ। তাইলে তো তোমার ভাল জানার কথা ক্রিস্টিয়ান কিভাবে এনা কে ভালবেসে নিজের হোরের মত ইউজ করে। পার্সনাল হোর। কথাটা জোর দিয়ে বলে। এইভাবে কেউ কোন্ দিন ওকে হোর বলে নি মুখের উপর। অফিস পলিটিক্সে বা ভার্সিটিতে ওর উপর ক্ষেপা লোকজন আড়ালে আবডালে বাজে অনেক কথাই বলে সেইটা অনুমান করে কিন্তু কেউ ওর মুখের উপর এইভাবে ওকে হোর বলতে পারে সেইটা কল্পনাতেও ছিল না ওর। মাহফুজ বলে ভালবাসা যখন তুংগে থাকে এইসব ডাক আদরের ডাক হয়ে যায় সাবরিনা। সাদমান তোমাকে কখনো এইসব ডাকে? বিস্ময়ে বড় বড় চোখ করে না সূচক মাথা নাড়ায় সাবরিনা। মাহফুজ বলে সেক্সের একটা জিনিস কি জান? নিজেকে ছেড়ে দিতে হয়। স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে ছেড়ে দিতে হয়। শরীর যেদিকে নেয় মন কে সেদিকে নিয়ে যেতে হয়। তোমার সাথে আমার যতবার মিলন হয়েছে সেখানে আমি এতদিন একটা আড়াল রেখেছি। তোমাকে অভ্যস্ত করেছি। কিন্তু তোমাকে একবার হলেও আমি বাধাহীন আনন্দের সাগরে নিয়ে যেতে চাই। যেখানে আমি নিয়মিত সিনথিয়া কে নিয়ে যাই। একবার হলেও দেখাতে চাই হোয়াট ইউ আর মিসিং। তুমি যদি সত্যিকার অর্থে ফিফটি শেডস অফ গ্রে এর ভক্ত হও তাহলে একবার হলেও জীবনে তোমার এই আনন্দের স্বাদ নেওয়া উচিত।

মাহফুজের প্রতিটা কথা সত্য এইটা সাবরিনা জানে। মাহফুজ কে প্রথম দেখার পর তো রাতের বেলা মাহফুজ কে ক্রিস্টিয়ান আর নিজেকে আনা রুপের ভেবেছিল ও। এখন যেন হঠাত করে সেই ভাবনাটাই বাস্তব হয়ে উঠছে। কিন্তু এইভাবে মাহফুজের কাছে সিনথিয়ার কথার পর নিজেকে সমর্পন করার মানে ফুল সারেন্ডার। একদিকে সারা জীবন মনের ভিতর থাকা অবদমিত বাসনা আবার অন্য দিকে সাবরিনার পাহাড় ছোয়া ইগো। দুইটার দ্বন্দ্বে অন্য সময় হলে হয়ত ইগো জিতে যেত। তবে সাবিতের দেওয়া ড্রাগ এখনো সাবরিনার শরীরে দৌড়ে বেড়াচ্ছে। ফলে সাবরিনার সিদ্ধান্ত যেন একটু একটু করে হেলে যেতে থাকে মাহফুজের কথায়। মাহফুজ টের পায় ব্যাপারটা তাই এইবার একদম কাছে ঘেষে বসে সাবরিনার। মাহফুজ কাছে এসে বসতেই মাহফুজের শরীরের পুরুষালী চেনা গন্ধটা সাবরিনার নাকে লাগে। ওর মনে হয় গেলে যাচ্ছে যেন ওর শরীর মাহফুজের ঘ্রাণে। কিন্তু শেষ চেষ্টা করে সাবরিনা। মনের সব ইচ্ছাশক্তি এক করে দাঁড়ায়, বলে আমি যাচ্ছি। মাহফুজ এইবার হাতটা ধরে পিছন থেকে, বলে এখনি না। আমাদের অনেক দেনা পাওনা বাকি দুইজনের মাঝে। এই বলে নিজেই দাঁড়ায় আর সাবরিনার কাধ আর গলা যেখানে মিশে গেছে সেখানে একটা চুমু খায়। মাহফুজের ঠোটের উষ্ম চুমু শরীরে পড়তেই গলতে থাকে বরফ। এটা কি সাবিতের ড্রাগ নাকি সাবরিনা নিজেই? কে জানে। তবে সাবরিনা বুঝে গেছে হেরে যাচ্ছে একটু একটু করে। মাহফুজ সাবরিনার ঘাড়ে গলায় পিছন থেকে একটা একটা করে চুমু দিতে থাকে। আর ফিস ফিস করে বলতে থাকে ওয়েট সাবরিনা। এত তাড়া কিসের। কতদিনের আমাদের এইভাবে দেখা হয় না। সাবরিনার গায়ের রোম গুলো দাড়িয়ে যায়। চিতকার করে সাবরিনা বলতে চায় আমাকে নাও মাহফুজ। আমাকে আজকে আনা বানাও আর নিজে ক্রিস্টিইয়ান হও। তবে মনের জোরে সেই চিতকারটা চাপা রাখে ও। সাবরিনা চাপা রাখলেও মাহফুজ যেন টের পেয়ে যায়। তাই পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে সাবরিনা কে। বুকের নিচে নাভির উপরে দুই হাতের বন্ধনীতে আটকে ফেলে। মাহফুজের বুকে সাবরিনার পুরো পিঠ সেটে যায়। মাহফুজ সাবরিনার পাছাটা ওর বাড়ার উপর টের পায়। এত নরম। পেটের উপর হাত বুলায় শাড়ির ফাক দিয়ে। সাবরিনার পা দূর্বল হতে থাকে। একসাথে মাহফুজ ঘাড়ে গলায় চুমু খেয়ে যাচ্ছে। আর ফিস ফিস করে সব উত্তেজনাকর কথা বলে যাচ্ছে। মাহফুজ নাভিতে আংগুল বুলাতে বুলাতে বলে জান প্রথম তুমি যেদিন শাড়ি পরে আমার সামনে এসেছিলে সেইদিন এই নাভিটা আমার বুকের দম আটকে দিয়েছিল। এত বড়, এত সুন্দর। দেখলে খালি দেখতে ইচ্ছা করে। সাহস হয় নি সেদিন। নাইলে শাড়ির আচল সরিয়ে হাটু গেড়ে তোমার সামনে বসে চুমু দিতাম এই গহব্বরে। ছোট একটা ছিদ্র কিন্তু দেখ কিভাবে মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারে আমার। এই বলে ডান আংগুলের তর্জনী নাভিতে ঘুরাতে থাকে। মাহফুজ টের পায় সাবরিনার শরীরে ওর আসল গন্ধটা ফিরে এসেছে। গতকাল অনুষ্ঠানের সময় থেকে কাপড় বদলাতে পারে নি। তাই পারফিউমের অস্তিত্ব আর নেই। তার বদলে সাবরিনার নিজস্ব আসল গন্ধ। বেশি মাদকতাময়। মাহফুজ সাবরিনার ঘাড়ে একটা আলতো কামড় দিয়ে বলে তোমার বডির আসল গন্ধটা যে কোন পারফিউমের থেকে মাদকতাময়। তোমাদের দুই বোনের গন্ধ আলাদা তবে দুইজনের গন্ধ আমার জন্য দুইটা সেক্স ড্রাগ। এই বলে আবার আলতো কামড় দেয়। সাবরিনা শরীরের ভার ধরে রাখতে পারে না পা, পড়ে যেতে থাকে। মাহফুজ ওকে ধরে ফেলে। শুইয়ে দেয় বিছানায়।

Next page: Update 69
Previous page: Update 67