Chapter 11

সিধু সাইকেল চালাচ্ছে আমি পিছনে বসে।খোকনদা এখন আর মাংসের দোকানে বসে না।কর্মচারী দিয়ে দোকান চালায়।এখন একেবারে বদলে গেছে।সিধু বকে যাচ্ছে আমি কোনো কথা বলছি না।মায়ের সঙ্গে দেখা হলেও এভাবে দেখব ভাবিনি।প্রতিটা দিন যেন এক-একটা বইয়ের পাতা।একটা পৃষ্ঠা পড়ি আর জীবন সম্পর্কে কতকিছু জানতে পারি।বরেনদা একটা কবিতা শুনিয়েছিলেন নদী পাহাড় সাগর সমগ্র প্রকৃতি আমাদের শিক্ষা দেয়।কেউ গ্রহণ করতে পারে কেউ পারে না।খোকনদা মাকে ধরিত্রীর সঙ্গে তুলনা করেছে।সত্যি শেখার শেষ নেই।

সিধুর দোকানের কাছে আসতে আমি নেমে পড়ি।বললাম,এটুকু আমি হেটে চলে যাব।তোকে আর যেতে হবে না।

কাল সকাল নটার মধ্যে চলে যাস।

বাসায় ফিরে আবার রান্না করা তার চেয়ে বরং বাজার থেকে রুটি তরকারি কিনে নিয়ে যাই।গোটা চারেক রুটি আর আলুর দম কিনে বাসায় ফিরে আসলাম।দরজা খুলে ঘরে ঢূকে পোশাক বদলে খাটে শুয়ে পড়লাম।হাসপাতালের দৃশ্যটা ভেসে উঠল।স্বাভাবিকভাবে খেতে পারছে না তাই স্যালাইন দিতে হয়েছে।ভূপেন শেঠের বাড়ী রান্না করতে করতে মা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।তখন চিৎকার চেচামেচি হতে লোক জড়ো হয়।খোকনদা খবর পেয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।চিকিৎসায় মায়ের জ্ঞান ফিরলেও পুরোপুরি সুস্থ হন নি।

এই বয়সে পরিশ্রমের ধকল নিতে পারেনি।নিজেকে অপরাধী মনে হতে লাগল।আমার জন্যই তো মায়ের এত খাটাখাটনী।

সমস্ত রকম শিক্ষার আলাদা মূল্য আছে।পরীক্ষা দিলে আমি হয়তো গ্রাজুয়েট হয়ে যাব।কিন্তু একজন ছুতোর মিস্ত্রী কাঠ খোদাই করে যেমন নক্সা প্রস্তুত করে আমি কি তা পারব? অথচ এদেশে একজন ভাল মাইনের কেরাণি একজন ছুতোর মিস্ত্রীকে নীচু নজরে দেখে।বাইরে কে যেন ডাকছে মনে হল।বেরিয়ে দেখলাম গিরিদি দাঁড়িয়ে আছে।বললাম এসো গিরিদি।

বারান্দায় বসতে বসতে গিরিদি বলল,মনু আমি তোমার রান্না করে দিয়ে যাব?

আমি রুটি কিনে এনেছি।আজ থাক।

হাসপাতালে গেছিলাম তোমারে দেখলাম নাতো?

আমি একটু দেরী করে গেছিলাম।

মনু কোনো দরকার হলি বলবা লজ্জা করবা না।

গিরিদি তুমি কেমন আছো?

কেমনে ভাল থাকি বলো।সারাক্ষন ভগবানরে ডাকতিছি ভগবান তাড়াতাড়ি বৌদিরে বাড়ীতে ফিরোয় এনি দাও।আজ নিয়ে দুইদিন হয়ে গেল এখনো সালান দেচ্ছে।তুমার মামা আসতিছে আমি আসি।কোনো দরকার হলি বলবা।

সুবীরমামা সাইকেল নিয়ে হাজির হল।গিরিদি ঠিক নজর করেছে।মামা বসতে বসতে বলল,ওই মেয়েছেলেটা কি বলছিল?

মায়ের কাছে আসতো।জিজ্ঞেস করল রাতে রান্না করে দিয়ে যাবে কিনা?

খবরদার এদের একদম প্রশ্রয় দিবি না।জল খাওয়া তো।

জল এনে দিতে গেলাসে চুমুক দেবার আগে জিজ্ঞেস করল,কখন এসেছিস?

লালগোলা ধরে সন্ধ্যে নাগাদ।

ঢক ঢক করে জল খেয়ে বলল,হাসপাতালে গেছিলি?

হ্যা এইমাত্র ফিরলাম।

কাতান খোকন কিছু বলছিল?

বলল কাল সকাল নটার মধ্যে হাসপাতালে পৌছাতে এমআরআই করাতে হবে।

মামা ফোলিও ব্যাগ খুলতে খুলতে বলল,এই বয়সে এত ধকল পোষায়।ব্যাগ থেকে একগোছা টাকা বের করে এগিয়ে দিয়ে বলল,দেখতো কত আছে?

টাকা গুনতে গুনতে কাকুর কথা মনে পড়ল।মামা সম্পর্কে কাকুর ধারণা ঠিক নয়।গুনে বললাম, সাড়ে-চার হাজার।

তোর কাছে রেখে দে কাল লাগবে।

খোকনদা বলছিল চার হাজারের কথা।

ওকী ডাক্তার নাকি?কিযে লেখাপড়া করিস।রেখে দে কোথায় কি লাগে।কাল নটার মধ্যে চলে যাবি আমার একটু দেরী হবে।

মামা চা খাবে?

চা করেছিস?

খেলে করতাম।

দরকার নেই।তোর পরীক্ষা তো এসে গেল।

পরীক্ষা এসে গেলেও কিছু করার নেই। মামা চলে গেল।রাত হয়েছে সকাল সকাল খেয়ে শুয়ে পড়া যাক।কাল সকালে অনেক কাজ।কলকাতায় এখন যাওয়ার প্রশ্নই নেই।মাকে ভালোয় ভালোয় সুস্থ করে বাড়ীতে এনে ওসব ভাবা যাবে। রুটিগুলো চামড়ার মত শক্ত হয়ে গেছে।ঝোলে ভিজিয়ে নরম করে চিবোতে থাকে।এম আর আই কথাটা শুনেছে কিন্তু সেটা কি ঠিক জানা নেই।এই পরীক্ষা করে কি জন্য তাও জানে না।এক্স-রে যেমন বাইরে থেকে ভিতরে ছবি তুলে ভেতরের অবস্থা বোঝে ওই রকম এম আর আই করে সেরকম কিছু জানা যায় হয়তো।

রাতে শুয়ে সকালের অপেক্ষায়,ঘুম আসে না চোখে।হাসপাতাল হতে সুস্থ হয়ে ফিরলে বিশ্রাম দরকার।লোকের বাড়ী কাজ করতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।পড়াশোনা নিয়ে ভাবছে না।কত মানুষ কত রকম স্বপ্ন দেখে সব স্বপ্ন কি বাস্তবায়িত হয়?মামাকে বলে কোনো একটা কাজ জুটিয়ে নেবে।শুভ নন্দিতারা ভাববে কলেজে আসছে না গেল কোথায়?একদিন ওরা বুঝতে পারবে সুখদারঞ্জন আর ক্লাসে আসবে না। সিদ্ধেশ্বর পাস করে দোকানে বসে আর পড়ল না।তারও আর পড়া হল না।বছর দুয়েকের মত কলেজে ক্লাস করলেও দুজনেই উচ্চ মাধ্যমিক পাস। এই রকম ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে এক সময়।

ভালভাবে আলো ফোটার আগেই ঘুম ভেঙ্গে গেল।তাড়াতাড়ি স্নান সেরে নিল।কত দেরী হবে কে জানে।স্নান করে তৈরী হয়ে হাসপাতলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল।অফিসে গিয়ে দেখা করে নিজের পরিচয় দিতে ওরা কাগজ পত্র দিয়ে Diagnostic Centre-এ যেতে বলল।কাছেই সেণ্টার।গিয়ে কাগজ দেখাতে চার হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দিল।টাকা জমা দিয়ে অপেক্ষা করছি একটু পরেই স্ট্রেচারে করে মাকে নিয়ে ভিতরে চলে গেল।

বাইরে একটা বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছি।মাকে কোথায় নিয়ে গেল।অস্থির অস্থির লাগছে।মিনিট পনেরো হয়ে গেল।এয়াপ্রোন পরা একজনকে দেখে উঠে গিয়ে জিজ্ঞেস করে জানা গেল।এম আর আই করার আগে একটা ওষুধ খাওয়ানো হয় তাতে ভিতরটা রঙীন হয়।মা ওষুধ খেতে পারছে না।সেজন্য ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়েছে।একটা ফিয়াট গাড়ী এসে দাড়াতে একজন মহিলা নামলেন।জানা গেল উনি ডাক্তার।কিছুক্ষন পর ক্যাশ কাউণ্টার হতে আমাকে ডেকে জানালো,ওষুধ ছাড়াই করা হচ্ছে।আমাকে এক হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হল।

কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।দরজা দিয়ে সুবিমামাকে ঢুকতে দেখে এগিয়ে গেলাম।

হয়ে গেছে?

না এখন হবে।মামাকে ব্যাপারটা বললাম।

তোকে অত ভাবতে হবে না।ডাক্তারবাবুরা যা করছে জেনে বুঝেই করছে।ওই তো দিদি।

দেখলাম স্ট্রেচারে শুইয়ে মাকে গাড়ীতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেল।নিঃসাড়ে শুয়ে আছে নড়াচড়া করছে না।কলকাতা থেকে এসে অবধি মার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।

মামা এসে বলল,তুই খেয়েছিস?

না গিয়ে খাবো।

এম আর আই হয়ে গেছে।বেডে দিয়েছে একবার গিয়ে দেখে যা বাড়ী যা।

আমি একটু ইতস্তত করি।মামা বলল,তুই থেকে কি করবি যা করার ডাক্তারবাবুরা করছে।

মাকে ছাড়বে কবে?

আমি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলবো তুই বাড়ী গিয়ে খাওয়া দাওয়া কর।কটা বাজে দেখেছিস?

গভীর রাত সারা গোপালনগর ঘুমে অচেতন।কয়েকটা ধেড়ে ইদুর গোফ নাড়তে নাড়তে বগানে ঘোরাঘুরি করছে।সাদা সাদা ছেড়া মেঘ আকাশে ভাসতে ভাসতে চলেছে নিরুদ্দেশে।মাঝে মাঝে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে চাঁদ। রাত চরা পাখিরা বেরিয়ে পড়েছে শিকারের সন্ধানে।গাছের পাতায় জমাট বেধে আছে গাঢ় অন্ধকার।সুখদার চোখে ঘুম নেই। এলোমেলো নানা চিন্তা ভীড় করে আসছে মনে।ডিসচার্জের ব্যাপারে মামা ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলবে বলেছিল তাকে কিছু জানায় নি।কলকাতা থেকে মনু ফিরে এসেছে মা কি জানে?সকালে উঠে লোকের বাড়ি রান্না করতে চলে যায়।ফিরে এসে নিজেদের রান্না,এই বয়সে এত ধকল সহ্য হয়।পাশ ফিরে শুয়ে ঘুমোবার চেষ্টা করে।বাবার সময় ডাক্তার মিত্র অনেক করেছিলেন।এখন বয়স হয়ে গেছে বাইরে কল এয়াটেণ্ড করেন না।ড মিত্রর মেয়েকে বাবা পড়াতো।এমনিতে বাবা প্রাইভেট ট্যুইশন করে না। প্রায় প্রতি সপ্তাহে গ্রামে এসেছে পাঞ্চালীর সঙ্গে দেখা হয় নি।কোথায় উধাও হল কে জানে। সিধুরা হয়তো জানতে পারে।তার উপর কেন রাগ কে জানে।

স্বপ্ন তো মানুষ সবাই দেখে।সব স্বপ্ন কি বাস্তবায়িত হয়।সত্যকে অস্বীকার করতে যাওয়া এক বিড়ম্বনা।কবি বলেছেন,ভাল মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে। বাবা একদিন সাজানো ঘর বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিল এপারে।তার জন্য কোনো হা-হুতাশ করতে দেখেনি। এলো মেলো ভাবতে ভাবতে সুখ একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল।মাকে আর কিছুতেই কাজ করতে দেবে না।অনেক হয়েছে পড়াশুনা। সুবিমামাকে বলে একটা কাজ জুটিয়ে নেবে তাতে দুটি প্রাণির চলে যাবে অনায়াসে।মামা তো বলেইছিল কাজের কথা।অনেক করছে সুবিমামা।মামীটা যেন কি রকম।ভেবেছিল হাসপাতালে দেখতে আসবে,আসেনি।ভাবতে ভাবতে শেষরাতের দিকে ঘুমিয়ে পড়ল সুখদা রঞ্জন।

ভোরের আলো ফুটতে শুরু হয় পাখির কলরব।বাইরে কাদের ডাকাডাকিতে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসল সুখ।দরজা খুলে বাইরে এসে দেখল বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে একটা ছেলে।ছেলেটি খোকনদার দলের মনে হল।

কমরেড খোকন দা আপনাকে ডাকছে।

ছেলেটির চোখ মুখ দেখে বুকের মধ্যে ছ্যৎ করে উঠল।সুখ বলল,মা নেই?

ছেলেটি কোনো উত্তর দিল না।সুখ ঘরে ঢুকে দ্রুত পোশাক বদলে বাইরে এসে দেখল সুবিমামাও এসেছে।তাকে দেখে মনুরে দিদি নেই বলে হাউ হাউ করে কাদতে শুরু করল।বাইক নিয়ে দাঁড়ানো ছেলেটি বিব্রত বোধ করে।সুখ বলল,আঃ মামা কি হচ্ছে?কাদলে কি যে গেছে ফিরে আসবে।

দাদা তো আগেই গেছে দিদিও চলে গেল রে-এ-এ--।

সুখ বাইকের পিছনে চাপতে ছেলেটি বাইকে স্টার্ট করল।সুখ জিজ্ঞেস করে,কখন মারা গেছে?

এই রাত তিনটের কাছাকাছি হবে।

সুখ মনে মনে হিসেব করল যখন সে ঘুমিয়ে পড়েছিল তখনই মা চলে গেছে।দুটো কথা বলার সুযোগ পেল না এই আফশোস চিরকাল থেকে যাবে।পৃথিবীটা বড় শূণ্য মনে হয়।কলকাতায় ছিল জানতো গোপাল্পুরে ফিরলেই মায়ের সঙ্গে দেখা হবে।এখন সারা দেশ তন্ন তন্ন করে খুজলেও কোথাও পাওয়া যাবে না মাকে।

হাসপাতালে পৌছে দেখল সিধু সহ কলেজের কয়েকজন বন্ধু এসেছে।এক্টু দূরে দাঁড়িয়ে খোকন মণ্ডল।একটা খাটিয়া ফুল দিয়ে সাজানো।সিধু এসে বলল,মাইরি মাসীমা এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে ভাবতে পারিনি।

সুখর কথা বলতে ভালো লাগছে না।শূণ্য খাটিয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,মা কোথায়?

বেডেই আছে,আটটার আগে বডি ছাড়বে না।

সুবীর রায় হাসপাতালে পৌছে ভাগ্নেকে দেখে অবাক হয়।কে বলবে ওর মা মারা গেছে।কাছে গিয়ে ভাগ্নের কাধে হাত রাখতে সুখ বলল,আচ্ছা মামা মায়ের ঠিক কি হয়েছিল?

বলব সব বলব।

কয়েকজন স্ট্রেচারে করে সুমনাদেবীর মৃতদেহ নামিয়ে নিয়ে এল।খোকন মণ্ডল এগিয়ে এসে বলল,সাবধানে সাবধানে।

মৃতদেহ খাটিয়ার উপর শুইয়ে দিতে একটা সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিল।কাধের দুপাশে ফুলের তোড়া দিয়ে সাজানো হল।সুগন্ধি ধুপ জ্বেলে দিল।ছিটিয়ে দিল অগরুর গন্ধ।নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে থাকে সুখ রঞ্জন।দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। সামনে শায়িত তার মায়ের মৃতদেহ।কোনোদিন চোখ মেলে তাকাবে না।এত লোকজন এক সময় সবাই চলে যাবে নিজ নিজ কাজে।সুখদা তখন একা একেবারে একা।তার আর কেউ থাকল না।

দলবল শ্মশানে গেলেও খোকনদা নিজে যায় নি।কলেজের কিছু বন্ধুও ছিল।দাহ কার্য সেরে ধুতি কাছা গলায় বাড়ী ফিরল। মামা পরে আসবে বলে পাইকপাড়া চলে গেল।মায়ের ঘরে ঢুকে দেওয়ালে হাত বোলাতে থাকে সুখ।সারা বাড়ীতে এখন সে একা।দেওয়ালে হাত বোলাতে বোলাতে খাটের দিকে নজর পড়তে নিজেকে সামলাতে পারে না,বালিশের উপর আছড়ে পড়ে হাউ-হাউ করে কাদতে থাকে।আটকে থাকা জোয়ারের জল যেন বাধ ভেঙ্গে বেরিয়ে আসে।বাড়ী ফিরে তার জন্য অপেক্ষারত উদবিগ্ন মুখটা আর দেখতে পাবে না।যে মুখটা শত প্রতিকূলতায় তাকে বল ভরসা যোগাতো।এক সময় হুশ হয় বাইরে কে যেন ডাকছে।সুখ উঠে চোখ মুছে বাইরে এসে দেখল গিরিদি।

সারাদিন তো কিছু খাওনি।এগুলো রাখো,ফল খেলি দোষ নেই।

একটা ঠোঙা এগিয়ে দিল।সুখ দেখল দুটো কমলা আর কিছু আঙুর।সুখ বলল তুমি আবার এসব আনতে গেলে কেন?

যা সামিথ্য তাই এনিছি।ভাল মানুষরে ভগবান বেশীদিন রাখে না।আমি আসি অন্ধকার হয়ে আসতিছে।

একটা বাটিতে আঙুরগুলো ধুয়ে সুখ ঘরে এসে বসল।বেশ ক্ষিধে পেয়েছিল।একটা একটা করে আঙুর মুখে দিয়ে ভাবতে থাকে।গিরিবালা লেখাপড়া জানে না মায়ের কাছে মাঝে মাঝে আসত।এমনি আর কোনো সম্পর্ক নেই।সে সারাদিন কিছু খায়নি গিরিবালার কি দায় ছিল।কোন সময়ে কতটুকু করা উচিত যে বোঝে তাকে কি অশিক্ষিত বলা যায়?এইজন্যই মেয়েদের প্রতি সুখর সম্ভ্রমবোধ।গভীর অন্ধকারে এইসব ঘটনা যেন জোনাকির আলো।সকালে কাকু এসে কয়েক কিলো চাল আর সবজি দিয়ে গেলেন।দাড়ালেন না সম্ভবত অফিসে যাবেন।বেলা হল সুখ স্নান করে বারান্দায় ইট পেতে কাঠকুটো জ্বেলে মালসায় দু-মুঠো চাল চাপিয়ে দিল।মালসাগুলো মামা পাঠিয়েছে।কাঠের ধোয়ায় সম্ভবত সুখর চোখে জল এসে যায়।

একটা শালপাতায় অল্প ভাত দিয়ে সামনে বাগানে রেখে অপেক্ষা করে কখন কাক এসে খায়।এইভাবে পার হয় একেকটা দিন।মাঝে মাঝে বিকেলে তাপস সিধু পল্লবরা আসে।পাড়ার খবরা খবর পুরানো দিনের কথায় সময় কাটে।গল্প করতে করতে পল্লব উঠে দাঁড়িয়ে বলল,যাই রে পরীক্ষা এসে গেল।

সীমা বলছিল সুখর ভাগ্যটাই খারাপ পরীক্ষার আগেই যত ঝামেলা।তাপস বলল।

তুই বুদ্ধি করে বইগুলো আনলে ভাল করতিস।

সুখ পরিক্ষা দেবেনা সেসব কথা ওদের বলে না।

ন'দিনের মাথায় শ্রাদ্ধশান্তি মিটে গেল।কাকু এসেছিল বরেনদা খোকন মণ্ডল তার দলবল অনেকেই এসেছিল।গোটা তিনেক জামা পেয়েছে।মামাই সব কিছুর ব্যবস্থা করলেও মামী আসেনি।সুখ সুযোগ খুজছে কখন মামাকে কথাটা বলা যায়।নিমন্ত্রতরা একে একে চলে যায়।সুখ নিজের ঘরে বসে আছে।সুবীরবাবু ঢুকে বলল,মনু এবার তুই খেয়ে নে।

মামা তুমি বলেছিলে আমাকে একটা কাজের কথা--।

মানে?আগে কলকাতায় গিয়ে পরীক্ষাটা দে তারপর ওসব ভাবা যাবে। এমনিতে অনেক দিন নষ্ট হল--।

আমি আর পড়ব না।

পড়বি না মানে?গ্রাজুয়েশনটা কমপ্লিট করবি না?

কি হবে?এইতো সিধু গ্রাজুয়েট হয়নি--।

সিধুর সঙ্গে তোর তুলনা! ভুলে যাবি না তুই বিআরবির ছেলে।

বিআরবির ছেলে ত কি হয়েছে?আচ্ছা মামা তুমি আমাকে কলকাতা পাঠানোর জন্য এত মরীয়া কেন বলতো?

কি বললি?ঠিক আছে তোর যা মন চায় কর।গলার স্বর বদলে সুবীরবাবু বলতে থাকে,জামাইবাবু মারা যাবার পর আমি চাকরির কথা বলেছিলাম।দিদি রাজি হল না মনু পড়বে।আজ দিদি নেই সব দেখছে আমি তার ছেলের জন্য কি করছি--।মনুর পড়ার জন্য কি প্রাণপাতটাই না করেছে--।

মায়ের কথা উঠতে সুখর জিদের বাধন ঢিলে হয়ে যায়।আমতা আমতা করে বলল,কলকাতায় গিয়ে পড়া অনেক ঝামেলা?

কিসের ঝামেলা?

দু-মাসের বেতন বাকী পরীক্ষা ফি মেসের ভাড়া--।

এই নে টাকা।সুবীরবাবু পকেট হতে একগোছা টাকা এগিয়ে দিল।

সুখ গুনে দেখল নশো টাকা।

কিরে এতে হবে না?

এত লাগবে না।

তোর কাছে রেখে দে।মেসের ঠিকানা লিখে দে দরকার হলে আরও পাঠাবো।

আবার তাকে কলকাতা যেতে হবে।এতদিন ধরে মনে মনে সাজানো পরিকল্পনা ভেঙ্গে চুর চুর হয়ে যায়।মা নেই কিসের জন্য সপ্তাহে সপ্তাহে গোপাল নগর আসা।কাকুকে কথা বলা দরকার।

পরেরদিন সকালবেলা অনেক দ্বিধা দন্দ্ব নিয়ে দেবেন বিশ্বাসের বাড়ী গেল।কাকু দেখে এগিয়ে এসে বললেন,সব ভালয় ভালয় মিটেছে?

কাকু আজ আমি কলকাতায় যাচ্ছি।

হ্যা অনেকদিন হয়ে গেল।

না মানে বলছিলাম কি মিলি--।

ব্যাস ব্যাস।কাকু হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে বললেন,দেখো রঞ্জন খুটো উপড়ে গেছে। কিসের বাধনে তুমি গোপাল নগরে আসবে?মিলি মাধ্যমিক দেবে আর আমি তো বাড়ীতেই থাকি।

কাকু কিছু মনে করলেন নাতো?

দেবেন বিশ্বাস হেসে বললেন,আমাকে কি এত স্বার্থপর মনে হয়?

সুখ জিভ কেটে নীচু হয়ে দেবেনবাবুর পায়ের ধূলো নিল।দেবেনবাবু জড়িয়ে ধরে বললেন,এতদিন খুটো ছিল ভয় ছিল না।খুটো আলগা হলেই বিচ্যুতির ভয় থাকে।সাবধানে থেকো।

সকালে লরিতে মালপত্তর চলে গেছে।হিমিরা আজ কলকাতায় চলে যাবে।পেটটা একটু ফুলেছে দেমাগে মাটিতে পা পড়েনা। মাগী পিছনে বেকে পেট উচু করে দাঁড়িয়ে আছে।নাদিয়া আহমেদ দূর থেকে দেখে,আগের মত সম্পর্ক নেই।বেইমান আর কাকে বলে। পেটে নাকি মিঞার ব্যাটা।বললি হল এতকাল খুচিয়ে কিছু হল না রাতারাতি পেট বেধে গেল। যদি সব ফাস করে দেয় কোথায় থাকবে তোর গুমর।বাজানের কথা ভেবে নাদিয়া আহমেদ উচ্চবাচ্য করে না।

বাড়ীর সামনে একটা অটো এসে দাড়ালো।ভিতরে মনে হয় আনিস মিঞা।সাদিয়া এদিক-ওদিক দেখে নীচু হয়ে অটোর মধ্যে সেধিয়ে গেল।মনে হয় স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতায় যাবে।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাদিয়া আহমেদ বাড়ীর দিকে এগোতে থাকে।আপু তুমি ছাড়া * স্থানে আমার কেউ নাই--ন্যাকামো।কাজ হাশিল হয়ে গেছে এখন আর আপুর কথা মনে নাই। যাক সন্তান নিয়ে সুখে থাকুক কাউকে শাপমণ্যি করতে চায় না।

উপেনবাবু বেরিয়ে গেছেন।সীতেশ আর সুধীন ধাড়া বেরোবার জন্য প্রস্তুত এমন সময় সুখদা ঢুকল।ওরা অবাক হয়ে দেখে মুণ্ডিত মস্তক রঞ্জনবাবু।ধাড়া জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার?

মা চলে গেল।

ভেরি স্যাড।কি হয়েছিল?

বয়স হয়েছে--।

সীতেশবাবু বলল,মা কি জিনিস যার যায় সেই বোঝে।

কেউ চিরকাল থাকে না।ইয়াং ম্যান নিজেকে নিজের কব্জির জোরে এগোতে হবে।সুধীন ধাড়া বিজ্ঞের মত বলল।

ওরা বেরিয়ে যেতে সুখ জিনিসপত্র রেখে কলেজে যাবার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে।তার মাথা ন্যাড়া দেখে আয়ুষী হয়তো জিজ্ঞেস করবে তারপর সহানুভূতি জানাবে ভেবে অস্বস্তি বোধ করে।সহানুভূতি ব্যাপারটা সুখর ভাল লাগে না।মামা বলছিল দিদির স্বপ্ন কথাটা মনে পড়তে চোখ ঝাপসা হয়ে ওঠে।জিনিসপত্র গোছাতে গোছাতে নজরে পড়ে জানলার ফাক দিয়ে কেউ দেখছে।বুঝতে পারে বাসুদি।দরজা ঠেলে বসুমতী ঢুকে বলল,কি হয়েছিল?

আমার মা মারা গেছে।

বহুৎ দুখ কি বাত।

লাজোকে অনেকদিন পড়াতে যাইনি।

তোমাকে আর যেতে হবে না।ওরা মেল টিচার রাখবে না।

মিলিকে পড়াবে না বলে এসেছে লাজোকেও পড়াতে হবে না।ভালই হয়েছে মেয়েটা দিন দিন যা শুরু করেছিল।মামা টাকা পাঠাবে তাতেই চলে যাবে।

কলেজ কম্পাউণ্ডে একটা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে সত্যম আর আয়ুষী গল্প করছিল।সুখ ওদের দেখেনি ভাব করে চলে যাচ্ছিল আয়ুষী বলল,হরে রাম হরে কৃষ্ণ।সত্যম বলল,যা কি হচ্ছে।কি ব্যাপার রঞ্জন?

আমার মা মারা গেলেন।

ভেরি স্যরি।এইজন্য তুমি কলেজে আসছিলে না?

মা মারা গেছে?আমি ভাবলাম বুঝি মাথা মুড়িয়ে সন্ন্যাসী হয়ে গেছিস।আয়ুষী মজা করে বলে।

অনেক কষ্টে নিজেকে সংযত করে সুখদা,বড়লোকের বাচাল মেয়ে। মানুষ এত ইতর কিভাবে হয়।কোনো কথা না বলে অফিসের দিকে চলে গেল।

তোর এভাবে বলা উচিত হয়নি।সত্যম বলল।

কি করে বুঝবো বল? মা মারা গেলেই শুধু নেড়া হয়? ওকে দেখে নদের নিমাইয়ের কথা মনে হল হি-হি-হি।

কিরে হাসছিস?নন্দিতা এসে জিজ্ঞেস করল।

রঞ্জনকে দেখেছিস?

অফিসে ফিজ জমা দিচ্ছে।ওর মা মারা গেছে জানিস?

আমি আসি রে,তোরা গল্প কর।সত্যম চলে গেল।

আয়ূষীর মুখটা বিবর্ণ হয় বলে,ওর নেড়া মাথা দেখে মায়ের মৃত্যুর কথা মনে আসেনি।খুব খারাপ লাগছে।

ভাবছি কাল থেকে কলেজে আসব না।অর্ধেক ক্লাসই হয় না ফালতু আসা।

আমিও আসতাম না কিন্তু যদি সাজেশন টাজেশন দেয়।

ধুস ভাঙ্গা হাটে দেয় নাকি?পিনাকীকে চিনিস তো?

চিনবো না কেন?ফাটুশ ছেলেটা?

ও একবার নেড়া হয়েছিল মাথার চুল উঠে যাবার জন্য।

আর ক্লাস নেই দীপশিখা বই-পত্তর গুছিয়ে বেরোবার জন্য তৈরী হতে থাকেন।শুক্লা এসে বলল,তোমার ক্লাস শেষ?

আজকের মতো।

এখনই চলে যাবে?বাড়িতে কেউ তো অপেক্ষা করছে না।

কথাটা কানে বাজে দীপশিখা উষ্ণতা মিশিয়ে বললেন,এখানে বসে বসে গ্যাজাতে ভাল লাগে না।

শিখাদি রেগে গেছে শুক্লা আর কথা বাড়ায় না।

দীপশিখা রাস্তায় এসে বাস স্ট্যাণ্ডে অপেক্ষা করতে থাকেন।শুধু সহকর্মীরাই নয় দীপশিখা নিজেও বুঝতে পারেন দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছেন।কোনো কথা মনে থাকে না।অল্পেতে রেগে যান।মেজাজ হারিয়ে ফেলেন।বাস এসে দাড়াতে উঠে পড়লেন।ভিতরে ঢুকে নজরে পড়ে লেডিজ সিটে একটি ছেলে বসে।তাকে দেখে দাঁড়িয়ে বলল,বসুন ম্যাডাম।

দীপশিখা বসতে বসতে ভাবেন লেডিজ সিটে বসেছো উঠে যাবে।কে বসবে না বসবে তুমি ঠিক করার কে? সিটে বসে ব্যাগ থেকে নতুন কেনা ফোন বের করে সুডোকু মেলাতে থাকেন।কথা বলা ছাড়াও নানা রকম সুযোগ আছে এই ফোনে।বাস ফ্লাই ওভারের উপর দিয়ে ছুটে চলেছে।এটা হবার পর আগের মত জ্যাম হয় না।

কণ্ডাক্টরের মৌলালী-মৌলালী হাক কানে যেতেই দীপশিখা উঠে দরজার দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন।বাস থেকে নেমে সি আই টি রোডে দীপশিখার ফ্লাট।সিড়ি বেয়ে তিনতলায় উঠে নিজের ফ্লাটের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ব্যাগ হাতড়ে চাবি বের করে লক খুললেন।ভিতরে ঢুকে নিজেকে ভীষণ নিঃসঙ্গ বোধ হয়।ডাইনিং কাম সিটিং রুম পাশে ছোটো একটা ঘরে দেওয়াল জোড়া বুক সেলফ তারপরে একটা বড় ঘর।ঘরের বাইরে বারান্দা। পাখা চালিয়ে নিজেকে সোফায় এলিয়ে দিলেন।বসে থাকলে হবে না।দীপশিখা উঠে শাড়ী বদলে নাইটি গায়ে দিলেন।সুইচ টিপে আলো জ্বাললেন।চোখে মুখে জল দিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে চায়ের জল চাপিয়ে গ্যাস জ্বালিয়ে দিলেন।জল ফুটতে শুরু করেছে।কানে এল ফোন বাজছে।কোথায় বাজছে অনুমান করা চেষ্টা করেন।জলে চায়ের পাতা দিয়ে চাপা দিলেন।গ্যাস বন্ধ করে বেড রুমে এসে আওয়াজটা কোথা থেকে আসছে চারদিকে লক্ষ্য করেন।বাথরুম হতে নয়তো?বাথরুমে যেতে যেতে আওয়াজ থেমে গেল।এটা তার পুরানো ফোনের আওয়াজ।ফোনটা তাহলে ঘরেই আছে পিক পকেট হয়নি।রাণ্ণা ঘরে এসে চা করে একটা কাপে নিয়ে বাকীটা ফ্লাক্সে ঢেলে রাখলেন।আবার ফোন বাজছে। মনে হচ্ছে লাইব্রেরী ঘর থেকে আসছে।চায়ের কাপ হাতে যেতে যেতে বন্ধ হয়ে গেল আওয়াজ।চা-টা খেয়ে নিজেই রিং করবেন।এই বুদ্ধিটা তার মাথায় আসেনি আগে। মনে হচ্ছে ফোনটা এতদিনে পাওয়া গেল।ফিরে আসছেন আবার বেজে উঠোল।লাইব্রেরীতে ঢুকে ভাল করে লক্ষ্য করেন।ঐতো উপরের তাকে বইয়ের ফাকে আলো ঝিলিক দিচ্ছে।দ্রুত ফোনটা বের করে বাটন টিপে কানে লাগিয়ে বললেন,হ্যালো?

মোমো ফোন ধরছো না কেন।

আবার মোমো, পিসি বলতে কি হয়েছে--।

হি-হি-হি ছোটোবেলার অভ্যেস কি করব?ফোন ধরছো না কেন?কালকেও কতবার করেছি--

ফোন ধরব কি এই ফোনটা হারিয়ে গেছিল।ইদানীং কি যে হয়েছে কোনো কিছু মনে রাখতে পারি না।ফোনটা না পেয়ে নতুন ফোন কিনেছি--।

ভাল করেছো নম্বরটা টেক্সট করে দিও।

ঠিক আছে তারপর বল ফোন করেছিস কেন?

কাল ফোন করেছি কয়েকবার বেজে বেজে কেটে যাচ্ছে ভীষণ চিন্তা হচ্ছিল।আজ না ধরলে আমি চলে যেতাম।

চলে আয় মানা করেছে কে?

যাব পরীক্ষাটা হয়ে গেলেই যাব।

দিবুর খবর কি?

জানি না।

শোন এত রাগ ভাল নয়।

তুমি জানো ও আর দেশে ফিরবে না?তোমাকে ফোন করেনা?

অনেককাল আগে করেছিল।আমার নতুন নম্বর ওকে দেওয়া হয়নি।

তোমার শরীর কেমন আছে?একটু ভাল বোধ হচ্ছে?

ঐ একরকম।দাদা-বৌদি কেমন আছে?

ভালই।ছেলের প্রতি মামণি একটু সিম্প্যাথেটিক বাপির ভয়ে কিছু বলে না।

বৌদির ব্যাপারটা বুঝতে পারি।যাক তোর প্রিপারেশন কেমন হল?

অতি ভাগ্যবান ছাড়া ডাক্তারীতে কেউ ফেল করতে পারে না।হি-হি-হি।

কাউকে নজরে পড়েছে?

ছাড়ো তো ফালতু কথা।আচ্ছা রাখছি?ওহ হ্যা নম্বরটা টেক্সট করে দিও।

আচ্ছা।আমার আবার রান্না করতে হবে।

ফোনটা খুলে সিমটা উলটে দিয়ে আবার বইয়ের তাকে রেখে দিলেন।

রাতের খাওয়া শেষ হলে বই নিয়ে সুখদা ছাদে উঠে গেল।শতরঞ্চি পেতে বসে আকাশের দিকে তাকালো।চাদ তারায় শোভিত বিশাল আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল মায়ের কথা।মায়ের কথা ভাবতে ভাবতে মনের মধ্যে একটা জিদ চেপে বসে।​
Next page: Chapter 12
Previous page: Chapter 10