Chapter 22
দেখতে দেখতে একটা মাস হয়ে গেল পাঞ্চালি গোপাল নগরে এসেছে।ছুটি শেষ এবার তাকে ফিরতে হবে।বাপি এখন অনেকটা ভালো।মামণি কিছুতেই বাপিকে নীচে নামতে দেবে না।পাঞ্চালী পুরোপুরী ডাক্তার নয় কেউ বুঝতে চায়না।বাধ্য হয়ে রোগী দেখতে হয়েছে বাপির প্যাডে প্রেস্ক্রিপশন করেছে। একদিন সিধু এসেছিল, একসময় সহপাঠি ছিল তাকে আপনা-আপনি করছিল।বেশ মজা লাগে।ওর কথা জিজ্ঞেস করেছিল সিধুও ওর ব্যাপারে কিছু বলতে পারলো না। ফিজ দিতে চাইছিল পাঞ্চালী নেয়নি। পিসিমণির আচরণ অদ্ভুত লাগে।ফোন করলে বাপির খবর নেয় কিন্তু সিকিউরিটি না কে তার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলেই এড়িয়ে যায়।সৌমিত্র প্রায়ই ফোন করে,স্পষ্ট করে কিছু বলে না পাঞ্চালীও উচ্চবাচ্য করেনা।ওর জন্য খুব খারাপ লাগে।
পিসিমণিকে মাঝে মাঝে ফোন করলেও একটা অভিমান দানা বেধেছিল মনে।দাদার এত খবর নিচ্ছে অথচ দাদাকে একবার এসে দেখে যাবার সময় হয় না।কলকাতা হতে গোপালনগর ঘণ্টা দেড়েকের পথ। মামণির কাছে শোনার পর পিসিমণির প্রতি সেই অভিমাণ বাষ্পের মতো উবে যায়।
বছর পচিশ ত্রিশ আগের কথা।দাদুকে স্পষ্ট মনে নেই,খুবই ছোটো তখন। দাদু নাকি বলেছিল চৌকাঠের বাইরে পা রাখলে আর এপাশে আসা যাবে না। নিষেধ সত্বেও কলকাতায় চলে গেছিল মোমো।দাদুর মুখের উপর কথা বলে এমন কেউ ছিল না।তারপর একদিন যখন বিয়ের খবর পৌছালো দাদু ঘোষণা করলেন,শোনো দীবা বৌমা তুমিও শোনো, আমি দীপাকে ত্যাজ্য করলাম। মনে রাখবে আমার কথার অন্যথা হলে আমার যেন নরকে ঠাই হয়।আগেকার দিনের মানুষগুলো একটু গোয়ার টাইপ হয়।পাঞ্চালী এত কথা জানতো না।জানার পর ভারাক্রান্ত হয় মন।
পিয়ালী মিত্র স্বামীর মাথা কোলে তুলে নিয়ে মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে জিজ্ঞেস করলেন,এখন কেমন লাগছে?
ড মিত্র হাসলেন বললেন,ভালো।পলি কোথায়?
নীচে চেম্বারে বসেছে।
কবে যাবে কিছু বলেছে?
বলছিল তো আজই যাবে।
মেয়েটাকে নিয়েই চিন্তা।ড মিত্রের গলায় উদবেগ।
রোগী দেখা শেষ হতে দরজা বন্ধ করে উপরে উঠে এল পাঞ্চালী।বাপির ঘরে উকি দিয়ে দেখল চোখ বুজে শুয়ে আছেন।ধীর পায়ে ঘরে ঢুকে বাপির মাথার কাছে বসতে ড মিত্র চোখ খুলে তাকালেন।
রোগী দেখা হল?
কি করব কেউ শোনে না।অঞ্চলে কাছাকাছি ডাক্তারও নেই.। লাজুক গলায় বলল পাঞ্চালী।
তোমার মা বলছিল তুমি আজ চলে যাবে।
হ্যা আমার ছুটি তো শেষ।তোমার এখন তো কোনো সমস্যা নেই?
বয়স হয়েছে শ্বাস নিতে একটু কষ্ট হয় এই যা।আচ্ছা মা কলকাতা থেকে যে ছেলেটি এসেছিল কি যেন নাম?
সৌমিত্র সাহা আমার সঙ্গে পাস করেছে।
ওকে নিয়ে কিছু ভাবছো?
মানে?পাঞ্চালী অবাক।
কলকাতা থেকে একেবারে গোপালনগরে চলে এল--।
শোনো বাপি ও কেন এল আর কিছু ভাবছে কিনা আমি বলতে পারব না।আমার এখন একটাই চিন্তা যেটা ধরেছি সেটা শেষ করা।
তুমি পাস করেছো আর এই হাউসস্টাফ গিরি কয়েকমাস গেলেই শেষ হবে।আমার শরীরের যা অবস্থা তুমি ডাক্তার তোমাকে তো বুঝিয়ে বলতে হবে না।
বাপি তুমি অত চিন্তা কোরো না।এটা শেষ হলেই ভাবা যাবে।তোমার স্নান হয়েছে?
পিয়ালী মিত্র ভাত নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বল্লেন,হ্যা হয়েছে এবার তুমি স্নান করে নেও।
একটা টুলের উপর ভাতের থালা নামিয়ে স্বামীকে ধরে তুলে বসিয়ে দিলেন।ড মিত্র বললেন,যা মা স্নান করে খেয়ে নে তোকে তো আবার বেরোতে হবে।
ডা মিত্র এখন তেল মশলা এড়িয়ে সব সেদ্ধ খান।পিয়ালি মিত্র ভাত মেখে দিলেন।ইদানীং ডা মিত্রের হাত কাপে অথচ এক সময় এই হাত দিয়ে কত অপারেশন করেছেন।
পলির সঙ্গে কথা বললাম।ওই ছেলেটার সঙ্গে তেমন কিছু না।ড মিত্র বললেন।
আমি তো জানি,আমার মেয়েকে আমি চিনি না।আর কিছু বলল?
বলল পড়া শেষ করে ভাববে।
মেয়ে যেভাবে এখানে প্রাকটিশ শুরু করেছে ভেবে দুশ্চিন্তা হয়।তার ইচ্ছে মেয়ের বিয়ে হোক কলকাতায়।তার মত অবস্থা যেন না হয়।গ্রামের বাড়ীর জন্য ছেলেটা দেশে ফিরল না।কলকাতায় বাড়ী হলে খোকা হয়তো ফিরে আসতো। একটা দীর্ঘশ্বাস মোচন করলেন।
পিয়ালী দত্ত কলকাতার শোভাবাজার অঞ্চলে থাকতেন।বাবা মা তিন ভাই এক বোন--ছয় জনের সংসার।পিয়ালী ছিলেন ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়।মধ্যবিত্ত পরিবার পিয়ালির পড়াশুনা গ্রাজুয়েশন।বাবা ছিলেন সরকারী কর্মচারী সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী।দাদা বিএ পাস করে এদিক-ওদিক চাকরির চেষ্টা করছে।বাকী দুই ভাইয়ের একজন কলেজে একজন কলেজে পড়ে। সেদিনটার কথা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠে মন।বাবা অন্যান্য দিনের মত অফিস গেছেন।
ফিরলেন ফুলে সজ্জিত ম্যাটাডোর ভ্যানে।অফিসে হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল চিকিৎসার সুযোগটুকু নাদিয়ে চলে গেলেন।অফিস কলিগদের সহায়তায় বাবার জায়গায় দাদা চাকরি পেল সেই দুর্দিনে এই এক বড় সান্ত্বনা।দাদা বড়ভাইয়ের কর্তব্য করে গেছে।ভাইদের পড়িয়েছে বোনের বিয়ে দিয়েছে।অফিসের এক কলিগের মাধ্যমে ডাক্তার পাত্রের খবর এল।গোপালনগর শুনে একটা দ্বিধারভাব ছিল।মেয়ে পছন্দ হলে তাদের কোনো দাবীদাওয়া নেই।একদিকে পাত্র অজ পাড়াগায়ে থাকে অন্যদিকে পাত্র পক্ষের কোনো দাবীদাওয়া নেই এবং বিয়ের পর পাত্র বিদেশ যাবে এই দোটানার মধ্যে বিশেষ করে দাদার কথা ভেবে পিয়ালী দত্ত সম্মতি জানিয়েছিল।বিয়ের দশ-বারো দিন পর ও বিদেশ চলে গেল।পেটে তখন খোকা।খোকার জন্ম হয়েছে কলকাতায় মামার বাড়ীতে।কেবলি আশঙ্কা পলির যেন এই অবস্থা না হয়।
দীপশিখা কলেজে বেরিয়ে গেলেন,বাসায় মনু একা।ওর আজ আলিপুরে গিয়ে সিএসসির ফর্ম আনতে যাবার কথা।চাকরি পেলে কি মনুর মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে?মনু যদি চলে যায় খারাপ লাগলেও দীপশিখা কিছু মনে করবেন না। এক তরুণ সম্ভাবনাময় জীবনকে দীপশিখা স্বার্থপরের মতো নষ্ট হতে দিতে চান না।তার সময় ঘনিয়ে এল মনুর সামনে দীর্ঘ পথ। শুক্লা মেটারনিটি লিভ নিয়েছে কলেজে আসছে না।কবে শুনবেন শুক্লা মা হয়েছে।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। কলেজে ঢুকে হাজিরা খাতায় সই করে ক্লাসে চলে গেলেন।একের পর এক ক্লাস করতে থাকেন।বেয়ারা এক সময় খবর দিল ক্লাস শেষ হলে প্রিসিপাল ম্যামের সঙ্গে দেখা করে যাবেন।
যখন ক্লাস থাকে না স্টাফ রুমে বসতে হয়।কানে আসে অন্যান্যদের আলোচনার টুকরো টুকরো শব্দ।সবাই উচ্চ শিক্ষিত অবাক লাগে এদের মুখে পরচর্চা শুনে।বসে শোনা ছাড়া উপায় নেই তাই বসতে হয়।প্রিন্সিপাল ম্যাম কেন ডাকলেন কে জানে।শুক্লা থাকলে একজন কথা বলার সঙ্গী থাকতো।মনু এতক্ষনে হয়তো ফিরে এসেছে।ছুটির পর প্রিসিপালের দরজায় গিয়ে বললেন,ম্যাম আপনি ডেকেছেন?
হ্যা আসুন,বসুন।
দীপশিখা বসতে উনি একটা কাগজ এগিয়ে দিলেন।ইংরেজীতে লেখা Madam, did you know that your college sweetheart Deepshikha mam indulging in immoral life with a boy.এটুকু পড়েই দীপশিখার কান লাল হয়।চোখ তুলে তাকাতে দেখলেন প্রিসিপাল ম্যাম মুচকি হাসছেন।বললেন,দেখুন মিস মিত্র আমাদের সমাজে একা মেয়েদের জীবন যাপন বেশ কঠিণ এই ধরণের নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়।বিধবা বা ডিভোর্সি মেয়েরা যেন সস্তা তাদের নিয়ে যা খুশি তাই করা যায়।চিঠিটা এসেছে তাই আপনাকে দিলাম। ইচ্ছে হলে পুলিশে ইনফর্ম করতে পারেন আমি ব্যাপারটা ইগনোর করেছি।
আমি আসি ম্যাম।
একটু সাবধানে থাকবেন।
দীপশিখা চিঠীটা মুঠোয় চেপে বেরিয়ে এলেন।বুঝতে পারেন ফেউ লেগেছে।অবন্তীর কথা মনে পড়লো।মেয়েটাকে প্রথম থেকেই সুবিধের মনে হয়নি।এসেই মনুর ঘরে উকিঝুকি।বাস আসতে উঠে পড়লেন বাসে।দীপশিখার চোয়াল শক্ত হয় প্রয়োজনে প্রকাশ্যে মনুকে বৈধ স্বামী হিসেবে ঘোষণা করবেন।
সুখ বাসায় ফিরে জামা প্যাণ্ট খুলে বারমুডা পরল।চোখে মুখে জল দিয়ে বসার ঘরে বসে সিগারেট ধরিয়ে সিএসসি হতে আনা ফর্মটায় চোখ বোলাতে থাকে। আজ একটা বড় কাজ হয়েছে।শুনেছে কদিন পর রেজাল্ট বেরোবে।ফর্ম ফিল আপ করতে রেজাল্ট দরকার। পাস করে যাবে এ বিশ্বাস আছে।কলিং বেলের শব্দ হতে অবাক হয়।মোমো এত তাড়াতাড়ি ফিরে এল?যাক ভালই হয়েছে একটু চা হলে ভালো হয়।আবার বেল বাজে।মোমোর কাছে তো চাবি আছে। উঠে দরজা খুলতে গেল।
দরজা খুলে অবাক সামনে দাঁড়িয়ে অবন্তী।সুখ বলল,ম্যাডাম তো এত তাড়াতাড়ি ফেরেনা।
তাহলে ভিতরে বসে অপেক্ষা করি?
অবন্তীর চোখে দুষ্টু হাসি সুখ সতর্ক হয় বলে,আপনি ঘণ্টা খানেক পরে আসুন।উনি এসে একটু বিশ্রাম করবেন।
অবন্তীর মুখ কালো হয়,সুখ মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল।আসার সময় দেখেছিল জানলায় দাঁড়িয়ে আছে।মনে হয় তাকে দেখেই এসেছে।লেখাপড়ায় ভাল মেয়েরাই দুষ্টু হয়।আগেও একদিন এরকম এসেছিল। অবন্তীর দোষ নেই ও জানে না সে ম্যারেড।সুখ সোফায় বসে প্রসপেক্টাসে চোখ বোলাতে থাকে।
কিছু সময় পর আবার বেল বাজে।ঘড়ি দেখল আধ ঘণ্টা হয়েছে ওকে বলেছে ঘণ্টা খানেক পরে আসতে।মেয়েটাকে এক্টূ কড়া করে বলা দরকার।উঠে দরজা খুলে দেখল অবন্তী নয় মোমো দাঁড়িয়ে চোখে মুখে চিন্তার আকিবুকি।
কিছু হয়েছে?
কি হবে?তুমি গেছিলে?
হ্যা একটু আগে ফিরলাম। ফর্ম প্রস্পেক্টাস সব নিয়ে এসেছি।
এত দেরী হল?
তোমাকে জিজ্ঞেস না করে আজ একটা কাজ করেছি।
দীপশিখা ঘুরে দাঁড়িয়ে ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করেন,উর্মিলা ঘোষের সঙ্গে দেখা হয়েছিল?
ঝাঃ তুমি না।তোমার এই মেয়েলী স্বভাব গেল না।
আমি মেয়ে তো স্বভাব কেমন হবে?তোমাকে যা জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দাও।
তোমাকে বলা হয়নি ইউজি আজ প্রায় নমাস আগে চাকরি ছেড়ে স্বামীর কাছে বিদেশ চলে গেছেন।
তাহলে কি করেছো আজ?
আমাদের স্যার ডিসি আমাকে থিসিস করাতে রাজী হয়েছেন।আজ নাম রেজিস্ট্রি করলাম।
দীপশিখা ঘরে গিয়ে পোশাক বদলায়।সুখ দরজায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করে মোমোকে কেমন চিন্তিত লাগছে।
ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন হুকটা খুলে দেও।
সুখ ভিতরে গিয়ে জামার পিছনে হুকটা খুলে দিল।ঘোড়া দেখলে খোড়া।এখন সব তাকে করতে হবে।বিয়ের আগে এসব কে করতো।তখন তো নিজে নিজেই সব করতে।অবন্তীর এসেছিল সে কথাটা বলে না।
দীপশিখা জামা পেটিকোট খুলে নিজেকে অনাবৃত করে বললেন,কাধটা একটু টিপে দেও।আমারও একসময় থিসিস করার খুব ইচ্ছে ছিল।
কাধ টিপতে টিপতে সুখ বলল,তোমার ছাত্রী আসার সময় হয়ে গেছে।জামাটা পরে নেও।
ওকে আর পড়াবো না।অনেক পড়িয়েছি এবার বাড়ীতেই পড়ুক।তুমি বলো আমি আমার স্বামীর সঙ্গে যা খুশি করতে পারি না?তাতে কার কি বলার আছে?
মোমোকে জড়িয়ে ধরে সুখ বলল,ঠিকই তো।কেন কেউ কিছু বলেছে সোনা?
কে বলবে?লোকে বলে দীপশিখা মিত্র কিম্বা মিস মিত্র কেউ আমাকে ম্যাম বলে?
সুখ বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে বলল, তোমার ছাত্রীরা তোমাকে তো ম্যাম বলবে না?
এভাবে চেপে ধরে রাখলে মনে হয় সারাদিনের ক্লান্তি কেউ যেন ব্লটিং পেপারের মতো শুষে নিচ্ছে।দীপশিখা বললেন,ছাড়ো এবার চা করতে হবে তো।ওয়ারড্রোব হতে জামাটা দাও।
অবন্তী আসার দিন শাড়ি পরেন আজ হাটু অবধি ঝুল ম্যাক্সি গায়ে দীপশিখা রান্নাঘরে চলে গেলেন। দীপশিখাম্যাম কথাটায় তার সন্দেহ হয়েছে।মানুষের ভালো করতে নেই।চা করে এক কাপ মনুকে দিয়ে গেলেন।
মোমো বোসো ম্যাসাজ করে দিই।
এখন বসলে হবে না।রাতে যত ইচ্ছে কোরো।
সুখ চায়ের কাপ নিয়ে লাইব্রেরীতে গিয়ে বসল।দীপশিখা চা খেতে খেতে ভাত চাপিয়ে দিলেন।ফোন বাজতে দেখলেন পলি।কানে লাগিয়ে বললেন,বল।
আমি হস্টেলে ফিরে এসেছি।
দাদা কেমন আছে?
মোটামুটি এমনি কিছু না বয়স হলে যা হয়।এখন দরকার নার্সিং একা মামণির পক্ষে--।
একা কেন আর সব কি করছে?
কাজের লোক দিয়ে সব হয়?আচ্ছা মোমো তোমার সেই সিকিউরিটি গার্ডের পরীক্ষা কেমন হল?
দীপশিখা বুঝতে পারেন ফোন করার উদ্দেশ্য কি?মৃদু হেসে বললেন,বলছে তো ভালই হয়েছে?
ছেলেটা আগে কোথায় থাকতো?
কি ব্যাপার বলতো ওকে নিয়ে তোর এত চিন্তা কেন?
ওকে নিয়ে চিন্তা করতে বয়ে গেছে।আসলে আমার সঙ্গে একটা ছেলে পড়তো লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিল তোমাকে তো আগে বলেছি।জানো মোমো কোথায় যে চলে গেল--খুব খারাপ লাগে---এত ব্রিলিয়াণ্ট কেরিয়ার।
তোর কি ওকে খুব পছন্দ ছিল?
ধ্যেৎ তোমার ঐ এককথা।ভালো ছেলেকে সকলেই পছন্দ করে।
তোকেও কি ওর পছন্দ?
জানি না যাও।একটু থেমে বলল, ছেলেটা একটু ইডিয়ট টাইপ।আমার প্রতি সর্বক্ষন নজর ছিল।
বলছিস ইডিয়ট টাইপ আবার তোকে পছন্দ করত.আমি তো তোর কথা কিছু বুঝতে পারছি না।
পাঞ্চালীর মনে পড়ল একবার সিধুকে কি করেছিল।বলল,তোমার বুঝে দরকার নেই।কোথায় থাকতো বলো।
অত কিছু আমি জানি না।
জানো না, না বলবে না।থাক বলার দরকার নেই রাখছি।ফোন কেটে দিল।
দীপশিখা হাসলেন।এত যখন আগ্রহ এতকাল পরেও মনে রেখেছে ঠোটে ঠোট চেপে বিষয়টা বুঝতে চেষ্টা করেন।মনুর আগের জীবন সম্পর্কে বাস্তবিকই কিছু জানেন না।যেভাবে ওর সঙ্গে যোগাযোগ তাতে জানার আগ্রহও বোধ করেনি।
রাত হয়েছে খাবার টেবিলে খেতে বসেছেন।মনু চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে দীপশিখার মনে প্রিসিপালের দেওয়া চিঠির লেখাগুলো ঘুরঘুর করছে, কেউ কোনো কথা বলে না।অম্বিকার আজ পড়তে আসার কথা কিন্তু আসেনি।দীপশিখার কপালে ভাজ পড়ে।
চাকরি পেলে কি করবে কিছু ভেবেছো?এক সময় দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন।
দাঁড়াও আগে পাই।
আজ না হোক কাল একদিন তো পাবে।
পেলে চাকরি করবো।তোমার জন্য কিছু করতে পারিনি সেই আক্ষেপ মেটাবো।
আমার কোনো আক্ষেপ নেই তুমি যা দিয়েছো তাতেই আমি খুশী। চাকরি করে থিসিস করতে অসুবিধে হবে না?
একটু বেশী পরিশ্রম করতে হবে।সবটা স্যারের উপর নির্ভর করছে।
জানলা দিয়ে নরম রোদ এসে পড়েছে বিছানায়।দীপশিখা চোখ মেলে তাকালেন।চোখ নামিয়ে দেখলেন মাকড়সার মত জাপটে শুয়ে আছে মনু।আলগোছে কোমরের উপর থেকে পা-টা সরিয়ে দিলেন।তারপর বুক হতে আরেকটা হাত সরাতে চিত হয়ে গেল মনু।নিজের দিকে চোখ বুলিয়ে উঠে বসলেন।দুই উরুসন্ধিতে ইঞ্চি পাচেক বাড়াটা নেতিয়ে পড়ে আছে।বুদ্ধের মত শান্ত নিরীহ মুখটা দেখে বুকের মধ্যে আকুলি বিকুলি করে ওঠে।এমন একটা ছেলে যদি তার থাকতো।ওকে এখন ডাকার দরকার নেই। চা করে ডাকলেই হবে।দীপশিখা ঘেষটে ঘেষটে বিছানা থেকে নামলেন।সারা গায়ে ব্যথা গুণ্ডাটা কাল রাতে এমন চোদান চুদেছে এখনো সারা শরীরে তার রেশ লেগে আছে।ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে পাস করেছে মনু।সেই আনন্দ উজাড় করে তার মধ্যে ঢেলে দিয়েছে মনু।উষ্ণবীর্যে উপচে পড়ছিল গুদ।যদি বছর খানেক আগেও হতো তাহলে তিনিও শুক্লার মতো মেটারনিটি লিভ নিতে পারতেন।
দীপশিখা খাট থেকে নেমে গায়ে একটা জামা চাপিয়ে নীচু হয়ে মনুর ঠোটে চুমু খেলেন।তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে বাথরুমে গেলেন।
সুখর ঘুম ভাঙ্গতে চোখ মেলে তাকিয়ে সময়টা বুঝতে চেষ্টা করে।সকাল হয়েছে,পাশে তাকিয়ে দেখল মোমো নেই।মনে পড়ল কালকের কথা।রেজাল্ট নিয়ে ডিসিকে প্রণাম করতে গেছিল।স্যার কথা দিয়েছেন থিসিস করাবেন।তারপর বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে ফিরতে একটু দেরী হয়েছিল।দরজা খুলে মোমো বলল,বয়স্কা মহিলার প্রতি আর তেমন আকর্ষণ বোধ হয় না তাই না?
সুখর রাগ হলেও কিছু বলেনি।ইদানীং লক্ষ্য করেছে মোমো মাঝে মাঝে এরকম খোটা দেয়।দাড়াও রাতে তোমায় বোঝাচ্ছি মজা।সুখ ভিতরে ঢুকে গেল।সীপশিখা বললেন,কি হল কিছু উত্তর দিলে নাতো?
আজেবাজে কথার কি উত্তর দেবো।
এত রাত হল কেন সেটা বলবে তো।
তুমি বলতে দিলে তো বলব।আসতে না আসতে উদ্ভট কথা--।
দীপশিখা হেসে ফেললেন বললেন,আচ্ছা বাবা আমার ভুল হয়েছে।
সুখ চোখ তুলে অপলক দৃষ্টিতে মোমোকে দেখে তারপর বলল,মোমো আমার রেজাল্ট বেরিয়েছে আমি ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছি।
কথাটা শুনে স্থির দৃষ্টিতে দীপশিখা মনুর দিকে তাকিয়ে থাকেন,সুখ অস্বস্তি বোধ করে।দীপশিখা বললেন,তোমার রেজাল্ট বেরিয়েছে দুনিয়ার লোক জেনে গেল আর এতক্ষনে মোমোকে জানাবার সময় হল?
মোমো রাগ কোরোনা শোনো স্যারকে জানাতে গেছিলাম তারপর ওরা ধরল এতদিন পরে দেখা হল--।
একটা ফোন করে জানাতে কি হয়েছিল?আমি এদিকে কলেজ থেকে ফিরে এঘর ওঘর করছি--/
সুখ ঝাপিয়ে পা-দুটো জড়িয়ে ধরে বলল,খেয়াল ছিল না মোমো তুমি ছাড়া আমার কে আছে বলো।
থাক-থাক হয়েছে পা ছাড়ো আমার আর পাপের বোঝা বাড়িও না।দীপশিখা দুহাতে মনুকে তুলে জড়িয়ে ধরে বললেন,খালি নাটক---এখন চা খাবে নাকি ভাত খাবে--।
রান্না ঘরে বাসন পড়ার শব্দ হতে তড়াক করে বিছানা থেকে নেমে সুখ বলল,কি হল?
জামা প্যাণ্ট নাপরেই ছুটে রান্না ঘরে গিয়ে দেখল মোমো মেঝেতে পড়ে আছে জামা ভিজে গেছে।টেবিল ধরে ওঠার চেষ্টা করছে।
একী পড়লে কি করে?
দীপশিখা চিঁ-চিঁ করে বলল,আমি উঠতে পারছি না আমাকে তোলো।
সুখ হাত বাড়িয়ে হাতটা ধরতে দেখল গরম,কপালে গালে হাত দিয়ে বুঝতে পারে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। বলল,একী তোমার তো জ্বর।
ও কিছু না একটা ক্যালপোল খেলে ঠিক হয়ে যাবে।তাড়াতাড়ি তোলো আমার এখনো চা করা হয়নি।
চা করাচ্ছি।মোমোর পাছার নীচে হাতে দিয়ে কোলে তুলে নিল সুখ।শোবার ঘরে বিছানায় এনে জামা খুলে দিয়ে একটা পরিস্কার জামা পরাতে গেলে দীপশিখা বললেন,জামা লাগবে না তুমি চাদরটা আমার গায়ে চাপা দিয়ে দাও।
গায়ে চাদর চাপা দিয়ে সুখ জামা প্যাণ্ট পরে বেরোবার জন্য তৈরী হয়ে বলল,একদম চুপটি করে শুয়ে থাকবে অসভ্যতা করলে ভালো হবে না।
কি করবে মারবে?
দরকারে মারতেও পারি।সুখ বেরিয়ে গেল।
দীপশিখা মুখ টিপে হাসেন।মোমোর গায়ে হাত তুলবে মনু ভেবে বেশ মজা লাগে।সামান্য জ্বর হয়েছে দেখে এমন শুরু করেছে ও আবার মারবে।
সুখ নীচে নেমে এল।প্যারাসিটামল কিম্বা ক্যালপল কিছু একটা হলেই হবে।গেট দিয়ে বেরোতে যাবে সামনে এসে দাড়ালো অম্বিকা।
কোথায় যাচ্ছেন?
একটু দোকানে যাচ্ছি।আপনি কলেজ যান নি?
মুচকি হেসে অম্বিকা বলল,শরীর খারাপ।
ভদ্রতার খাতিরে বলল,আপনি তো আর পড়তে গেলেন না?
ম্যামের কাছে পড়বো না।অবশ্য আপনি পড়ালে যেতে পারি।
সুখ হেসে রাস্তার দিকে পা বাড়ায়।অম্বিকা পিছন থেকে মৃদু স্বরে বলল,বোকাচোদা।
ওষূধের দোকান থেকে এক পাতা প্যারাসিটামল কিনে দ্রুত উপরে উঠে এল।ঘরে ঢুকে চমকে উঠলো, আপাদ মস্তক ঢেকে শুয়ে আছে মোমো।দ্রুত মুখ থেকে চাদর সরিয়ে দিয়ে বলল,এভাবে কেউ মুখ ঢেকে শোয়?
দীপশিখা মজা পেয়ে হাসলেন।সুখ গেলাসে জল এনে একটা ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে বলল,শুয়ে থাকো আমি চা করে আনছি।
আজ কি না খেয়ে কলেজ যাবো?
তোমায় কলেজ যাওয়াচ্ছি।চুপচাপ শুয়ে বিশ্রাম করো।
সুখ চলে যেতে দীপশিখার কপোল গড়িয়ে জল পড়ে।দীপশিখা চাদর দিয়ে চোখের জল মুছলেন। এত যত্ন এত আদর এত ভালবাসা তার অদৃষ্টে লেখা ছিল স্বপ্নেও ভাবেন নি।মনে হয় সরল সাদাসিধে ছেলেটার ভালবাসার সুযোগ নিচ্ছেন নাতো?
নেও এবার উঠে বোসো। চায়ের কাপ নামিয়ে মোমোকে ধরে তুলে পিছনে বালিশ বসিয়ে দিল।তারপর চায়ের কাপ হাতে ধরিয়ে বলল,অসুবিধে হচ্ছে নাতো?
দীপশিখা ধীরে ধীরে চা পান করতে থাকেন।চা শেষ হলে বললেন,তুমি আমার পাশে একটু শোওনা।
শোবো এখন না অনেক কাজ আছে।জানো মোমো ওষুধ আনতে যখন নীচে গেছিলাম তোমার ছাত্রীর সঙ্গে দেখা।
ছাত্রী কে অম্বিকা?ওর সঙ্গে তোমার কি দরকার?
ও বলছিল আর পড়বে না।
হু-উ-ম বুঝেছি।
কি হয়েছে?
আমাদের প্রিন্সিপালের কাছে আমার নামে একটা উড়ো চিঠি এসেছে।আজ প্রায় চব্বিশ বছরের উপর শিক্ষকতা করছি এরকম কখনো হয় নি।
আমরা স্বামী-স্ত্রী যা খুশি করব মোমোর এমন ক্ষেপে যাবার কারণটা স্পষ্ট হয়।এর পিছনে এই মেয়েটা নেই তো?সুখর মনে চিন্তাটা ভেসে উঠল।প্রথম দিন থেকেই মেয়েটাকে তার ভালো লাগেনি।এক এক সময় মনে হয় মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু।সুখ রান্না ঘরে গিয়ে জল গরম করে নিয়ে এল।বাথরুম হতে একবালতী জল নিয়ে এসে দীপশিখার মাথা ধুইয়ে দিল। তারপর গরম জলে সারা শরীর স্পঞ্জ করতে থাকে।যোনীর ভিতর থেকে পাপড়ির মত খুদ্রোষ্ঠ বেরিয়ে এসেছে।সুখ দু-আঙ্গুলে ধরে নেড়ে বলল,দেখো কি অবস্থা?
দীপশিখা লাজুক হেসে বললেন,কে করেছে এমন তো আগে ছিল না।
চাদরে ঢেকে দিয়ে বলল,শুয়ে থাকো আমি আসছি।
সুখ ফিরে এল তন্দুরী রুটী আর চিলি চিকেন নিয়ে।দীপশিখা বললেন,তুমিও রুটি খাবে।
আমার সব চলে,আমার জন্য চিন্তা কোরো না।
খাওয়া দাওয়ার পর তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছিয়ে দিয়ে খাটে উঠে পাশে শুয়ে পড়ল।শরীরের তাপ সুখকে স্পর্শ করে।সুখর বুকে দীপশিখা মুখ গুজে দিলেন।
চোখ মেলে দেখল সারা গা ঘামে চ্যাট চ্যাট করছে।ঘুমিয়ে পড়েছিল সুখ উঠে বসে দেখল মোমো ঘামছে।কপালে হাত দিয়ে দেখল ঠাণ্ডা জ্বর নেই এখন।একটা তোয়ালে দিয়ে গা মুছতে থাকে।মাইগুলো অনেক ঝুলে গেছে।চোখ মেলে দীপশিখা জিজ্ঞেস করলেন,কি হল?
জ্বর নেই আর।
খেয়াল হল আজ কলেজ যায়নি দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন,কটা বাজে গো?
সুখ দেওয়ালে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,পাচটা বাজতে চলল।
দীপশিখা ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলেন।
কি হল উঠলে কেন?
চা করতে হবে তো।
তুমি শুয়ে থাকো আমি চা করছি।
মনুকে জড়িয়ে ধরে গালে গাল ঘষে বললেন,না সোনা সারাদিন তো শুয়ে ছিলাম।বউয়ের কাজ বউকে করতে দাও।
খাট থেকে নেমে বাথরুমে গেলেন।আয়নায় পাকা চুল গুলো নজরে পড়ল।বাথরুম হতে বেরিয়ে বললেন,এই তুমি বেরোলে একটা কালার নিয়ে আসবে তো।সুখ খাট থেকে নেমে বারমুডা পরল।ভালোয় ভালোয় জ্বর সেরে গেল।চিন্তা হচ্ছিল আবার ডাক্তারের কাছে ছোটা ছুটি করতে না হয়।একটা ব্যাপার খুব অবাক লাগে মোমো তার চেয়ে বয়সে বড় তবু মোমোকে ছুয়ে থাকতে ভাল লাগে।এক এক সময় মনে হয় মোমো না থাকলে তার কি হবে। বিপরীতভাবে মোমোকে উচ্ছ্বসিত আনন্দময় দেখতে ভালো লাগে মোমো কষ্ট পেলে তারও কষ্ট হয়।একেই কি ভালোবাসা বলে?অনেক গল্প উপন্যাস পড়েছে সেখানে আছে অনেক প্রেমের কথা এখন সেসব কিছুটা উপলব্ধি করতে পারে।
তুমি আবার প্যাণ্ট পরেছো,কে তোমায় এখানে দেখছে?দীপশিখা দু কাপ চা নিয়ে ঢুকে বললেন।সুখ ডান হাতে চায়ের কাপ নিয়ে বাম হাতে দীপশিখা কাছে টেনে নিল।দীপশিখা খাটে উঠে আলহাদে সুখর উপর নিজেকে এলিয়ে দিলেন।
আমি তো একেবারে ফিট কাল তাহলে কলেজে যাই?
কালকের কথা কাল হবে।সুখ চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,কলেজে তোমার কে আছে যে কলেজ যাবার জন্য এত আগ্রহ?
হি-হি-হি হেসে উঠলেন দীপশিখা বললেন,একদিন পিছন পিছন গিয়ে দেখতেও তো পারো।
মাথাটা তুলে ঠোটে চুমু খেয়ে সুখ বলল,আমার বয়ে গেছে দেখতে।
তোমার বউ অন্য কারো সঙ্গে প্রেম করছে তাতে তোমার কিছু যায় আসেনা?
একটা গান আছে হাত বাধিলি পা বাধিলি মন বাধিবি কেমনে?মোমো যে যাবার সে যাবে ধরে বেধে কাউকে রাখা যায়না।মনকে বাধতে লাগে ভালোবাসা।
বেশ বলেছো তো ভালোবাসা?
অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসা ছাড়া আর কি আছে আমার দেবার মতো।
এই তো আবার কাদুনী শুরু হল।এসব কথা শুনলে আমার রাগ হয় তুমি জানো না।
ঠিক আছে আর বলবো না।
মনুর বুকে আঙ্গুল দিয়ে দাগ কাটতে কাটতে দীপুশিখা বললেন,আচ্ছে মনু কাউকে ভালোবাসা দিয়ে বাধলে সেও কি টের পায়?
অবশ্যই পায় মানুষ তো বটেই পশু পাখীও টের পায়।শোন একটা ঘটনা বলি--।
দাঁড়াও তোমার চা খাওয়া হয়ে গেছে কাপটা দাও।দীপশিখা কাপ গুলো নীচে রেখে এসে খাটে উঠে সুখর কোলে মাথা রেখে বললেন,এবার বল কি বলছিলে?
মোমোর চুলে বিলি কাটতে কাটতে উদাস সুরে বলতে থাকে,আমরা তখন পূব বাংলার মাহিদিয়া গ্রামে থাকতাম।আমার বাবা খুব গরীব পরিবারের মেধাবী ছাত্র অধ্যাপনা করতেন।আর মা ছিলেন বিত্তশালী পরিবারে শুনেছি দাদামশায় বাবার মেধার কথা বিবেচনা করেই মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন।বেশ ভালই কাটছিল আমাদের ছোট্ট সংসার। একটা কুকুর কোথা থেকে এসে অতিরিক্ত জুটেছিল।কুকুরটা ছিল কালো তাই ওকে নাম দিয়েছিলাম কালু।মা ওকে খুব ভালোবাস্তো।ওর খাবার জন্য আলাদা থালা ছিল।মা যখন পুকুরে স্নানে যেতো কালুও সংগে সঙ্গে যেতো।মায়ের খুব ন্যাওটা ছিল।গোলমাল শুরু হতে বাবা এদেশে আসার সিদ্ধান্ত নিল।বাড়ীঘর ছেড়ে গভীর রাতে রওনা হলাম জঙ্গলের পথ দিয়ে।কালুও আমাদের সঙ্গী হল।মা অনেকবার বলেছে কালু তুমি বাড়ী যাও আমাদের সঙ্গে এসো না।অবলা জীব হা করে চেয়ে থাকে আমরা হাটতে শুরু করলে সেও সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকে। তারপর আমরা যখন নদী অবধি পৌছে নৌকায় উঠলাম কালু পাড়ে বসে জুল জুল করে তাকিয়ে ছিল।মনে হয় চোখ দিয়ে জল পড়ছিল।অতরাতে এতটা পথ কালু কেন এসেছিল বলো?এরপরও তুমি বলবে কালু ভালবাসার বন্ধন টের পায়নি?
কালু একেবারে একা হয়ে গেল?মনুর কথা ভেবে দীপশিখার এক অজানা আশঙ্কায় চোখ ছল ছল করে উঠল।
কালুর জন্য তোমার খুব দুঃখ হচ্ছে?
যেদিন আমি থাকব না মনুর কি হবে ভাবলেই দিশাহারা বোধ করেন।দীপশিখা বললেন, আমি অন্য কথা ভাবছি।
আবার কি ভাবছো?
তারপর তোমরা কোথায় এলে?প্রসঙ্গ এড়িয়ে দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন।
সে তুমি চিনবে না।সীমান্তে একটা গ্রাম আছে পাইকপাড়া নাম।আমার এক মামা অনেক আগেই এদেশে এসে ওখানে থাকতো।আমরা ওখানে থাকি মামীর পছন্দ নয়।মামার চেষ্টাতেই গোপালনগরে এক ফালি জমি কিনে বাবা ছোটো একটা বাড়ি বানালেন।
গোপাল নগর শুনেই দীপশিখা সচকিত হন।পলির সেই নিরুদিষ্ট ছেলে মনু নয়তো?চোখ তুলে মনুর দিকে তাকালেন। চওড়া বুক ধারালো চিবুক পলি বলছিল টার্জানের মত চেহারা।স্তন বৃন্তে চুমকুড়ি দিতে থাকে সুখ।দীপশিখা শরীরে শিহরণ বোধ করেন।উঠে বসে বললেন, গোপালনগরের গল্প পরে শুনবো। রাত হল খাবে কি?
তোমাকে কিছু করতে হবে না।আমি বাইরে থেকে রুটি কিনে আনছি।
এবেলাও রুটি?নাক কুচকে বললেন দীপশিখা।
রাতে ভাত খাওয়া ঠিক হবে না সোনা।কাল ভাত খেও।
সুখ খাট হতে নেমে জামা প্যাণ্ট পরে বলল,চুপটি করে শুয়ে থাকবে আমি যাবো আর আসব।
এ্যাই শোণো চুলের জন্য একটা কালার আনবে মাথায় সাদা বেরিয়ে পড়ছে।
সুখ বেরিয়ে গেল।মনুর অতীত সম্পর্কে কিছুই জানতেন না দীপশিখা।এদেশে এসে ওরা গোপাল নগরে উঠেছিল।পলি যেভাবে বলছিল ওর কথা শুনে তেমন কিছু মনে হল না।তাহলে কি পলি অন্য কোনো ছেলের কথা বলছিল।রাতে শুয়ে আরো শোনা যাবে।যত বয়স হচ্ছে কেবলি বাড়ছে দুশ্চিন্তা।মনুটার যে কি হবে চাকরি বাকরি না হলেও তিনি যা রেখে যাবেন তাতে দিব্যি চলে যাবে। কিন্তু এত সহজ সরল ভয় হয় কোনো ঠগের পাল্লায় পড়বে নাতো।তার সময় শেষ হয়ে আসছে মনুর সামনে দীর্ঘ পথ ভেবে উতলা বোধ করেন দীপশিখা।এক্টু চা করা যাক ভেবে তিনি রান্না ঘরে গেলেন।
কিছুক্ষন পর সুখ ফিরে এসে মোমোকে রান্না ঘরে দেখে বলল,বড় অবাধ্য তুমি।খালি খালি কি কেউ বঊ পেটায়।
দীপশিখা হেসে বললেন,তুমিও পেটাও।
পেটালে ভালো লাগবে?
স্বামীর হাতে পেটানেরো আলাদা স্বাদ।
সুখর অবাক লাগে বলে,মেয়েদের গায়ে কি করে যে হাত তোলে ভেবে পাই না।
কি এনেছো?
তড়কা এনেছি বারবার চিকেন ভালো লাগে না।
ঠিক করেছো।হাত থেকে খাবারগুলো নিয়ে একপাশে রেখে দু-কাপ চা নিয়ে বললেন,চলো ঘরে চলো।
ঘরে এসে একটা কাপ টেবিলে রেখে খাটে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে আড়চোখে মনুকে লক্ষ্য করেন।সুখ জামা প্যাণ্ট বদলে বারমুডা পরে একটা সিগারেট ঘরালো।টারজানের মত প্রশস্ত বুক কপালের উপর এসে পড়েছে ঝাকড়া চুল। টেবিলের উপর থেকে চায়ের কাপ নিয়ে খাটে মোমোর মুখোমুখি বসল।
তোমাকে না জিজ্ঞেস করেই আমি ভগবানের কাছে একটা প্রার্থনা করেছি।দীপশিখা বললেন।
আমাকে জিজ্ঞেস করার কি আছে?
প্রার্থনাটা কি আগে শোনো।
সিগারেটে টান দিতে গিয়ে থেমে সুখ মোমোর দিকে কৌতূহলী চোখে তাকাল।
ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছি,পরজন্মে আমি যেন মনুকে স্বামী হিসেবে পাই।
সুখ হেসে সিগারেটে টান দিল।
হাসছো?আমাকে ভাল না বাসলে বলো আমি প্রার্থনা ফিরিয়ে নেবো।অভিমানী গলায় বললেন দীপশিখা।
সিগারেটে শেষ টান দিয়ে নিঃশেষিত চায়ের কাপে ফেলে সুখ এগিয়ে গিয়ে মোমোকে বুকে চেপে ধরে বলল,সোনা তোমার বয়স হয়েছে দীর্ঘকাল ধরে তুমি মেয়েদের শিক্ষা দিচ্ছো এইসব কথা তোমার মুখে শুনলে মজা লাগে।
মজার কি হল?আমার ভালোবাসার কথা বলতে পারবো না?
দেখো তুমি পরের জন্মে অধ্যাপিকাই হবে কিম্বা আমি হয়তো কোনো ফেরীওলা হয়ে জন্মাতে পারি--।
তুমি গরীব হও কি বড়লোক হও কানা খোড়া লুলো ল্যাংড়া হলেও আমি তোমাকে চাই।
মোমোর দু-গাল ধরে অবাক হয়ে মোমোর দিকে তাকিয়ে থাকে।লজ্জায় দীপশিখা চোখ নামিয়ে নিলেন।মোমোর মাথা কাধে রেখে সুখ ধরা গলায় বলতে থকে,তুমি আমাকে এত ভালোবাসো?দেখো সোনা আমি ভালোবাসা-টাসা বুঝিনা আমি বুঝি তোমাকে আনন্দ দিতে পারলে আমার আনন্দ হয় তুমি ব্যথা পেলে আমার কষ্ট হয় অন্য কেউ তোমাকে ব্যাকা নজরে দেখলে কিম্বা স্পর্শ করলে আমার মাথায় আগুণ জ্বলে তোমাকে খুশি করতে আমি সব করতে পারি--।
মুখ তুলে দীপশিখা বললেন,ওরে বুদ্ধুরাম একেই ভালোবাসা বলে।মনুর গলা ধরে ঠোটে ঠোট চেপে ধরলেন।তারপর বললেন,তুমি আলাদা নও তাই তোমার সামনে উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াতে আমার লজ্জা হয় না বুঝেছো হাদারাম?চলো কি খাবার এনেছো খেয়ে নিই।দেখেছো রাত কত হল?
দীপশিখা রান্না ঘরে গিয়ে দুটো প্লেটে তন্দুরি রুটি একটা প্লেটে মিষ্টি সাজিয়ে টেবিলে এনে রাখলেন।নিজেকে বেশ সুস্থ বোধ করছেন।এক বেলাতেই জ্বর চলে যাবে ভাবেন নি। মনে হচ্ছে কাল কলেজ যাওয়া যাবে।
খেতে খেতে দীপশিখা আড়চোখে দেখলেন,মনু রুটি চিবোচ্ছে।বেচারী মোমোর জন্য তাকেও রুটি চিবোতে হচ্ছে।আজ রাতে চুদবে বলে মনে হয় না।
পিসিমণিকে মাঝে মাঝে ফোন করলেও একটা অভিমান দানা বেধেছিল মনে।দাদার এত খবর নিচ্ছে অথচ দাদাকে একবার এসে দেখে যাবার সময় হয় না।কলকাতা হতে গোপালনগর ঘণ্টা দেড়েকের পথ। মামণির কাছে শোনার পর পিসিমণির প্রতি সেই অভিমাণ বাষ্পের মতো উবে যায়।
বছর পচিশ ত্রিশ আগের কথা।দাদুকে স্পষ্ট মনে নেই,খুবই ছোটো তখন। দাদু নাকি বলেছিল চৌকাঠের বাইরে পা রাখলে আর এপাশে আসা যাবে না। নিষেধ সত্বেও কলকাতায় চলে গেছিল মোমো।দাদুর মুখের উপর কথা বলে এমন কেউ ছিল না।তারপর একদিন যখন বিয়ের খবর পৌছালো দাদু ঘোষণা করলেন,শোনো দীবা বৌমা তুমিও শোনো, আমি দীপাকে ত্যাজ্য করলাম। মনে রাখবে আমার কথার অন্যথা হলে আমার যেন নরকে ঠাই হয়।আগেকার দিনের মানুষগুলো একটু গোয়ার টাইপ হয়।পাঞ্চালী এত কথা জানতো না।জানার পর ভারাক্রান্ত হয় মন।
পিয়ালী মিত্র স্বামীর মাথা কোলে তুলে নিয়ে মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে জিজ্ঞেস করলেন,এখন কেমন লাগছে?
ড মিত্র হাসলেন বললেন,ভালো।পলি কোথায়?
নীচে চেম্বারে বসেছে।
কবে যাবে কিছু বলেছে?
বলছিল তো আজই যাবে।
মেয়েটাকে নিয়েই চিন্তা।ড মিত্রের গলায় উদবেগ।
রোগী দেখা শেষ হতে দরজা বন্ধ করে উপরে উঠে এল পাঞ্চালী।বাপির ঘরে উকি দিয়ে দেখল চোখ বুজে শুয়ে আছেন।ধীর পায়ে ঘরে ঢুকে বাপির মাথার কাছে বসতে ড মিত্র চোখ খুলে তাকালেন।
রোগী দেখা হল?
কি করব কেউ শোনে না।অঞ্চলে কাছাকাছি ডাক্তারও নেই.। লাজুক গলায় বলল পাঞ্চালী।
তোমার মা বলছিল তুমি আজ চলে যাবে।
হ্যা আমার ছুটি তো শেষ।তোমার এখন তো কোনো সমস্যা নেই?
বয়স হয়েছে শ্বাস নিতে একটু কষ্ট হয় এই যা।আচ্ছা মা কলকাতা থেকে যে ছেলেটি এসেছিল কি যেন নাম?
সৌমিত্র সাহা আমার সঙ্গে পাস করেছে।
ওকে নিয়ে কিছু ভাবছো?
মানে?পাঞ্চালী অবাক।
কলকাতা থেকে একেবারে গোপালনগরে চলে এল--।
শোনো বাপি ও কেন এল আর কিছু ভাবছে কিনা আমি বলতে পারব না।আমার এখন একটাই চিন্তা যেটা ধরেছি সেটা শেষ করা।
তুমি পাস করেছো আর এই হাউসস্টাফ গিরি কয়েকমাস গেলেই শেষ হবে।আমার শরীরের যা অবস্থা তুমি ডাক্তার তোমাকে তো বুঝিয়ে বলতে হবে না।
বাপি তুমি অত চিন্তা কোরো না।এটা শেষ হলেই ভাবা যাবে।তোমার স্নান হয়েছে?
পিয়ালী মিত্র ভাত নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বল্লেন,হ্যা হয়েছে এবার তুমি স্নান করে নেও।
একটা টুলের উপর ভাতের থালা নামিয়ে স্বামীকে ধরে তুলে বসিয়ে দিলেন।ড মিত্র বললেন,যা মা স্নান করে খেয়ে নে তোকে তো আবার বেরোতে হবে।
ডা মিত্র এখন তেল মশলা এড়িয়ে সব সেদ্ধ খান।পিয়ালি মিত্র ভাত মেখে দিলেন।ইদানীং ডা মিত্রের হাত কাপে অথচ এক সময় এই হাত দিয়ে কত অপারেশন করেছেন।
পলির সঙ্গে কথা বললাম।ওই ছেলেটার সঙ্গে তেমন কিছু না।ড মিত্র বললেন।
আমি তো জানি,আমার মেয়েকে আমি চিনি না।আর কিছু বলল?
বলল পড়া শেষ করে ভাববে।
মেয়ে যেভাবে এখানে প্রাকটিশ শুরু করেছে ভেবে দুশ্চিন্তা হয়।তার ইচ্ছে মেয়ের বিয়ে হোক কলকাতায়।তার মত অবস্থা যেন না হয়।গ্রামের বাড়ীর জন্য ছেলেটা দেশে ফিরল না।কলকাতায় বাড়ী হলে খোকা হয়তো ফিরে আসতো। একটা দীর্ঘশ্বাস মোচন করলেন।
পিয়ালী দত্ত কলকাতার শোভাবাজার অঞ্চলে থাকতেন।বাবা মা তিন ভাই এক বোন--ছয় জনের সংসার।পিয়ালী ছিলেন ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়।মধ্যবিত্ত পরিবার পিয়ালির পড়াশুনা গ্রাজুয়েশন।বাবা ছিলেন সরকারী কর্মচারী সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী।দাদা বিএ পাস করে এদিক-ওদিক চাকরির চেষ্টা করছে।বাকী দুই ভাইয়ের একজন কলেজে একজন কলেজে পড়ে। সেদিনটার কথা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠে মন।বাবা অন্যান্য দিনের মত অফিস গেছেন।
ফিরলেন ফুলে সজ্জিত ম্যাটাডোর ভ্যানে।অফিসে হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল চিকিৎসার সুযোগটুকু নাদিয়ে চলে গেলেন।অফিস কলিগদের সহায়তায় বাবার জায়গায় দাদা চাকরি পেল সেই দুর্দিনে এই এক বড় সান্ত্বনা।দাদা বড়ভাইয়ের কর্তব্য করে গেছে।ভাইদের পড়িয়েছে বোনের বিয়ে দিয়েছে।অফিসের এক কলিগের মাধ্যমে ডাক্তার পাত্রের খবর এল।গোপালনগর শুনে একটা দ্বিধারভাব ছিল।মেয়ে পছন্দ হলে তাদের কোনো দাবীদাওয়া নেই।একদিকে পাত্র অজ পাড়াগায়ে থাকে অন্যদিকে পাত্র পক্ষের কোনো দাবীদাওয়া নেই এবং বিয়ের পর পাত্র বিদেশ যাবে এই দোটানার মধ্যে বিশেষ করে দাদার কথা ভেবে পিয়ালী দত্ত সম্মতি জানিয়েছিল।বিয়ের দশ-বারো দিন পর ও বিদেশ চলে গেল।পেটে তখন খোকা।খোকার জন্ম হয়েছে কলকাতায় মামার বাড়ীতে।কেবলি আশঙ্কা পলির যেন এই অবস্থা না হয়।
দীপশিখা কলেজে বেরিয়ে গেলেন,বাসায় মনু একা।ওর আজ আলিপুরে গিয়ে সিএসসির ফর্ম আনতে যাবার কথা।চাকরি পেলে কি মনুর মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে?মনু যদি চলে যায় খারাপ লাগলেও দীপশিখা কিছু মনে করবেন না। এক তরুণ সম্ভাবনাময় জীবনকে দীপশিখা স্বার্থপরের মতো নষ্ট হতে দিতে চান না।তার সময় ঘনিয়ে এল মনুর সামনে দীর্ঘ পথ। শুক্লা মেটারনিটি লিভ নিয়েছে কলেজে আসছে না।কবে শুনবেন শুক্লা মা হয়েছে।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। কলেজে ঢুকে হাজিরা খাতায় সই করে ক্লাসে চলে গেলেন।একের পর এক ক্লাস করতে থাকেন।বেয়ারা এক সময় খবর দিল ক্লাস শেষ হলে প্রিসিপাল ম্যামের সঙ্গে দেখা করে যাবেন।
যখন ক্লাস থাকে না স্টাফ রুমে বসতে হয়।কানে আসে অন্যান্যদের আলোচনার টুকরো টুকরো শব্দ।সবাই উচ্চ শিক্ষিত অবাক লাগে এদের মুখে পরচর্চা শুনে।বসে শোনা ছাড়া উপায় নেই তাই বসতে হয়।প্রিন্সিপাল ম্যাম কেন ডাকলেন কে জানে।শুক্লা থাকলে একজন কথা বলার সঙ্গী থাকতো।মনু এতক্ষনে হয়তো ফিরে এসেছে।ছুটির পর প্রিসিপালের দরজায় গিয়ে বললেন,ম্যাম আপনি ডেকেছেন?
হ্যা আসুন,বসুন।
দীপশিখা বসতে উনি একটা কাগজ এগিয়ে দিলেন।ইংরেজীতে লেখা Madam, did you know that your college sweetheart Deepshikha mam indulging in immoral life with a boy.এটুকু পড়েই দীপশিখার কান লাল হয়।চোখ তুলে তাকাতে দেখলেন প্রিসিপাল ম্যাম মুচকি হাসছেন।বললেন,দেখুন মিস মিত্র আমাদের সমাজে একা মেয়েদের জীবন যাপন বেশ কঠিণ এই ধরণের নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়।বিধবা বা ডিভোর্সি মেয়েরা যেন সস্তা তাদের নিয়ে যা খুশি তাই করা যায়।চিঠিটা এসেছে তাই আপনাকে দিলাম। ইচ্ছে হলে পুলিশে ইনফর্ম করতে পারেন আমি ব্যাপারটা ইগনোর করেছি।
আমি আসি ম্যাম।
একটু সাবধানে থাকবেন।
দীপশিখা চিঠীটা মুঠোয় চেপে বেরিয়ে এলেন।বুঝতে পারেন ফেউ লেগেছে।অবন্তীর কথা মনে পড়লো।মেয়েটাকে প্রথম থেকেই সুবিধের মনে হয়নি।এসেই মনুর ঘরে উকিঝুকি।বাস আসতে উঠে পড়লেন বাসে।দীপশিখার চোয়াল শক্ত হয় প্রয়োজনে প্রকাশ্যে মনুকে বৈধ স্বামী হিসেবে ঘোষণা করবেন।
সুখ বাসায় ফিরে জামা প্যাণ্ট খুলে বারমুডা পরল।চোখে মুখে জল দিয়ে বসার ঘরে বসে সিগারেট ধরিয়ে সিএসসি হতে আনা ফর্মটায় চোখ বোলাতে থাকে। আজ একটা বড় কাজ হয়েছে।শুনেছে কদিন পর রেজাল্ট বেরোবে।ফর্ম ফিল আপ করতে রেজাল্ট দরকার। পাস করে যাবে এ বিশ্বাস আছে।কলিং বেলের শব্দ হতে অবাক হয়।মোমো এত তাড়াতাড়ি ফিরে এল?যাক ভালই হয়েছে একটু চা হলে ভালো হয়।আবার বেল বাজে।মোমোর কাছে তো চাবি আছে। উঠে দরজা খুলতে গেল।
দরজা খুলে অবাক সামনে দাঁড়িয়ে অবন্তী।সুখ বলল,ম্যাডাম তো এত তাড়াতাড়ি ফেরেনা।
তাহলে ভিতরে বসে অপেক্ষা করি?
অবন্তীর চোখে দুষ্টু হাসি সুখ সতর্ক হয় বলে,আপনি ঘণ্টা খানেক পরে আসুন।উনি এসে একটু বিশ্রাম করবেন।
অবন্তীর মুখ কালো হয়,সুখ মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল।আসার সময় দেখেছিল জানলায় দাঁড়িয়ে আছে।মনে হয় তাকে দেখেই এসেছে।লেখাপড়ায় ভাল মেয়েরাই দুষ্টু হয়।আগেও একদিন এরকম এসেছিল। অবন্তীর দোষ নেই ও জানে না সে ম্যারেড।সুখ সোফায় বসে প্রসপেক্টাসে চোখ বোলাতে থাকে।
কিছু সময় পর আবার বেল বাজে।ঘড়ি দেখল আধ ঘণ্টা হয়েছে ওকে বলেছে ঘণ্টা খানেক পরে আসতে।মেয়েটাকে এক্টূ কড়া করে বলা দরকার।উঠে দরজা খুলে দেখল অবন্তী নয় মোমো দাঁড়িয়ে চোখে মুখে চিন্তার আকিবুকি।
কিছু হয়েছে?
কি হবে?তুমি গেছিলে?
হ্যা একটু আগে ফিরলাম। ফর্ম প্রস্পেক্টাস সব নিয়ে এসেছি।
এত দেরী হল?
তোমাকে জিজ্ঞেস না করে আজ একটা কাজ করেছি।
দীপশিখা ঘুরে দাঁড়িয়ে ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করেন,উর্মিলা ঘোষের সঙ্গে দেখা হয়েছিল?
ঝাঃ তুমি না।তোমার এই মেয়েলী স্বভাব গেল না।
আমি মেয়ে তো স্বভাব কেমন হবে?তোমাকে যা জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দাও।
তোমাকে বলা হয়নি ইউজি আজ প্রায় নমাস আগে চাকরি ছেড়ে স্বামীর কাছে বিদেশ চলে গেছেন।
তাহলে কি করেছো আজ?
আমাদের স্যার ডিসি আমাকে থিসিস করাতে রাজী হয়েছেন।আজ নাম রেজিস্ট্রি করলাম।
দীপশিখা ঘরে গিয়ে পোশাক বদলায়।সুখ দরজায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করে মোমোকে কেমন চিন্তিত লাগছে।
ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন হুকটা খুলে দেও।
সুখ ভিতরে গিয়ে জামার পিছনে হুকটা খুলে দিল।ঘোড়া দেখলে খোড়া।এখন সব তাকে করতে হবে।বিয়ের আগে এসব কে করতো।তখন তো নিজে নিজেই সব করতে।অবন্তীর এসেছিল সে কথাটা বলে না।
দীপশিখা জামা পেটিকোট খুলে নিজেকে অনাবৃত করে বললেন,কাধটা একটু টিপে দেও।আমারও একসময় থিসিস করার খুব ইচ্ছে ছিল।
কাধ টিপতে টিপতে সুখ বলল,তোমার ছাত্রী আসার সময় হয়ে গেছে।জামাটা পরে নেও।
ওকে আর পড়াবো না।অনেক পড়িয়েছি এবার বাড়ীতেই পড়ুক।তুমি বলো আমি আমার স্বামীর সঙ্গে যা খুশি করতে পারি না?তাতে কার কি বলার আছে?
মোমোকে জড়িয়ে ধরে সুখ বলল,ঠিকই তো।কেন কেউ কিছু বলেছে সোনা?
কে বলবে?লোকে বলে দীপশিখা মিত্র কিম্বা মিস মিত্র কেউ আমাকে ম্যাম বলে?
সুখ বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে বলল, তোমার ছাত্রীরা তোমাকে তো ম্যাম বলবে না?
এভাবে চেপে ধরে রাখলে মনে হয় সারাদিনের ক্লান্তি কেউ যেন ব্লটিং পেপারের মতো শুষে নিচ্ছে।দীপশিখা বললেন,ছাড়ো এবার চা করতে হবে তো।ওয়ারড্রোব হতে জামাটা দাও।
অবন্তী আসার দিন শাড়ি পরেন আজ হাটু অবধি ঝুল ম্যাক্সি গায়ে দীপশিখা রান্নাঘরে চলে গেলেন। দীপশিখাম্যাম কথাটায় তার সন্দেহ হয়েছে।মানুষের ভালো করতে নেই।চা করে এক কাপ মনুকে দিয়ে গেলেন।
মোমো বোসো ম্যাসাজ করে দিই।
এখন বসলে হবে না।রাতে যত ইচ্ছে কোরো।
সুখ চায়ের কাপ নিয়ে লাইব্রেরীতে গিয়ে বসল।দীপশিখা চা খেতে খেতে ভাত চাপিয়ে দিলেন।ফোন বাজতে দেখলেন পলি।কানে লাগিয়ে বললেন,বল।
আমি হস্টেলে ফিরে এসেছি।
দাদা কেমন আছে?
মোটামুটি এমনি কিছু না বয়স হলে যা হয়।এখন দরকার নার্সিং একা মামণির পক্ষে--।
একা কেন আর সব কি করছে?
কাজের লোক দিয়ে সব হয়?আচ্ছা মোমো তোমার সেই সিকিউরিটি গার্ডের পরীক্ষা কেমন হল?
দীপশিখা বুঝতে পারেন ফোন করার উদ্দেশ্য কি?মৃদু হেসে বললেন,বলছে তো ভালই হয়েছে?
ছেলেটা আগে কোথায় থাকতো?
কি ব্যাপার বলতো ওকে নিয়ে তোর এত চিন্তা কেন?
ওকে নিয়ে চিন্তা করতে বয়ে গেছে।আসলে আমার সঙ্গে একটা ছেলে পড়তো লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিল তোমাকে তো আগে বলেছি।জানো মোমো কোথায় যে চলে গেল--খুব খারাপ লাগে---এত ব্রিলিয়াণ্ট কেরিয়ার।
তোর কি ওকে খুব পছন্দ ছিল?
ধ্যেৎ তোমার ঐ এককথা।ভালো ছেলেকে সকলেই পছন্দ করে।
তোকেও কি ওর পছন্দ?
জানি না যাও।একটু থেমে বলল, ছেলেটা একটু ইডিয়ট টাইপ।আমার প্রতি সর্বক্ষন নজর ছিল।
বলছিস ইডিয়ট টাইপ আবার তোকে পছন্দ করত.আমি তো তোর কথা কিছু বুঝতে পারছি না।
পাঞ্চালীর মনে পড়ল একবার সিধুকে কি করেছিল।বলল,তোমার বুঝে দরকার নেই।কোথায় থাকতো বলো।
অত কিছু আমি জানি না।
জানো না, না বলবে না।থাক বলার দরকার নেই রাখছি।ফোন কেটে দিল।
দীপশিখা হাসলেন।এত যখন আগ্রহ এতকাল পরেও মনে রেখেছে ঠোটে ঠোট চেপে বিষয়টা বুঝতে চেষ্টা করেন।মনুর আগের জীবন সম্পর্কে বাস্তবিকই কিছু জানেন না।যেভাবে ওর সঙ্গে যোগাযোগ তাতে জানার আগ্রহও বোধ করেনি।
রাত হয়েছে খাবার টেবিলে খেতে বসেছেন।মনু চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে দীপশিখার মনে প্রিসিপালের দেওয়া চিঠির লেখাগুলো ঘুরঘুর করছে, কেউ কোনো কথা বলে না।অম্বিকার আজ পড়তে আসার কথা কিন্তু আসেনি।দীপশিখার কপালে ভাজ পড়ে।
চাকরি পেলে কি করবে কিছু ভেবেছো?এক সময় দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন।
দাঁড়াও আগে পাই।
আজ না হোক কাল একদিন তো পাবে।
পেলে চাকরি করবো।তোমার জন্য কিছু করতে পারিনি সেই আক্ষেপ মেটাবো।
আমার কোনো আক্ষেপ নেই তুমি যা দিয়েছো তাতেই আমি খুশী। চাকরি করে থিসিস করতে অসুবিধে হবে না?
একটু বেশী পরিশ্রম করতে হবে।সবটা স্যারের উপর নির্ভর করছে।
জানলা দিয়ে নরম রোদ এসে পড়েছে বিছানায়।দীপশিখা চোখ মেলে তাকালেন।চোখ নামিয়ে দেখলেন মাকড়সার মত জাপটে শুয়ে আছে মনু।আলগোছে কোমরের উপর থেকে পা-টা সরিয়ে দিলেন।তারপর বুক হতে আরেকটা হাত সরাতে চিত হয়ে গেল মনু।নিজের দিকে চোখ বুলিয়ে উঠে বসলেন।দুই উরুসন্ধিতে ইঞ্চি পাচেক বাড়াটা নেতিয়ে পড়ে আছে।বুদ্ধের মত শান্ত নিরীহ মুখটা দেখে বুকের মধ্যে আকুলি বিকুলি করে ওঠে।এমন একটা ছেলে যদি তার থাকতো।ওকে এখন ডাকার দরকার নেই। চা করে ডাকলেই হবে।দীপশিখা ঘেষটে ঘেষটে বিছানা থেকে নামলেন।সারা গায়ে ব্যথা গুণ্ডাটা কাল রাতে এমন চোদান চুদেছে এখনো সারা শরীরে তার রেশ লেগে আছে।ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে পাস করেছে মনু।সেই আনন্দ উজাড় করে তার মধ্যে ঢেলে দিয়েছে মনু।উষ্ণবীর্যে উপচে পড়ছিল গুদ।যদি বছর খানেক আগেও হতো তাহলে তিনিও শুক্লার মতো মেটারনিটি লিভ নিতে পারতেন।
দীপশিখা খাট থেকে নেমে গায়ে একটা জামা চাপিয়ে নীচু হয়ে মনুর ঠোটে চুমু খেলেন।তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে বাথরুমে গেলেন।
সুখর ঘুম ভাঙ্গতে চোখ মেলে তাকিয়ে সময়টা বুঝতে চেষ্টা করে।সকাল হয়েছে,পাশে তাকিয়ে দেখল মোমো নেই।মনে পড়ল কালকের কথা।রেজাল্ট নিয়ে ডিসিকে প্রণাম করতে গেছিল।স্যার কথা দিয়েছেন থিসিস করাবেন।তারপর বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে ফিরতে একটু দেরী হয়েছিল।দরজা খুলে মোমো বলল,বয়স্কা মহিলার প্রতি আর তেমন আকর্ষণ বোধ হয় না তাই না?
সুখর রাগ হলেও কিছু বলেনি।ইদানীং লক্ষ্য করেছে মোমো মাঝে মাঝে এরকম খোটা দেয়।দাড়াও রাতে তোমায় বোঝাচ্ছি মজা।সুখ ভিতরে ঢুকে গেল।সীপশিখা বললেন,কি হল কিছু উত্তর দিলে নাতো?
আজেবাজে কথার কি উত্তর দেবো।
এত রাত হল কেন সেটা বলবে তো।
তুমি বলতে দিলে তো বলব।আসতে না আসতে উদ্ভট কথা--।
দীপশিখা হেসে ফেললেন বললেন,আচ্ছা বাবা আমার ভুল হয়েছে।
সুখ চোখ তুলে অপলক দৃষ্টিতে মোমোকে দেখে তারপর বলল,মোমো আমার রেজাল্ট বেরিয়েছে আমি ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছি।
কথাটা শুনে স্থির দৃষ্টিতে দীপশিখা মনুর দিকে তাকিয়ে থাকেন,সুখ অস্বস্তি বোধ করে।দীপশিখা বললেন,তোমার রেজাল্ট বেরিয়েছে দুনিয়ার লোক জেনে গেল আর এতক্ষনে মোমোকে জানাবার সময় হল?
মোমো রাগ কোরোনা শোনো স্যারকে জানাতে গেছিলাম তারপর ওরা ধরল এতদিন পরে দেখা হল--।
একটা ফোন করে জানাতে কি হয়েছিল?আমি এদিকে কলেজ থেকে ফিরে এঘর ওঘর করছি--/
সুখ ঝাপিয়ে পা-দুটো জড়িয়ে ধরে বলল,খেয়াল ছিল না মোমো তুমি ছাড়া আমার কে আছে বলো।
থাক-থাক হয়েছে পা ছাড়ো আমার আর পাপের বোঝা বাড়িও না।দীপশিখা দুহাতে মনুকে তুলে জড়িয়ে ধরে বললেন,খালি নাটক---এখন চা খাবে নাকি ভাত খাবে--।
রান্না ঘরে বাসন পড়ার শব্দ হতে তড়াক করে বিছানা থেকে নেমে সুখ বলল,কি হল?
জামা প্যাণ্ট নাপরেই ছুটে রান্না ঘরে গিয়ে দেখল মোমো মেঝেতে পড়ে আছে জামা ভিজে গেছে।টেবিল ধরে ওঠার চেষ্টা করছে।
একী পড়লে কি করে?
দীপশিখা চিঁ-চিঁ করে বলল,আমি উঠতে পারছি না আমাকে তোলো।
সুখ হাত বাড়িয়ে হাতটা ধরতে দেখল গরম,কপালে গালে হাত দিয়ে বুঝতে পারে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। বলল,একী তোমার তো জ্বর।
ও কিছু না একটা ক্যালপোল খেলে ঠিক হয়ে যাবে।তাড়াতাড়ি তোলো আমার এখনো চা করা হয়নি।
চা করাচ্ছি।মোমোর পাছার নীচে হাতে দিয়ে কোলে তুলে নিল সুখ।শোবার ঘরে বিছানায় এনে জামা খুলে দিয়ে একটা পরিস্কার জামা পরাতে গেলে দীপশিখা বললেন,জামা লাগবে না তুমি চাদরটা আমার গায়ে চাপা দিয়ে দাও।
গায়ে চাদর চাপা দিয়ে সুখ জামা প্যাণ্ট পরে বেরোবার জন্য তৈরী হয়ে বলল,একদম চুপটি করে শুয়ে থাকবে অসভ্যতা করলে ভালো হবে না।
কি করবে মারবে?
দরকারে মারতেও পারি।সুখ বেরিয়ে গেল।
দীপশিখা মুখ টিপে হাসেন।মোমোর গায়ে হাত তুলবে মনু ভেবে বেশ মজা লাগে।সামান্য জ্বর হয়েছে দেখে এমন শুরু করেছে ও আবার মারবে।
সুখ নীচে নেমে এল।প্যারাসিটামল কিম্বা ক্যালপল কিছু একটা হলেই হবে।গেট দিয়ে বেরোতে যাবে সামনে এসে দাড়ালো অম্বিকা।
কোথায় যাচ্ছেন?
একটু দোকানে যাচ্ছি।আপনি কলেজ যান নি?
মুচকি হেসে অম্বিকা বলল,শরীর খারাপ।
ভদ্রতার খাতিরে বলল,আপনি তো আর পড়তে গেলেন না?
ম্যামের কাছে পড়বো না।অবশ্য আপনি পড়ালে যেতে পারি।
সুখ হেসে রাস্তার দিকে পা বাড়ায়।অম্বিকা পিছন থেকে মৃদু স্বরে বলল,বোকাচোদা।
ওষূধের দোকান থেকে এক পাতা প্যারাসিটামল কিনে দ্রুত উপরে উঠে এল।ঘরে ঢুকে চমকে উঠলো, আপাদ মস্তক ঢেকে শুয়ে আছে মোমো।দ্রুত মুখ থেকে চাদর সরিয়ে দিয়ে বলল,এভাবে কেউ মুখ ঢেকে শোয়?
দীপশিখা মজা পেয়ে হাসলেন।সুখ গেলাসে জল এনে একটা ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে বলল,শুয়ে থাকো আমি চা করে আনছি।
আজ কি না খেয়ে কলেজ যাবো?
তোমায় কলেজ যাওয়াচ্ছি।চুপচাপ শুয়ে বিশ্রাম করো।
সুখ চলে যেতে দীপশিখার কপোল গড়িয়ে জল পড়ে।দীপশিখা চাদর দিয়ে চোখের জল মুছলেন। এত যত্ন এত আদর এত ভালবাসা তার অদৃষ্টে লেখা ছিল স্বপ্নেও ভাবেন নি।মনে হয় সরল সাদাসিধে ছেলেটার ভালবাসার সুযোগ নিচ্ছেন নাতো?
নেও এবার উঠে বোসো। চায়ের কাপ নামিয়ে মোমোকে ধরে তুলে পিছনে বালিশ বসিয়ে দিল।তারপর চায়ের কাপ হাতে ধরিয়ে বলল,অসুবিধে হচ্ছে নাতো?
দীপশিখা ধীরে ধীরে চা পান করতে থাকেন।চা শেষ হলে বললেন,তুমি আমার পাশে একটু শোওনা।
শোবো এখন না অনেক কাজ আছে।জানো মোমো ওষুধ আনতে যখন নীচে গেছিলাম তোমার ছাত্রীর সঙ্গে দেখা।
ছাত্রী কে অম্বিকা?ওর সঙ্গে তোমার কি দরকার?
ও বলছিল আর পড়বে না।
হু-উ-ম বুঝেছি।
কি হয়েছে?
আমাদের প্রিন্সিপালের কাছে আমার নামে একটা উড়ো চিঠি এসেছে।আজ প্রায় চব্বিশ বছরের উপর শিক্ষকতা করছি এরকম কখনো হয় নি।
আমরা স্বামী-স্ত্রী যা খুশি করব মোমোর এমন ক্ষেপে যাবার কারণটা স্পষ্ট হয়।এর পিছনে এই মেয়েটা নেই তো?সুখর মনে চিন্তাটা ভেসে উঠল।প্রথম দিন থেকেই মেয়েটাকে তার ভালো লাগেনি।এক এক সময় মনে হয় মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু।সুখ রান্না ঘরে গিয়ে জল গরম করে নিয়ে এল।বাথরুম হতে একবালতী জল নিয়ে এসে দীপশিখার মাথা ধুইয়ে দিল। তারপর গরম জলে সারা শরীর স্পঞ্জ করতে থাকে।যোনীর ভিতর থেকে পাপড়ির মত খুদ্রোষ্ঠ বেরিয়ে এসেছে।সুখ দু-আঙ্গুলে ধরে নেড়ে বলল,দেখো কি অবস্থা?
দীপশিখা লাজুক হেসে বললেন,কে করেছে এমন তো আগে ছিল না।
চাদরে ঢেকে দিয়ে বলল,শুয়ে থাকো আমি আসছি।
সুখ ফিরে এল তন্দুরী রুটী আর চিলি চিকেন নিয়ে।দীপশিখা বললেন,তুমিও রুটি খাবে।
আমার সব চলে,আমার জন্য চিন্তা কোরো না।
খাওয়া দাওয়ার পর তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছিয়ে দিয়ে খাটে উঠে পাশে শুয়ে পড়ল।শরীরের তাপ সুখকে স্পর্শ করে।সুখর বুকে দীপশিখা মুখ গুজে দিলেন।
চোখ মেলে দেখল সারা গা ঘামে চ্যাট চ্যাট করছে।ঘুমিয়ে পড়েছিল সুখ উঠে বসে দেখল মোমো ঘামছে।কপালে হাত দিয়ে দেখল ঠাণ্ডা জ্বর নেই এখন।একটা তোয়ালে দিয়ে গা মুছতে থাকে।মাইগুলো অনেক ঝুলে গেছে।চোখ মেলে দীপশিখা জিজ্ঞেস করলেন,কি হল?
জ্বর নেই আর।
খেয়াল হল আজ কলেজ যায়নি দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন,কটা বাজে গো?
সুখ দেওয়ালে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,পাচটা বাজতে চলল।
দীপশিখা ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলেন।
কি হল উঠলে কেন?
চা করতে হবে তো।
তুমি শুয়ে থাকো আমি চা করছি।
মনুকে জড়িয়ে ধরে গালে গাল ঘষে বললেন,না সোনা সারাদিন তো শুয়ে ছিলাম।বউয়ের কাজ বউকে করতে দাও।
খাট থেকে নেমে বাথরুমে গেলেন।আয়নায় পাকা চুল গুলো নজরে পড়ল।বাথরুম হতে বেরিয়ে বললেন,এই তুমি বেরোলে একটা কালার নিয়ে আসবে তো।সুখ খাট থেকে নেমে বারমুডা পরল।ভালোয় ভালোয় জ্বর সেরে গেল।চিন্তা হচ্ছিল আবার ডাক্তারের কাছে ছোটা ছুটি করতে না হয়।একটা ব্যাপার খুব অবাক লাগে মোমো তার চেয়ে বয়সে বড় তবু মোমোকে ছুয়ে থাকতে ভাল লাগে।এক এক সময় মনে হয় মোমো না থাকলে তার কি হবে। বিপরীতভাবে মোমোকে উচ্ছ্বসিত আনন্দময় দেখতে ভালো লাগে মোমো কষ্ট পেলে তারও কষ্ট হয়।একেই কি ভালোবাসা বলে?অনেক গল্প উপন্যাস পড়েছে সেখানে আছে অনেক প্রেমের কথা এখন সেসব কিছুটা উপলব্ধি করতে পারে।
তুমি আবার প্যাণ্ট পরেছো,কে তোমায় এখানে দেখছে?দীপশিখা দু কাপ চা নিয়ে ঢুকে বললেন।সুখ ডান হাতে চায়ের কাপ নিয়ে বাম হাতে দীপশিখা কাছে টেনে নিল।দীপশিখা খাটে উঠে আলহাদে সুখর উপর নিজেকে এলিয়ে দিলেন।
আমি তো একেবারে ফিট কাল তাহলে কলেজে যাই?
কালকের কথা কাল হবে।সুখ চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,কলেজে তোমার কে আছে যে কলেজ যাবার জন্য এত আগ্রহ?
হি-হি-হি হেসে উঠলেন দীপশিখা বললেন,একদিন পিছন পিছন গিয়ে দেখতেও তো পারো।
মাথাটা তুলে ঠোটে চুমু খেয়ে সুখ বলল,আমার বয়ে গেছে দেখতে।
তোমার বউ অন্য কারো সঙ্গে প্রেম করছে তাতে তোমার কিছু যায় আসেনা?
একটা গান আছে হাত বাধিলি পা বাধিলি মন বাধিবি কেমনে?মোমো যে যাবার সে যাবে ধরে বেধে কাউকে রাখা যায়না।মনকে বাধতে লাগে ভালোবাসা।
বেশ বলেছো তো ভালোবাসা?
অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসা ছাড়া আর কি আছে আমার দেবার মতো।
এই তো আবার কাদুনী শুরু হল।এসব কথা শুনলে আমার রাগ হয় তুমি জানো না।
ঠিক আছে আর বলবো না।
মনুর বুকে আঙ্গুল দিয়ে দাগ কাটতে কাটতে দীপুশিখা বললেন,আচ্ছে মনু কাউকে ভালোবাসা দিয়ে বাধলে সেও কি টের পায়?
অবশ্যই পায় মানুষ তো বটেই পশু পাখীও টের পায়।শোন একটা ঘটনা বলি--।
দাঁড়াও তোমার চা খাওয়া হয়ে গেছে কাপটা দাও।দীপশিখা কাপ গুলো নীচে রেখে এসে খাটে উঠে সুখর কোলে মাথা রেখে বললেন,এবার বল কি বলছিলে?
মোমোর চুলে বিলি কাটতে কাটতে উদাস সুরে বলতে থাকে,আমরা তখন পূব বাংলার মাহিদিয়া গ্রামে থাকতাম।আমার বাবা খুব গরীব পরিবারের মেধাবী ছাত্র অধ্যাপনা করতেন।আর মা ছিলেন বিত্তশালী পরিবারে শুনেছি দাদামশায় বাবার মেধার কথা বিবেচনা করেই মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন।বেশ ভালই কাটছিল আমাদের ছোট্ট সংসার। একটা কুকুর কোথা থেকে এসে অতিরিক্ত জুটেছিল।কুকুরটা ছিল কালো তাই ওকে নাম দিয়েছিলাম কালু।মা ওকে খুব ভালোবাস্তো।ওর খাবার জন্য আলাদা থালা ছিল।মা যখন পুকুরে স্নানে যেতো কালুও সংগে সঙ্গে যেতো।মায়ের খুব ন্যাওটা ছিল।গোলমাল শুরু হতে বাবা এদেশে আসার সিদ্ধান্ত নিল।বাড়ীঘর ছেড়ে গভীর রাতে রওনা হলাম জঙ্গলের পথ দিয়ে।কালুও আমাদের সঙ্গী হল।মা অনেকবার বলেছে কালু তুমি বাড়ী যাও আমাদের সঙ্গে এসো না।অবলা জীব হা করে চেয়ে থাকে আমরা হাটতে শুরু করলে সেও সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকে। তারপর আমরা যখন নদী অবধি পৌছে নৌকায় উঠলাম কালু পাড়ে বসে জুল জুল করে তাকিয়ে ছিল।মনে হয় চোখ দিয়ে জল পড়ছিল।অতরাতে এতটা পথ কালু কেন এসেছিল বলো?এরপরও তুমি বলবে কালু ভালবাসার বন্ধন টের পায়নি?
কালু একেবারে একা হয়ে গেল?মনুর কথা ভেবে দীপশিখার এক অজানা আশঙ্কায় চোখ ছল ছল করে উঠল।
কালুর জন্য তোমার খুব দুঃখ হচ্ছে?
যেদিন আমি থাকব না মনুর কি হবে ভাবলেই দিশাহারা বোধ করেন।দীপশিখা বললেন, আমি অন্য কথা ভাবছি।
আবার কি ভাবছো?
তারপর তোমরা কোথায় এলে?প্রসঙ্গ এড়িয়ে দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন।
সে তুমি চিনবে না।সীমান্তে একটা গ্রাম আছে পাইকপাড়া নাম।আমার এক মামা অনেক আগেই এদেশে এসে ওখানে থাকতো।আমরা ওখানে থাকি মামীর পছন্দ নয়।মামার চেষ্টাতেই গোপালনগরে এক ফালি জমি কিনে বাবা ছোটো একটা বাড়ি বানালেন।
গোপাল নগর শুনেই দীপশিখা সচকিত হন।পলির সেই নিরুদিষ্ট ছেলে মনু নয়তো?চোখ তুলে মনুর দিকে তাকালেন। চওড়া বুক ধারালো চিবুক পলি বলছিল টার্জানের মত চেহারা।স্তন বৃন্তে চুমকুড়ি দিতে থাকে সুখ।দীপশিখা শরীরে শিহরণ বোধ করেন।উঠে বসে বললেন, গোপালনগরের গল্প পরে শুনবো। রাত হল খাবে কি?
তোমাকে কিছু করতে হবে না।আমি বাইরে থেকে রুটি কিনে আনছি।
এবেলাও রুটি?নাক কুচকে বললেন দীপশিখা।
রাতে ভাত খাওয়া ঠিক হবে না সোনা।কাল ভাত খেও।
সুখ খাট হতে নেমে জামা প্যাণ্ট পরে বলল,চুপটি করে শুয়ে থাকবে আমি যাবো আর আসব।
এ্যাই শোণো চুলের জন্য একটা কালার আনবে মাথায় সাদা বেরিয়ে পড়ছে।
সুখ বেরিয়ে গেল।মনুর অতীত সম্পর্কে কিছুই জানতেন না দীপশিখা।এদেশে এসে ওরা গোপাল নগরে উঠেছিল।পলি যেভাবে বলছিল ওর কথা শুনে তেমন কিছু মনে হল না।তাহলে কি পলি অন্য কোনো ছেলের কথা বলছিল।রাতে শুয়ে আরো শোনা যাবে।যত বয়স হচ্ছে কেবলি বাড়ছে দুশ্চিন্তা।মনুটার যে কি হবে চাকরি বাকরি না হলেও তিনি যা রেখে যাবেন তাতে দিব্যি চলে যাবে। কিন্তু এত সহজ সরল ভয় হয় কোনো ঠগের পাল্লায় পড়বে নাতো।তার সময় শেষ হয়ে আসছে মনুর সামনে দীর্ঘ পথ ভেবে উতলা বোধ করেন দীপশিখা।এক্টু চা করা যাক ভেবে তিনি রান্না ঘরে গেলেন।
কিছুক্ষন পর সুখ ফিরে এসে মোমোকে রান্না ঘরে দেখে বলল,বড় অবাধ্য তুমি।খালি খালি কি কেউ বঊ পেটায়।
দীপশিখা হেসে বললেন,তুমিও পেটাও।
পেটালে ভালো লাগবে?
স্বামীর হাতে পেটানেরো আলাদা স্বাদ।
সুখর অবাক লাগে বলে,মেয়েদের গায়ে কি করে যে হাত তোলে ভেবে পাই না।
কি এনেছো?
তড়কা এনেছি বারবার চিকেন ভালো লাগে না।
ঠিক করেছো।হাত থেকে খাবারগুলো নিয়ে একপাশে রেখে দু-কাপ চা নিয়ে বললেন,চলো ঘরে চলো।
ঘরে এসে একটা কাপ টেবিলে রেখে খাটে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে আড়চোখে মনুকে লক্ষ্য করেন।সুখ জামা প্যাণ্ট বদলে বারমুডা পরে একটা সিগারেট ঘরালো।টারজানের মত প্রশস্ত বুক কপালের উপর এসে পড়েছে ঝাকড়া চুল। টেবিলের উপর থেকে চায়ের কাপ নিয়ে খাটে মোমোর মুখোমুখি বসল।
তোমাকে না জিজ্ঞেস করেই আমি ভগবানের কাছে একটা প্রার্থনা করেছি।দীপশিখা বললেন।
আমাকে জিজ্ঞেস করার কি আছে?
প্রার্থনাটা কি আগে শোনো।
সিগারেটে টান দিতে গিয়ে থেমে সুখ মোমোর দিকে কৌতূহলী চোখে তাকাল।
ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছি,পরজন্মে আমি যেন মনুকে স্বামী হিসেবে পাই।
সুখ হেসে সিগারেটে টান দিল।
হাসছো?আমাকে ভাল না বাসলে বলো আমি প্রার্থনা ফিরিয়ে নেবো।অভিমানী গলায় বললেন দীপশিখা।
সিগারেটে শেষ টান দিয়ে নিঃশেষিত চায়ের কাপে ফেলে সুখ এগিয়ে গিয়ে মোমোকে বুকে চেপে ধরে বলল,সোনা তোমার বয়স হয়েছে দীর্ঘকাল ধরে তুমি মেয়েদের শিক্ষা দিচ্ছো এইসব কথা তোমার মুখে শুনলে মজা লাগে।
মজার কি হল?আমার ভালোবাসার কথা বলতে পারবো না?
দেখো তুমি পরের জন্মে অধ্যাপিকাই হবে কিম্বা আমি হয়তো কোনো ফেরীওলা হয়ে জন্মাতে পারি--।
তুমি গরীব হও কি বড়লোক হও কানা খোড়া লুলো ল্যাংড়া হলেও আমি তোমাকে চাই।
মোমোর দু-গাল ধরে অবাক হয়ে মোমোর দিকে তাকিয়ে থাকে।লজ্জায় দীপশিখা চোখ নামিয়ে নিলেন।মোমোর মাথা কাধে রেখে সুখ ধরা গলায় বলতে থকে,তুমি আমাকে এত ভালোবাসো?দেখো সোনা আমি ভালোবাসা-টাসা বুঝিনা আমি বুঝি তোমাকে আনন্দ দিতে পারলে আমার আনন্দ হয় তুমি ব্যথা পেলে আমার কষ্ট হয় অন্য কেউ তোমাকে ব্যাকা নজরে দেখলে কিম্বা স্পর্শ করলে আমার মাথায় আগুণ জ্বলে তোমাকে খুশি করতে আমি সব করতে পারি--।
মুখ তুলে দীপশিখা বললেন,ওরে বুদ্ধুরাম একেই ভালোবাসা বলে।মনুর গলা ধরে ঠোটে ঠোট চেপে ধরলেন।তারপর বললেন,তুমি আলাদা নও তাই তোমার সামনে উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াতে আমার লজ্জা হয় না বুঝেছো হাদারাম?চলো কি খাবার এনেছো খেয়ে নিই।দেখেছো রাত কত হল?
দীপশিখা রান্না ঘরে গিয়ে দুটো প্লেটে তন্দুরি রুটি একটা প্লেটে মিষ্টি সাজিয়ে টেবিলে এনে রাখলেন।নিজেকে বেশ সুস্থ বোধ করছেন।এক বেলাতেই জ্বর চলে যাবে ভাবেন নি। মনে হচ্ছে কাল কলেজ যাওয়া যাবে।
খেতে খেতে দীপশিখা আড়চোখে দেখলেন,মনু রুটি চিবোচ্ছে।বেচারী মোমোর জন্য তাকেও রুটি চিবোতে হচ্ছে।আজ রাতে চুদবে বলে মনে হয় না।